একটি ট্রেন লাইনের মৃত্যু

আমাদের একটা ট্রেন ছিল। অনেক দিন আগেই সে মারা গেছে; মেরে ফেলা হয়েছে! এই সেদিন পত্রিকান্তরে জানা গেল, শেষকৃত্য হয়ে গেছে আমাদের সেই ছোট্ট, শান্ত ট্রেনলাইনটার। হবে না কেন? আর কত কাল এই বোঝা বইবে সরকার? শেষ পর্যন্ত নিলামটিলাম করে কাদের যেন দায়িত্ব দিয়ে দেওয়া হয়েছিল, রূপসা-বাগেরহাট রেললাইনটা খুঁচিয়ে তুলে ফেলার।

বৃহস্পতিবার, ২১ জুলাই, ২০১১

আগুন খেলা

পরিমল মড়া পোড়ায়। পরিমল পেশায় ডোম না। তারপরও মড়া পোড়ায়। শুধু পোড়ায় না পরিমল শ্মশানেই থাকে। পরিমল গাঁজা খায় না। তারপরও শ্মশানে থাকে। কেন শ্মশানে থাকে? কেউ জানে না। পরিমল আগে শ্মশানে থাকতো না। এখন থাকে। মরে ফেরার পর থেকে শ্মশানেই থাকে। পরিমল মরে গিয়েছিল। ঠিক মরে গিয়েছিল, বলা যায় না। বলা যায় পরিমল হারিয়ে গিয়েছিল। পরিমল তো আর সোনার আংটি নয়। তাই সে হারানোর সঙ্গে সঙ্গে চারিদিকে খোজ খোজ পড়ে যাওয়ারও কোন কারন নেই। ছেলে হিসেবে পরিমলকে অনেকেই পছন্দ করতো। এ কাজে ও কাজে, এ বাড়ি ও বাড়ি তার একটা ভুমিকাও ছিল। কিন্তু এতো গুরুত্বপূর্ন কোন লোক না যে, তার হারিয়ে যাওয়াতে ঢি ঢি পড়ে যাবে। আসলে পরিমলকে নিয়ে ঢি ঢি ফেলার লোকই বা কৈ। সাকুল্যে...

বুধবার, ২০ জুলাই, ২০১১

বাবাকে মনে পড়ে

বাবা ঠিক আমাদের চেনা-জানা জগতের মানুষ ছিলেন না। আমাদের জগতের মানুষগুলোর মতো স্ত্রী-সন্তান-পরিবার-আত্মীয়স্বজন-অর্থ-ভবিষ্যত নিয়ে বাবা কখনো চিন্তিত ছিলেন না। বাবা কখনো আমাদের পড়তে বসতে বলেননি। বাবা কখনো আমাদের জন্য হাতে করে একটু খাবার বা খেলনা নিয়ে বাড়ি ফিরতেন না। বাবা কখনো বলতেন না, তোরা তো বখে যাচ্ছিস! বাবা সরকারী চাকরি করতেন; বেশ বড় চাকরি। গল্প শুনেছি, বাবা নাকি আমাদের তিন ভাইয়ের নাম জানতেন না। জীবনের বিরল কীর্তি হিসেবে বাড়িতে একবার চিঠি লিখেছিলেন। সেখানে আমাদের লিখেছিলেন: শিব, নারায়ন আর কার্তিক কেমন আছে? উদ্দেশ্য আমাদের তিন ভাইয়ের খবর নেওয়া। কিন্তু সত্যিটা হল, আমাদের নাম কোনোকালেই শিব-নারায়ন-কার্তিক ছিল না। ধরেই নেওয়া যায়, বাবা...

মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই, ২০১১

গান

আজ (১৯ জুলাই) সাহিত্যপত্র নতুনধারায় প্রকাশিত আমার গল্প। সোহরাব সাহেব স্কুল থেকে ফিরছিলেন। সাইকেলেই স্কুলে যাতায়াত করেন তিনি। ফেরার পথে বাজার থেকে দুই তাড়া লাল শাক আর শস্তায় পেয়ে একভাগ কুচো চিংড়ে কিনে ফেলেছেন। বাজারটা পার হতেই হঠাৎ দেখা দীলিপবাবুর সঙ্গে। সঙ্গে সঙ্গে সোহরাব সাহেব হিসেব করতে চেষ্টা করলেন, আজ সকালে কার মুখ দেখে ঘুম ভেঙেছিল তাঁর। মনে করতে পারলেন না। তবে লোকটা যেই হোক সে কুফা নিঃসন্দেহে। কুফা না হলে এই ভর সন্ধে বেলা মাছ-শাক কিনে ফেরার পথে দীলিপবাবুর সঙ্গে দেখা হবে কেন! দীলিপবাবু অবশ্য অর্ন্তযামী নন। ফলে সোহরাব সাহেবের মনে মনে এই ভুত দেখার মত অনুভুতি হওয়াটা তিনি বুঝতে পারলেন। তিনি দেখলেন সোহরাব সাহেবের হাসি হাসি আন্তরিকতা...

শনিবার, ১৬ জুলাই, ২০১১

চোখের জল শুকিয়ে গেছে

১৯৯০ সাল থেকে বিশ্বকাপ দেখি। বুঝে দেখি না, দেখি আর কী। তখন ভালো ফুটবল, মন্দ ফুটবল; কিচ্ছু বুঝতাম না। হা করে গোল দেখতাম। ফলে আর্জেন্টিনা কি ফুটবল খেলে ফাইনালে উঠেছিল, ফাইনালে কেমন ফুটবল খেলেছিল মনে নেই। শুধু মনে আছে একজন মানুষের কান্না। খুব কাছে পেয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ট্রফি ছোয়া হল না বলে একজন মহামানবের কান্নার কথা মনে আছে। মনে আছে একা একা একটা দলকে ফাইনালে তুলে এনে বিচারকের পক্ষপাতের কাছে সব হারানোর একজন মানুষ হাউ মাউ করে কাঁদছেন। সেই আসলে আমার আর্জেন্টিনা বিষয়ক প্রথম শক্ত কোনো স্মৃতি। আর্জেন্টিনাকে আমি প্রথম ভালো করে চিনেছিলাম সেই মানুষটি, সেই ডিয়েগো ম্যারাডোনার কান্নার ভেতর দিয়ে। কেন যেন কিছু না বুঝেই সেদিন ওই মানুষটির সঙ্গে তাল মিলিয়ে...

বুধবার, ১৩ জুলাই, ২০১১

আমাদের ধনী খেলোয়াড়রা

সিদ্দিকুর রহমানের বড় শখ, টাইগার উডসের সঙ্গে দেখা করবেন। এবার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস বাগড়া না দিলে হয়তো সদ্য শেষ হওয়া ইউএস ওপেনেই সাক্ষাত্ হয়ে যেত। সে না হোক; একটা জায়গায় উডসকে ছুঁয়ে ফেললেন সিদ্দিকুর। বিশ্বাস হচ্ছে না? টাইগার উডস এখন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি উপার্জনকারী খেলোয়াড়। আর সিদ্দিকুর রহমান এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি উপার্জনকারী খেলোয়াড়। ফলে সিদ্দিকুরকে ‘বাংলাদেশের টাইগার উডস’ তো বলতেই পারেন। অন্তত আয়ের বিবেচনায়। ছোটবেলায় জানতাম, খেলতে হলে টাকা ব্যয় করতে হয়। ক্লাবের চাঁদা দিতে হয়, ফুটবল কেনার জন্য টাকা দিতে হয়; আরও কত কী! মোট কথা খেলা মানে পকেটের টাকা ব্যয়। আর এখন বুঝতে পারছি, খেলা মানে আয়! আয় মানে কত টাকা? সে কথা শুনে...

সোমবার, ১১ জুলাই, ২০১১

ডিয়েগোর প্রত্যাবর্তন

ছিয়াশির আর্জেন্টিনা দলে কি সব ক জন ‘ক্রেজি’ ফুটবলার ছিলেন নাকি! আজও বাতিস্তার শেষ সময়ের আচরণ দেখে কথাটা মনে হল। আবার সেই লাভেজ্জি এবং একেবারেই আনকোরা এক বিগিলাকে মাঠে নামানোর দুঃসাহস দেখালে ভদ্রলোক। তবে আপাতত লোকটির ওপর রাগ ঝেড়ে ফেলতে হচ্ছে যে, অবশেষে নিজের একগুয়েমি থেকে সরে এসে হলেও আর্জেন্টিনার এখনকার সম্ভাব্য সেরা একাদশকে মাঠে নামালেন। ছেলেমানুষী না করে হিগুয়েইন, আগুয়েরো, ডি মারিয়া ও গ্যাগোকে সেরা একাদশে খেলালেন। ফলটা কি হল? আপাত দৃষ্টিতে আর্জেন্টিনার ৩-০ গোলের জয়। আসলে এই ম্যাচে আর্জেন্টিনার প্রাপ্তি লিওনেল মেসির খেলা।মেসি-আগুয়েরো-ডি মারিয়া কম্বিনেশনে মারাত্মক বোঝা পড়া। আবারও বলি, সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি মেসিকে আর্জেন্টিনার করে...

বুধবার, ৬ জুলাই, ২০১১

ফিরে আসুন ডিয়েগো

২০০২ বিশ্বকাপের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। লাতিন আমেরিকা জোনের অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন, তখনকার ফিফা এক নম্বর হিসেবে বিশ্বকাপে ‘হটেস্ট ফেবারিট’ হয়ে কোরিয়া-জাপানে এসেছিল আর্জেন্টিনা। কী সেই দল! ভেরন, ক্যানিজিয়া, বাতিস্তুতা, ওর্তেগা, আইমার, আয়লা, ক্রেসপো; এদের ভিড়ে সে সময়ের ‘প্রডিজি’ স্যাভিওলার জায়গায় হয়নি ২৩ সদস্যের দলে! তর্কস্বাপেক্ষে আর্জেন্টিনার স্মরণকালের সেরা দল নিয়ে মার্সেলো বিয়েলসা শেষ পর্যন্ত কী করেছিলেন? ইংল্যান্ডের সঙ্গে হেরে ও সুইডেনের সঙ্গে ড্র করে বিদায় নিয়েছিলেন প্রথম পর্ব থেকে। বিশ্বকাপ ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই পর্বতের মুষিক প্রসবের পর থেকে আর্জেন্টিনায় এক স্থায়ী ভিলেনের নাম: মার্সেলো বিয়েলসার। সার্জিও বাতিস্তার জন্য কষ্ট...

Page 1 of 12123Next

সোশ্যাল নেটওয়ার্ক

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites