পরিমল মড়া পোড়ায়। পরিমল পেশায় ডোম না। তারপরও মড়া পোড়ায়। শুধু পোড়ায় না পরিমল শ্মশানেই থাকে। পরিমল গাঁজা খায় না। তারপরও শ্মশানে থাকে। কেন শ্মশানে থাকে? কেউ জানে না। পরিমল আগে শ্মশানে থাকতো না। এখন থাকে। মরে ফেরার পর থেকে শ্মশানেই থাকে।
পরিমল মরে গিয়েছিল। ঠিক মরে গিয়েছিল, বলা যায় না। বলা যায় পরিমল হারিয়ে গিয়েছিল।
পরিমল তো আর সোনার আংটি নয়। তাই সে হারানোর সঙ্গে সঙ্গে চারিদিকে খোজ খোজ পড়ে যাওয়ারও কোন কারন নেই। ছেলে হিসেবে পরিমলকে অনেকেই পছন্দ করতো। এ কাজে ও কাজে, এ বাড়ি ও বাড়ি তার একটা ভুমিকাও ছিল। কিন্তু এতো গুরুত্বপূর্ন কোন লোক না যে, তার হারিয়ে যাওয়াতে ঢি ঢি পড়ে যাবে।
আসলে পরিমলকে নিয়ে ঢি ঢি ফেলার লোকই বা কৈ। সাকুল্যে এ্ই দুনিয়ায় তার নিকটজন বলতে মা। বাবা মারা গেছে নাকি ছেড়ে গেছে এ ব্যাপারটা পরিমল নিজেও নিশ্চিত ছিল না। তার মায়ের আর কোন ছেলে নেই।
মেয়ে ছিল একটা। মানে পরিমলের বছর দশেকের বড় বোন শিখা। সেও চতুর্থ মেয়ে জš§ দিতে গিয়ে বাপের বাড়ি বসে মরেছে। ফলে পরিমলের জন্য পাড়া মাথায় করার মত লোক আছে ওই মা। তার আবার ইদানিং বাতের ব্যাথায় পাড়া মাথায় করার শক্তিটা নেই। তাই পরিমল হারানোতে কারও তেমন কিছু গেল এল না।
শুধু পাড়ার মোড়ের নারায়নের চা’র দোকানে এক দুদিন আলোচনা হল, ‘আচ্ছা, পইরেডা যাতি পারে কোহানে?’
এও এক কথা। পরিমলের যাওয়ার যায়গাটা কোথায়? ইহজগতে তার কোন বন্ধু-বান্ধব আছে বলে শোনা যায়নি। যার বাড়িতে যেতে পারে পরিমল। কেউ কেউ অবশ্য বললো, ‘মনে হয় ইন্ডিয়ায় গেছে।’
পরিমলের ভারতে যাওয়ার পে কিছু যুক্তিও আবিষ্কার হয়ে গেল। তাকে নাকি কয়েকদিন আগে নিবারন দালালের সঙ্গে হাটের কোনায় ফিস ফিস করতে দেখা গেছে। আবার এও জানা গেল, পরিমলের ভারতে গিয়ে একটা দোকানে চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনার কথাও নাকি জানা গিয়েছিল।
এতসব সম্ভাবনার ইতি টেনে দিল দোকানদার নারায়ন নিজে, ‘ওরে ওর বাপ ছিল ওইরকম। আজ আছে তো কাইল নেই। এই কইরে কইরে তো শেষবার আর ফিরলই না। পইরেও দ্যাখ বাপের মত লাফাঙ্গা হইয়ে গেছে।’
সর্বজনগ্রাহ্য এমন সমাধানের পর আর কথা চলে না। তাই পরিমলের হারিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গটা একরকম হারিয়েই গেল।
পরিমলের প্রসঙ্গটা আবার চাড়া দিয়ে উঠল সেবার শীতের আগে আগে। বছর খানেক আগের ঘটনা হওয়াতে পরিমলের কথা অনেকেরই আর মাথায় নেই। তাই নিবারন দালাল এসে যখন পরিমলের মৃত্যু সংবাদ দিল, সবাই বেশ চমকেই উঠল।
কেউ কেউ একটু আহা উহু করে ঘটনাটা জানতেও চাইল। নিবারন যত না আসল ঘটনা বললো তার চেয়ে নিজের কাধ থেকে দায় কমাল বেশি, ‘আমি ওরে বার বার কলাম, খারাপ কাজের মধ্যি যাইসনে। ওপারে যাইয়ে একটা দোকানের কাজেও লাগায়ে দেলাম। ও সেয়া ছাইড়ে দিয়ে কোহানে কোন চালানের ব্যাবসা শুরু কইরল।’
প্রায় ঘন্টা খানেক ধরে নিবারন যা বললো তার সারমর্ম, ভারত থেকে বাংলাদেশে মাল চোরাচালান করতে গিয়ে বিডিআর বা বিএসএফের গুলি খেয়ে মরেছে পরিমল। লাশ আনার চেষ্টা করেছিল বলেও সজোরে দাবি করলো নিবারন।
পরিমলের স্মৃতি এমনিই ঝাপসা হয়ে এসেছিল। ফলে একটু আহা উহুতেই শেষ হয়ে গেল সে শোক। কেবল পরিমলের বাতের ব্যাথায় ভোগা মা দিন দুয়ের চিৎকার করে পাড়া মাথায় তুলে রাখল। এরপর যে-ই কে সেই। প্রতি সন্ধে বেলা শুধু পরিমলদের বাড়ির ভেতর থেকে ওর বুড়ো মায়ের গোঙ্গানির শব্দ ভেসে আসতে থাকে। এবার আসলেই হারিয়ে গেল পরিমল।
সেদিন সন্ধে বেলাতেও অমন গোঙ্গানির শব্দ করে কাঁদছিল পরিমলের মা। রাস্তায় মানুষের মুখ চেনার মত আলো তখন আর নেই। অমন সময় ফিরে এল পরিমল। ব্যাপারটা যত নাটকীয় হতে পারত তা হল না। স্রেফ বারন্দার নিচে দাড়িয়ে পরিমল ডাক দিল, ‘ও মা। দরজা খোলো।’
পরিমলের মা অস্বাভাবিক এই প্রাপ্তিতে বিষ্ময় প্রকাশ করতেই ভুলে গেলেন। প্রথম চোটটা সামলে নেওয়ার পর শুরু হল পরিমলের মায়ের পাড়া মাথায় তোলা।
তার প্রবল চিৎকারে আশে পাশের লোকজন তো মারাত্মক অবাক! ব্যাপার কী। পরিমল তো একবার মরেছে। এবার আবার কে মোলো? কে মরল সেটা দেখতে এসে লোকজন আবিষ্কার করলো, পরিমলের প্রত্যাবর্তন।
পরিমলের প্রত্যাবর্তনে যতটা হৈ চৈ পড়ার কথা তা পড়ল না। এরকম হারিয়ে গিয়ে আবার ফিরে আসার নজির পরিমলের বাবা এতবার স্থাপন করেছে যে, লোকজন আর অবাক হয়ে পেরে ওঠে না।
তবে পরিমলের ব্যাপারে একটু মজা ছিল। কারন, সে তো হারিয়ে ফিরে আসেনি। এসেছে মরে গিয়ে। ফলে অবধারিতভাবেই পরিমলের কাছে সবার প্রশ্ন, সে মরেও ফিরল কি করে। পরিমল কথা বলে না।
নারায়ন দোকানদার যখন জোর চাপ দিল তখন একবার মুখ খুললো পরিমল। অনেক চাপাচাপির পর শুধু বললো, আমি তো মরিনি।
তারপরও কত প্রশ্ন, ‘না মরলি এতদিন ছিলি কোহানে? না মরলি নিবারন তোর লাশ দেইখল কোহান্দে?’
পরিমল আবার চুপ মেরে যায়। অনেক ধমক দেওয়ার পর একবার বলে, ‘নিবারনকা ভুল দেহিছে। গাজা খায় তো।’
এবার অবশ্য অনেকেই মেনে নেয়। কারন নিবারনের গাজা খাওয়ার ব্যাপারটা সর্বজনবিদীত। এই যুক্তি দেওয়াতে পরিমলের না মরা নিয়ে কারও আর সন্দেহ থাকে না। প্রায় সবাই মেনে নেই পরিমল মরেনি।
অবশ্য পরিমলের কাদম্বীনির মত কোন দুশ্চিন্তা ছিল না। তার মরে প্রমান করার দরকার ছিল না, সে জীবিত। সে মৃত হলেও কারও কিছু যায় আসে না। তারও কিছু যায় আসে না। তাই দিন কয়েক কাটার পর পরিমলের মরে ফেরা নিয়ে গ্রামের আর কারো তেমন আপত্তি থাকল না।
শুধু হঠাৎ হঠাৎ কারো মনে পড়ে গেলে, হয়তো জিজ্ঞেস করতো, ‘কি রে পইরে, তুই মরার পর ফিরে আসলি কেমন কইরে?’
পরিমল এখন আর এই প্রশ্নের উত্তরে কোনো কথাও বলে না, চুপও থাকে না। সে একটা রহস্যময় হাসি শিখে গেছে। কেউ কোন প্রশ্ন করলেই এই রহস্যময় হাসিটা দেওয়া শুরু করল।
গায়ের মানুষ এত নির্বোধ না। পরিমল রহস্যময় হাসি দিল, আর লোকেরা বিভ্রান্ত হলোÑতা হয় না। পরিমলের আগের মতই দিন কাটতে লাগল। আগের মতই এ বাড়ি ও বাড়ি, এ কাজে ও কাজে পাওয়া গেল পরিমলকে।
আগের মত শীতের সময় সিদ্দিকের ক্রিকেট দলে খেলতে নেমে গেল। পরিমল আগেই মতই থাকল। কিন্তু কিছু সু পরিবর্তন হয়ে গেল পরিমলের মধ্যে। আগের মতো সব কাজে উৎসাহ দেখায় না। এখন পরিমল নিজের মতো চলে।
পরিমলের সুক্ষ পরিবর্তনটা খুব স্থুল হয়ে ধরা পড়ল ওই ক্রিকেট খেলতে গিয়ে। পরিমল যেদিন প্রথম সিদ্দিকের দলের হয়ে আবার মাঠে নামল সেদিনই ধরা পড়ল। আগে পরিমল ডান হাতে ব্যাট ধরত। এদিন পরিমল বাঁ হাতে ব্যাট নিয়ে দাড়াল। সিদ্দিকরা খুবই অবাক হল।
পরিমল শুধু বাহাতে ব্যাট করলো, তাই না। পরিবল বলও করলো বাম হাতে। আগে পরিমল বলই করতে পারতো না। আর এবার উত্তর পাড়ার সঙ্গে খেলায় পরিমল সেধে বললো, ‘সিদ্দিক, আমারে এট্টু বল করতি দে।’
সিদ্দিক চটে বলেছিল, ‘ধুর, তুই তো বল করতি পারিস না।’
‘পারবানে। দিয়ে দ্যাখ।’
পাড়ায় পাড়ায় খেলা। এমন বড় কিছু না। তাই সিদ্দিক বল দিয়েছিল পরিমলের হাতে। সে রীতিমতো ওয়াসিম আকরামের মতো বল করলো; যদিও সিদ্দিকরা কেউ ওয়াসিম আকরামকে চিনতো না।
দেখতে দেখতে পরিমল ফট ফট করে ৪ টে উইকেট নিয়ে নিল। বাম হাতের বল; তায় আবার কী জোর। সিদ্দিক এবার ম্যাচ শেষ হওয়ার পর খুব চেপে ধরলো পরিমলকে, ‘কি রে, পইরে। তুই এরম বাহাতি হলি কেমন কইরে? আর বল করা শিখলি কোহানে?’
পরিমল সেই রহস্যময় হাসি হেসে বলে, ‘ওই তো শিহে আইছি।’
তা একরকম হতেও পারে। পরিমল ইন্ডিয়া গিয়েছিল, মরে গিয়েছিল। ফলে সে নতুন অনেক কিছুই শিখে ফিরতে পারে। মেনে নিল সিদ্দিকরা। ডান হাতি পরিমল যে বা-হাতি হয়ে গেল তা নিয়ে কেউ কোন আপত্তি করল না।
পরিমলের মাও আপত্তি করলেন না। কিছু সু-স্থুল পরিবর্তন তার চোখেও ধরা পড়ে। আগে পরিমল রাতের বেলা ঘর থেকে বের গত না। এখন পরিমল রাতের বেলায় কোথায় না কোথায় ঘুরে বেড়ায়। বাতের ব্যাথায় ভোগা মায়ের আপত্তি, চিল্লাপাল্লা কিছুই কানে তোলে না। শুধু হাসে।
পরিমলের মা খেয়াল করেন, কেমন যেন বদলে গেছে ছেলেটা। সবচেয়ে বড় পরিবর্তনটা হল, পরিমল মড়া পোড়াতে গেল।
গাও গেরামের মড়া পোড়াতে তো আর ডোম লাগে না। এলাকার লোকজনেই চিতে সাজিয়ে পুড়িয়ে ফেলে। পরিমল ওই লোকজনের সঙ্গে মিশে গেল। যেখানেই যে বুড়ো বা জোয়ান মরুক, পরিমল মিশে যায় মড়া পোড়ানোর দলে।
হাতে একটা বাশের লাঠি নিয়ে দিব্বি বাড়ি দিয়ে আধপোড়া মড়ার মাথাটা ফাটিয়ে দেয়। ঘন্টা চারেক ধরে একটু একটু করে খুচিয়ে শেষ করে পোড়ানো। কয়েক মাসের মধ্যে মড়া পোড়ানোর জন্য আলাদা একটা সুনাম হয়ে গেল পরিমলের।
এখন আর তাকে মড়া খুজতে হয় না। কোথাও কেউ মরলে তার বাড়ির লোকজনই পরিমলকে খবর দেয়। পরিমলও মহা আনন্দে বাশের লাঠি নিয়ে ছুটে যায় শ্মশানে। এই করতে করতে শ্মশানই পরিমলের বাসস্থান হয়ে দাড়াল।
এখন পরিমল দিনের বেলা ক্রিকেট খেলে; বা হাতে ব্যাট করে, বাম হাতে বল করে ৪-৫ উইকেট পায়! আর বিকেল থেকে মড়া পোড়ায়। রোজ রোজ তো মড়া জোটে না। যেদিন মড়া আসে না, সেদিন শ্মশানেই পড়ে থাকে। ভালোই চলছিল পরিমলের এই জীবন।
বাগড়া দিল নিবারন। পরিমল ফিরে এসেছে শুনে হন্ত-দন্ত হয়ে ছুটে এল নিবারন দালাল। সন্ধে বেলায় নারায়নের চা’র দোকানে কেবল ভীড় জমে উঠেছে।
নিবারন ছুটে এসে বললো, ‘ও নারায়নদা। পইরে নাই ফিরে আইছে?’
নারায়ন বিষ্মিত হয়ে বলে, ‘হ, আইছে! তুই তো কলি মইরে গেছে। তুই শালা এট্টা পাষন্ড। রাইতদিন গাজা খাইস। জ্যান্ত ছলডারে মাইরে ফেললি!’
নিবারন চটে ওঠে। বোঝানোর চেষ্টা করে, সে প্রায় দুদিন ধরে গাজা খায় না, ‘শোনো নারায়নদা। আমি নিজির চোহে পইরের লাশ দেহিছি।’
নারায়ন এবার হাত উচুকরে, ‘ধুর হ, শালার গাজাখোর। ও নিজি দেহিছে..হুহ!”
ভেংচি কেটে নারায়ন চা বানানোয় মন দেয়, ‘তোর বিশ্বেস না হলি কালিতলা শ্মশানে যাইয়ে দেখ। পইরে আছে ওইহেনে। ওই পাড়ার শিবু মরিছে। তারে পোড়াতিছে।’
নিবারন আরও এক দুবার কথা বলার চেষ্টা করে। কেউ তাকে পাত্তা দেয় না। উঠে পড়ে নিবারন। রাস্তায় এসে ভাবে, দেখেই যাই পরিমলকে। পা বাড়ায় শ্মশানের দিকে।
হন হন করে হেটে চলে নিবারণ। নারায়নের চায়ের দোকান থেকে শশ্মান খোলা এমন কিছু দুর না। স্কুল মাঠ, তারপর উত্তরের খোলা, তারপর খাল পার হলেই শ্মশান।
খালে সাকোর ওপর দাড়িয়েই গন গন করে জ্বলতে থাকা চিতের আগুন দেখতে পায় নিবারণ। বুঝতে পারে, ওখানে পইরে আছে।
পরিমল একাই ছিল শ্মশানে। শিবুর অপদার্থ ছেলেদুটো বাপের মুখে আগুন দিয়েই চলে গেছে বাড়ি। আবার বাবার পোড়া শেষ হলে আসবে। দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকা শিবুর চিতার পাশে হাতে লাঠি নিয়ে চুপচাপ দাড়িয়ে পরিমল।
পেছন থেকে হঠাৎ ভেসে আসে নিবারনের হাক, ‘ও পইরে!’
একটু চমকে ওঠে পরিমল। মরে ফেরার পর এই প্রথম চমকে ওঠে। নিবারন আরেকটু কাছে এসে খেপে ওঠে, ‘তুই নাকি মইরে ফিরে আইছিস?’
পরিমল কোনো কথা বলে না। চুপচাপ লাঠিতে লাঠিতে ভর দিয়ে দাড়িয়ে থাকে। নিবারনের চোখে তাকায় না। পায়ে ভরটা বদল করে লাঠি বাড়িয়ে আগুনে কয়েকটা খোচা দেয়।
নিবার আরও খেপে ওঠে, ‘কথার উত্তর দিসনে কেন? তুই মইরে ফিরলি কি করে! ক শুয়োরের বাচ্চা।’
পরিমল কথার উত্তর দেয় না। এক মনে আগুন খোচাতে থাকে। নিবারন আরও কাছে চলে আসে। চিৎকার করে বলে, ‘তুই কি ভাবিছিস গ্রামের লোক বলদ? তুই কি ভুত! ক শালা, তুই ভুত?’
এবার পরিমল একটু হাসেÑসেই রহস্যময় হাসি।
হাসি দেখে আরও চটে ওঠে নিবারন। পরিমল আর চিতার মাঝখানে এসে দাড়ায়। চোখ দুটো লাল করে পরিমলের দিকে তাকায়। ফ্যাস ফেসে গলায় চাপ স্বরে শক্ত ঝাড়ি দেয়, ‘ভুত! নিজিরি ভুত ভাবিস? ভুত হওয়া এতো সোজা! ভুত হলি আগুন লাঠি দিয়ে খোচাস কেন? হাত দিয়ে ধর।’
পরিমল আবার হাসে। এই প্রথম উত্তর দেয়, ‘তুমি জানো না, ভুত আগুন ছুতে পারে না।’
নিবারনের লালবর্ন চোখ দুটো যেন কোটর ছেড়ে বেরিয়ে আসবে। আরও চাপ স্বরে কঠোর গলায় বলে ওঠে, ‘কোন হারামজাদা কইছে, ভুতে আগুন ছুতি পারে না? এই দ্যাখ শালা....’
নিবারনের হাতে চিতা থেকে তুলে আনা এক গাদা গনগনে কয়লা। একমুঠো গন গন করে জ্বলতে থাকা আগুন হাতে নিয়ে দাড়িয়ে থাকে খেপা নিবারন।