tag:blogger.com,1999:blog-3740602668046484782024-03-12T18:08:24.226-07:00Debbrata Mukhopaddhayদেবব্রত মুখোপাধ্যায়http://www.blogger.com/profile/10351018961072501066noreply@blogger.comBlogger48125tag:blogger.com,1999:blog-374060266804648478.post-65361517176925851542011-07-21T22:13:00.000-07:002011-08-07T00:12:13.718-07:00আগুন খেলা<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEi8yNswA5V1rTHq4I-AiUT32Tqs19Z1G8J3JrRGkoyhNpFBrmvtUreWA4yn-wkqWNZLqBXUMIiZ8B-CYH_l5WXg7NXyvSV-Ym2qnqtpO1Zf6RKB0gOYYnbL-sMikhw4RMkmrfLg4Z1Ob20/s1600/ghost_fire_in_moon_night_1216-1600x1200.jpg" imageanchor="1" style="clear:left; float:left;margin-right:1em; margin-bottom:1em"><img border="0" height="150" width="200" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEi8yNswA5V1rTHq4I-AiUT32Tqs19Z1G8J3JrRGkoyhNpFBrmvtUreWA4yn-wkqWNZLqBXUMIiZ8B-CYH_l5WXg7NXyvSV-Ym2qnqtpO1Zf6RKB0gOYYnbL-sMikhw4RMkmrfLg4Z1Ob20/s200/ghost_fire_in_moon_night_1216-1600x1200.jpg" /></a></div><br />
<br />
পরিমল মড়া পোড়ায়। পরিমল পেশায় ডোম না। তারপরও মড়া পোড়ায়। শুধু পোড়ায় না পরিমল শ্মশানেই থাকে। পরিমল গাঁজা খায় না। তারপরও শ্মশানে থাকে। কেন শ্মশানে থাকে? কেউ জানে না। পরিমল আগে শ্মশানে থাকতো না। এখন থাকে। মরে ফেরার পর থেকে শ্মশানেই থাকে।<br />
পরিমল মরে গিয়েছিল। ঠিক মরে গিয়েছিল, বলা যায় না। বলা যায় পরিমল হারিয়ে গিয়েছিল। <br />
পরিমল তো আর সোনার আংটি নয়। তাই সে হারানোর সঙ্গে সঙ্গে চারিদিকে খোজ খোজ পড়ে যাওয়ারও কোন কারন নেই। ছেলে হিসেবে পরিমলকে অনেকেই পছন্দ করতো। এ কাজে ও কাজে, এ বাড়ি ও বাড়ি তার একটা ভুমিকাও ছিল। কিন্তু এতো গুরুত্বপূর্ন কোন লোক না যে, তার হারিয়ে যাওয়াতে ঢি ঢি পড়ে যাবে।<br />
আসলে পরিমলকে নিয়ে ঢি ঢি ফেলার লোকই বা কৈ। সাকুল্যে এ্ই দুনিয়ায় তার নিকটজন বলতে মা। বাবা মারা গেছে নাকি ছেড়ে গেছে এ ব্যাপারটা পরিমল নিজেও নিশ্চিত ছিল না। তার মায়ের আর কোন ছেলে নেই। <br />
মেয়ে ছিল একটা। মানে পরিমলের বছর দশেকের বড় বোন শিখা। সেও চতুর্থ মেয়ে জš§ দিতে গিয়ে বাপের বাড়ি বসে মরেছে। ফলে পরিমলের জন্য পাড়া মাথায় করার মত লোক আছে ওই মা। তার আবার ইদানিং বাতের ব্যাথায় পাড়া মাথায় করার শক্তিটা নেই। তাই পরিমল হারানোতে কারও তেমন কিছু গেল এল না।<br />
শুধু পাড়ার মোড়ের নারায়নের চা’র দোকানে এক দুদিন আলোচনা হল, ‘আচ্ছা, পইরেডা যাতি পারে কোহানে?’ <br />
এও এক কথা। পরিমলের যাওয়ার যায়গাটা কোথায়? ইহজগতে তার কোন বন্ধু-বান্ধব আছে বলে শোনা যায়নি। যার বাড়িতে যেতে পারে পরিমল। কেউ কেউ অবশ্য বললো, ‘মনে হয় ইন্ডিয়ায় গেছে।’ <br />
পরিমলের ভারতে যাওয়ার পে কিছু যুক্তিও আবিষ্কার হয়ে গেল। তাকে নাকি কয়েকদিন আগে নিবারন দালালের সঙ্গে হাটের কোনায় ফিস ফিস করতে দেখা গেছে। আবার এও জানা গেল, পরিমলের ভারতে গিয়ে একটা দোকানে চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনার কথাও নাকি জানা গিয়েছিল। <br />
এতসব সম্ভাবনার ইতি টেনে দিল দোকানদার নারায়ন নিজে, ‘ওরে ওর বাপ ছিল ওইরকম। আজ আছে তো কাইল নেই। এই কইরে কইরে তো শেষবার আর ফিরলই না। পইরেও দ্যাখ বাপের মত লাফাঙ্গা হইয়ে গেছে।’ <br />
সর্বজনগ্রাহ্য এমন সমাধানের পর আর কথা চলে না। তাই পরিমলের হারিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গটা একরকম হারিয়েই গেল।<br />
পরিমলের প্রসঙ্গটা আবার চাড়া দিয়ে উঠল সেবার শীতের আগে আগে। বছর খানেক আগের ঘটনা হওয়াতে পরিমলের কথা অনেকেরই আর মাথায় নেই। তাই নিবারন দালাল এসে যখন পরিমলের মৃত্যু সংবাদ দিল, সবাই বেশ চমকেই উঠল। <br />
কেউ কেউ একটু আহা উহু করে ঘটনাটা জানতেও চাইল। নিবারন যত না আসল ঘটনা বললো তার চেয়ে নিজের কাধ থেকে দায় কমাল বেশি, ‘আমি ওরে বার বার কলাম, খারাপ কাজের মধ্যি যাইসনে। ওপারে যাইয়ে একটা দোকানের কাজেও লাগায়ে দেলাম। ও সেয়া ছাইড়ে দিয়ে কোহানে কোন চালানের ব্যাবসা শুরু কইরল।’ <br />
প্রায় ঘন্টা খানেক ধরে নিবারন যা বললো তার সারমর্ম, ভারত থেকে বাংলাদেশে মাল চোরাচালান করতে গিয়ে বিডিআর বা বিএসএফের গুলি খেয়ে মরেছে পরিমল। লাশ আনার চেষ্টা করেছিল বলেও সজোরে দাবি করলো নিবারন। <br />
পরিমলের স্মৃতি এমনিই ঝাপসা হয়ে এসেছিল। ফলে একটু আহা উহুতেই শেষ হয়ে গেল সে শোক। কেবল পরিমলের বাতের ব্যাথায় ভোগা মা দিন দুয়ের চিৎকার করে পাড়া মাথায় তুলে রাখল। এরপর যে-ই কে সেই। প্রতি সন্ধে বেলা শুধু পরিমলদের বাড়ির ভেতর থেকে ওর বুড়ো মায়ের গোঙ্গানির শব্দ ভেসে আসতে থাকে। এবার আসলেই হারিয়ে গেল পরিমল।<br />
সেদিন সন্ধে বেলাতেও অমন গোঙ্গানির শব্দ করে কাঁদছিল পরিমলের মা। রাস্তায় মানুষের মুখ চেনার মত আলো তখন আর নেই। অমন সময় ফিরে এল পরিমল। ব্যাপারটা যত নাটকীয় হতে পারত তা হল না। স্রেফ বারন্দার নিচে দাড়িয়ে পরিমল ডাক দিল, ‘ও মা। দরজা খোলো।’<br />
পরিমলের মা অস্বাভাবিক এই প্রাপ্তিতে বিষ্ময় প্রকাশ করতেই ভুলে গেলেন। প্রথম চোটটা সামলে নেওয়ার পর শুরু হল পরিমলের মায়ের পাড়া মাথায় তোলা। <br />
তার প্রবল চিৎকারে আশে পাশের লোকজন তো মারাত্মক অবাক! ব্যাপার কী। পরিমল তো একবার মরেছে। এবার আবার কে মোলো? কে মরল সেটা দেখতে এসে লোকজন আবিষ্কার করলো, পরিমলের প্রত্যাবর্তন।<br />
পরিমলের প্রত্যাবর্তনে যতটা হৈ চৈ পড়ার কথা তা পড়ল না। এরকম হারিয়ে গিয়ে আবার ফিরে আসার নজির পরিমলের বাবা এতবার স্থাপন করেছে যে, লোকজন আর অবাক হয়ে পেরে ওঠে না। <br />
তবে পরিমলের ব্যাপারে একটু মজা ছিল। কারন, সে তো হারিয়ে ফিরে আসেনি। এসেছে মরে গিয়ে। ফলে অবধারিতভাবেই পরিমলের কাছে সবার প্রশ্ন, সে মরেও ফিরল কি করে। পরিমল কথা বলে না।<br />
নারায়ন দোকানদার যখন জোর চাপ দিল তখন একবার মুখ খুললো পরিমল। অনেক চাপাচাপির পর শুধু বললো, আমি তো মরিনি। <br />
তারপরও কত প্রশ্ন, ‘না মরলি এতদিন ছিলি কোহানে? না মরলি নিবারন তোর লাশ দেইখল কোহান্দে?’ <br />
পরিমল আবার চুপ মেরে যায়। অনেক ধমক দেওয়ার পর একবার বলে, ‘নিবারনকা ভুল দেহিছে। গাজা খায় তো।’ <br />
এবার অবশ্য অনেকেই মেনে নেয়। কারন নিবারনের গাজা খাওয়ার ব্যাপারটা সর্বজনবিদীত। এই যুক্তি দেওয়াতে পরিমলের না মরা নিয়ে কারও আর সন্দেহ থাকে না। প্রায় সবাই মেনে নেই পরিমল মরেনি। <br />
অবশ্য পরিমলের কাদম্বীনির মত কোন দুশ্চিন্তা ছিল না। তার মরে প্রমান করার দরকার ছিল না, সে জীবিত। সে মৃত হলেও কারও কিছু যায় আসে না। তারও কিছু যায় আসে না। তাই দিন কয়েক কাটার পর পরিমলের মরে ফেরা নিয়ে গ্রামের আর কারো তেমন আপত্তি থাকল না। <br />
শুধু হঠাৎ হঠাৎ কারো মনে পড়ে গেলে, হয়তো জিজ্ঞেস করতো, ‘কি রে পইরে, তুই মরার পর ফিরে আসলি কেমন কইরে?’ <br />
পরিমল এখন আর এই প্রশ্নের উত্তরে কোনো কথাও বলে না, চুপও থাকে না। সে একটা রহস্যময় হাসি শিখে গেছে। কেউ কোন প্রশ্ন করলেই এই রহস্যময় হাসিটা দেওয়া শুরু করল।<br />
গায়ের মানুষ এত নির্বোধ না। পরিমল রহস্যময় হাসি দিল, আর লোকেরা বিভ্রান্ত হলোÑতা হয় না। পরিমলের আগের মতই দিন কাটতে লাগল। আগের মতই এ বাড়ি ও বাড়ি, এ কাজে ও কাজে পাওয়া গেল পরিমলকে। <br />
আগের মত শীতের সময় সিদ্দিকের ক্রিকেট দলে খেলতে নেমে গেল। পরিমল আগেই মতই থাকল। কিন্তু কিছু সু পরিবর্তন হয়ে গেল পরিমলের মধ্যে। আগের মতো সব কাজে উৎসাহ দেখায় না। এখন পরিমল নিজের মতো চলে। <br />
পরিমলের সুক্ষ পরিবর্তনটা খুব স্থুল হয়ে ধরা পড়ল ওই ক্রিকেট খেলতে গিয়ে। পরিমল যেদিন প্রথম সিদ্দিকের দলের হয়ে আবার মাঠে নামল সেদিনই ধরা পড়ল। আগে পরিমল ডান হাতে ব্যাট ধরত। এদিন পরিমল বাঁ হাতে ব্যাট নিয়ে দাড়াল। সিদ্দিকরা খুবই অবাক হল। <br />
পরিমল শুধু বাহাতে ব্যাট করলো, তাই না। পরিবল বলও করলো বাম হাতে। আগে পরিমল বলই করতে পারতো না। আর এবার উত্তর পাড়ার সঙ্গে খেলায় পরিমল সেধে বললো, ‘সিদ্দিক, আমারে এট্টু বল করতি দে।’<br />
সিদ্দিক চটে বলেছিল, ‘ধুর, তুই তো বল করতি পারিস না।’<br />
‘পারবানে। দিয়ে দ্যাখ।’<br />
পাড়ায় পাড়ায় খেলা। এমন বড় কিছু না। তাই সিদ্দিক বল দিয়েছিল পরিমলের হাতে। সে রীতিমতো ওয়াসিম আকরামের মতো বল করলো; যদিও সিদ্দিকরা কেউ ওয়াসিম আকরামকে চিনতো না। <br />
দেখতে দেখতে পরিমল ফট ফট করে ৪ টে উইকেট নিয়ে নিল। বাম হাতের বল; তায় আবার কী জোর। সিদ্দিক এবার ম্যাচ শেষ হওয়ার পর খুব চেপে ধরলো পরিমলকে, ‘কি রে, পইরে। তুই এরম বাহাতি হলি কেমন কইরে? আর বল করা শিখলি কোহানে?’<br />
পরিমল সেই রহস্যময় হাসি হেসে বলে, ‘ওই তো শিহে আইছি।’ <br />
তা একরকম হতেও পারে। পরিমল ইন্ডিয়া গিয়েছিল, মরে গিয়েছিল। ফলে সে নতুন অনেক কিছুই শিখে ফিরতে পারে। মেনে নিল সিদ্দিকরা। ডান হাতি পরিমল যে বা-হাতি হয়ে গেল তা নিয়ে কেউ কোন আপত্তি করল না। <br />
পরিমলের মাও আপত্তি করলেন না। কিছু সু-স্থুল পরিবর্তন তার চোখেও ধরা পড়ে। আগে পরিমল রাতের বেলা ঘর থেকে বের গত না। এখন পরিমল রাতের বেলায় কোথায় না কোথায় ঘুরে বেড়ায়। বাতের ব্যাথায় ভোগা মায়ের আপত্তি, চিল্লাপাল্লা কিছুই কানে তোলে না। শুধু হাসে। <br />
পরিমলের মা খেয়াল করেন, কেমন যেন বদলে গেছে ছেলেটা। সবচেয়ে বড় পরিবর্তনটা হল, পরিমল মড়া পোড়াতে গেল।<br />
গাও গেরামের মড়া পোড়াতে তো আর ডোম লাগে না। এলাকার লোকজনেই চিতে সাজিয়ে পুড়িয়ে ফেলে। পরিমল ওই লোকজনের সঙ্গে মিশে গেল। যেখানেই যে বুড়ো বা জোয়ান মরুক, পরিমল মিশে যায় মড়া পোড়ানোর দলে। <br />
হাতে একটা বাশের লাঠি নিয়ে দিব্বি বাড়ি দিয়ে আধপোড়া মড়ার মাথাটা ফাটিয়ে দেয়। ঘন্টা চারেক ধরে একটু একটু করে খুচিয়ে শেষ করে পোড়ানো। কয়েক মাসের মধ্যে মড়া পোড়ানোর জন্য আলাদা একটা সুনাম হয়ে গেল পরিমলের। <br />
এখন আর তাকে মড়া খুজতে হয় না। কোথাও কেউ মরলে তার বাড়ির লোকজনই পরিমলকে খবর দেয়। পরিমলও মহা আনন্দে বাশের লাঠি নিয়ে ছুটে যায় শ্মশানে। এই করতে করতে শ্মশানই পরিমলের বাসস্থান হয়ে দাড়াল। <br />
এখন পরিমল দিনের বেলা ক্রিকেট খেলে; বা হাতে ব্যাট করে, বাম হাতে বল করে ৪-৫ উইকেট পায়! আর বিকেল থেকে মড়া পোড়ায়। রোজ রোজ তো মড়া জোটে না। যেদিন মড়া আসে না, সেদিন শ্মশানেই পড়ে থাকে। ভালোই চলছিল পরিমলের এই জীবন।<br />
বাগড়া দিল নিবারন। পরিমল ফিরে এসেছে শুনে হন্ত-দন্ত হয়ে ছুটে এল নিবারন দালাল। সন্ধে বেলায় নারায়নের চা’র দোকানে কেবল ভীড় জমে উঠেছে। <br />
নিবারন ছুটে এসে বললো, ‘ও নারায়নদা। পইরে নাই ফিরে আইছে?’ <br />
নারায়ন বিষ্মিত হয়ে বলে, ‘হ, আইছে! তুই তো কলি মইরে গেছে। তুই শালা এট্টা পাষন্ড। রাইতদিন গাজা খাইস। জ্যান্ত ছলডারে মাইরে ফেললি!’ <br />
নিবারন চটে ওঠে। বোঝানোর চেষ্টা করে, সে প্রায় দুদিন ধরে গাজা খায় না, ‘শোনো নারায়নদা। আমি নিজির চোহে পইরের লাশ দেহিছি।’ <br />
নারায়ন এবার হাত উচুকরে, ‘ধুর হ, শালার গাজাখোর। ও নিজি দেহিছে..হুহ!” <br />
ভেংচি কেটে নারায়ন চা বানানোয় মন দেয়, ‘তোর বিশ্বেস না হলি কালিতলা শ্মশানে যাইয়ে দেখ। পইরে আছে ওইহেনে। ওই পাড়ার শিবু মরিছে। তারে পোড়াতিছে।’ <br />
নিবারন আরও এক দুবার কথা বলার চেষ্টা করে। কেউ তাকে পাত্তা দেয় না। উঠে পড়ে নিবারন। রাস্তায় এসে ভাবে, দেখেই যাই পরিমলকে। পা বাড়ায় শ্মশানের দিকে। <br />
হন হন করে হেটে চলে নিবারণ। নারায়নের চায়ের দোকান থেকে শশ্মান খোলা এমন কিছু দুর না। স্কুল মাঠ, তারপর উত্তরের খোলা, তারপর খাল পার হলেই শ্মশান। <br />
খালে সাকোর ওপর দাড়িয়েই গন গন করে জ্বলতে থাকা চিতের আগুন দেখতে পায় নিবারণ। বুঝতে পারে, ওখানে পইরে আছে। <br />
পরিমল একাই ছিল শ্মশানে। শিবুর অপদার্থ ছেলেদুটো বাপের মুখে আগুন দিয়েই চলে গেছে বাড়ি। আবার বাবার পোড়া শেষ হলে আসবে। দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকা শিবুর চিতার পাশে হাতে লাঠি নিয়ে চুপচাপ দাড়িয়ে পরিমল। <br />
পেছন থেকে হঠাৎ ভেসে আসে নিবারনের হাক, ‘ও পইরে!’<br />
একটু চমকে ওঠে পরিমল। মরে ফেরার পর এই প্রথম চমকে ওঠে। নিবারন আরেকটু কাছে এসে খেপে ওঠে, ‘তুই নাকি মইরে ফিরে আইছিস?’<br />
পরিমল কোনো কথা বলে না। চুপচাপ লাঠিতে লাঠিতে ভর দিয়ে দাড়িয়ে থাকে। নিবারনের চোখে তাকায় না। পায়ে ভরটা বদল করে লাঠি বাড়িয়ে আগুনে কয়েকটা খোচা দেয়। <br />
নিবার আরও খেপে ওঠে, ‘কথার উত্তর দিসনে কেন? তুই মইরে ফিরলি কি করে! ক শুয়োরের বাচ্চা।’<br />
পরিমল কথার উত্তর দেয় না। এক মনে আগুন খোচাতে থাকে। নিবারন আরও কাছে চলে আসে। চিৎকার করে বলে, ‘তুই কি ভাবিছিস গ্রামের লোক বলদ? তুই কি ভুত! ক শালা, তুই ভুত?’<br />
এবার পরিমল একটু হাসেÑসেই রহস্যময় হাসি। <br />
হাসি দেখে আরও চটে ওঠে নিবারন। পরিমল আর চিতার মাঝখানে এসে দাড়ায়। চোখ দুটো লাল করে পরিমলের দিকে তাকায়। ফ্যাস ফেসে গলায় চাপ স্বরে শক্ত ঝাড়ি দেয়, ‘ভুত! নিজিরি ভুত ভাবিস? ভুত হওয়া এতো সোজা! ভুত হলি আগুন লাঠি দিয়ে খোচাস কেন? হাত দিয়ে ধর।’<br />
পরিমল আবার হাসে। এই প্রথম উত্তর দেয়, ‘তুমি জানো না, ভুত আগুন ছুতে পারে না।’<br />
নিবারনের লালবর্ন চোখ দুটো যেন কোটর ছেড়ে বেরিয়ে আসবে। আরও চাপ স্বরে কঠোর গলায় বলে ওঠে, ‘কোন হারামজাদা কইছে, ভুতে আগুন ছুতি পারে না? এই দ্যাখ শালা....’<br />
নিবারনের হাতে চিতা থেকে তুলে আনা এক গাদা গনগনে কয়লা। একমুঠো গন গন করে জ্বলতে থাকা আগুন হাতে নিয়ে দাড়িয়ে থাকে খেপা নিবারন।দেবব্রত মুখোপাধ্যায়http://www.blogger.com/profile/10351018961072501066noreply@blogger.comtag:blogger.com,1999:blog-374060266804648478.post-84697491125054578012011-07-20T11:41:00.000-07:002011-08-07T00:13:27.768-07:00বাবাকে মনে পড়ে<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgV2FnpL8EKUMvrUStKIYXDX14BWns9iBrlQQKq4m3jyO0-S8SM1xjC7hLpLpOVyNvC6rneCASJHnOQY7FSFKKRFrvcS1osXMtseobQ0t5JJV-ILJhM-z4cy0-o8UiXLudExYZR9KEBbVE/s1600/father-son-ju14-2008.jpg" imageanchor="1" style="clear:left; float:left;margin-right:1em; margin-bottom:1em"><img border="0" height="132" width="200" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgV2FnpL8EKUMvrUStKIYXDX14BWns9iBrlQQKq4m3jyO0-S8SM1xjC7hLpLpOVyNvC6rneCASJHnOQY7FSFKKRFrvcS1osXMtseobQ0t5JJV-ILJhM-z4cy0-o8UiXLudExYZR9KEBbVE/s200/father-son-ju14-2008.jpg" /></a></div>বাবা ঠিক আমাদের চেনা-জানা জগতের মানুষ ছিলেন না। <br />
আমাদের জগতের মানুষগুলোর মতো স্ত্রী-সন্তান-পরিবার-আত্মীয়স্বজন-অর্থ-ভবিষ্যত নিয়ে বাবা কখনো চিন্তিত ছিলেন না।<br />
বাবা কখনো আমাদের পড়তে বসতে বলেননি। বাবা কখনো আমাদের জন্য হাতে করে একটু খাবার বা খেলনা নিয়ে বাড়ি ফিরতেন না। বাবা কখনো বলতেন না, তোরা তো বখে যাচ্ছিস!<br />
বাবা সরকারী চাকরি করতেন; বেশ বড় চাকরি। <br />
গল্প শুনেছি, বাবা নাকি আমাদের তিন ভাইয়ের নাম জানতেন না। জীবনের বিরল কীর্তি হিসেবে বাড়িতে একবার চিঠি লিখেছিলেন। সেখানে আমাদের লিখেছিলেন: শিব, নারায়ন আর কার্তিক কেমন আছে? উদ্দেশ্য আমাদের তিন ভাইয়ের খবর নেওয়া। <br />
কিন্তু সত্যিটা হল, আমাদের নাম কোনোকালেই শিব-নারায়ন-কার্তিক ছিল না। ধরেই নেওয়া যায়, বাবা আমাদের নাম মনে রাখতে পারতেন না। <br />
বাবার সঙ্গে ছোটবেলায় আমাদের দেখা-সাক্ষাতই খুব একটা হয়ে উঠতো না। দেবহাটা, কলারোয়া, পাটকেলঘাটা, আশাশুনি....আরও কোথায় কোথায় যেন চাকরি করে বেড়াতেন। ফলে ছোটবেলায় বাবাকে দেখায় খুব একটা হয়ে উঠতো না।<br />
বৃহষ্পতিবার গভীর রাতে বাবা বাড়ি ফিরতেন; শুক্রবার সকালে উঠে আবিস্কার করতাম আমরা। সে আবিস্কারে বিরাট কোনো ফূর্তি ছিল না; কোনো ভয়ও ছিল না। কারণ, বাবা কোনো আমোদ নিয়ে আসতেন না। কারণ, বাবা শাসন করতেন না। <br />
বাবা এসে বাগানে চলে যেতেন। একটা দা আর একটা রেডিও। দা দিয়ে কুট কুট করে সারাটা দিন বাগান পরিস্কার করতেন। পাশে বেজে চলতো বিজ্ঞাপন-তরঙ্গ অথবা ইডেনের ক্রিকেট ম্যাচ। <br />
ক্রিকেটের বড় পাগল ছিলেন। জাগতিক এই একটা ব্যাপারই বাবাকে টানত। <br />
বাবার সঙ্গে আমাদের নিয়মিত দেখা হওয়া শুরু হল অবসরে যাওয়ার ক দিন আগে থেকে। বাগেরহাটে নিজেদের জেলায় পোস্টিং পেয়ে অবসরে গিয়েছিলেন। তখন বাড়ি থেকে অষিপ করতেন। <br />
তখন আমরা একটু বড় হয়েছি। বাবাকে এড়িয়ে চলতাম। বাবা তাতে কিছু মনে করতেন না। কাছে নিয়ে আহলাদ করতে না পারলে কষ্ট পাবেন, এমন মানুষ তো ছিলেন না। <br />
অবসরের পরে সার্বক্ষনিক সঙ্গী হয়ে গেল ওই বাগান, সবজি খেত আর রেডিও। কিসব আজব আজব সবজি চাষ করতেন। কখনো চীনা বাদাম, কখনো তরমুজ, কখনো পেস্তা বাদাম!<br />
মিথ্যাচার না করলে বলতে হয়, বাবার এসব বিচিত্র চাষের ফলন বেশিরভাগ সময়ই হতাশাজনক ছিল। তাতে বাবার উৎসাহের কমতি ছিল না। একটা বাদামের চারার পেছনে দিনটা ব্যায় করে দিতেন। সব উৎসাহ ওই চাষে আর গাভাস্কারের ব্যাটিংয়ে। <br />
আমাদের নিয়ে একদমই উৎসাহ ছিল না। আমি তখন সিগারেট ধরেছি। কে একজন এসে নালিশ করলো, ‘তোমার ছলডা তো বিড়ি খায়।’<br />
আমি ঘরে ঘুমের ভান করে শুয়ে শুনছি; বাবা বললেন, ‘বড় হইছে, এখন তো আর আমি নিষেধ করতে পারি না। আমিও তো নস্যি টানি; ওরা কি নিষেধ করে!’<br />
এই আমার বাবা। <br />
তখন বাবার সঙ্গী আমার চাচাতো ভাইটা: তন্ময়। রাতদিন ওই চাষাবাদ করতে করতে তন্ময়ের সঙ্গে বিচিত্র সব গল্প বলতেন। সুনীল গাভাস্কারের সঙ্গে তার কি কথা হল কিংবা ভিভ রিচার্ডস বাবার কাছে কি জানতে চাইলেন: এসব গল্প তন্ময় হয়ে শুনতো তন্ময়।<br />
আমরা বড় হয়ে গেছি। তখন এসব গল্প শোনার মন কই!<br />
বাবার সঙ্গে দূরত্বটা আরও বেড়ে গেল। আমি ‘মানুষ’ হওয়ার আশায় ঢাকায় চলে এলাম। প্রথম আলোতে চাকরি করছি। হঠাৎ শুনলাম, বাবার ক্যান্সার। বাবাকে ঢাকায় নিয়ে আসা হল। <br />
নিউরোসার্জন দাদার কল্যানে চিকিৎসা বিষয়ক ব্যয় বা চিন্তা কোনোটাই আমাকে করতে হল না। শুধু রাতে পালা করে তিন ভাই থাকতাম বাবার কাছে; পিজি হাসপাতালে। থাকতে হয় বলে থাকতাম। বাবার সঙ্গে তো খাতির ছিল না। <br />
আমি জানতাম, বাবাও আমার খোজখবর রাখেন না। আমিও রাখি না। <br />
একদিন বাবা আমার দুনিয়াটা কাঁপিয়ে দিলেন। গভীর রাতে ফিরেছি হাসপাতালে। আমাকে দেখে মেজদা চলে গেল দাদার বাসায়। বাবা ঘুম; আমার তাই মনে হয়েছিল। <br />
আমি চুপি চুপি পাশের বেডে ঘুমাতে যাচ্ছি; বাবার কণ্ঠ পেলাম, ‘কাবার্ডের মধ্যে একটা বক্সে পায়েস রাখা আছে। খেয়ে নিও। বড় বৌ (আমার বৌদি) এনেছে।’<br />
আমি বললাম, ‘আপনি খাননি কেন?’<br />
বাবা একটু ইতস্তত করে বললেন, ‘না। তুমি পায়েসটা ভালো খাও তো। তাই রেখে দিলাম।’<br />
আমার চেনা বাবার জগতটা মিথ্যে হয়ে গেল। <br />
আমি পায়েস ভালো খাই সবাই জানে। আমার মা জানে সবার চেয়ে বেশি। আমার বন্ধুরা জানে, আত্মীয়স্বজন জানে। কিন্তু বাবার তো জানার কথা না। তিনি তো আমার নামই মনে রাখতে পারেন না!<br />
বাবা কি করে জানলেন আমার পায়েস ভালো খাওয়ার কথা?<br />
প্রশ্নটা করা হয়নি। ভেবেছিলাম, একদিন চুপি চুপি জিজ্ঞেস করবো। তার আগে বাবার কাকুতিতে তাকে বাড়ি নিয়ে যাওয়া হল। <br />
একদিন ভোর রাতে ফোন এলো, বোড়ি যেতে হবে। বুঝলাম, বাবা নেই। শেষ বেলায় নাকি আমার নাম করে ডাকছিলেন। <br />
বাবা আমার নাম জানতেন! বাবা আমার পছন্দ জানতেন!<br />
অথচ আমার বাবাকে জানা হল না। বাবাকে প্রশ্নটা করা হল না। <br />
রহস্যটা রেখে চলে গেলেন বাবা। <br />
<br />
[একই বিষয় নিয়ে কাছাকাছি গদ্যে বাবা দিবসে প্রথম আলোয় একটি লেখা লিখেছিলাম। সেই লেখার কোনো কপি আমার কাছে নেই।]দেবব্রত মুখোপাধ্যায়http://www.blogger.com/profile/10351018961072501066noreply@blogger.comtag:blogger.com,1999:blog-374060266804648478.post-86296512373174601522011-07-19T04:10:00.000-07:002011-07-19T04:11:36.219-07:00গান<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhMz7yFSPYiDjlZDprjPa775G9Ods_p-PsHfANUbvAP3OZULnTch1cw4wPX9ZSo8nGbso7pz4FSfL-T-HJoPRNZpS0ggdsxuWCcpfaYHJKvmcghcIYESU3fxpquez9gafv0DrS1Uohw34c/s1600/Notundhara-Logo.jpg" imageanchor="1" style="clear:left; float:left;margin-right:1em; margin-bottom:1em"><img border="0" height="60" width="200" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhMz7yFSPYiDjlZDprjPa775G9Ods_p-PsHfANUbvAP3OZULnTch1cw4wPX9ZSo8nGbso7pz4FSfL-T-HJoPRNZpS0ggdsxuWCcpfaYHJKvmcghcIYESU3fxpquez9gafv0DrS1Uohw34c/s200/Notundhara-Logo.jpg" /></a></div><br />
<br />
<b>আজ (১৯ জুলাই) সাহিত্যপত্র নতুনধারায় প্রকাশিত আমার গল্প। </b><br />
<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEh3-Pc0hi5mzs969vHpLQ4MoKjxVQ8K5Vp-ZeuVE18smWpklK1R3Kw56wREYWORYHL4Anll2WC8fGh4ciqd1gp2VRdNE_oj7L_EInEBZ9n9TWpr5anEw5X_b0vwTsE1jSrfmhpw_iixqag/s1600/regular-harmonium_10735867_250x250.jpg" imageanchor="1" style="clear:left; float:left;margin-right:1em; margin-bottom:1em"><img border="0" height="200" width="200" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEh3-Pc0hi5mzs969vHpLQ4MoKjxVQ8K5Vp-ZeuVE18smWpklK1R3Kw56wREYWORYHL4Anll2WC8fGh4ciqd1gp2VRdNE_oj7L_EInEBZ9n9TWpr5anEw5X_b0vwTsE1jSrfmhpw_iixqag/s200/regular-harmonium_10735867_250x250.jpg" /></a></div><br />
<br />
সোহরাব সাহেব স্কুল থেকে ফিরছিলেন। সাইকেলেই স্কুলে যাতায়াত করেন তিনি। ফেরার পথে বাজার থেকে দুই তাড়া লাল শাক আর শস্তায় পেয়ে একভাগ কুচো চিংড়ে কিনে ফেলেছেন। <br />
বাজারটা পার হতেই হঠাৎ দেখা দীলিপবাবুর সঙ্গে। সঙ্গে সঙ্গে সোহরাব সাহেব হিসেব করতে চেষ্টা করলেন, আজ সকালে কার মুখ দেখে ঘুম ভেঙেছিল তাঁর। মনে করতে পারলেন না। তবে লোকটা যেই হোক সে কুফা নিঃসন্দেহে। কুফা না হলে এই ভর সন্ধে বেলা মাছ-শাক কিনে ফেরার পথে দীলিপবাবুর সঙ্গে দেখা হবে কেন!<br />
দীলিপবাবু অবশ্য অর্ন্তযামী নন। ফলে সোহরাব সাহেবের মনে মনে এই ভুত দেখার মত অনুভুতি হওয়াটা তিনি বুঝতে পারলেন। তিনি দেখলেন সোহরাব সাহেবের হাসি হাসি আন্তরিকতা ভরা মুখটা। আর শুনলেন, ‘কি দীলিপ, আছ কেমন? কলেজতথে ফিরলে কহনে?’<br />
এমন সদালাপের ব্যাপ্তি বড়ই হওয়ার কথা। দীলিপবাবুও যথারীতি এ কথা, ও কথায় সোহরাব সাহেবের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময়ের পর চলে আসলেন আসল কথায়, ‘তা সোহরাবদা কী বাড়ির পথ ধইরলে নাকি? এহনই বাড়ি যেইয়ে করবানে কী? ওর চেইয়ে আমাগো দিক চল’। <br />
আতকে উঠলেন সোহরাব সাহেব। তাহলে আশঙ্কাই সত্যি হল। একটা অজুহাত দাড় করানোর চেষ্টা করলেন, ‘তা যাতি তো পারতাম। কিন্তু এই যে একভাগ মাছ কিনিছি.. এহনই না ফিরলি তো পইচে যাবেনে।’<br />
‘ওয়া নিয়ে চিন্তা কইরো না। দেহি তোমাগো দিক কেডা যায়, তার হাতে পাঠায়ে দিচ্ছি।’-মুহুর্তে মাছের টোপলা নিয়ে রাস্তার ওধারে উধাও দীলিপবাবু। একটু পরেই একগাল হাসি সমেত হাজির, ‘এই দেহ, কাদের ভাই তোমাগো বাড়ির পরেতথেই ফেরবে। কাদের ভাইর হাতে ধরায়ে দেলাম।’ <br />
এমন সমাধানের পর আর কথা চলে না। এরপরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য দীলিপবাবু কাদেরকে পিছন থেকে ডাক দিয়ে বললেন, ‘কাদের ভাই, মাছের টোপলা তুমি বৌদির হাতে তুলে দিয়ে তারপর যাইও।’ <br />
ব্যাস। কুচো চিংড়ির ব্যপারটা নিশ্চিত! কিন্তু সোহরাব সাহেবের মাথায় তখন আর কুচো চিংড়ি নেই, আছে শুধু ছাড়া পাওয়ার চিন্তা। নিজের কয়েক শ বারের অভিজ্ঞতায় জানেন রাত গভীর না হওয়া পর্যন্ত দীলিপবাবুর হাত থেকে মুক্তি নেই। হা করে দীলিপবাবুর ভাঙ্গা হারমোনিয়ামের সঙ্গে গাওয়া, ‘আমার সকল দুঃখের প্রদীপ’ জাতীয় গান শুনতে হবে। আর মাঝে মাঝে সমঝদারের মত বলতে হবে, ‘এই জায়গাটা তো চমৎকার তুলিছো দীলিপ!’<br />
দীলিপ বাবু একজন শিল্পী; রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী। রবীন্দ্রনাথের ওপর তার বিশেষ টান। পারলে রবীন্দ্রনাথের নাটকে অভিনয় করতেন, রবীন্দ্রনাথের কবিতা আবৃত্তি করতেন। তা পারেন না দীলিপবাবু। শুধু গান করেন। রেডিও, টিভিতে না; নিজে নিজেই গান করেন। বন্ধু বান্ধবকে, এলাকার লোকজনকে সে গান শোনান। সবাই যে দীলিপবাবুর গান খুব আগ্রহের সঙ্গে শোনেন তা নয়। বরং বলা চলে বেশিরভাগ লোকই দীলিপবাবুর গানের হাত থেকে পালিয়ে বাঁচতে চান। <br />
পালিয়ে বাঁচার ব্যাপারটা দীলিপবাবু একেবারেই বুঝতে পারেন না তা না। তবে, বিষয়টাকে তিনি পাত্তা দেন না। পাত্তা দিলে তাঁর চলে না। কারন তাকে তো গান শোনাতে হবে। তিনি একজন শিল্পী।<br />
দীলিপবাবুর এহেন মরিয়া গান শোনানোর চেষ্টার কাছে তাই এলাকার একটু সমঝদার, অসমঝদারদের পালানোর চেষ্টা একেবারেই জলে যায়। যেমন গেল সোহরাব সাহেবের চেষ্টা। শেষ পর্যন্ত দীলিপবাবু যখন ছাড়লেন, তখন আর সোহরাব সাহেবের চৈতন্য বলতে কিছু অবশিষ্ট নেই। বাড়িতে ফেরার পর কুচো চিংড়ির বদলে যে মুখ ঝামটা জুটবে, সে সম্পর্কেও সোহরাব সাহেবের আর ভাবার শক্তি নেই। কেবল দীলিপবাবুদের বাড়ি থেকে বের হয়ে বললেন, ‘আল্লাহ! এই আপদ শুধু আমার ঘাড়েই ওঠে কেন?’<br />
এ কথাটা অবশ্য সোহরাব সাহেব অন্যায় বললেন। এই আপদ অনেকের ঘাড়েই ওঠে। আসলে অনেকে তো মনে করেন দীলিপবাবুর সঙ্গীতসাধনা যত না গান ভালোবেসে, তার চেয়ে অনেক বেশি মানুষ জ্বালানোর জন্য। এ কথার পে যুক্তিও আছে, উদাহরনও আছে।<br />
এই যে সেবার বাড়িতে কোন উপল ছাড়াই তিন দিন, চার রাত ধরে মাইক বাজালেন দীলিপবাবু; এর কারন কী? একমাত্র মানুষকে জ্বালানো ছাড়া আর কোন কারন থাকতে পারে বলে মনে হয় না। অবশ্য দীলিপবাবুর এই কাজের পেছণে অকাট্য একটা যুক্তি ছিল, ‘আসলে সোহরাবদা বুইঝলে, আমার টেপ রেকর্ডারটা তো ভাঙা। সাউন্ড হয় না ঠিক মত। রবীন্দ্রনাথের গানের কথাগুলো বোঝা যায় না। তাই মন ভইরে গান শোনার একটা ব্যবস্থা করলাম।’<br />
এই ব্যবস্থা করতে গিয়ে দীলিপবাবুর সাধের ইন্ডিয়ান হিরো সাইকেলটা বেচে দিতে হল। তারপরও আক্কেলের মাইকের দোকানে তার চল্লিশ টাকা বাকি থেকে গেল। সে চল্লিশ টাকা পাওয়ার আশা অবশ্য আক্কেল ছেড়ে দিয়েছে। <br />
দীলিপবাবুর সব কারবারই যে এমন জনবিরক্তিকর তা না। এলাকার যত ইংলিশ প্যান্টপড়া ছেলে-মেয়েদের কাছে দীলিপবাবু একজন জীবন্ত বিনোদন। একেকবার এদের আনন্দের জন্য একেটা আজব বস্তু তৈরি করে ফেলেন তিনি। একবার কোথা থেকে শিখে এলেন হ্যারিকেন আর রঙ্গীন কাগজ দিয়ে বায়েস্কোপ বানানো। <br />
শীতের সন্ধে বেলা দীলিপবাবুর বানানো সেই বায়েস্কোপ দেখে শুধু ইংলিশ প্যান্টপরা ছেলে-মেয়েরা না, বাড়ির বৌরাও বিরাট আমোদ পেল।<br />
দীলিপবাবু ইতিহাসে সবচেয়ে আলোড়ন তৈরি করলেন চাড়িতে ভেসে। পুরোনো পেপারে এক রাশিয়ান লোকের বড় পাত্রে করে নদী পাড়ি দেওয়ার খবর পড়ে আইডিয়াটা মাথায় এসেছিল তার। হাট থেকে কিনে নিয়ে এলেন বিশাল এক চাড়ি। এই চাড়ি ব্যবহার করা হয় গরু-মোষকে খাবার দেওয়ার কাজে। <br />
মাটির সেই পাত্র এবার খাবারের বদলে ধারন করলো দীলিপবাবুকে। নদী তো আশে পাশে নেই। তাই ভেসে পড়লেন তিনি নিজেদের বড় পুকুরেই। বেশ ভালোই চলছিল। হঠাৎ পাশ ফিরতে গিয়ে, কি কিছুৃ একটা হয়ে উল্টে গেল দীলিপবাবুর সেই বাহন। পুকুর পাড়ে রীতিমত ভীড় জমে গেল দীলিপবাবুর সেই ভাসা দেখতে।<br />
ভীড় জমারই কথা। একে তো চাড়িতে ভাসার মত ঘটনা রোজ রোজ ঘটে না। তারওপর আবার বিএ পাশ এক আধবুড়োর এই আজব চেষ্টা। এলাকায় রীতিমত ইতিহাস! <br />
ভালোই চলছিল এভাবে দীলিপবাবুর। একটু বেশি বয়সে হলেও বিএ পাশ করে দীলিপবাবু বেশ কাটিয়ে দিচ্ছিলেন। বাবা যা রেখে গেছেন তাতে পায়ের ওপর পা রেখে চলে না। কিন্তু ভাইদের প্রশ্রয়ে আর মায়ের ‘ও ছোটো মানুষ কী করবে’ টাইপের কথাবার্তার কারনে দীলিপবাবুর গায়ে এই ইহজাগতিক কোন প্রভাব পড়তে পারছিল না। হঠাৎ সব ভেস্তে গেল। বিয়ে হয়ে গেল দীলিপবাবুর।<br />
বিয়েটা দীলিপবাবুর কাছে ‘হঠাৎ’। <br />
কিন্তু বাড়ির লোকজনের আসলে বেশ আগে থেকে নেওয়া প্রস্তুতির একটা ফসল। বয়স পয়ত্রিশ-ছত্রিশ পার করে ফেলার পরও দীলিপবাবু নিজে বিয়ে নিয়ে একটুও আগ্রহী ছিলেন না। বরং বিয়ের প্রস্তাব এলে নিজের অনাগ্রহ প্রকাশে যা করার সবই করতেন। কিন্তু এবার আর কোন বাধাতে কাজ হল না। <br />
আসলে দীলিপবাবুকে রাজী করাতে তার মাও একটু অভিনয় করে দেখালেন। একদিন রাতে বেশ মরো মরো একটা ভাব করে বললেন, ‘ও দীলিপ, আমার তো আর সময় নেই। তুই এট্টা বিয়ে কর। তোর বৌ দেহে মরি’। <br />
মাতৃভক্ত দীলিপবাবু সিনেমার নায়কের মত চোখ মুছতে মুছতে বললেন, ‘ও মাইজদা তোমরা মাইয়ে দেহ। আমি বিয়ে করবো।’<br />
ব্যাস দীলিপবাবুর বিয়ে হয়ে গেল। রবীন্দ্রসঙ্গীত, বায়েস্কোপ, চাড়ি নিয়ে মেতে থাকা দীলিপবাবু খেয়ালও করলেন না যে, তার সম্মতির পরদিনই তার পাকা দেখা হয়ে গেল। প্রশ্নটা তার মাথাতেই এল না যে, এই রাতের মধ্যে মেয়ে দেখে পছন্দ করা হল কখন। এমনকি বিয়ের সাত বছর পরও সেই মরো মরো মা যখন মরলেন না তখনও দীলিপবাবু ভেতরের নাটকটা ধরতে পারলেন না। আসলে দীলিপবাবুর এসব নাটক ধরার কোন ইচ্ছেও ছিল না। তার নিজের জগতটা ঠিক থাকলেই চলে।<br />
তা আর রইল কই? বিয়ের পরই দীলিপবাবুর জীবনে প্রথম পরিবর্তন এলো, বদলে ফেলা হল তার টেপরেকর্ডার। নতুন বৌ বাপের বাড়ি থেকে স্টেরিও সিডি সেট নিয়ে এসেছে। তার রেকর্ডারের জায়গা হয় না ঘরে। পাটাতনে উঠে গেল দীলিপবাবুর সিঙ্গেল রীড হারমোনিয়াম। <br />
কয়েকমাসের মধ্যেই দীলিপবাবুকে দেখা গেল, ধার দেনা করে কেনা একটা সাইকেলে চেপে সোহরাব সাহেবের পাশে পাশে স্কুলে যেতে। ওই স্কুলে বাংলার মাস্টার হিসেবে একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন সোহরাব সাহেব।<br />
বদলে গেলেন দীলিপবাবু। আর আগের মত সন্ধ্যা বেলায় গানের আসর বসে না। বায়েস্কোপ চলে না। চাড়িতে ওঠা হয় না। সবই করেন দীলিপবাবু মনে মনে। সকাল-সন্ধ্যা এখন দীলিপবাবুকে ধারের হিসেব করতে হয়। রাত পোহালে কোথায় কোন কিস্তি হিসেব করতে হয়। শুধু দেনা আর দেনা। <br />
দেনাটাও খুব বেশি বড় একটা সমস্যা না। দীলিপবাবুর এইসব দেনাটেনা নিয়ে তেমন দুশ্চিন্তায় ভোগেন না। এসব তাকে তেমন কাবু করতে পারে না। তারপরও দীলিপবাবু ইদানিং বড় কাবু হয়ে আছেন। কাবু হয়ে আছেন তিনি বৌয়ের ধাতানিতে। রাতদিন, উঠতে-বসতে বৌটা তার মুখ ঝামটা দেয়। কথায় কথায় খ্যাচ করে ওঠে। সারাজীবন অনেক মানুষকে জ্বালাতন করেছেন, কিন্তু এমন ধাতানি এর আগে দীলিপবাবুকে সহ্য করতে হয়নি। <br />
বিয়ের একটা বছর যেতে না যেতেই এই ধাতানির চোটে জীবনের ওপর থেকে দীলিপবাবুর টান উঠে গেল। দোচালা ঘরের বারান্দায় বসে বসে ভাবছিলেনÑকি হবে এই জীবন দিয়ে। বলা বাহুল্য, রবীন্দ্রনাথের কোনো একটা লাইন মিলিয়ে ভাবছিলেন। <br />
রবীন্দ্রনাথ ফট করে পালিয়ে গেলেন। রান্নাঘর থেকে বৌয়ের গলা শোনা গেল, ‘শোনো চুপ কইরে বইসে থাইয়ে না। স্কুলি যায়ার আগে এট্টু বাজারে যাও। চাইল আনতি হবে। আর মাইয়েডার জন্যি এট্টা কলম আইনো দি। আর আইজ কিন্তু নিতাইগো বাড়ির সমিতিতি কিস্তি আছে।’<br />
দীলিপবাবু এক ছাত্রের খাতায় চোখ বোলাতে বোলাতে বিড় বিড় করে জবাব দিয়েছিলেন, ‘মনে আছে। সব কইরে ফেরবানে।’<br />
এই জবাব শুনে বৌ আরও চটে গেল। এবার তার গলা মনে হয় এক উঠোন ওপাশে বড়দার ঘর থেকেও শোনা গেল, ‘হ। তুমি কি কইরে ফেরবানে, তা তো আমার জানা আছে। কি তোমার মুরোদ! সারাদিন পইড়ে পইড়ে খাবা আর স্কুলে যাইয়ে ভংচং করবা।’<br />
এই কথার তো কোনো উত্তর হয় না। তাই দীলিপবাবু চুপ মেরে রইলেন। তারপরও বৌয়ের গজগজ কমলো না, ‘একদিন আমি না থাকলি দেখতাম, কি কইরে খাও! ছেলাম আমি আর এহন আছে শহীদ ভাই। এই দু জনের জন্যি দুটো খাচ্ছো।’<br />
শহীদ ভাইয়ের নাম শুনে দীলিপবাবু জ্বলে উঠলেন। ইদানিং শহীদের নাম শুনলেই তার মাথা গরম হয়ে যায়। নিতান্ত ভদ্রলোক বলে কিছু বলতে পারেন না। নতুবা শহীদ যা শুরু করেছেন, তাতে তারে শক্ত একটা মাইর দেওয়াটা নিতান্ত পূন্যের কাজ। এমনকি দীলিপবাবু পারলে শহীদকে খুনও করে ফেলতে পারতেন।<br />
শহীদ আগে দীলিপবাবুর বন্ধু ছিল। বন্ধু ঠিক বলা যায় না; দু জনে একসঙ্গে কলেজ পাশ দিয়েছেন। দীলিপবাবুকে সেই স্কুল জীবন থেকে নানাভাবে অপদস্ত করাতেই শহীদের প্রধান আনন্দ ছিল। এখন তার প্রধান আনন্দ দীলিপবাবুর বৌয়ের ফাইফরমাস খেটে দেওয়ায়। <br />
শুধু ফাইফরমাস খাটা নয়। সংসারে কি হবে, না হবে; কোন জিনিসটা কেনা হবে, বেচা হবে; সবই ঠিক করে এখন শহীদ। দীলিপবাবু চালের বস্তার মতো বারান্দায় পড়ে খাতা দেখেন। আর ঘরের মধ্যে শহীদ আর দীলিপবাবুর বৌ মিলে সংসারের সব ঠিক করে। ঠিক করে কোন সমিতি থেকে আর কতো লোন তুললে একটা ফ্রিজ কেনা যায়!<br />
মাঝে মাঝে দীলিপবাবুর মনে হয়, সংসারটা ঠিক তার না; বোধহয় শহীদের। মাঝে মাঝে মনে হয়, বৌটা ঠিক তার নয়; শহীদের। রোজ এই শহীদের গল্প আর ঠাট্টা শুনতে আর ভালো লাগে না। নিজেরে আসলেই চালের বস্তা মনে হয়। <br />
উঠোনে এসেই শহীদ দীলিপবাবুকে দেখে জোরে হাক দেয়, ‘কিরে চালের বস্তা। বাড়ি আছিস? তোর আর থাহা...’<br />
দীলিপবাবু চিরকালই একটু মোটাসোটা। আগে নিজেকে কখনো চালের বস্তা মনে হত না। শহীদ এখন রোজ তিন-চার বার বলায় মনে হচ্ছে। কিন্তু এভাবে চালের বস্তা হয়ে বাচতে তো আর ভালো লাগে না। দীলিববাবু একা একা ভাবেন, কি করবেন? খুন করবেন?<br />
সঙ্গীতপ্রেমী দীলিপবাবু খুনের কথা পর্যন্ত ভেবে ফেলছেন!<br />
আজ সকাল বেলায় উঠে শহীদের এই ডাক শুনে দীলিপবাবুর মনে হল, খুন একটা করা দরকার। সবচেয়ে ভালো হত, শহীদকে খুন করে ফেলতে পারলে। কিন্তু সেটা কিভাবে হবে? শহীদের বাবা চেয়ারম্যান। তারে খুন করে দীলিপবাবু পার পাবেন না। <br />
তারপরও রাগের মাথায় একদিন হয়তো খুন করে ফেলতে পারতেন। তার আগেই প্লানটা মাথায় চলে এলোÑখুন করতে হবে বৌকে। <br />
তার বৌয়ের বাবা তো চেয়ারম্যান না। বৌ খুন করলে খুব বড় কোনো ঝামেলা নেই। অবশ্য খুন হিসেবে ধরা পড়লে ফাসি হয়ে যাবে। দীলিপবাবুর আপাতত ফাসিতে ঝোলার একদম ইচ্ছে নেই। আরও বছর কয়েক গান করে যেতে চান দীলিপবাবু। আরেকবার উঠোনে মাইক বাজাতে চান। <br />
অতএব খুনটা হতে হবে একেবারেই খুনের মতো কিছু না। এমন খুন কি করা যায়, যা দেখলে খুন মনে হবে না? এই প্রশ্নটা নিয়েই ইদানিং আছেন দীলিপবাবু। প্রশ্নটা তো সবাইকে করে বেড়ানো যায় না। তাই একা একাই উপায় খুজছিলেন। উপায় হয়ে গেল। <br />
উপায়টা যে হয়ে গেল, তার কৃতিত্ব শহীদের। শহীদের উদ্যোগে বাড়িতে ভিসিআর, কালার টেলিভিশন কেনা হয়েছে। সেই ভিসিআরে দেখার জন্য রোজ বাংলা, হিন্দি, ইংরেজী সিনেমা আনা হয়। ইংরেজী সিনেমাটা শহীদ বা বৌ দেখে না। শুধু ইংরেজী সিনেমাটা টেনে টেনে দেখে; কি যেন খোজে আর হাসে। <br />
শহীদ চলে গেলে, বৌ ঘুমিয়ে পড়লে দীলিপবাবু মাঝে মাঝে ভিসিআরে সিনেমা দেখেন। নিজে মাঝে মাঝে অমিতাভের সিনেমা নিয়ে আসেন, সেগুলো দেখেন। সেদিন অমিতাভের সিনেমা ছিল না। তাই একটা ইংরেজী সিনেমা দেখছিলেন। <br />
এবার বুঝলেন দীলিপবাবু, এই সিনেমায় কি খোজে শহীদরা। তাতে দীলিপবাবুর রাগ হল না। তিনি বরং সিনেমাটার কাহিনীতে মজা পেয়ে গেলেন। অন্য একটা জিনিস আবিস্কার করে ফেললেন; যা খুজছিলেন তিনিÑকিভাবে প্রমান না রেখে খুন করা যায়। <br />
উপায়টা সোজা, একটা রাসায়নিক লাগবে। এটা দীলিপবাবুদের স্কুলের ল্যাবে আছে। নামটা লিখে রাখলেন দীলিপবাবু। এখন কাজটা খুব কঠিন কিছু না। স্রেফ কোনো একটা খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হবে। একটা গাছ দিয়ে তৈরি হয় রাসায়নিক এই গুড়োটা। <br />
জিনিসটা পেটে গেলে মৃত্যু নিশ্চিত; কিন্তু পোস্টমর্টেমে কিচ্ছু ধরা পড়বে না। হলিউডের পরিচালক যখন সিনেমায় দেখিয়েছে, আর সন্দেহ নেই। ধরা দীলিপবাবু পড়বেন না। <br />
দিন তিনেক লেগে গেল জিনিসটা হাতাতে। এখন একটা সুযোগের অপেক্ষা। সুযোগটাও আসবেই। দীলিপবাবুর বৌয়ের আবার পেটে গোলমাল আছে। রোজ রাতে ইশপগুলের ভুসি খান; ওতে এক ফাকে মিশিয়ে দিতে পারলেই হয়। কখন মেশাবেন, এই হল ঝামেলা। <br />
আজই কাজটা করে ফেলবেন। বুদ্ধি হয়ে গেছে। স্কুলথেকে আর বাজারের আড্ডায় যাবেন না, সোহরাবদার সঙ্গে গল্প হবে না। আগে আগে চলে আসবেন বাড়ি। কেউ টের পাওয়ার আগে রান্নাঘরে গিয়ে ভুসির গ্লাসে জিনিসটা মিশিয়ে দিতে হবে। রান্নাঘরে পেছন দিক দিয়ে ঢোকা জলের মতো কাজ। <br />
সাইকেলটা উঠোনে রেখে রান্নাঘরে ঢুকে পড়লেন দীলিপবাবু। ঘর থেকে ভিসিআরের শব্দ শোনা যাচ্ছে। ইংরেজী ছবি চলছে। একটু হাসির শব্দও শোনা যাচ্ছে। গ্লাসটা পেয়ে গেছেন দীলিপবাবু। মাত্র জিনিসটা গ্লাসে মিশিয়ে দিলেন, অমনি কারেন্ট চলে গেল। <br />
একটু চমকে উঠলে দীলিপবাবু। ওরা বেরিয়ে আসবে না তো?<br />
না। ঘরের ভেতর থেকে হাসির শব্দ শোনা যাচ্ছে। হঠাৎ শহীদের গলা শোনা গেল, ‘একটা গান গাও না বৌদি।’<br />
খিল খিল হাসির আওয়াজ উঠল। আহা, এই হাসি দীলিপবাবু কোনোদিন দেখেননি, শুনেছেন, শহীদের সঙ্গে। একটু আদুরে গলায় বৌ বললো, ‘আমি তো গান ভুলে গেছি।’<br />
‘গান শিখলে কেউ ভোলে নাকি? তুমি গাও।’<br />
বৌ কি গান করতে পারে! এ তো জানতেন না দীলিপবাবু। গ্লাসটা হাতে নিয়ে গানের জন্য অপেক্ষা করছেন। আবার একটু আপত্তি করলো বৌ, আবার জোর করলো শহীদ। <br />
বৌ বললো, ‘দাড়ান। হারিকেনটা জ্বালি।’<br />
শহীদের গলা শোনা গেল, ‘থাক। অন্ধকারেই গান করো।’<br />
একটু সময় সব চুপ। দীলিপবাবুর বৌ গান শুরু করলেনÑআমার সকল দুঃখের প্রদীপ....। <br />
শিউরে উঠলেন দীলিপবাবু, এ যে রবীন্দ্র সঙ্গীত! <br />
বৌ গান জানে; রবীন্দ্রসঙ্গীত জানে! দীলিপবাবুর জগত কেপে উঠল। তার মনে আর খুন নেই, আর নিজেকে চালের বস্তা মনে হচ্ছে না দীলিপবাবুর; বৌ তার রবীন্দ্রসঙ্গীত জানে!<br />
এ কী করছিলেন দীলিপবাবু! একজন শিল্পীকে খুন করছিলেন! আর তার কোনো রাগ নেই। আর কোনো ঘেন্না নেই কারো ওপর। ক্ষমা করে দিয়েছেন দীলিপবাবু। একজন শিল্পী হয়ে আরেকজন শিল্পীর ওপর রাগ রাখতে নেই। বড় করে একটা নিঃশ্বাস নিলেন। ঘাম দিয়ে যেন জ্বর ছাড়ল। গলাটা শুকিয়ে গিয়েছিল। <br />
হাতের গ্লাসে কি আছে খেয়াল না করেই ঢক ঢক করে গিলে ফেললেন ইশপ গুলের ভুসি। <br />
শিল্পী মানুষ তোÑএটুকু ভুল হতেই পারে।দেবব্রত মুখোপাধ্যায়http://www.blogger.com/profile/10351018961072501066noreply@blogger.comtag:blogger.com,1999:blog-374060266804648478.post-67114484981143689532011-07-16T23:32:00.000-07:002011-07-16T23:32:15.631-07:00চোখের জল শুকিয়ে গেছে<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhJPdPUhfv3VqxoWbQc_sBMda2Kt1QzD0nmuPbIoHgAxHnpZvWU1He8yOnXKqyzuVpH34yH_9T559qBXfMS__xKXzfVTvWa4cvU9xIV6x39K9CIKtdf3zJrR7r4apjJ2q-i0H86lCLDz6s/s1600/Untitled.jpg" imageanchor="1" style="clear:left; float:left;margin-right:1em; margin-bottom:1em"><img border="0" height="142" width="200" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhJPdPUhfv3VqxoWbQc_sBMda2Kt1QzD0nmuPbIoHgAxHnpZvWU1He8yOnXKqyzuVpH34yH_9T559qBXfMS__xKXzfVTvWa4cvU9xIV6x39K9CIKtdf3zJrR7r4apjJ2q-i0H86lCLDz6s/s200/Untitled.jpg" /></a></div><br />
১৯৯০ সাল থেকে বিশ্বকাপ দেখি। বুঝে দেখি না, দেখি আর কী।<br />
তখন ভালো ফুটবল, মন্দ ফুটবল; কিচ্ছু বুঝতাম না। হা করে গোল দেখতাম। ফলে আর্জেন্টিনা কি ফুটবল খেলে ফাইনালে উঠেছিল, ফাইনালে কেমন ফুটবল খেলেছিল মনে নেই। শুধু মনে আছে একজন মানুষের কান্না। <br />
খুব কাছে পেয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ট্রফি ছোয়া হল না বলে একজন মহামানবের কান্নার কথা মনে আছে। <br />
মনে আছে একা একা একটা দলকে ফাইনালে তুলে এনে বিচারকের পক্ষপাতের কাছে সব হারানোর একজন মানুষ হাউ মাউ করে কাঁদছেন। সেই আসলে আমার আর্জেন্টিনা বিষয়ক প্রথম শক্ত কোনো স্মৃতি। আর্জেন্টিনাকে আমি প্রথম ভালো করে চিনেছিলাম সেই মানুষটি, সেই ডিয়েগো ম্যারাডোনার কান্নার ভেতর দিয়ে।<br />
কেন যেন কিছু না বুঝেই সেদিন ওই মানুষটির সঙ্গে তাল মিলিয়ে কেদেছিলাম। <br />
তারপর থেকে আর্জেন্টিনার জন্য কান্না অভ্যেসে পরিণত হয়ে গেছে। তারপর থেকে সবসময় আমি আর্জেন্টিনার জন্য কাঁদি। আর এই লাতিন দেশটির ফুটবলারগুলোও এমন নিষ্ঠুর, সবাইকে কাদানোতেই যেন ওদের সবচেয়ে বড় শান্তি। <br />
সেদিনের পর থেকে একটিবারও আর্জেন্টিনার হয়ে হাসার সুযোগ করে দেয়নি ওরা। আর্জেন্টিনার সুন্দর ফুটবল দেখে গর্ব করতে পেরেছি, আর্জেন্টিনার গোল উৎসব দেখে আনন্দে নেচে উঠতে পেরেছি, আর্জেন্টাইন কোনো খেলোয়াড়ের জাদু দেখে বুকটা ভরে গেছে; কিন্তু শেষ পর্যন্ত কাঁদতেই হয়েছে। <br />
এর মধ্যে ১৯৯৩ সালে বাতিস্তুতারা একবার কোপা জিতেছিলেন। বলতে লজ্জা নেই, মফস্বলের ছেলে, তখন কোপা-টোপা বোঝার উপায় ছিল না। তখন ফুটবল মানে বিশ্বকাপ। আর বিশ্বকাপ মানে কান্না। ১৯৯৪ সালে ম্যারাডোনা কাঁদিয়েছেন, ১৯৯৮ সালে ওর্তেগা। ২০০২ সালে আর্জেন্টিনার ‘সর্বকালের সেরা দল’ প্রথম রাউন্ড থেকে মাথা নিচু করে বিদায় নিল; আমরা কাঁদলাম। <br />
২০০৪ সালের কোপায় স্যাভিওলাদের দেখলাম ফাইনালে ব্রাজিলের সঙ্গে সমানে সমান টক্কর দিয়ে ২-২ গোলে ড্র করতে। আবার কাঁদতে হল পেনাল্টি শুটআউটে। দু বছর পর, ২০০৬ বিশ্বকাপে মনটাই ভরে গেল।<br />
জার্মানিতে কী ফুটবলটাই না খেললো আর্জেন্টিনা! রিকেলমে, তেভেজ, রদ্রিগেজ, ক্যাম্বিয়াসো; সঙ্গে পিচ্চি একটা ছেলে লিওনেল মেসি। পুরো বিশ্বকাপটা চরকির মতো নিজেদের পায়ে নাচাচ্ছিল ওরা।<br />
লাভ নেই। সেই কোয়ার্টার ফাইনালে এসে জার্মানির বিপক্ষে আবার কান্না। ২০০৭ সালে ভাবলাম বুঝি কান্নার শেষ হল। এবার কোপাটা অন্তত কেউ নিতে পারবে না। ব্রাজিল খোড়াতে খোড়াতে ফাইনালে উঠল। আর তুঙ্গফর্মের রিকেলমে ও মেসির কাছে ফাইনালের পথে সব দল স্রেফ উড়ে গেল। <br />
ফাইনালে কি হল? ৩-০; ব্রাজিলের পক্ষে রেজাল্ট!<br />
২০১০ বিশ্বকাপের আগে ভেবেছিলাম, এবার আর কান্না-টান্না লাগবে না। কোচ ম্যারাডোনা যেমন লেজে গোবরে করে ফেলেছেন, তাতে দল প্রথম পর্বই পার হতে পারবে না। কিন্তু ওই যে বললাম, ওদের মধ্যে একটা নিষ্ঠুরতা আছে। সেই নিষ্ঠুরতা প্রকাশের আগে কোত্থেকে যেন অমানুষিক একটা সৌন্দর্য এসে ভর করে আর্জেন্টাইনদের ওপর। <br />
সেই সৌন্দর্যের জালে আবার বাধা পড়লাম। মেসি একটাও গোল পেলেন না; কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত বিশ্বকাপের সেরা আকর্ষন হয়ে রইলেন মেসি, সেরা দল আর্জেন্টিনা, সবচেয়ে আকর্ষনীয় কোচ ম্যারাডোনা!<br />
তাদের পরিণতি আর মনে করিয়ে দেব!<br />
আর কাঁদতে ইচ্ছে করে না। এবার কোপায় ভেবেছিলাম একই কথা। যে নোংরা ফুটবল প্রথম দু ম্যাচে খেললো, তাতে এদের জন্য চোখের জল ফেলা যায় না। কিন্তু কষ্ট তো দিতেই হবে। তাই কোস্টারিকার বিপক্ষে জাদু ভর করল। আমরা আর্জেন্টাইনদের নিষ্ঠুরতার কথা ভুলে গিয়ে আবার আশায় বুক বাঁধলাম। <br />
মাঝ রাতে উঠে চোখে জল দিয়ে আবার স্বপ্ন দেখেতে বসলাম। পিছিয়ে পড়ল দুর্দান্ত খেলতে থাকা আর্জেন্টিনা। মেসির পাস থেকে হিগুয়েইন সমতা ফেরালেন। আর গোল হয় না। হিগুয়েইনের আচমকা শট বিস্ময়কর ভাবে ফেরায় উরুগুয়ের কিশোর গোলরক্ষক, মেসি শেষ মুহুর্তে ফিনিশ করতে ভুলে যান, হিগুয়েইনের আরেক শট ফেরে পোস্টের কোনায় লেগে। আমরা ভাবি, এমন ঝড়ো আক্রমনে গোল একসময় আসবেই। আসে না গোল। খেলা চলে যায় সেই পেনাল্টি শুট আউটে। ভয়ে বুক কাপে: ২০০৪, ২০০৬ সালের কথা মনে পড়ে যায়। <br />
তারপরও আবার আশা পাই। মাচেরানো লাল কার্ড দেখায় আর্মব্যান্ড এখন মেসির হাতে। ভাবি, ঈশ্বর এই চেয়েছিলেন। বলেছিলেন, এক ম্যারাডোনা তোদের কাদিয়ে শেষ করেছিল এক পর্ব। আরেক ম্যারাডোনার হাতে তোদের ভাগ্য দিলাম সপে। <br />
হায় রে ভাগ্য। চার জন আর্জেন্টাইন পেনাল্টি শুটআউটে গোল করলেন। তারপরও কাঁদতে হল। কে কাঁদালেন। <br />
আর্জেন্টিনায় এখন সবচেয়ে জনপ্রিয় ফুটবলার, জিপসি কার্লোস তেভেজ; আমাদের কার্তিলোজ। <br />
কাঁদতেও যেন ভুলে গেছে আর্জেন্টাইনরা।<br />
অভিশাপও দিতে পারি না। <br />
এরা যে সব ফুটবল ঈশ্বরের উত্তরসুরী। ঈশ্বরের সন্তানদের কিভাবে অভিশাপ দেই!দেবব্রত মুখোপাধ্যায়http://www.blogger.com/profile/10351018961072501066noreply@blogger.comtag:blogger.com,1999:blog-374060266804648478.post-48326930832854534852011-07-13T21:03:00.000-07:002011-07-13T21:03:37.398-07:00আমাদের ধনী খেলোয়াড়রা<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgltW-QXsItYiOZIAlxcZDPPPlGbiH1BGIQBM5qRKS7bYuRnfwnlZcpTTaO6kEZnlSOAf4H_H1g81M4jwFFrnZBxQW9GatTkMpR_mIV4EXcuUWdH7A9RwF_Iku1wvoLMWsmFDd_TUzDbYA/s1600/2010-11-01__sports06.jpg" imageanchor="1" style="clear:left; float:left;margin-right:1em; margin-bottom:1em"><img border="0" height="152" width="200" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgltW-QXsItYiOZIAlxcZDPPPlGbiH1BGIQBM5qRKS7bYuRnfwnlZcpTTaO6kEZnlSOAf4H_H1g81M4jwFFrnZBxQW9GatTkMpR_mIV4EXcuUWdH7A9RwF_Iku1wvoLMWsmFDd_TUzDbYA/s200/2010-11-01__sports06.jpg" /></a></div><br />
সিদ্দিকুর রহমানের বড় শখ, টাইগার উডসের সঙ্গে দেখা করবেন। এবার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস বাগড়া না দিলে হয়তো সদ্য শেষ হওয়া ইউএস ওপেনেই সাক্ষাত্ হয়ে যেত। সে না হোক; একটা জায়গায় উডসকে ছুঁয়ে ফেললেন সিদ্দিকুর। বিশ্বাস হচ্ছে না?<br />
টাইগার উডস এখন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি উপার্জনকারী খেলোয়াড়। আর সিদ্দিকুর রহমান এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি উপার্জনকারী খেলোয়াড়। ফলে সিদ্দিকুরকে ‘বাংলাদেশের টাইগার উডস’ তো বলতেই পারেন। অন্তত আয়ের বিবেচনায়।<br />
ছোটবেলায় জানতাম, খেলতে হলে টাকা ব্যয় করতে হয়। ক্লাবের চাঁদা দিতে হয়, ফুটবল কেনার জন্য টাকা দিতে হয়; আরও কত কী! মোট কথা খেলা মানে পকেটের টাকা ব্যয়। আর এখন বুঝতে পারছি, খেলা মানে আয়!<br />
আয় মানে কত টাকা? সে কথা শুনে আর কাজ নেই। টাইগার উডস, কোবি ও’ব্রায়েনরা নাকি বছরে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার কামাচ্ছেন স্রেফ খেলাধুলা করে! মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার বুঝতে পারছেন? বাংলায় টাকা করলে কোটি কোটি টাকা বললেও কুলাবে না।<br />
আচ্ছা, দেশের বাইরে যাওয়ার দরকার কী? আমাদের দেশে ও রকম বিলিয়ন ডলার আয় করে ফেলা খেলোয়াড় এখনও জন্মাননি। তাই বলে একেবারে সবাই খালি হাতে বসে আছেন, এমন ভাবারও কারণ নেই। এ বাংলাদেশেরই বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় এখন বছরে কোটি টাকার ওপর আয় করছেন।<br />
এ পর্যন্ত সব জানা কথা। সবাই মোটামুটি অনুমান করতে পারি, বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা এখন ভালোই আয় করেন। কিন্তু সেটা কত? আর দেশের কোন খেলোয়াড় সবচেয়ে বেশি আয় করেন?<br />
বৈশ্বিকভাবে এ ধরনের যেসব তালিকা তৈরি হয়, তা করে সাধারণত ‘ফোর্বস’ বা ‘ফরচুন’ ধরনের কোনো পত্রিকা। এদের তালিকা দেখে আমরা বুঝতে পারি, এ বছরের শীর্ষ উপার্জনকারী খেলোয়াড় কে? কিন্তু বাংলাদেশে এ রকম কোনো উদ্যোগ তো নেই। তাই নিজেদেরই একটা উদ্যোগ হাতে নিতে হল।<br />
খুব ভুল হয়েছিল কাজটা। উদ্যোগটা হাতে নিয়েই দেখা গেল, নানারকম তথ্য সঙ্কট। প্রায় কোনো ধরনের নিশ্চিত তথ্যই হাতে পাওয়া যায় না। তারপরও কাজটা শেষ করতে হল। বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া হিসাবগুলো মিলিয়ে একটা তালিকা দাঁড় করানো হল।<br />
হিসাব দাঁড় করানো শেষ হতে আমরা আবিষ্কার করলাম, বাংলাদেশের শীর্ষ উপার্জনকারী দেশের এক নম্বর গলফার সিদ্দিকুর রহমান। সর্বশেষ বছরে তার মোট আয় ছিল প্রায় সোয়া ৪ কোটি টাকা। ৩ কোটি ৬০ লাখ টাকার সামান্য বেশি নিয়ে বছরে দ্বিতীয় সেরা উপার্জনকারী হলেন বাঁহাতি অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। সিদ্দিকের পর সেরা পাঁচে পরের চারটি নামই চার ক্রিকেটারের। বাকিরা হলেন-মাশরাফি বিন মর্তুজা, তামিম ইকবাল ও মোহাম্মদ আশরাফুল।<br />
তালিকা তো জানলেন। এবার হিসাব পদ্ধতি নিয়ে দু কথা বলা যাক। আয়ের হিসাব করতে গিয়ে প্রধান যে ঝামেলাটা পোহাতে হয়েছে, সেটা দুনিয়ার সব হিসাবকারী প্রতিষ্ঠানকেই পোহাতে হয়-বিজ্ঞাপন ও পৃষ্ঠপোষকের হিসাব। পৃথিবীর কোনো খেলোয়াড়েরই এ হিসাবটি পরিষ্কার করে প্রকাশ করা হয় না। <br />
তবে বাইরের দেশগুলোতে সুবিধা হল, প্রত্যেক খেলোয়াড়ের একজন এজেন্ট থাকেন। যারা হিসাব করতে চায়, তারা লোক লাগিয়ে ওই এজেন্টের অফিস থেকে একটা হিসাব বের করে ফেলে। আমাদের এখানে ও রকম ডেডিকেটেড এজেন্টের কোনো বালাই কারও নেই।<br />
ফলে এ ক্ষেত্রে খানিকটা অনুমান ও খানিকটা সরাসরি বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলোর সাহায্য নিতে হয়েছে। বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলো তাদের নৈতিক কারণেই কোনো খেলোয়াড়ের প্রকৃত আয় প্রকাশ করে না। ফলে আমাদেরও ‘সোর্স’ থেকে পাওয়া আনুমানিক হিসাব দিতে হয়েছে।<br />
খেলে সরাসরি খেলোয়াড়রা যে টাকা পান, এটাও জানাটা এক মুশকিল। গলফার সিদ্দিকুরের ক্ষেত্রে এ সমস্যা ছিল না। তার প্রতিটি টুর্নামেন্টে পাওয়া পুরস্কারের অর্থ পরিষ্কার উল্লেখ করা আছে এশিয়ান টুরের ওয়েবসাইটে। কিন্তু ঝামেলা হল ক্রিকেটারদের আইপিএল ও কাউন্টি চুক্তি নিয়ে।<br />
আইপিএল থেকে সাকিব, মাশরাফি ও আশরাফুল বছরে ঠিক কত টাকা পেয়েছেন, কত টাকা ট্যাক্স হিসেবে কেটে রাখা হয়েছে-ব্যাপারগুলো পরিষ্কার নয়। তারপরও মূল নিলামে যে টাকা বলা হয়েছিল, তার থেকে সাধারণ আয়কর বিয়োগ করে হিসাবটা করা হল।<br />
আরও মুশকিল হল সাকিবের কাউন্টি আয়ের হিসাবটা বের করতে গিয়ে। কাউন্টিতে তো আর নিলাম হয় না, যে এর কোনো ডকুমেন্টস পাওয়া যাবে। কাউন্টি কর্তৃপক্ষ কখনই তাদের সঙ্গে খেলোয়াড়ের চুক্তির অর্থপরিমাণ প্রকাশ করে না। তার ওপর সমস্যা হল, ওখানে টাকা দেওয়া হয় সপ্তাহ হিসাবে। তারপরও ইংল্যান্ডের কিছু সূত্র এবং সাকিবের কিছু ইঙ্গিত কাজে লাগানো হল।<br />
পরের ঝামেলা হল, খেলোয়াড়দের বিসিবি ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে আয়। সংশ্লিষ্ট চার খেলোয়াড়ই এ-প্লাস বেতনভুক্ত ক্রিকেটার। ফলে তাদের বেতন জানাটা খুব কঠিন কাজ ছিল না। চারজনের বেতনই কাছাকাছি। সঙ্গে বছরে ৩০-এর বেশি ম্যাচ খেললে মাসিক বেতন ৫ হাজার টাকা করে বাড়বে এবং অধিনায়ক ও সহঅধিনায়ক কিঞ্চিত বেশি বেতন পান।<br />
এটুকু হিসাব একরকম পরিষ্কার। কিন্তু ঝামেলা হল ম্যাচ ফি, পুরস্কার ও বোনাসের টাকা। ম্যাচ ফি নির্ধারিত, কিন্তু পুরস্কার বোনাস বিভিন্ন সময় ও টুর্নামেন্ট অনুযায়ী বিভিন্ন হয়ে থাকে। ফলে এ হিসাব কোনো খেলোয়াড় নিজে রেখে না থাকলে, কারও কাছে থাকা অসম্ভব। কোনো ক্রিকেটার সেই হিসাব গুছিয়ে রাখবেন এবং কাছে গেলে তালিকাটা বের করে দেবেন; সেটা আশা করা একটু বাড়াবাড়ি হয়ে যায়। এ ব্যাপারে বিসিবির একটি সূত্র, সামান্য সহযোগিতা করে আনুমানিক একটা অঙ্ক দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।<br />
এবার আসুন আসল ঝামেলায়-ক্রিকেটারদের লিগ আয়। ক্রিকেটাররা কে কোন দলে কত টাকায় খেলতে নামছেন, এটা মৌসুমের আগে বেশ চাউর হয়ে যায়। ঝামেলা হল, সেই অঙ্কটা মৌসুম শেষে ঠিক থাকে না। অনেক সময় কম, বিরল ক্ষেত্রে বেশি টাকাও দেওয়া হয়। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে সরাসরি টাকা না দিয়ে বাড়ি-গাড়ি দেওয়ারও নজির রয়েছে। তাহলে আমরা হিসাবটা করব কী দেখে? আমরা সরল পথ নিয়েছি। প্রথমে যে টাকায় ক্রিকেটারের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল, সেটাই হিসাবে নেওয়া হয়েছে।<br />
এই তো গেল অঙ্কগুলো উদ্ধার করার হ্যাপা। কিন্তু ঝামেলা এখানেই শেষ নয়। তালিকা করতে বসে আরেকটা সমস্যায় পড়া গেল-আমরা কোন বছর ধরে হিসাবটা করব। শুধু ২০১০ সালের অ্যাওয়ের হিসাব করা যেত। কিন্তু তাতে ঝামেলা হল, ক্রিকেট মৌসুম ব্যাপারটা হয়ে থাকে দুই বছর মিলিয়ে; মানে প্রায় অর্থবছরের মতো।<br />
আমরা তাই অর্থবছরকে অনুসরণ করলাম। তাতে একটা সুবিধা পাওয়া গেল, হিসাবটা এ সদ্য শেষ হওয়া জুন মাসের ৩০ তারিখে ‘ক্লোজ’ করা গেল। আবার অসুবিধাও হল। আইপিএল তো অর্থবছরে হয় না। এটা হয় ইংরেজি পঞ্জিকা অনুযায়ী। এবার সমস্যা হল, মাশরাফি-আশরাফুল ২০১০ পর্যন্ত আইপিএলে ছিলেন। তাদের পুরো ওই বছরের আয় কি আমরা হিসাবে নেব?<br />
আবার সাকিব সদ্য শেষ হওয়া আইপিএলে খেলে এসেছেন। তার আয় কি এ হিসাবে ঢুকবে? এ ক্ষেত্রে তিনজনেরই বার্ষিক আয়কে অর্ধেক করে এ হিসাবে যোগ করেছি। ভাগ্যক্রমে, তিনজনের কেউ ২০১০ ও ২০১১ দুই মৌসুমেই আইপিএলে ছিলেন না। তাহলে হিসাবটা আরও জটিল হয়ে যেত।<br />
এতক্ষণে সম্ভবত আমাদের হিসাব প্রক্রিয়াটা খানিকটা বোঝানো গেছে। এবার আমরা একটু শীর্ষ আয়কারীদের আয়টা খতিয়ে দেখি।<br />
প্রথমেই সিদ্দিকুর রহমান। এ বেচারার বাড়তি আয় বলে তেমন কিছু নেই। ২০১০ সালের জুলাই থেকে শুরু করে এ বছরের গত মাসে কুইনস কাপ পর্যন্ত সিদ্দিক বিভিন্ন টুর্নামেন্ট খেলে ৫ লাখ ৬ হাজার ৬২২ ডলার আয় করেছেন। বাংলাদেশি টাকায় যার অর্থ দাঁড়ায় প্রায় ৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এটাই সিদ্দিকুরের মূল উপার্জন। সঙ্গে কিছু টাকা আসে তার পৃষ্ঠপোষক সংস্থা গ্রামীণফোন থেকে।<br />
এ সংস্থার সঙ্গে সিদ্দিকুরের চুক্তি দ্বিমুখী। একটা বার্ষিক চুক্তি আছে, সঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও বিজ্ঞাপনের আলাদা প্রাপ্তি। যতদূর জানা গেছে, এ সংস্থা থেকে গড়ে বছরে লাখ তিরিশেক টাকা পেয়ে থাকেন সিদ্দিকুর।<br />
এক নম্বরের ব্যাপারটা সহজ। সমস্যা শুরুই হল দ্বিতীয় স্থান থেকে। বিসিবি সূত্র বলছে, সাকিবের বার্ষিক বেতন ১৭ লাখ টাকার কাছাকাছি। ম্যাচ-ফি ও বোনাস মিলিয়ে গত অর্থবছরের সময় পেয়েছেন প্রায় ৩০ লাখ টাকা। লিগে মোহামেডান থেকে ৩৫ লাখ টাকার কাছাকাছি পেয়েছেন বলে গুঞ্জন। কাউন্টি থেকে গত মৌসুমে সাকিবের আয় ছিল প্রায় ৩৬ লাখ টাকা।<br />
বাকি রইল আইপিএল ও বিজ্ঞাপন। আইপিএল থেকে সাকিব বছরে প্রায় ৩ কোটি টাকা পেয়ে থাকেন। যেহেতু তার আইপিএল অভিযান ২০১১ সালেই শুরু হয়েছে, তাই আমরা এ হিসাবে তার এক বছরের আয়ের অর্ধেককে অন্তর্ভুক্ত করেছি। বাকি রইল বিজ্ঞাপন।<br />
বিজ্ঞাপন থেকে ঠিক কত টাকা গেল বছরে আয় করেছেন সাকিব? এ প্রশ্নের উত্তর কারও কাছেই নেই। খোদ সাকিবের কাছেও এর কোনো নির্দিষ্ট হিসাব নেই। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসেবে বার্ষিক আয় আছে। আছে বিজ্ঞাপনপ্রতি আয়, আছে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার আয়।<br />
এসব আয়ের ব্যাপারে ভালো খোঁজখবর রাখেন এ রকম একজন বললেন, ‘সাকিব বড় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পেপসি, টিভিএস, ইউসিবির মতো কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আছে। তামিম ও সাকিব দুজনেরই বিজ্ঞাপন ও এনডোর্সমেন্ট অনুসরণ করার অভিজ্ঞতা থেকে আমি বলতে পারি, দুজনেরই এ বাবদ বার্ষিক আয় প্রায় ১ কোটি টাকা করে।’<br />
আমরা এ সংখ্যাটি গ্রহণ করে যোগ-বিয়োগ করে দেখেছি সাকিবের গত বছরে মোট আয়ের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। প্রায় একই রকম একটি হিসাব করে মাশরাফির আয় দেখা যাচ্ছে ৩ কোটি ৪০ লাখ টাকার কাছাকাছি।<br />
বেতন-টেতন একই রকম ধরা হয়েছে। যদিও ম্যাচ ২০১০-১১ মৌসুমে খুব বেশি খেলেননি। তারপরও ম্যাচ-বোনাস মিলিয়ে মাশরাফির আয়ও ওই ২০ লাখ টাকার কাছাকাছি বলে ধরা হয়েছে। এ মুহূর্তে ইনজুরিতে ঘরে বসে থাকলেও বিজ্ঞাপনদাতারা মুখ ফিরিয়ে নেননি মাশরাফির দিক থেকে। পেপসিসহ বিভিন্ন সংস্থা থেকে বছরে ৭০ লাখ টাকার কাছাকাছি আয় আছে তার।<br />
মাশরাফি আবাহনীতে ইনজুরির জন্য মাত্র গোটা তিনেক ম্যাচ খেললেও ক্লাব থেকে পেয়েছেন প্রায় ২৫ লাখ টাকা। এবার আইপিএলের হিসাব। গত বছর পর্যন্ত কলকাতা নাইট রাইডার্সের সঙ্গে চুক্তিটা ছিল মাশরাফির। সেখান থেকে বছরে তার প্রাপ্তি ছিল ৪ কোটি টাকা। গত জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সে ক্ষেত্রে তার খাতায় ২ কোটি টাকা জমা হয়েছে বলে ধরে নেওয়া যায়।<br />
তামিম ইকবালের ক্ষেত্রে এসব আইপিএল-কাউন্টি জটিলতা নেই। তিনি কাউন্টি খেলতে গিয়েছেন এ মৌসুমে। যেটা আমাদের হিসাবকালের সময়ে আসবে না। ফলে তার বেতন, ম্যাচ ফি ও বোনাস, মোহামেডান থেকে পাওয়া প্রায় ৩৫ লাখ টাকা মূল হিসাবে আসছে। সঙ্গে বিজ্ঞাপনবাবদ তার আয় ছিল প্রায় ১ কোটি টাকা।<br />
তালিকায় সর্বশেষ নামটি একটু বিস্ময় জাগানিয়া-মোহাম্মদ আশরাফুল। এখন ফর্মে নেই বলে একটু ‘আউট সাইডার’ বলে মনে হচ্ছে। তারপরও মনে রাখতে হবে আশরাফুলকেও এ তালিকায় ঢুকিয়ে দিয়েছে আইপিএল। আইপিএল থেকে আশরাফুলের এ সময়ে আয় ছিল প্রায় ৫৪ লাখ টাকা। এছাড়া লিগ থেকে আয় ছিল লাখ বিশেক।<br />
বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে আশরাফুলের ব্যাপারটা একটু রহস্যময়। তিনি বললেন, তার আপাতত বিজ্ঞাপন থেকে কোনো আয় নেই। কিন্তু সূত্র বলছে, বর্তমানে আলাদা কোনো এনডোর্সমেন্ট আশরাফুলের না থাকলেও ২০১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিল। সে হিসাবে ওই ছয় মাসে প্রায় ৩০ লাখ টাকার মতো তার বিজ্ঞাপন থেকে আয় ছিল।<br />
পুরো লেখাটি পড়ে পরিষ্কার হয়ে যাওয়ার কথা, এ হিসাবগুলো নিরেট কিছু নয়। অনেক অনুমান, গোপন খবর ও সম্ভাবনা এ হিসাবে নেওয়া হয়েছে। যদিও পাঠক সান্ত্বনা পেতে পারেন, বিশ্বব্যাপী এ রকম হিসাব করার ক্ষেত্রে অনুমান-সম্ভাবনা-গোপন খবরকে গণনায় নেওয়া হয়।<br />
আমরাও সে পদ্ধতিতে এগিয়েছি। তবে কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে হিসাবে ত্রুটি-বিচ্যুতি বিশ্বের অন্যসব জায়গার চেয়ে বেশি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। সঙ্গে উল্লেখ করা প্রয়োজন, এ হিসাবে বিভিন্ন মহল থেকে পাওয়া প্লট-ফ্ল্যাটসহ বিভিন্ন উপঢৌকনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। সেগুলো আবার মূল হিসাবকে প্রভাবিত করতেও পারে।<br />
আসলে এতসব আলোচনার তো কোনো অর্থই হয় না। <br />
আসল ব্যাপার, খেলোয়াড়রা এখন আয় করছেন। একটা সময় ছিল, আমাদের দেশের খেলোয়াড়রা টাকার জন্য ফেডারেশন-বোর্ডের মুখে চেয়ে থাকতেন। আজ কিছুটা হলেও দিন বদলেছে।<br />
আশা করা যাক, এক দিন এ রকম আয় অল্প কয়েকজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। দেশের অধিকাংশ ক্রীড়াবিদ নানা খাত থেকে এমন অর্থের মুখ দেখবেন।জুন ২০১০ থেকে জুন ২০১১<br />
<br />
শীর্ষ পাঁচ খেলোয়াড়ের বার্ষিক আয়<br />
সিদ্দিকুর রহমান<br />
প্রাইজমানি ৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা প্রায়<br />
বিজ্ঞাপন ও পৃষ্ঠপোষক ৩০ লাখ টাকা (আনুমানিক)<br />
..................................................................<br />
মোট ৪ কোটি প্রায়<br />
<br />
সাকিব আল হাসান<br />
বিসিবি বেতন ১৭ লাখ টাকা প্রায়<br />
ম্যাচ ফি ও অন্যান্য ৩০ লাখ টাকা (আনুমানিক)<br />
বিজ্ঞাপন ও পৃষ্ঠপোষক ১ কোটি টাকা (আনুমানিক)<br />
লিগ ৩৫ লাখ টাকা<br />
কাউন্টি ৩৬ লাখ টাকা প্রায়<br />
আইপিএল ১ কোটি ৫০ লাখ<br />
..................................................................<br />
মোট ৩ কোটি ৬৮ লাখ প্রায়<br />
<br />
মাশরাফি বিন মর্তুজা<br />
বিসিবি বেতন ১৭ লাখ টাকা প্রায়<br />
ম্যাচ ফি ও অন্যান্য ২০ লাখ টাকা (আনুমানিক)<br />
বিজ্ঞাপন ও পৃষ্ঠপোষক ৭০ লাখ টাকা (আনুমানিক)<br />
লিগ ২৫ লাখ টাকা<br />
আইপিএল ২ কোটি টাকা প্রায় <br />
(এক মৌসুমের অর্ধেক ধরে)<br />
...................................................................<br />
মোট ৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা (প্রায়)<br />
<br />
তামিম ইকবাল<br />
বিসিবি বেতন ১৭ লাখ টাকা প্রায়<br />
ম্যাচ ফি ও অন্যান্য ৩০ লাখ টাকা (আনুমানিক)<br />
বিজ্ঞাপন ও পৃষ্ঠপোষক ১ কোটি টাকা (আনুমানিক)<br />
লিগ ৩৫ লাখ টাকা<br />
...................................................................<br />
মোট ১ কোটি ৮২ লাখ টাকা প্রায়<br />
<br />
মোহাম্মদ আশরাফুল<br />
বিসিবি বেতন ১৭ লাখ টাকা প্রায়<br />
বিজ্ঞাপন ৩০ লাখ টাকা (বর্তমানে নেই)<br />
ম্যাচ ফি ও অন্যান্য ৩০ লাখ টাকা (আনুমানিক)<br />
লিগ ২০ লাখ টাকা<br />
আইপিএল ৫৪ লাখ টাকা<br />
...................................................................<br />
মোট ১ কোটি ৫১ লাখ টাকাদেবব্রত মুখোপাধ্যায়http://www.blogger.com/profile/10351018961072501066noreply@blogger.comtag:blogger.com,1999:blog-374060266804648478.post-12191864674082429842011-07-11T20:34:00.000-07:002011-07-11T20:38:38.797-07:00ডিয়েগোর প্রত্যাবর্তন<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhAJY4g2wJ_MUl2uX9ZJWP1T5JFI2hh4gZyrHu5fxKDlbADFfkDAfP3fVdmB1Acq-kRyxDEawBH8s5vRalEnoPZT0ntRrbY8vsJuL5zqYJoW9kc_RMhCL94qFhKJIsRj2rjJomX5GSnw6Q/s1600/copa_shooting_blanks_pi_rf_071011_20110711015906472_660_320.JPG" imageanchor="1" style="clear:left; float:left;margin-right:1em; margin-bottom:1em"><img border="0" height="97" width="200" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhAJY4g2wJ_MUl2uX9ZJWP1T5JFI2hh4gZyrHu5fxKDlbADFfkDAfP3fVdmB1Acq-kRyxDEawBH8s5vRalEnoPZT0ntRrbY8vsJuL5zqYJoW9kc_RMhCL94qFhKJIsRj2rjJomX5GSnw6Q/s200/copa_shooting_blanks_pi_rf_071011_20110711015906472_660_320.JPG" /></a></div><br />
ছিয়াশির আর্জেন্টিনা দলে কি সব ক জন ‘ক্রেজি’ ফুটবলার ছিলেন নাকি! <br />
আজও বাতিস্তার শেষ সময়ের আচরণ দেখে কথাটা মনে হল। আবার সেই লাভেজ্জি এবং একেবারেই আনকোরা এক বিগিলাকে মাঠে নামানোর দুঃসাহস দেখালে ভদ্রলোক। <br />
তবে আপাতত লোকটির ওপর রাগ ঝেড়ে ফেলতে হচ্ছে যে, অবশেষে নিজের একগুয়েমি থেকে সরে এসে হলেও আর্জেন্টিনার এখনকার সম্ভাব্য সেরা একাদশকে মাঠে নামালেন। ছেলেমানুষী না করে হিগুয়েইন, আগুয়েরো, ডি মারিয়া ও গ্যাগোকে সেরা একাদশে খেলালেন। <br />
ফলটা কি হল?<br />
আপাত দৃষ্টিতে আর্জেন্টিনার ৩-০ গোলের জয়।<br />
আসলে এই ম্যাচে আর্জেন্টিনার প্রাপ্তি লিওনেল মেসির খেলা।মেসি-আগুয়েরো-ডি মারিয়া কম্বিনেশনে মারাত্মক বোঝা পড়া। আবারও বলি, সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি মেসিকে আর্জেন্টিনার করে পাওয়া। <br />
তর্কস্বাপেক্ষে এটা বলা যায় যে, আর্জেন্টিনার হয়ে ক্যারিয়ারের সেরা ম্যাচটা খেললেন বিশ্বসেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি। <br />
বিশ্বকাপে আমরা নাইজেরিয়া, গ্রিসের বিপক্ষে মেসির কিছু ঝলক দেখেছি। তারপরও সেটা বার্সেলোনার মেসি ছিলেন না। কালও বার্সেলোনার পিক ফর্মের মেসি বলতে যা বোঝায়, তা হয়তো হলেন না। <br />
সোজা হিসাব, সেটা হলেতো গোল পেতেন। কিন্তু যা করলেন, বার্সেলোনাতেও এমন কাণ্ড খুব একটা করেণ না। অন্তত ১৩ থেকে ১৫টি বল বাড়িয়েছেন, যেগুলো থেকে গোল হওয়া সম্ভব ছিল; এর মধ্যে ৩টি গোল হয়েছে। <br />
বাকিগুলো না হওয়ার জন্য কিঞ্চিত দায় হিগুয়েইন ও শেষ পর্যায়ে লাভেজ্জির; কিছুটা ভাগ্যেরও। এসব হিসাব কোনো কাজের কথা নয়। <br />
কথা হল, পুরো ম্যাচকে নিজের পায়ে মাতাতে থাকা এক মেসিকে পাওয়া গেল; যেটা আর্জেন্টাইনরা চায়। <br />
কেন পাওয়া গেল? একটু খেলাটা বিশ্লেষন করে দেখা যাক। <br />
লিওনেল মেসি বার্সেলোনায় যে জায়গায় খেলেন, বাতিস্তা নির্বোধের মতো সেই ফরোয়ার্ড পজিশনেই আর্জেন্টিনায় তাকে খেলাচ্ছিলেন। আরে ভাই, সে ক্ষেত্রেতো মেসিকে বল দেওয়ার জন্য জাভি-ইনিয়েস্তা চাই।<br />
আপনার দলে জাভি-ইনিয়েস্তা কে? দুই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার ক্যাম্বিয়াসো আর বানেগা! ফাউল!!<br />
কাল যেটা হল মেসিকেই নামিয়ে আনা হল প্লে-মেকারের জায়গায়। তার সামনে ঠেলে দেওয়া হল আগুয়েরো ও হিগুয়েইনকে। বাতিস্তা মেসি কি জিনিস এটা বুঝতেই পারেননি; আমার মাঝে মাঝে সন্দেহ হয়, এই লোক স্প্যানিশ লিগের খেলা দেখে কি না!<br />
আরে মেসি তো আগে প্লে-মেকার। বার্সেলোনার পজেশনে খেলাতে সমস্যা হলে তাকে এখানে নামিয়ে নিন। কাল নামানোর সঙ্গে সঙ্গে ফল। প্রতিটা বল মাঝ মাঠে ধরলেন আর ত্রাস তৈরি করে বল বাড়িয়ে দিলেন বক্সে। <br />
এখানেই আগুয়েরো আর হিগুয়েইনের কৃতিত্ব। প্রথম ম্যাচে এরকম নিচে নেমে কয়েকবার বল বাড়িয়েছিলেন। কিন্তু তেভেজ তা পেলে আর পাসিং করেন না এবং লাভেজ্জির সে বল ধরারই ক্ষমতা নেই। <br />
এখানেই হিগুয়েইন এক পা এগিয়ে গেলেন।গোল করতে পারেননি। কিন্তু এই রিয়াল স্ট্রাইকার প্রতিটি থ্রু-তে জায়গায় ছিলেন। ফলে প্রতিবারই আক্রমন জমেছে। <br />
আর সেরা কাজটা করেছেন আগুয়েরো। মেসি বল দিয়েই সমানে মেসি-আগুয়েরো-হিগুয়েই-ডি মারিয়ার মধ্যে পাসিং করেছেন; তখন মনে হচ্ছিল: বার্সেলোনা। আসলে ওই যোগ্যতাটা থাকা চাই। <br />
গাছ থেকে যোগ্যতা পড়ে না। চারটে আক্রমনভাগের খেলোয়াড়; চারটেই স্প্যানিশ শীর্ষ দলে খেলে। পাসিং এরা করতে পারবে না তো, ইতালির বাতিল লিগের খেলোয়াড়রা করবে এসে!<br />
যাই হোক, অনেক মন্দ কথা বলেছি। <br />
বাতিস্তার জন্য একটুও শুভ কামনা নেই। দল ভালো করুক। <br />
কিন্তু শিরোনামের কি হল? <br />
আগের দিন লিখেছিলাম: ফিরে আসুন ডিয়েগো। আজ লিখলাম: ডিয়েগোর প্রত্যাবর্তন!!<br />
কই?<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgYX861U-CwtsMF8XhTPl3Vfqps0t-ryTTI4h-L0zjmmqpJCQi_RFabEiPJZDEmEMJR-hhBuv16n8JMxFdmSrdojkthGwaYoG15DDq2oZhsXYVBo-BlfUR7SBdJ93-53D9xX5P1lJApKJk/s1600/Argentina%252Bv%252BMexico%252B2010%252BFIFA%252BWorld%252BCup%252BRound%252BRBkNNN8wuqol.jpg" imageanchor="1" style="clear:left; float:left;margin-right:1em; margin-bottom:1em"><img border="0" height="200" width="120" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgYX861U-CwtsMF8XhTPl3Vfqps0t-ryTTI4h-L0zjmmqpJCQi_RFabEiPJZDEmEMJR-hhBuv16n8JMxFdmSrdojkthGwaYoG15DDq2oZhsXYVBo-BlfUR7SBdJ93-53D9xX5P1lJApKJk/s200/Argentina%252Bv%252BMexico%252B2010%252BFIFA%252BWorld%252BCup%252BRound%252BRBkNNN8wuqol.jpg" /></a></div><br />
<br />
আপনি দেখেননি! আমি দেখেছি। মাঠে নব্বই মিনিট ধরে আমি ডিয়েগোর ছায়া দেখেছি। আমি নিশ্চিত খেলোয়াড়দের সঙ্গে ফোনালাপ তাদের উজ্জীবিত করেছে। <br />
দ্বিতীয় গোল করার পর আগুয়েরো যেভাবে গিয়ে মেসিকে জড়িয়ে ধরলেন, তাতে স্পষ্ট দেখতে পেলাম: ডিয়েগো পাশে দাড়িয়ে তৃপ্তির হাসি হাসছেন। <br />
তার মানসপুত্র ও তার জামাতা এভাবে জুটি বাধলে সেখানে ডিয়েগো না থেকে পারেন!!!!দেবব্রত মুখোপাধ্যায়http://www.blogger.com/profile/10351018961072501066noreply@blogger.comtag:blogger.com,1999:blog-374060266804648478.post-69056271038937076562011-07-06T23:26:00.000-07:002011-07-06T23:26:41.993-07:00ফিরে আসুন ডিয়েগো<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhg7ypL2_rkF496hJLm29buTQ3TnYb969xphrX1wq9EN-7wuz10zG2AawK9eW1ipN2lI7B1vTAKuRt1306vGGtBBeSSEe-C4hRVihizE68u7DGsTcWNmVArG-i7NX5YYJ9LQFY4Bp0kyZQ/s1600/maradona_1654268c.jpg" imageanchor="1" style="clear:left; float:left;margin-right:1em; margin-bottom:1em"><img border="0" height="125" width="200" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhg7ypL2_rkF496hJLm29buTQ3TnYb969xphrX1wq9EN-7wuz10zG2AawK9eW1ipN2lI7B1vTAKuRt1306vGGtBBeSSEe-C4hRVihizE68u7DGsTcWNmVArG-i7NX5YYJ9LQFY4Bp0kyZQ/s200/maradona_1654268c.jpg" /></a></div><br />
<br />
২০০২ বিশ্বকাপের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। <br />
লাতিন আমেরিকা জোনের অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন, তখনকার ফিফা এক নম্বর হিসেবে বিশ্বকাপে ‘হটেস্ট ফেবারিট’ হয়ে কোরিয়া-জাপানে এসেছিল আর্জেন্টিনা। <br />
কী সেই দল!<br />
ভেরন, ক্যানিজিয়া, বাতিস্তুতা, ওর্তেগা, আইমার, আয়লা, ক্রেসপো; এদের ভিড়ে সে সময়ের ‘প্রডিজি’ স্যাভিওলার জায়গায় হয়নি ২৩ সদস্যের দলে! তর্কস্বাপেক্ষে আর্জেন্টিনার স্মরণকালের সেরা দল নিয়ে মার্সেলো বিয়েলসা শেষ পর্যন্ত কী করেছিলেন?<br />
ইংল্যান্ডের সঙ্গে হেরে ও সুইডেনের সঙ্গে ড্র করে বিদায় নিয়েছিলেন প্রথম পর্ব থেকে। বিশ্বকাপ ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই পর্বতের মুষিক প্রসবের পর থেকে আর্জেন্টিনায় এক স্থায়ী ভিলেনের নাম: মার্সেলো বিয়েলসার। <br />
সার্জিও বাতিস্তার জন্য কষ্ট লাগছে। এই লোকটিরও পরিণতি কি বিয়েলসার মতো হতে যাচ্ছে!<br />
বিয়েলসারে সঙ্গে বাতিস্তার আরেকটি মিল হল দু জনই একটি করে অলিম্পিক সোনা জিতে এনে দিয়েছেন আর্জেন্টিনাকে। এবং অত্যন্ত শোকের ব্যাপার এই যে, বাতিস্তা ওই সোনার পদকটিকেই দেখিয়ে চলেছেন; আর কিচ্ছুটি তার মধ্যে দেখার মতো আছে বলে মনে হল না। <br />
১৯৮৬ বিশ্বকাপে ম্যারাডোনার এই সতীর্থ খেলোয়াড় হিসেবে আর্জেন্টিনার সেরা শ দুয়েকের তালিকাতেও থাকার কথা নয়। যুব দল নিয়ে কিছু সাফল্য ও ২০০৮ অলিম্পিক সোনার জোরে হয়ে গেলেন ম্যারাডোনার উত্তরসুরী। <br />
ম্যারাডোনা চলে যাচ্ছেন যাচ্ছেন অবস্থায় স্পেনকে ৪-০ গোলে হারিয়ে বাতিস্তা একটা ধারণা তৈরি করলেন যে, তিনি আসলে অনেক বড় কোচ। কোচ হিসেবে বাতিস্তাকে ‘অনেক বড়’ বলা তো দূরে থাক, সাধারণ বলাই এখন কষ্ট। <br />
যে লোকটি তার দলের সেরা খেলোয়াড় কারা এটা চেনে না, তাকে কোচ ভাবাটা কঠিন। আপনি হিগুয়েইন, ডি মারিয়া, আগুয়েরো, মিলিতো, পাস্তোরে, গ্যাগোকে বাইরে রেখে লাভেজ্জি, বানেগা, বেুড়িয়ে যাওয়া ক্যাম্বিয়াসোদের মাঠে নামাবেন; এটা ফাজলামো ছাড়া আর কিচ্ছু না। <br />
প্রতিভা বস্তুটা আজকের দিনে আর গাছে ধরে না। এখন আর সান্তোসে পৃথিবীর অজ্ঞাতে একজন পেলের বেড়ে ওঠার সুযোগ নেই। এখন সান্তোসের নেইমার, গানসোদেরও সবাই চেনে। লাভেজ্জিরা যদি এমন কিছু খেলোয়াড়রই হতেন, রিয়াল মাদ্রিদে না হোক ম্যানসিচি, সাম্পদোরিয়ায় অন্তত দেখা যেত এসব ‘কূলমার্তন্ড’কে। <br />
তা নয়। বাতিস্তা ভাবলেন উনি জহেরতের খনি আবিস্কার করে ফেলেছেন!<br />
খেলোয়াড় নির্বাচনও এই লোকের প্রধান সমস্যা নয়। সে সমস্যা তো ম্যারাডোনারও ছিল। ম্যারাডোনাও জানেত্তিকে বাদে বিশ্বকাপ দল করেছিলেন। গন্ডগোল করে ভেরনকে একাদশে ঠাই দেননি। ম্যারাডোনা-বাতিস্তা কেউই বড় কোচ নয়। <br />
তারপরও ম্যারাডোনা থাকলে অন্তত এই করুন ফুটবল দেখতে হত না। ম্যারাডোনার নামে খাতিরে এবং লোকটির সম্মান রাখতে যাকেই মাঠে নামানো হত, সে একটু জীবন দিয়ে খেলার চেষ্টা করত। যেটা আমরা দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে দেখেছিলাম; হারুক-জিতুক দলটি অন্তত অনুপ্রানিত ছিল। <br />
মেসির আর্ন্তজাতিক ক্যারিয়ারে সম্ভবত একমাত্র ওই দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপেই সে সতস্ফুর্তভাবে খেলেছে। কারণ, নিশ্চয়ই ম্যারাডোনা। বাতিস্তা মেসিকে নিয়ে এতো চাপাবাজি করলেন, অথচ ছেলেটিকে এই দু ম্যাচ দেখে মনে হল, খেলাটা ভুলে বার্সেলোনায় ফেলে এসেছে; এখন খুজে দেখছে কোথায় পাওয়া যায়।<br />
বাতিস্তা মোটিভেটর হিসেবে কতোবড় সর্বনেশে তার প্রমান কার্লোস তেভেজ। তেভেজের ক্যারিয়ারের ৫৯ ম্যাচের মধ্যে অন্তত ৩০টি আর্ন্তজাতিক ম্যাচই দেখেছি। এই অ্যাপাচিকে আমি কোনোদিন এতোটা নিস্প্রভ দেখিনি আকাশী-নীল জার্সি গায়ে। আর্জেন্টিনা ০-৪ গোলে পিছিয়ে তারপরও তেভেজের প্রানান্ত ফুটবল দেখলে মনে হয়েছে, সে একাই ম্যাচ জেতাবে! আর সেই ছেলেটিকে পর্যন্ত বাতিস্তা ‘ম্যারাডোনার চামচা-টামচা’ বলে একেবারে প্রানহীন করে রেখেছে মাঠে। <br />
<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjWckpsND-WRAS6pTHEJyCRou-bvw4iLZOQOh85S_JF4qY3Fw8Rq1xB9_cjl37TzA971vsVDV2PO1PcjVg13tfien6usdjK4StZDwhAsCSoEcHHr2qOg6KRolHcBW5Omxi7SluUHbOGPEg/s1600/Argentina-Colombia_2618780.jpg" imageanchor="1" style="clear:left; float:left;margin-right:1em; margin-bottom:1em"><img border="0" height="150" width="200" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjWckpsND-WRAS6pTHEJyCRou-bvw4iLZOQOh85S_JF4qY3Fw8Rq1xB9_cjl37TzA971vsVDV2PO1PcjVg13tfien6usdjK4StZDwhAsCSoEcHHr2qOg6KRolHcBW5Omxi7SluUHbOGPEg/s200/Argentina-Colombia_2618780.jpg" /></a></div><br />
<br />
<br />
সে যাকগে আমার বাড়িও আর্জেন্টিনায় না; প্রভুর ইচ্ছায় আর্জেন্টিনায় বিয়েও করিনি। ফলে সর্বনাশ ওদের হলে আমার কিচ্ছু না। বাতিস্তা ভিলেন হলে ফল সেই টের পাবেন। আমা কী?<br />
আসলেই আমার কিচ্ছু না! বলি বটে, কিচ্ছু না; কিন্তু আকাশী-নীল জার্সি গোয়ে এই হারতে হারতে ড্র করা আর নিস্প্রান চলা ফেরা দেখলে বুকের কোথায় যেন একটু যন্ত্রনা করে ওঠে। <br />
কোথায় ম্যারাডোনা? ফিরে আসুন, রক্ষা করুন আর্জেন্টিনাকে। ফিরে আসুন ডিয়েগো।দেবব্রত মুখোপাধ্যায়http://www.blogger.com/profile/10351018961072501066noreply@blogger.comtag:blogger.com,1999:blog-374060266804648478.post-88939275909309321242011-07-05T08:39:00.000-07:002011-07-05T08:39:50.079-07:00আরেক জন<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgWpWhoc8Ko4bTjnnnaexfn91RWEgHHMehV2IB_hBGOP1lOPCeLpMVP82WMHJxjFPY6SVh-xdBCPtsVYxJChuk1C-Wquby4tAcaG4_-roYzfNTP7XneEu0bIgHzxr9qvI4TgiWN7RetAVg/s1600/cricketer-more72.jpg" imageanchor="1" style="clear:left; float:left;margin-right:1em; margin-bottom:1em"><img border="0" height="200" width="132" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgWpWhoc8Ko4bTjnnnaexfn91RWEgHHMehV2IB_hBGOP1lOPCeLpMVP82WMHJxjFPY6SVh-xdBCPtsVYxJChuk1C-Wquby4tAcaG4_-roYzfNTP7XneEu0bIgHzxr9qvI4TgiWN7RetAVg/s200/cricketer-more72.jpg" /></a></div><br />
<br />
<br />
বুকে চাপা একটা ব্যথা। নিঃশ্বাস নিতেও যেন কষ্ট হচ্ছে। ধড়মড় করে বিছানায় উঠে বসল সাজিদ, সাজিদ হায়দার। দেয়ালে হেলান দিয়ে বড় বড় করে নিশ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করল। দর দর করে ঘামছে। হাত বাড়িয়ে টেবিল থেকে পানির বোতল টেনে নিল। পর পর দু ঢোক পানি খেয়ে একটু সম্বিত ফিরে পেল। বুঝতে পারল, মরে যাচ্ছে না। আবার সেই স্বপ্নটা দেখেছে। <br />
স্বপ্নটা এমন মারাত্মক কিছু না। ঘটনা শুরু হয় বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচের ঠিক আগে। বাংলাদেশ দলের বাহাতি ওপেনার সাজিদ স্বপ্নে দেখে, ড্রেসিংরুমে পৌছাতে তার দেরী হয়ে যাচ্ছে। তাড়াহুড়ো করে ড্রেসিংরুমের এলাকায়, মানে জোন-ওয়ানে ঢোকার মুখে তাকে আটকে দেয় এক সিকিউরিটির লোক। <br />
ওই লোকটার চেহারা রোজ বদলে যায়। সিকিউরিটির লোকটাকে কোনোদিন বোর্ড প্রেসিডেন্টের মতো দেখা যায়, কোনো দিন কোচ জেমি সিডন্সের মতো। সিকিউরিটির লোকটাকে সাজিদ কিছুতেই বোঝাতে পারে না, সে বাংলাদেশ দলের ওপেনার। তাকে ছাড়া এই খেলা শুরু হতে পারে না। <br />
রোজই সিকিউরিটির লোকটা এই পর্যায়ে হেসে দেয়। ড্রাকুলার মতো মুখ করে সে প্রত্যেক দিন বলে, ‘কে বলে, খেলা শুরু হবে না! ওই দ্যাখেন...’ <br />
লোকটার আঙুল অনুসরণ করে সাজিদ তাকায় ড্রেসিংরুমের বিশাল টেলিভিশনে। দেখতে পায় শুরু হয়ে গেছে বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচ। তার চেয়েও তাজ্জব ব্যাপার, বাংলাদেশ দল ব্যাটিংই বেছে নিয়েছে টসে জিতে। তাহলে সাজিদের বদলে ব্যাট করছে কে?<br />
ঠিক এই সময় প্রতিদিন টেলিভিশনে দুই ওপেনারের মুখ দেখা যায়। সাজিদের দিকে চেয়ে হেলমেটের ফাক থেকে মৃদু মৃদু হাসে সাজিদ। বুকে চাপা একটা ব্যাথা শুরু হয়, ঘুম ভেঙে যায় সাজিদের। <br />
আর দশ জন লোক এই স্বপ্ন দেখলে হয়তো মোটেও আতঙ্কিত হতেন না। কিন্তু সাজিদ কেন যেন খুবই ভয় পাচ্ছে এই স্বপ্ন দেখেÑরোজ কেন সে এই একই স্বপ্ন দেখছে। আমি-আপনি হলে এই ভয় পাওয়ায়ও কিচ্ছু আসতো যেত না। কিন্তু সাজিদ তো জাতীয় দলের ক্রিকেটার। তার ভয় পাওয়ায় অনেক কিছু যায় আসে। <br />
সাজিদকে অবশ্য ঠিক জাতীয় দলের খেলোয়াড় বলা যাবে না। তার এখনও অভিষেক হয়নি। অভিষেকটা হবে পাকিস্তানের বিপক্ষে। আগামী সপ্তাহে ম্যাচ। পনেরো সদস্যের দলে ডাক পেয়েছে সে। এবারের লিগে সাজিদের যে রান আর জাতীয় দলের দুই ওপেনারের যে ফর্ম; তাতে সাজিদের অভিষেকটা এখন সময়ের ব্যাপার।<br />
কিন্তু এই স্বপ্নটা শুরু হওয়ার পর থেকে ব্যাপারটার আর এতো নিশ্চিত নেই। রাতের স্বপ্নে দেখা এই ভয়টা সারাদিন সাজিদের সঙ্গে থাকে। নেটে ব্যাটিংয়ের সময়ও পিছু ছাড়ে না। ফলে লিগের সেই সাজিদকে গত তিন-চার দিন ধরে নেটে ঠিক পাওয়া যাচ্ছে না। <br />
এমনকি এই সেদিন ‘এ’ দলের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচেও মাত্র ২৭ রান করেই বোল্ড হয়ে ফিরে এসেছে সাজিদ। ওই পর্যন্ত স্বচ্ছন্দে ব্যাট করছিল। তারপরই স্বপ্নটার কথা মনে পড়ে গেল। অফস্পিনারের সোজা আসা বলটা কি ভেবে যেন ছেড়ে দিল।<br />
সঙ্গে সঙ্গে সাজিদের নিশ্চিত অভিষেকটায় একটা প্রশ্নবোধক চিহ্ন বসিয়ে দিলেন, মাঠের পাশে বসে থাকা কোচ। ইংরেজীতে প্রধান নির্বাচককে যা বললেন, তার অর্থ এরকম, ‘এই তোমাদের দারুণ পারফরমার! এর চেয়ে তো দলে যারা আছে, ওরা ভালো...’<br />
প্রধান নির্বাচক আমতা আমতা করে বললেন, ‘কিছু একটা সমস্যা হচ্ছে ওর। নইলে এই বলে তো ওর ভুল করার কথা না।’<br />
কোচ-নির্বাচকের এই আলোচনাটা সাজিদ মোটেও শুনতে পায়নি। কিন্তু বেশ বুঝতে পারছে, ঝামেলা হয়ে যাবে। ঝামেলা থেকে বাচতেই দলের সঙ্গে শৌখিনভাবে ঘুড়ে বেড়ানো মনস্তত্ত্ববিদ শুভঙ্কর রায়ের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিল সাজিদ। <br />
সিলেটের ছেলে সাজিদ, এসব মনস্তত্ত্ববিদ-টিদকে কোনোদিন পাত্তা দেয়নি। তারপরও রুমমেট রাজ্জাক ভাইয়ের কথায় শুভঙ্করদার কাছে গেল। সব শুনে টুনে থিওরি অব রিলেটিভিটিআবার আবিস্কারের মতো মুখ করে ফেললেন শুভঙ্কর রায়,<br />
‘আরে সাজিদ! এটা কোনো ব্যাপার হল? তুমি পড়াশোনা করা ছেলে, এমন স্বপ্নের কারণ তো নিজে ভেবেই বের করতে পারো।’<br />
সাজিদ পড়াশোনা জানা ছেলেÑএটা কিন্তু সত্যি কথা। ক্রিকেটের ফাকেই কিভাবে কি করে যেন সে বেশ ভালো ছাত্র হিসেবে নিজেকে ধরে রেখেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফলিত পদার্থবিজ্ঞানের মতো ভয়ঙ্কর একটা বিষয়ে পড়াশোনাও চালিয়ে যাচ্ছে। <br />
কিন্তু এই পড়াশোনা দিয়ে স্বপ্নের ব্যাখ্যা কিভাবে খুজে পাওয়া যাবে, সেটা সাজিদ ঠিক বুঝওতে পারল না। নাকি শুভঙ্করদা পড়াশোনা বলতে ‘খোয়াবনামা’ পড়া বোঝাতে চেয়েছেন। কিছুই বুঝতে না পেরে সাজিদ বললো, <br />
‘কিন্তু দাদা, আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।’<br />
শুভঙ্কর বাবু খুব মজা পেলেন, ‘আরে দূর! এটা কোনো ব্যাপারই না। তুমি জাতীয় দলে প্রথম খেলতে যাচ্ছো, তাই এখন নিজের খেলা নিয়ে অবচেতন মনে নানারকম শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। জাতীয় দলে খেলাটা তো তোমার কাছে স্বপ্নের মতো। তুমি ভেতরে ভেতরে ভয় পাচ্ছো, স্বপ্নটা না ভেঙে যায়।’<br />
‘না তো! এরকম ভয় তো পাচ্ছি না।’<br />
‘পাচ্ছো। তুমি যে এই ভয় পাচ্ছো, তা তোমার সচেতন মন জানে না।’<br />
‘তাই নাকি!’<br />
‘ফলে যেটা হচ্ছে... তোমার অবচেতন মনের এই ভয়ের ফলে তুমি অভিষেকের স্বপ্ন ভেঙে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছ।’<br />
সাজিদ সামান্য হলেও যুক্তি খুজে পেল শুভঙ্করদার কথায়। মনে হল, এটা হলেও হতে পারে। খানিক্ষন মাথা-টাথা চুলকে বললো, <br />
‘তাহলে এখন আমি কি করবো?’<br />
‘কিচ্ছু না। ব্যাপারটা বুঝেছ। আর এটাকে পাত্তা দিও না। তাহলেই স্বপ্নটা আর দেখবে না।’<br />
কাশ সিক্স থেকে এ পর্যন্ত যে পরিমানে সেবা প্রকাশনীর বই সাজিদ পড়েছে, তাতে শুভঙ্করদার ব্যাখ্যা মেনে নিতে খুব কষ্ট হল না। নিজেকে বরং উপন্যাসের কোনো চরিত্র মনে করে নিয়েই শুভঙ্করদার রুম থেকে বেরিয়ে এলো। <br />
ড্রেসিংরুম হয়ে যখন মাঠে পা রাখল, ততক্ষনে সাজিদের মন ভালো হয়ে গেছে। মনে হচ্ছে, এখন চাইলেই সেন্টার উইকেটে গিয়ে একটা সেঞ্চুরি মেরে আসতে পারবে সে। <br />
তিন-চার দিন পর এমন উজ্জ্বল চেহারার সাজিদকে দেখে এগিয়ে এলো ওদের ক্যাপ্টেন। আজ প্র্যাকটিস নেই। তারপরও কেউ ফিজিওর সঙ্গে কাজ করতে, কেউ নেটে নক করতে; অনেকেই মাঠে চলে এসেছে। ক্যাপ্টেন কাছে এসে বললো, ‘কি মিয়া, তুমি নাকি কি সব স্বপ্ন দেখছ আজকাল?’<br />
সাজিদ মুদু হাসল। ওদের ক্যাপ্টেন বেশ রসিক মানুষ। সাজিদের বেশ পছন্দ হয়েছে। সাজিদ কিছু বলছে না দেখে আবার সেই বললো, ‘যাই স্বপ্ন দ্যাখো ক্ষতি নেই। তবে আসল স্বপ্নের কথা মাথায় রেখো...’<br />
সাজিদও কিছু একটা বলতে গিয়েছিল। তার আগেই রিং রিং করে উঠল ওর মোবাইল। ইচ্ছে করে এরকম আদ্দিকালের ফোনের রিং টোন লাগিয়ে রেখেছে ও। ক্যাপ্টেনের সামনে ফোন ধরতে চাচ্ছিল না। কিন্তু ক্যাপ্টেনই হেসে বললো, ‘ক্যারি অন। ফোন ধরো। দ্যাখো কোনো ভক্ত-টক্ত নাকি...’<br />
হেসে ফোনটা কানে ছোয়ালো সাজিদ। ওপাশ থেকে খুব চেনা একটা কণ্ঠ শোনা গেল, <br />
‘হ্যালো। সাজিদ বলছেন?’<br />
কণ্ঠটা চেনার চেষ্টা করছে সাজিদ, ‘হ্যা। আপনি কে?’<br />
‘আমি আপনার খুব কাছে মানুষ।’<br />
সাজিদ ভাবছে আর কথা বলছে, ‘কে? কি বলতে চান?’<br />
‘স্বপ্নটা এখনো দেখছ সাজিদ?’<br />
সাজিদ প্রথমটা উত্তর খুজে পেল না, ‘কি স্বপ্ন? কে বলছিলেন?’<br />
‘ওই যে তোমার বদলে আরেক জন খেলছে, সেই স্বপ্নটা...’<br />
‘কে আপনি? এই স্বপ্নের কথা কিভাবে জানলেন? কে বললো আপনাকে?’Ñস্বপ্নটার বিস্তারিত তো শুভঙ্করদা ছাড়া কেউ জানে না! তাহলে কি শুভঙ্করদাই বলেছে?<br />
‘আমাকে কেউ বলেনি সাজিদ। আমি তোমার সব স্বপ্নের কথা জানি।’<br />
‘কিভাবে!’Ñচিৎকার করে উঠল সাজিদ। ওর ক্যাপ্টেন অবাক হয়ে চেয়ে রইল।<br />
‘খুব সোজা। কারণ, তোমাকে স্বপ্নটা আমি দেখাচ্ছি।’<br />
সাজিদ আর কোনো কথা খুজে পেল না। ওপাশের কণ্ঠটা একটু বিরতি দিয়ে আবার বললো, ‘সাজিদ, তোমার অভিষেক হবে না। আরেক জন খেলবে তোমার বদলে।’<br />
কোনোক্রমে ধরা গলায় সাজিদ জিজ্ঞেস করলো, ‘আপনি কি চান?’<br />
‘আমি চাই আমার স্বপ্নপূরন করতে।’<br />
সাজিদ কথা বলতে পারছিল না। তারপরও নিজেকে যেন পাতাল থেকে টেনে তুলে বললো, ‘কে আপনি?’<br />
‘আমিও সাজিদ।’<br />
সাজিদ এবার কণ্ঠটা চিনতে পেরেছে।<br />
****<br />
সাজিদের ব্যাপারটা সিনেমার কাহিনী বলে উড়িয়ে দেওয়া যেত। অন্তত শুরুতে রাজ্জাক ভাই আর শুভঙ্করদা তাই চাচ্ছিল। শুভঙ্করদা জোর দিয়ে বলছিল, এমন কোনো ফোন আসেনি। কিন্তু ক্যাপ্টেন সামান্য সাজিদের পক্ষ নিল। <br />
ক্যাপ্টেনের মোহাম্মদপুরের বাসায় বসে আলোচনা হচ্ছিল। এখনও ব্যাপারটা এই চার জনের বাইরে কাউকে জানানো হয়নি। জানালে হাসা-হাসি করার লোকসংখ্যা বাড়া ছাড়া আর কিছু হতো না। সঙ্গে সাজিদের অভিষেকটা আরও ঝুকির মধ্যে পড়ে যেত। <br />
আপাতত অবশ্য ক্যাপ্টেন ওকে ভরসাই দিয়ে যাচ্ছেন, ‘দ্যাখো, সাজিদ, আমি বিশ্বাস-অবিশ্বাস কিছুই করছি না। কিন্তু এটুকু জানি যে, এই ঝামেলাটাকে তোমার এড়াতে হবে। এই ঝামেলা মাথায় নিয়ে তুমি ইন্টারন্যাশনাল ম্যাচ খেলতে পারবে না। আমি জানি, তুমি ঝামেলাটা এড়াতে পারবে।’<br />
রাজ্জাক ভাই চায়ের কাপে আরেকটা চুমুক দিয়ে বললো, ‘না পারার তো কোনো কারণই দেখছি না। আমার তো মনে হয়, সাজিদ পুরো ব্যাপারটা কল্পনা করছে...’।<br />
রাজ্জাক ভাইয়ের কথা মাটিতে তো দূরে থাক, টেবিলেও পড়তে দিলেন না শুভঙ্করদা, ‘অবশ্যই কল্পনা করেছে। স্বপ্নটা দেখতেই পারে। কিন্তু ফোনটা ওর কল্পনা...’। <br />
সাজিদকে কিছু বলতে হল না। ক্যাপ্টেনই জবাব দিল, ‘তা হয় কি করে! ফোন যে এলো, সেটা তো আমারই সামনে।’<br />
শুভঙ্কর রায় এবার চোখমুখ শক্ত করে বললেন, ‘সাজিদ মন খারাপ করো না। আমি একটু আমার মতো করে ব্যাখ্যা দেই?’<br />
সাজিদ ঘাড় নাড়ল, শুভঙ্করদা বললেন, ‘আসলে সাজিদকে এখন তার অবচেতন মনই নিয়ন্ত্রন করছে বলে আমার ধারণা। অন্য কোনো ফোন এসেছিল। ও সেটা কেটে দিয়ে ফোনে কাল্পনিক একটা চরিত্রের সঙ্গে কথা বলেছে। আসলে সে সময় ওই প্রান্তে কেউ ছিল না বলেই আমার ধারণা।’<br />
ক্যাপ্টেনও একটু প্রভাবিত হল শুভঙ্করদার কথায়? হতে পারে। আলোচনা যতো আগেড় বাড়তে লাগল, ততোই সাজিদের মনে হল, এরা তিনজনই এখন ওকে মানসিক রোগী ভাবতে শুরু করেছে। এরা আর সাজিদের কোনো সাহায্য করতে পারবে না। সাজিদকে এখন যা করার নিজেকেই করতে হবে। <br />
এখন সাজিদকে অপেক্ষা করতে হবে আবার ফোনের জন্য। <br />
রাত তিনটের দিকে ফোন এলো। ফোন যে আসবে, সাজিদ জানতো। জানতো বলেই আজ ঘুমায়নি। ফোনটা সাইলেন্ট করে ভাইব্রেশন দিয়ে রেখেছে; যাতে রাজ্জাক ভাই কিছু টের না পায়। ভাইব্রেশন অবশ্য দেওয়ার দরকার ছিল না। ফোন থেকে এক মুহুর্তের জন্যও মনে হয় চোখ সরায়নি সাজিদ। <br />
অবশেষে ঠিক তিনটে চৌদ্দ মিনিটে ফোনের আলোটা জ্বলে উঠলÑলেখা উঠল পধষষরহম ঁহশহড়হি হঁসনবৎ। ফোনটা নিয়ে বারান্দায় চলে এলো সাজিদ। দুই রুমের বাসা। এক রুমে সাজিদ আর রাজ্জাক ভাই থাকে। আরেক রুমে সোহেল নামে রাজ্জাক ভাইয়ের এক বন্ধু থাকে। বরান্দায় চলে এলে আর কোনো সমস্যা নেই। <br />
এবার আর ফোনটা ধরতে ভয় পেল না সাজিদ। নার্ভাসনেসটা কেটে গেছে। ও বুঝেছে জাতীয় দলের হয়ে খেলতে গেলে, এই খেলাটায় অংশ নিতে হবে ওর। নার্ভাস খেলোয়াড় কখনো জিততে পারে না। <br />
ফোটা ধরেই সাবলীল গলায় সাজিদ বললো, ‘হ্যালো। কে বলছেন?’<br />
ওপাশ থেকে পরিচিত কণ্ঠ শোনা গেল, ‘আমিও সাজিদ।’<br />
‘বলুন।’<br />
‘কি হল? ক্যাপ্টেনের পরামর্শ নিয়ে কি লাভ হল?’<br />
‘সবই তো জানেন। ওটা আর জিজ্ঞেস করে লাভ কি? এখন বলুন কি চান।’<br />
‘চাই তো, একটাই জিনিস। তোমার অ্যাক্রিডেশন কার্ডটা।’<br />
এবার সাজিদ না চমকে উঠে পারল না, ‘মানে?’<br />
‘সাজিদ হিসেবে তোমার যা যা আছে, আমারও আছে। আমারও চেহারা তোমার মতো, আমারও ব্যাটিং তোমার মতো, আমার সবই কিছুই তোমার মতো; কারণ আমিও সাজিদ। আমার কাছে নেই শুধু ড্রেসিং রুমে ঢোকার অনুমতি। সেই অ্যাক্রিডেশন কার্ডটা দিতে হবে তোমার।’<br />
‘এতো কিছু আপনি নিজে করতে পারলেন, এটা ম্যানেজ করুন না। আর আপনি চাইলেই আমি দেবো কেনো?’<br />
‘দেবে সাজিদ, দেবে। তুমি এখনও বুঝতে পারোনি, আমি কি জিনিস। বুঝতে পারলেই দেবে।’<br />
সাজিদ এবার খেলাটায় একটু মজা পাচ্ছে, ‘আপনিও বুঝতে পারেননি আমি কি জিনিস। আমি অ্যাক্রিডেশন কার্ড দেবো না।’<br />
ওপাশ থেকে মৃদু একটা হাসির শব্দ শোনা গেল। লোকেদের ছেলেমানুষী দেখলে সাজিদ যেভাবে হাসে, তেমনই হাসি, ‘কাল ঠিক চারটের সময় তুমি কার্ডটা দিতে রাজী হয়ে যাবে। কারণ, তার ঠিক দশ মিনিট আগে তোমাদের বাসার সামনের চায়ের দোকানকার অ্যাক্সিডেন্ট করে মারা যাবে।’<br />
‘কি বলছেন এসব!’Ñনিজেকে আর ধরে রাখতে পারল না সাজিদ।<br />
‘হ্যা। ওটা হবে বিজ্ঞাপন। বিজ্ঞাপন দেখে যদি তুমি অ্যাক্রিডেশন কার্ড দিতে রাজী না হও, তাহলে দেখবে পুরো সিনেমা। সেই সিনেমার প্রথম দৃশ্যেই রাত বারোটায় সিলেটে তোমার বাবা মারা যাবেন ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে।’<br />
‘ওই মিয়া! কি বলেন এগুলো!’Ñচিৎকার করে উঠল সাজিদ। কিন্তু সাজিদের সে চিৎকার শোনার জন্য ফোনের ওপাশে আরেক সাজিদ তখন আর নেই। লাইন কেটে দিয়েছে। <br />
সাজিদের চিৎকার শুনে রাজ্জাক ভাই উঠে এসেছে, ‘কি হয়েছে?’<br />
‘কিচ্ছু না।’Ñমুখ শক্ত করে দাড়িয়ে রইল সাজিদ। বেশিক্ষন দাড়িয়ে রইল না। আস্তে আস্তে ভেতরে হেটে গেল। ও খুব ভালো করে জানে, ওকে এখন রাজী হতেই হবে। কাল বিকেল ঠিক চারটেই ওকে রাজী হতে হবে। তারপরই জমবে খেলা। <br />
কিন্তু খেলা জমার আগেই একটা লোককে মারা যেতে হবে। এই মৃত্যুটা সাজিদ চাইলেও ঠেকাতে পারে না, ঠেকাবে না। খেলা জমে ওঠার জন্যই মৃত্যুটা দরকার।<br />
****<br />
‘ক্যাপ্টেন, আমাকে নিয়ে আর দুশ্চিন্তা করার দরকার নেই।’<br />
সাজিদ কথাটা না বললেও চলতো। দু দিন ধরেই ক্যাপ্টেনের মনে হচ্ছে, সাজিদকে নিয়ে আর দুশ্চিন্তা করার দরকার নেই। <br />
সেই আগের মতো হাশি-খুশি, মনোযোগী সাজিদ ফিরে এসেছে। নেটে প্রত্যেকটা বল দেখেশুনে খেলছে। এমনকি আজ নিজেদের মধ্যে যে প্র্যাকটিস ম্যাচ ছিল, সেখানেও দুর্দান্ত করেছে। ৭২ বলে ৮৬ রানের অপরাজিত একটা ইনিংস খেলেছে। <br />
ফলে, শুধু ক্যাপ্টেন না, সবাই বুঝতে পারছে, ওকে নিয়ে আর ভাবনার দরকার নেই। কোচ নিজে এসে সাজিদকে বলে গেছেন, ‘বি রেডি। আগামীকাল খেলছ তুমি।’<br />
তারপরও ক্যাপ্টেন হেসে বললো, ‘সব সমস্যা মিটেছে?’<br />
‘হ্যা। আসলেই আমার কল্পনা ছিল সবকিছু। এখন সব ঠিক হয়ে গেছে।’<br />
ঠিক না হয়ে উপায় নেই। সাজিদ কথা দিয়ে দিয়েছে। পরশু ঠিক বিকেল তিনটে পঞ্চাশ মিনিটে রাস্তা পার হয়ে পানি আনতে গিয়ে ট্রাক চাপা পড়ে মারা গেছে ওদের বাসার সামনের চায়ের দোকানদার। কথা না দিয়ে আর উপায় ছিল না। <br />
ঠিক চারটের সময় ফোন এসেছে। সাজিদ ফোনের জন্য অপেক্ষা করছিল। ফোন না ধরে তো উপায় নেই। খেলা জমে গেছে। ও শুধু জানতে চেয়েছিল, খেলাটা কোথায় হবে, ‘কোথায় আসতে হবে অ্যাক্রিডেশন কার্ড নিয়ে?’<br />
‘রমনা পার্কে।’<br />
‘কখন?’<br />
‘দেরী আছে। খেলার ঠিক আগের রাতে। আটটার সময় হোটেল থেকে বেরোবে। পার্কে আমার সঙ্গে দেখা হবে আটটা বিশ মিনিটে।’<br />
‘পার্কে কোথায় থাকবেন আপনি?’<br />
‘তা তোমাকে জানতে হবে না। তুমি বটমূলের কাছে দাড়িয়ে থাকবে।’<br />
‘আচ্ছা। আমার কিছু কথা জানার ছিল।’<br />
‘বলো।’<br />
‘আপনি আসলে কে?’<br />
‘সেটা তো বলা যাবে না। তবে এটুকু বলি যে, আমি আসলেই দেখতে তোমার মতো। অবশ্য আমি মোটেও ভালো ব্যাটিং করি না। আসলে আমি কখনোই ক্রিকেট খেলি না। আমি তোমাকে গত তিন বছর ধরে ফলো করছি। আমার জীবনের স্বপ্ন একটাইÑঅনেক টাকার মালিক হওয়া। তোমার বদলে আমি যদি জাতীয় দলে খেলি, তাহলে অনেক টাকার মালিক হতে পারবো।’<br />
‘আজব কথা! আপনি ক্রিকেট খেলতে পারেন না, তাহলে ক্রিকেট খেলে অনেক টাকার মালিক হবেন কি করে?’<br />
‘সেটা আমার ওপর ছেড়ে দাও। যে লোক তোমাকে পর পর তিন রাত একই স্বপ্ন দেখাতে পারে, দেশের যে কোনো জায়গায় মানুষ মেরে ফেলতে পারে; সে রানও করতে পারবে। আমার দরকার শুধু একবার জাতীয় দলের জার্সি গায়ে তোলা।’<br />
‘ঠিক আছে। সে সুযোগ পাবেন আপনি।’<br />
‘আরেকটু কথা আছে। তুমি ন্যাশনাল টিমের পোশাক পরবে না। কালো জিন্স পরবে আর এক্কেবারে সাদা একটা শার্ট।’<br />
‘ঠিক আছে।’<br />
সব কথায় রাজী হয়ে গেছে সাজিদ। রাজী না হয়ে উপায় নেই। খেলায় আম্পায়ার, ম্যাচ রেফারি, বোলার; সব ওই সাজিদ। তাকে শুধু ব্যাট করতে হবে; স্লগ ওভারের ব্যাটিং। সেটা করতেই আজ রাতে বের হবে। <br />
রাতে বেরোতে তেমন ঝক্কি পোহাতে হলো না। বললো, এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করবে শাহবাগে। ক্যাপ্টেন শুধু বললো, ‘রাত করো না। এমনিতে ম্যাচের আগের রাতে এরকম বেরোনো ঠিক না। শুধু তুমি বলে...’<br />
‘টেনশন কইরেন না, ক্যাপ্টেন। আমার কিছু হবে না।’<br />
সাজিদ একটু আগে বেরিয়ে পড়েছে। আসলেই শাহবাগে ওর এক বন্ধু অপেক্ষা করছিল। ইউনিভার্সিটির বন্ধু, রাজনীতি করে। আজিজ সুপার মার্কেটের কোনায় দাড়িয়ে ছিল। <br />
সাজিদকে দেখেই এগিয়ে এলো, ‘কি রে, তোর এইসব মালের দরকার হলো কেনো?’<br />
‘দরকার আছে। তোর বোঝার দরকার নেই। আর প্লিজ দোস, আমি যে এই জিনিসটা নিয়েছি, সেটা স্রেফ ভুলে যা।’<br />
বন্ধুটা হতাশ একটা ভঙ্গি করে বললো, ‘ঠিক আছে।’<br />
এবার কাধে ঝোলানো ব্যাগ থেকে ছোট্ট একটা বোতল বের করে দিল সাজিদের হাতে। মুখে বললো, ‘সাবধানে হ্যান্ডেল করিস।’<br />
সাজিদ ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। শুধু ‘থ্যাংকস’ বলেই হাটা দিল। <br />
অবশ্য সাজিদের এমন কিছু দেরী হয়নি। বটমূলে পৌছে দেখে আটটা বাজতে তখনও তিন মিনিট বাকী। দীর্ঘদিন সিগারেট খায় না সাজিদ। আজ শখ করে একটা সিগারেট নিয়ে এসেছে। সিগারেটটা মুখে ঝুলিয়ে দাড়িয়ে রইল। কি যে ভাবছে। <br />
‘কি ভাবছ? সিগারেট ধরিয়ে ফেল’Ñধবধবে সাদা শাট, কালো জিন্স পরে সাজিদের ঠিক পিঠের কাছে দাড়িয়ে আছে সাজিদ। <br />
প্রথমটা চমকে গেলেও এক পলকে স্বাভাবিক হয়ে গেল সাজিদ, ‘ও হ্যা।’<br />
গ্যাস লাইট বের করার জন্য পকেটে হাত ঢুকিয়ে বের করে আনল বোতলটা। বোতলটা দেখেই হিংস্র একটা শব্দ বেরিয়ে এলো আরে জনের মুখ থেকে, ‘অ্যাসিড!’<br />
সাজিদ লাফ দিয়ে পড়ল সাজিদের গায়ের ওপর। জাপটাজাপটিতে মিলেমিশে গেল দুই সাজিদ। কে কোন জন? শুধু একসময় শোনা গেল প্রবল একটা চিৎকারÑযন্ত্রনার চিৎকার, হাহাকারের চিৎকার। <br />
*****<br />
টসে জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্যাপ্টেন। মিরপুর স্টেডিয়ামে যেন লোক ধরছে না। মহাউত্তেজিত কণ্ঠে বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচ শুরুর বর্ননা দিয়ে চলেছেন ধারভাষ্যকাররা। <br />
বাংলাদেশী দুই ওপেনার বেরিয়ে এসেছেন ড্রেসিং রুম থেকে। ক্যামেরার দিকে চেয়ে হেলমেটের ফাক থেকে মৃদু মৃদু হাসছে সাজিদ। <br />
হাসিটা দেখে একটু যেন গা গুলিয়ে উঠল ক্যাপ্টেনের। এ কোন সাজিদ? <br />
<br />
<i>ইত্তেফাক সাহিত্য সাময়িকীতে প্রকাশিত<b></b></i>দেবব্রত মুখোপাধ্যায়http://www.blogger.com/profile/10351018961072501066noreply@blogger.comtag:blogger.com,1999:blog-374060266804648478.post-4947483799406300982011-07-03T11:56:00.000-07:002011-07-03T11:56:26.174-07:00লোটাস কামাল: আইসিসি সভাপতি!!!<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgTLh4749_BHSfAhkqiLbLkRsaZveg5SkIZevJQ48hmlCs8dCMVkpZgP8MRjo6ElPdRyn0JxTVKCchrk8laRUdrhdqk1MSIddRa4XEoTydlTZPQg8jfLr8m6ml1lf9QXHoDVEv2sidYSLQ/s1600/20110120-mustafa-kamal-priyo.jpg" imageanchor="1" style="clear:left; float:left;margin-right:1em; margin-bottom:1em"><img border="0" height="200" width="134" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgTLh4749_BHSfAhkqiLbLkRsaZveg5SkIZevJQ48hmlCs8dCMVkpZgP8MRjo6ElPdRyn0JxTVKCchrk8laRUdrhdqk1MSIddRa4XEoTydlTZPQg8jfLr8m6ml1lf9QXHoDVEv2sidYSLQ/s200/20110120-mustafa-kamal-priyo.jpg" /></a></div><br />
<br />
<br />
আ হ ম মোস্তফা কামাল: এফসেএ, এমপি এবং একটি সংসদীয় কমিটির প্রধান। <br />
মানুষ হিসেবে মোস্তফা কামাল সাহেবের অতীত ও বর্তমান বলে, তিনি একজন যোগ্য মানুষ। শুনেছি, সেই পাকিস্তান আমলে দুই পাকিস্তান মিলিয়ে সিএ-এর সেরা ছাত্র হিসেবে ‘লোটাস’ উপাধি পেয়েছিলেন। সে জন্যই ঘনিষ্ঠরা তাকে লোটাস কামাল বলে ডাকেন। <br />
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে, মানে সবকিছু যদি মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী এগোয়, তাহলে ২০১৪ সালে আইসিসির সভাপতি হতে যাচ্ছেন আমাদের এই লোটাস কামাল। আমি সবিনয়ে এই জায়গাটা নিয়ে একটু কথা বলতে চাই। <br />
আগে বলি, কামাল সাহেব কিভাবে আইসিসির সভাপতি হতে পারেন। <br />
আইসিসি বর্তমানে তার সভাপতি নির্বাচন করে আবর্তন (রোটেশন) নীতিতে। এই নীতিতে প্রতি দুটি করে দেশ নির্দিষ্ট সময় অন্তর সভাপতি ও সহসভাপতি নির্বাচন করার সুযোগ পায়। <br />
সম্প্রতি ভারতসহ কিছু দেশ মনে করছে, আইসিসির এই আবর্তন নীতিটি আর থাকা উচিত নয়। এখানে সুস্পষ্ট ভোটাভুটির মাধ্যমেই সভাপতি নির্বাচন করা উচিত। মনে করার কারণ স্পষ্ট: ভারতের আবর্তন কোটা শরদ পাওয়ারকে দিয়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে। ফলে তারা নির্বাচন চালু করে আবার ভারতীয় কাউকে ওই পদে বসাতে চায়। <br />
সদ্য শেষ হওয়া হংকং কংগ্রেসেই আবর্তন নীতি বাতিল হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি দেশ (সম্ভবত দক্ষিণ আফ্রিকা)-এর আপত্তিতে তা হতে পারেনি। <br />
বাংলাদেশ-পাকিস্তানের যুক্তি সহজ; ২০১৪ সালে আবর্তন অনুযায়ী সভাপতি-সহসভাপতি তাদের দেশ থেকে দেওয়ার কথা। <br />
অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে সে পর্যন্ত এই নীতি টিকে যাবে। অর্থাৎ, ২০১৪ সালে আইসিসির প্রধান দুটি পদ অলঙ্কৃত করবেন পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সে সময়ের বোর্ড সভাপতি। এখানে একটু ফুটনোট আছে। সর্বশেষ বাংলাদেশ-পাকিস্তান যখন এই সুযোগ পেয়েছিল, তখন প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন পাকিস্তানের এহসান মানি। সে সময়ের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এবার প্রেসিডেন্ট পদটা বাংলাদেশকে ছেড়ে দেওয়ার কথা পাকিস্তানের। <br />
এবার দেখা যাক, কামাল সাহেবের স্বপ্নটা কি? তিনি যদি সেই পর্যন্ত পদে থাকতে পারেন, তাহলে তারই বসার কথা ক্রিকেটের সর্বোচ্চ চেয়ারটিতে। অবশ্য এর মধ্যে দুটি নির্বাচন প্রভাব ফেলবে। এক. বোর্ড সভাপতি পদে নির্বাচন করতে হবে। দুই. জাতীয় নির্বাচন হয়ে যাবে। <br />
স্বাভাবিকভাবেই আওয়ামী নেতা কামাল সাহেব ধরে নিচ্ছেন, জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামীলিগ আবার ক্ষমতায় আসবে।(যদিও সেটা ভোটেই ঠিক হবে শেষ পর্যন্ত!)<br />
থাকল বাকি বোর্ড সভাপতি পদে নির্বাচন। এখানেও কামাল সাহেবের জোর আশাবাদের কারণ আছে। আমাদের দেশে এই ধরণের নির্বাচন কখনোই সত্যিকারের ভোটের প্রতিফলন করে না। বিসিবি আইসিসির চাপে নির্বাচন ঠিকই দেবে। কিন্তু সেখান থেকে আওয়ামীলিগ মনোনীত প্রার্থীই পাশ করে আসবে। <br />
কারণ, এই ভোটে যারা কাউন্সিলর তারা এতো বিপ্লবী নন যে, আওয়ামীলিগ যাকে চায় তাকে না এনে অন্য কাউকে ভোট দিয়ে প্রেসিডেন্ট বানাবেন। সেক্ষেত্রে আওয়ামীলিগ তাকে মনোনয়ন দিলে কামাল সাহেবই যে নির্বাচিত হবেন, তা নিয়ে সন্দেহ করার সুযোগ নেই। <br />
এ পর্যন্ত ছক ঠিক থাকলে আ হ ম মোস্তফা কামালের আইসিসি সভাপতি হওয়া খুব সম্ভব। <br />
আমি গত দু দিন ধরে এই ব্যাপারটি নিয়ে খুব শঙ্কার মধ্যে আছি। সবকিছু এভাবে হলে সত্যিই যদি কামাল সাহেব আইসিসি সভাপতি হয়ে যান, সেটা ছোটখাটো একটা কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে। <br />
কামাল সাহেবকে এই ক বছর ধরে বিসিবি সভাপতি হিসেবে যা কান্ড কারখানা করতে দেখেছি, তাতে এরকম একটা বৈশ্বিক চেয়ারে তিনি বসলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিতেও টান পড়ে যেতে পারে। <br />
প্রথম কথা হল, এই ভদ্রলোক সংবাদ মাধ্যম (বিশেষ করে টিভি ক্যামেরার সামনে) উল্টোপাল্টা মন্তব্য, ভবিষ্যত না ভেবে কথা বলে ফেলতে খুব ওস্তাদ। কয়েকবার করে এরকম কেলেঙ্কারি তিনি করেছেন। একবার বলে দিলেন, ল্যান্স ক্লুজনার বাংলাদেশের বোলিং কোচ হচ্ছেন; কথাবার্তা চূড়ান্ত। পরে ক্লুজনার বললেন, তার সঙ্গে তেমন কোনো কথাই হয়নি। <br />
এই কিছুদিন আগে বললেন, দক্ষিন আফ্রিকান ভিনসেন্ট বার্নেসের কথা বললেন। বললেন, বার্নেসের সঙ্গে তার কথাবার্তা চূড়ান্ত; তিনিই হচ্ছেন জাতীয় দলের কোচ। ক দিন পর বার্নেস বললেন, তাকে প্রাথমিক একটা প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, তিনি ‘হ্যা, না’ কিছু বলেননি। <br />
বুঝুন অবস্থাটা। <br />
এই দুটো উদাহরন আপাতত সামনে এলো। এ ছাড়া এরকম গুলিয়ে ফেলার ঘটনা কামাল সাহেবের আরও অনেক পাওয়া যাবে। এখন কথা হল, আইসিসির চেয়ারে বসে এরকম সব কান্ড কারখানা করতে থাকলে, সেই দায়টা লোকে কাকে দেবে?<br />
আমরা যখন শরদ পাওয়ারকে গালি দেই, ‘ভারতীয় রাজনীতিবিদ’ বলেই গালি দেই। আমাদেরও কি তাহলে একদিন এই গালি শুনতে হবে?<br />
এই প্রশ্নটার উত্তর একজন মানুষই দিতে পারেন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনিই ঠিক করতে পারেন, কামাল সাহেব বিসিবি সভাপতি পদে টিকে থাকবেন কিনা। তিনিই ঠিক করতে পারেন, বাংলাদেশকে এমন বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলা হবে কি না। <br />
প্রশ্ন হতে পারে, তাহলে আওয়ামী মনোনীত বিসিবি সভাপতি প্রার্থী কে হবেন?<br />
স্মৃতিভ্রষ্ট না হলে যোগ্যতম মানুষটির নাম সবার একবাক্যে বলে ওঠার কথা: জনাব সাবের হোসেন চৌধুরী। <br />
আমি সাবের হোসেন চৌধুরীর খাইও না, পরিও না। তার পত্রিকাতেও কোনোদিন কাজ করিনি। কিন্তু বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি, ক্রিকেট সংগঠক বলতে যা বোঝায়; তা এই দেশে একজন থাকলেও তিনি সাবের হোসেন চৌধুরী। <br />
যে মানুষটি ১৯৯৭ সালে বলেন, আমরা টেস্ট খেলবো। এবং সেই অনুযায়ী টেস্ট স্টাটাস এনে দিতে পারেন, তার বিসিবি সভাপতি হতে আর কোনো যোগ্যতা লাগে না। দুরদর্শিতা বলুন, পরিকল্পনা বলুন; মিথ্যের এই রাজনীতির যুগে একমাত্র সাবের হোসেন চৌধুরীর পক্ষে বাংলাদেশ থেকে গিয়ে আইসিসির ওই চেয়ারটায় বসার সত্যিকারের যোগ্যতা আছে। <br />
কিন্তু কথা হল, এই অনুরোধ আমরা কাকে করবো? প্রধানমন্ত্রীকে!<br />
তিনি তো অদ্ভুত এক নীতি নিয়ে বসে আছেন। যে নীতিতে তথাকথিত সংস্কারপন্থিদের কোনো ঠাই তার কাছে নেই। সাবের ভাই যতোদুর জানি বছর আটেক আগেও শেখ হাসিনার প্রিয় মানুষগুলোর একজন ছিলেন। কিন্তু কি এক ওয়ান ইলেভেন এলো। বদলে গেল সব। <br />
সাবের হোসেন চৌধুরীকে রেখে একজন শেয়ার কেলেঙ্কারির হোতাকে (নিন্দুকের ভাষায়)বসানো হল বিসিবি সভাপতির চেয়ারে। এই কাজ করা হয়েছে ক্রীড়ামন্ত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রেও। <br />
মানুষ কেমন জানি না। ক্রীড়ামন্ত্রী হিসেবে ওবায়দুল কাদের অন্তত যাচ্ছেতাই ছিলেন না। কিন্তু শুধু সংস্কারপন্থি নন, এই যোগ্যতায় ক্রীড়ামন্ত্রী হয়ে দিনের পর দিন চায়ের আড্ডায় হাসির খোরাক হয়ে যাচ্ছেন একজন আহাদ আলী সরকার। <br />
আমি আহাদ সাহেব বা কামাল সাহেবকে ছোট করছি না। তবে তারা আসলে এই পদগুলোর জন্য নন। <br />
যদি প্রধানমন্ত্রী কোনোদিন, কোনো দূর্ঘটনাচক্রে এই লেখা পড়েন, তাহলে একটা অনুরোধ করবো: যোগ্য মানুষগুলোর ভুলটা ভুলে যাওয়াও একটা যোগ্যতা। এতে আর কিছু না হোক দেশের ভাবমূর্তি রক্ষা পায়। <br />
একবারের জন্য হলেও সব ভুলে গিয়ে দেশের ভাবমূর্তির কথা ভেবে বিসিবি সভাপতি ও ক্রীড়ামন্ত্রীর ব্যাপারটি আরেকবার বিচেনা করুন। <br />
<br />
<b>[এটি নিতান্তই নিস্ফল ক্রন্দন। এই ক্রন্দনে কারো লাভ হবে না, জানি। তবে যারা পড়ছেন, তাদের নিশ্চিত করতে চাই আ হ ম মোস্তফা কামাল বা আহাদ আলী সরকারকে হেয় করার কোনো উদ্দেশ্য আমার নেই।]</b>দেবব্রত মুখোপাধ্যায়http://www.blogger.com/profile/10351018961072501066noreply@blogger.comtag:blogger.com,1999:blog-374060266804648478.post-43419453801268607092011-06-29T22:23:00.000-07:002011-06-29T22:23:16.756-07:00বাংলাদেশ বাংলাদেশ<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhZjBuGOJEQvH80asKGmVLQbETuGuVyRurmF6Q9VFznt8CIKvEcUiDGsYSggkIxsSEaFTJ3s6urIUgpiRm28z4V1xFw_r8nRJzmGzEghMRFJtBdCs2lcCFgpEvHjcq-P_yKu3vdKCy7c9c/s1600/BC29-06-2011N_49+%2528Medium%2529.jpg" imageanchor="1" style="margin-left:1em; margin-right:1em"><img border="0" height="138" width="200" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhZjBuGOJEQvH80asKGmVLQbETuGuVyRurmF6Q9VFznt8CIKvEcUiDGsYSggkIxsSEaFTJ3s6urIUgpiRm28z4V1xFw_r8nRJzmGzEghMRFJtBdCs2lcCFgpEvHjcq-P_yKu3vdKCy7c9c/s200/BC29-06-2011N_49+%2528Medium%2529.jpg" /></a></div><br />
<br />
অনেক দিন মাঠে গিয়ে বাংলাদেশ দলের ফুটবল দেখা হয় না। বাংলাদেশ দলের আর্ন্তজাতিক ম্যাচই তো খুব একটা হয় না। তারওপর পেশাগতভাবে একটু বেশি ক্রিকেট-সম্পৃক্ত বলে যা কিছু ম্যাচ হয়, মাঠে যাওয়া হয়ে ওঠে না। <br />
প্রায় বছর দুয়েক পর কাল মাঠে বসে জাতীয় দলের খেলা দেখলাম।<br />
কী সৌভাগ্য! দলের অসামান্য এক জয়ের স্বাক্ষী হলাম। পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলা দেখতে দেখতে বারবার মনে হচ্ছিল, ছেলেগুলোর ফুটবল নিয়ে এতো মন্দ কথা কেন বলে লোকেরা! এই বৃষ্টি মাঠে, কী অসাধারণ বল নিয়ন্ত্রন করল তারা। যেখানে দ্বিগুন শক্তি লাগে, এই মাঠে দৌড়াতে, সেখানে মনে হল স্বাভাবিকের চেয়েও দ্রুত ছুটছে আমাদের ফুটবলাররা। জাহিদ-এমিলি যেন মাঠের এ প্রান্ত, ও প্রান্ত করে বেড়ালো চোখের পলকে। এই জঘন্য মাঠেও তারা পাস করল, রিসিভ করল, ব্যাক-ভলি করলো, ওভার ল্যাপ করলো; দারুন!<br />
এতোটুকু প্রস্তুতির সুযোগ পায় না, সারাবছর কোচিং বলে কিছু নেই, নেই আধুনিক সুযোগ সুবিধে; তারপরও ছেলেগুলো এই যা করলো, তাতে মন ভরে যাওয়ার কথা। <br />
তবে আমার মনটা আসলে ভরিয়ে দিলেন মাঠের বাইরের কয়েক জন মানুষ: দর্শক। ঝরো ঝরো বৃষ্টির মধ্যে গ্যালারিতে বসে সমানে তারা চিৎকার করছেন ‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’ বলে। মাথার ওপর আকাশ ছাড়া আর কিচ্ছুটি নেই। সারা শরীর ভিজে চুপচুপ করছে, বৃষ্টিতে চোখ ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে; তার মধ্যেও চলছে মানুষগুলোর চিৎকার। <br />
কয়েকটা ছেলে, পোশাক দেখে মনে হল মাদ্রাসার ছাত্র, পাজামা-পাঞ্জাবী সব ভিজে একসার। দেখে মনে হয় মাত্র পুকুর থেকে উঠে এলো। ওই প্রবল বৃষ্টির মধ্যে তারা বাংলাদেশ বাংলাদেশ বলে সোচ্চার। একজন মানুষ, দেখে মনে হল কোনো চায়ের দোকানদান বা রিকশাচালক হবে; পরনের লুঙ্গি-জামা সব ভিজে চুপচুপে। একটা চেয়ারের ওপর দাড়িয়ে তিনিও দু হাত শূন্যে তুলে চিৎকার করছেন। <br />
ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে। মাঠের খেলোয়াড়দেরও আর ঠিকমতো চেনা যাচ্ছে না। জায়ান্ট স্ক্রিনে তাকিয়ে মনে হচ্ছে বিদেশী কোনো খেলার সম্প্রচার দেখছি। তুষারপাতের মধ্যে বল নিয়ে ছুটে চলেছেন মেসি-জাভিরা। <br />
ক্যামেরা ঘুরছে গ্যালারিতে। মনে হচ্ছে এক টুকরো বাংলাদেশ যেন উঠে এসেছে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের ছোট্ট এই গ্যালারিতে। যে বাংলাদেশ বৃষ্টি মানে না, ঝড় মানে না; শুধু জানে বাংলাদেশ, বাংলাদেশ।দেবব্রত মুখোপাধ্যায়http://www.blogger.com/profile/10351018961072501066noreply@blogger.comtag:blogger.com,1999:blog-374060266804648478.post-10870355516232794242011-06-28T00:56:00.000-07:002011-06-28T00:58:36.758-07:00একজন ক্রিকেট-খুনী<b>(লেখাটি একটু অন্য নামে ছাপা হয়েছিল প্রথম আলোয়। লোলিত কুমার মোদি: ক্রিকেটকে আক্ষরিক অর্থে প্রায় শেষ করে দেওয়া একজন মানুষের অন্ধকার জীবনের গল্প। কিছুটা সংযোজন-সংস্কার করে প্রকাশ করলাম)</b> <br />
<br />
<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgywjQqZKzJxHVp5lnjyAiSgDv0R4KgzuWfP3Zm5UuSFe_YwLuyiKMQ4axkBsaIu5QbfCdCF9dxcO84f-sV7p1Xe1HmhMiHahhxPznauSAB-Lkxa77KFXvk6LHWHApSq7d7j17fAAiWaQU/s1600/Lalit-Modi-2_2057977.jpg" imageanchor="1" style="clear:left; float:left;margin-right:1em; margin-bottom:1em"><img border="0" height="150" width="200" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgywjQqZKzJxHVp5lnjyAiSgDv0R4KgzuWfP3Zm5UuSFe_YwLuyiKMQ4axkBsaIu5QbfCdCF9dxcO84f-sV7p1Xe1HmhMiHahhxPznauSAB-Lkxa77KFXvk6LHWHApSq7d7j17fAAiWaQU/s200/Lalit-Modi-2_2057977.jpg" /></a></div><br />
<br />
<br />
আজ শিমলা তো কাল নৈনিতাল; ছেলেটাকে কোথাও রেখে শান্তি পাচ্ছিলেন না বাবা। স্কুল পালায়, মারামারি করে। একটার পর একটা স্কুল বদলাতে হয়। প্রতিটা স্কুল থেকেই ছেলের নামে অভিযোগ শুনতে শুনতে কান্ত হয়ে যান শিল্পপতি বাবা।<br />
শেষ ভরসা হিসেবে ছেলেকে পাঠিয়ে দেওয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রে; ওখানে যদি মানুষ হয়। কিসের মানুষ হওয়া! বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছাতে না পৌঁছাতেই ছেলের আরও অনেক গুণপনা বেরোয়। মাদকসেবন, মাদক পাচার, অপহরণ, হত্যার উদ্দেশ্যে সশস্ত্র আক্রমণ; এমন সব অভিযোগে দফায় দফায় গ্রেপ্তার ছেলে। সব মিলিয়ে এক ছেলের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে সুশীল ভাবমূর্তির বাবার জীবন।<br />
এমন গুনী ছেলের গল্প খেলার পাতায় কেন? কারণ, এ ছেলেটি আজকের লোলিত কুমার মোদি। যাঁর যন্ত্রণা, পরিবারের গন্ডি ছাড়িয়ে ক্রিকেটে এসে পড়েছে। গত কয়েক বছর ধরে এই মানুষটির জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল তাবৎ ক্রিকেট দুনিয়া!<br />
২০০৫ সালের আগে একেবারেই ক্রিকেট-বিবর্জিত লোলিত মোদি গত পাঁচ বছরে শুধু ভারতের নয়, বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে প্রতাপশালী ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছিলেন। ফোর্বস ম্যাগাজিনের হিসাবে তিনি দুনিয়ার অন্যতম মতাধর ক্রীড়াব্যক্তিত্ব। টাইমস অব ইন্ডিয়ার জরিপে ভারতের ৩০তম মতাধর মানুষ! ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) দিয়ে এক সুতোয় বেঁধে ফেলেছিলেন তিন ‘সি’কে: ক্রিকেট, সিনেমা ও ক্রাইম!<br />
মোদিনগরের প্রতিষ্ঠাতা রাজবাহাদুর গুজারমাল মোদির বংশে জন্ম লোলিত মোদির। জন্মেই দেখেছেন মোদি এন্টারপ্রাইজ নামে এক সাম্রাজ্যের মালিক বাবা কৃষাণ কুমার মোদি। স্কুল ও কলেজজীবনে ভারতে যেসব কীর্তি করেছেন মোদি, তার কিছুটা তো লেখার শুরুতেই জেনেছেন। <br />
মোদিকে সভ্য করে তোলার উদ্দেশ্যেই তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে ডিউক ইউনিভার্সিটিতে পড়া অবস্থায়, ১৯৮৫ সালের ১ মার্চ প্রথম গ্রেপ্তার হন তিনি। ৪০০ গ্রাম কোকেন পাচারের অপরাধে মোদিকে হাতেনাতে ধরে ফেলে পুলিশ। অস্ত্র নিয়ে প্রতিপকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালানোরও অভিযোগ দায়ের করা হয় তাঁর বিরুদ্ধে। আদালত তাঁকে শর্তসাপেে ছেড়ে দিলেও মাসখানেকের মধ্যে আবার গ্রেপ্তার হন মোদি। <br />
২ এপ্রিল, ১৯৮৫ ডিউক ইউনিভার্সিটিরই এক ছাত্রসহ মোদিকে গ্রেপ্তার করা হয় মারামারি ও অপহরণের অভিযোগে। এবার আদালত তাঁকে দুই বছরের স্থগিত কারাদণ্ড দেন। পরবর্তীকালে কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে পত্রিকাগুলো এসব পুরোনো অভিযোগ সামনে আনলে সবই অবশ্য অস্বীকার করেন মোদি। <br />
কিন্তু পত্রিকাওয়ালারাও কম যান না। তাঁরা <i>দ্য লন্ডন টাইমস</i>-এর ১৯৮৫ সালের ১ মার্চের সংখ্যাটি খুঁজে বের করেছেন আর্কাইভ থেকে। সেদিনকার টাইমস-এ ‘মাদক ক্রেতাকে বন্দুকের মুখে ছিনতাই: ডিউক ছাত্র ডাকাতির অভিযোগে অভিযুক্ত’ শিরোনামে একটি সংবাদে লেখা হয়েছিল,‘ ডিউকের ছাত্র, ভারতের নয়াদিল্লির লোলিত কুমার মোদিকে মঙ্গলবার রাতে কোকেন পাচার ও প্রাণঘাতী অস্ত্র নিয়ে হামলার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’<br />
শেষ পর্যন্ত শারীরিক অসুস্থতার অজুহাত দিয়ে আদালতের অনুমতিসাপেক্ষে ১৯৮৬ সালে ভারতে ফিরে আসেন মোদি। ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত তাঁর জীবন কেটেছে ‘মোদি এন্টারপ্রাইজ’-এর নানা ব্যবসায়িক কাজে। <br />
এ সময়ে মোটামুটি ‘নিরুপদ্রব’ জীবন কাটান মোদি। অবশ্য নিরুপদ্রব মানে, একেবারে শান্তশিষ্ট সুবোধ বালকটি নয়। তবে ১৯৯৭ সালে চুক্তিভঙ্গের দায়ে মোদিকে আদালতে তুলেছিল ইএসপিএন। এর মধ্যে দারুণ আলোচনায় আসেন এক দিওয়ালির রাতে এক কোটি টাকারও বেশি জুয়ায় উড়িয়ে অবরুদ্ধ হয়ে গিয়ে। কিছুদিন পর আবার আদালতে হাজির হতে হয় আরব আমিরাতে মাদক পাচারের অভিযোগে; এবার তদন্তের মুখোমুখি হয়ে পার পেয়েছিলেন ক্ষমতাধর বাবার কারণে। এর প্রত্যেকটা ঘটনাই তখন সংবাদমাধ্যমে এসেছে। কিন্তু সংবাদমাধ্যম কোনোদিনই অনুমান করতে পারেনি, এই লোকটিই একদিন ক্রিকেটের কারণে খবর হবেন। <br />
স্কুল ও কলেজ-জীবনে মোদি খেলাধুলার কিছুটা খোঁজখবর রাখতেন। কিন্তু ক্রিকেট তাঁর আগ্রহের বিষয় ছিল না। তাঁর এক কলেজ বন্ধুর স্মৃতিচারণা, ‘আমি যত দূর মনে করতে পারি, পেলে আর বিয়ন বোর্গ ওর ক্রীড়া-নায়ক ছিলেন; কোনো ক্রিকেট তারকা নয়।’ সেই মোদিই ১৯৯৯ সালে হিমাচল ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য হয়ে গেলেন। প্রতিশ্রুতি দিলেন, নতুন একটা স্টেডিয়াম গড়ে দেওয়ার। তবে তার আগেই ২০০০ সালে এই অ্যাসোসিয়েশন থেকে তাঁকে বের করে দেন প্রদেশের নতুন মুখ্যমন্ত্রী । <br />
ততদিনে ক্রিকেটের নেশা ধরে গেছে মোদির। নামটাকে সামান্য বদলে ‘লোলিত কুমার’ করে তিনি নাগোর জেলার প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দেন রাজস্থান ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনে (আরসিএ)।<br />
এরপর বন্ধুপ্রতিম বসুন্ধরা রাজে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ায় মোদি রাতারাতি আরসিএ সভাপতি হিসেবে বিসিসিআইয়ের সদস্য হয়ে যান। <br />
বিসিসিআইয়ের সদস্য হওয়ার পরই তৎকালীন সভাপতি জগমোহন ডালমিয়াকে ‘ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগ’ (ঠিকই পড়েছেন) নামে সীমিত ওভারের একটি ঘরোয়া টুর্নামেন্ট আয়োজনের প্রস্তাব দেন, যেখানে বিদেশিরাও খেলবেন। ‘অর্থলিপ্সু’ হিসেবে পরিচিতি পেলেও ডালমিয়া এই প্রস্তাব মেনে নিতে পারেননি। <br />
এবার মোদি নতুন ‘খেলা’ শুরু করেন। কংগ্রেসনেতা শারদ পাওয়ারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ডালমিয়াকে বোর্ড থেকে সরানোর উদ্যোগ নেন। এ কাজে সাফল্যের পুরস্কারও পান মোদি। পেয়ে যান বিসিসিআইর সহ-সভাপতির পদ। পাস হয়ে যায় মোদির ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ পরিকল্পনা; কারণ ততদিনে ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগ (আইসিএল) নামে একটি টুর্নামেন্ট মাথা তুলে ফেলেছে।<br />
এসেল গ্রুপের মালিক সুভাষ চন্দ্রের আইসিএলকে জৌলুশহীন করা ও বিপুল টাকা কামাইয়ের জোড়া লক্ষ নিয়ে যাত্রা শুরু করে আইপিএল। ক্রিকেট দুনিয়ায় শুরু হয় ‘লোলিত মোদি যুগ’। <br />
আইপিএল শুধু বিসিসিআইকে নয়, দুনিয়ার অনেক ক্রিকেটারকেই টাকার পাহাড়ে চড়িয়ে দিয়েছে। আইপিএলের অর্থনৈতিক দাপটে মোদিরা অগ্রাহ্য করতে শুরু করেন ভারতীয় রাষ্ট্রযন্ত্রকেও। ২০০৯ সালে সাধারণ নির্বাচনের কারণে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারায় আইপিএলকে দক্ষিণ আফ্রিকায় নিয়ে যান মোদি। এই ঘটনায় স্পষ্ট ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম।<br />
সরকারের সঙ্গে এই দ্বন্দ্বের পরোক্ষ ফলে মোদি ২০০৯ সালে হেরে যান আরসিএ নির্বাচনে। বিসিসিআইতে তাঁর পদই শঙ্কার মধ্যে পড়ে যায়। শেষ পর্যন্ত আইএস বিন্দ্রার আশীর্বাদে মোদি পাঞ্জাব ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি হয়ে যান। ফলে টিকে যায় তাঁর বিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি পদ।<br />
কিন্তু শেষ রক্ষা হল না মোদির। আবারও সরকারের সঙ্গে ঝামেলা পাকিয়ে তোলেন এবার আইপিএল চলার সময়। টুইটার-এ তিনি অভিযোগ করেন, আইপিএলের নতুন দল কোচির মালিকানা বান্ধবীকে পাইয়ে দিতে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শশী থারুর। এ অভিযোগের জের ধরে থারুরকে পদত্যাগও করতে হয়েছে। <br />
এতদিনে মোদির সঙ্গে কংগ্রেস সরকারের বিরোধটা গিয়ে চরমে ওঠে। আগেই আইপিএল দক্ষিণ আফ্রিকায় নিয়ে কংগ্রেসকে সোজাসুজি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন মোদি। সে সময় চিদাম্বরমরা মোদিকে সোজা জেলে ঢুকিয়ে দিতে চাইলেও বেচে গেছেন তিনি শরদ পাওয়ারের আশীর্বাদে। আর এবারের গন্ডগোলে শরদ পাওয়ার,নিরঞ্জন শাহরা মোদির পাশে আর দাড়ালেন না। বরং মোদির বিরুদ্ধে তারাই ব্যবস্থা নিতে শুরু করলেন। <br />
বিসিসিআই সহ-সভাপতির পদ থেকে তাঁর বহিষ্কৃত হওয়াটা এই বিরোধেরই ফল। এতে করে তাঁর আইপিএল চেয়ারম্যান পদটা আপনা-আপনিই হারিয়ে যায়। একটা পর একটা অভিযোগ আসতে শুরু করে মোদির নামে। দল কেনাবেচায় কারচুপি, বেনামে তিনটি আইপিএল দলের মালিকানা নেওয়া, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বাজির সিন্ডিকেট পরিচালনা, প্রচারস্বত্বে অস্বচ্ছতা, অবৈধ লেনদেন, আয়করে ফাঁকি, ম্যাচ পাতানোর অভিযোগের ভারে এখন নুয়ে পড়ছেন মোদি। <br />
সম্প্রতি পালিয়ে চলে গেছেন ইংল্যান্ডে। যদিও ইংল্যান্ডে গিয়ে দাবি করেছেন, তিনি ‘পালননি’। <br />
তবে এটাও বলেছেন, আপাতত দেশে ফেরার ইচ্ছে নেই তার। কারণ ভালো করেই জানেন, হাতকড়া নিয়ে তাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত চিদাম্বরমরা। একটার পর একটা পুরোনো মামলা জীবিত করে তোলা হয়েছে। একেই বোধহয় ‘ন্যাচারাল পানিশমেন্ট’ বলে!<br />
তারপরও মোদি কিন্তু কথার জোর কমাননি। এখন আমেরিকায় ক্রিকেট নিয়ে কাজ করতে চান। শ্রীলঙ্কায় একটা টি-টোয়েন্টি লিগের নেপথ্য নায়ক হিসেবে কাজ করছেন। আইসিএল নিয়ে অনেক কিছু ফাস করে দিচ্ছেন টুইটারে।<br />
বড় কথা হল তিনি বলছেন, আবার ঘুরে দাঁড়াবেন। এই ক্রিকেট দুস্কৃতকারী ঘুরে দাড়ালে ক্রিকেট কোথায় গিয়ে দাড়াবে!!!!!দেবব্রত মুখোপাধ্যায়http://www.blogger.com/profile/10351018961072501066noreply@blogger.comtag:blogger.com,1999:blog-374060266804648478.post-43723927759861873702011-06-24T11:47:00.000-07:002011-06-24T11:47:40.689-07:00অমর মানুষবিস্তর টাকার দরকার সাদেক আলমের। ‘বিস্তর’ বলে অবশ্য টাকার পরিমানটা ঠিক বোঝানো যাচ্ছে না। গুনে গুনে এক কোটি টাকা দরকার তার। <br />
সমস্যাটা হল, এক কোটি টাকা কারো পকেটে তো দুরে থাক, মানি ব্যাগে কিংবা ড্রয়ারেও থাকে না। কে জানে, অতি বড়লোকদের ড্রয়ারে হয়ত থাকে। কিন্তু সাদেক আলম অতি বড়লোক না। সাদেক আলম আসলে মেজলোক, সেজলোকও না। সে নিতান্তই ছোটলোক। <br />
ছোটলোক বলেই এক কোটি টাকার প্রয়োজন সাদেক আলমকে বিরাট একটা সমস্যায় ফেলে দিয়েছে। তাদের ব্যাংকে এই পরিমান টাকা কোনোদিন ক্যাশ আসে না। ফলে ব্যাংক ডাকাতি-ফাকাতি করে লাভ নেই। <br />
একটা উপায় ছিল। সাদেক আলমের বড় সাহেব কাসেম সাহেবের কিছু টাকা-পয়সা মেরে দিতে পারলে সে অনায়াসে এক কোটি টাকার মালিক হয়ে যেতে পারত। কাসেম সাহেব কয়েক শ কোটি টাকার মালিক বলে সে গল্প শুনেছে। কিন্তু কাসেম সাহেব যে এই কোটি কোটি টাকা কই রাখেন, সেটা সাদেক এখনও আবিস্কার করে উঠতে পারেনি। তাই কাসেম সাহেবের টাকাটা আপাতত লোপাট করা হচ্ছে না। <br />
হচ্ছে না, বললে তো আর টাকার সমস্যা সমাধান হয় না। বরং প্রতিদিন সকালে উঠেই সাদেকের মনে হচ্ছে, আজ অবশ্যই ওই এক কোটি টাকা জোগাড় করা দরকার। পরিমানটা নিশ্চিত হওয়ার জন্য আজ সকালে সাদেক আবার ফোন করেছিল কিনিকটায়,<br />
‘ভাই, এক কোটি টাকার কমে কি কোনোভাবেই কাজটা হয় না?’<br />
‘কে? কে বলছিলেন!’Ñওপাশ থেকে এক মহিলা কর্কশ কণ্ঠে প্রায় চিৎকার করে উঠেছে। খুন করার অভ্যেস করে ফেলতে পারলে, সাদেক নিশ্চিত এই মহিলাকে খুন করে ফেলত। <br />
তারপরও মেজাজটা ঠাণ্ডা করে জবাব দিয়েছে, ‘আমি। আমি সাদেক আলম। ওই যে আপনাদের বিজ্ঞাপনটার ব্যাপারে...’<br />
‘ওহ। সেই বিজ্ঞাপন? সেটা তো আমরা বিজ্ঞাপনেই পরিস্কার করে বলে দিয়েছি। এক কোটি টাকার নিচে কিছুই হবে না। ভাই শোনেন, এসব খয়রাতী লোকের কাজ না।’<br />
‘ও আচ্ছা!’Ñবলে হতাশ হয়ে লাইনটা কেটে দিল সাদেক। <br />
আর কোনো উপায় সে দেখতে পাচ্ছে না। শেষ পর্যন্ত আর সবার মত মরেই যেতে হবে সাদেক আলমকেও! বড় আশা করেছিল এক কোটি টাকা জোগাড় করে অমর হবে সে। আহা রে!<br />
<br />
দৈনিক ভূমিকম্প টাইপের একটা পত্রিকায় ছাপা হওয়া একটা বিজ্ঞাপনই আসলে সাদেক আলমকে স্বপ্নটা দেখিয়েছিল। শুধু স্বপ্ন দেখিয়েছিল বলাটা ভুল হবে। সাদেক আলমকে ওই বিজ্ঞাপনটাই আজ এরকম লোভী করে তুলেছে। <br />
এমনিতে সাদেক আলম ছা-পোষা মানুষ। মানে, ছা-পোষা মানুষের যেমন বর্ননা গল্পে থাকে, সাদেক আলম ঠিক সেরকম মানুষ। সকাল আটটায় বেরিয়ে সাড়ে দশটায় অফিসে পৌছায়, প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে বড় সাহেবের গালি খায়, বিকেল বেলা আবারও বাসে লোকেদের ধাক্কা খায় আর রাতে বাসায় ফিরে বড় আপার ধ্যাতানি খায়। <br />
এই জীবন নিয়ে সাদেকের কোনো আফসোস ছিল না। বরং এই জীবনটাই টেনে আরেকটু লম্বা করতে পারলে খুশি হত সে। সেই সুযোগটাই পেয়ে গেল বিজ্ঞাপনটায়!<br />
এত্তা বড় বড় ল্যাপটানো অরে লেখাÑঅমর হউন! তারপর অনেক ইদং করে বর্ননা করে হয়েছে, অমর হওয়ার ঔষধ বাংলাদেশে আমদানী করা একমাত্র সংস্থার বিজ্ঞাপনটা। এর আগে কোন দেশের কোন বড় লোক, শিল্পপতি, চিত্রতারকা এই ওষুধ ব্যবহার করেছেন, সে বর্ননা দেওয়া আছে। আর এক্কেবারে শেষ বেলায় যেয়ে বলা হয়েছে আসল কথাটাÑ<br />
তিন দফায় এই ওষুধ ব্যবহার করিতে বাংলাদেশী মুদ্রায় ৯৬ ল ৮৪ হাজার টাকা খরচ হইবে। হাসপাতালে থাকাসহ অন্যান্য খাতে আরও প্রায় চার ল টাকা খরচ হইবে।<br />
হেহ! এতো কথার এক কথা, অমর হতে সাদেক আলমের এখন এক কোটি টাকা লাগবে। দু চার হাজার বেশি লাগলে সমস্যা নেই। সাদেক আলমের অ্যাকাউন্টে সাত হাজার কত টাকা জানি আছে। কিন্তু আসলটাই তো হল না। সেই এক কোটি টাকা!<br />
আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিল সাদেক। ঠিক এই সময় হঠাৎ মনে পড়ে গেল মোতালিব মামার কথা। মনে পড়তেই রাগে নিজের মাথার চুল ছিড়তে ইচ্ছে করল। অ্যাতো দিন ধরে কেন কথাটা মনে পড়েনি!<br />
মোতালিব মামা মোটেও সাদেকের আপন মামা না। এমনকি চাচাতো, মামাতো বা খালাতো মামাও না। সাদেক আলমের মায়ের ফুফাতো ভাই এই মোতালিব মামা। কি করে যেন ফেপে ফুলে বিরাট বড়লোক হয়েছেন। এখন কী যেন বলে. ওই যে একটা মটর কোম্পানি না কিসের যেন মালিক হয়ে গেছেন। মোতালিব মামার তিন কুলে কেউ নেই, সাদেক আর তার আপা ছাড়া। <br />
<br />
মোতালিব মামার বাসায় গেলেই তিনি প্যাকেটে এক কোটি টাকা ভরে সাদেকের হাতে তুলে দেবেন. এমন ভাবার কোনো কারণ নেই। হাড় কিপ্পিন মোতালিব মামার হাত থেকে একটা টাকা বের করা মুশকিল। <br />
থাকেন একটা ভাড়া বাড়িতেÑদুই তলায় দুই রুমের বাসা। বেশি খরচ হবে বলে স্থায়ী কাজের লোক পর্যন্ত রাখেন না। কাজের লোক বলতে একটা বুয়া। দুপুরে এসে দুই বেলার মত রান্না করে দিয়ে যায়। সকালে পাউরুটি আর কলা দিয়ে কাজ সারেন তিনি। <br />
সবসময় যেমন হয়, এবারও সাদেক আলমকে দেখে মহাবিরক্ত হলেন মোতালিব মামা, ‘কী, মরছি নাকি সেই খোজ নিতি আইছো? এহোনো মরিনাই। আর মরলিও তুমি কিছু পাবা না। সব দিয়ে যাবো তোমার আপারে। তোমার মত অপগণ্ডরে কিছু দিয়ে লাভ নেই।’<br />
সাদেক মহাবিনয়ী, ‘আপনার টাকার জন্য আসিনাই মামা। আপার বাসায় থাকার একটু সমস্যা হচ্ছে। কয়দিন পরই চলে যাবো।’<br />
‘থাকো। কিন্তু খাওয়ার খরচ দিতি পারব না। বাজার-টাজার করতে হবে।’<br />
সাদেক সবকিছুতেই রাজী। তার মাথায় দারুণ একটা প্লান আছে। প্লানটা কঠিন কিছু না। মোতালিব মামার একটা চেক জাল করে ফেলা। সহজে ধরা খাওয়ার চান্স নাই। কারণ, মামা ব্যাংকে খুব একটা যোগাযোগ রাখেন না। মাঝে মাঝে শুধু টাকা জমা দেন। সমস্যা একটাই, একবারে কোনো ব্যাংক থেকে এতো টাকা ঝামেলা ছাড়া তোলা যাবে কিনা।<br />
অবশ্য কোনো ঝামেলাই করতে হল না সাদেককে। তার আগেই ভাগ্য বদলে দেওয়া একটা কাহজ হাতে পেয়ে গেল সে। এমন কিছু না, একটা জীবন বীমার কাগজ। মামার বিছানার তলায় হাতাতে গিয়ে পেয়ে গেল সাদেক। <br />
আর কাগজটাই চোখ খুলে দিল তার। দেড় কোটি টাকার একটা জীবন বীমা আছে মোতালিব মামার। মামা মারা গেলে টাকাটা পাবে তার নমিনি। আর নমিনিটা কে? খোদ সাদেক আলম!<br />
এবার সাদেক বুঝল, মামা কেন বছর দুয়েক আড়ে তার পাসপোর্ট সাইজের ছবি চেয়েছিল। সঙ্গে সঙ্গে ‘কি করতে হবে’ বুঝে ফেললো সেÑমামাকে সরিওেয় দিতে হবে। <br />
কিন্তু ‘সরিয়ে দিতে হবে’ বললেই তো আর হল না। পুলিশ আর ইন্সুউরেন্স কোম্পানির লোকজনের মনে সন্দেহ না তৈরি করে সরাতে হবে। কাজটা সোজা না। গত এক সপ্তাহ ধরে কাজটা করার উপায় ভাবছে সাদেক। উপায় বের করার জন্য সে একটা পর একটা ইংরেজী সিনেমাও দেখা শুরু করল। ইংরেজী সিনেমাগুলোয় খুন করার দারুণ সব উপায় দেখানো হয়। <br />
বললে বিশ্বাস করবেন না, ওই একটা সিনেমা থেকেই আইডিয়াটা পেয়ে গেল সাদেক। খুবই সোজা আইডিয়া। কোনো ভারী অস্ত্রপাতি লাগবে না, বিষ লাগবে না। লাগবে স্রেফ একটা হাইপোডার্মিক সিরিঞ্জ। শুনতে যতই খটমটে নাম হোক, আসলে ওই যে স্রেফ ইনজেকশন করার সিরিঞ্জ।<br />
অবশেষে দিনটা পেয়ে গেল সাদেক। <br />
‘শরীর কেমন খারাপ লাগতিছে’ বলে সকাল সকাল শুয়ে পড়েছিলেন মোতালিব সাহেব। সাদেকও ‘ডাক্তার ডাইকে আনি’ বলে বেরিয়ে গেল। যাওয়ার সময় পাশের ফাটের মতিন সাহেবকে বলে গেল, ‘মামার শরীর খারাপ; একটু খেয়াল রাখবেন।’ ফিরে এল পাঁচ টাকা দামের একটা সিরিঞ্জ কিনে নিয়ে। <br />
মামার রুমে ঢুকে ডাক দিল, ‘মামা। ও মামা!’<br />
‘হু’<br />
‘ডাক্তার কইুছে পরে আসবে। একটা ইনজেকশন করে দিতি কইলো।’<br />
‘ইনজেকশন করবে কেডা?’<br />
‘আমি পারি তো। প্যারামেডিকের টেনিং নেলাম না সেবার?’<br />
মামা আর কথা বাড়ালেন না। হাত বাড়িয়ে দিয়ে চোখ বুজলেন। সিরিঞ্জটা বের করে স্রেফ পাঁচ সিসি বাতাস টেনে নিল সাদেক। আর কিচ্ছু লাগবে না। এবার মামার হাত ধরে শিরাটা খুজে বের করল। কাপা হাতে জোর করে শিরায় ঠেলে দিল বাতাস। এবার যা করার বাতাসই করবে। <br />
তাই করল। পনেরো মিনিটের মধ্যে ‘বুকে ব্যাথা, বুকে ব্যাথা’ বলে চিৎকার শুরু করলেন মোতালিব মামা। সাদেকও ‘ডাক্তার, ডাক্তার! পানি’ বরে চিৎকার শুরু করল। প্রতিবেশীরা ছুটে এলো এবং ‘হƒদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে’ মারা গেলেন মোতালিব মামা। <br />
<br />
সাদেক আলম এখন একজন অমর মানুষ। সে যেমন ভেবেছিল, তার চেয়েও অনেক নিরাপদে সব ঝামেলা চুকেছে। সময় মতই ইন্সুরেন্স কোম্পানি টাকা দিয়ে দিয়েছে। সাদেক তিন দফায় অমরত্বের ওষুধ নিয়েছে শরীরে। এখন আর স্বাভাবিক কোনো কারণে তার মৃত্যু নেই। <br />
সবচেয়ে বড় কথা, মোতালিব মামা মরার পর সাদেক আবিস্কার করেছে, এখন সে রীতিমত বড়লোক মানুষ। মামা আপার আর তার জন্য সমান সম্পদই রেখে গেছেন। এখন সে ইচ্ছে করলে আরও দু এক জন মানুষকে অমর করতে পারে। সাদেকের আপাতত একজন মানুষকে অমর করার পরিকল্পনা আছেÑতার বৌ। <br />
হ্যা, সাদেক বিয়েও করছে। আজই ঘটক আসার কথা। এই জন্য শুক্বুরবার বিকেলে কোথাও যায়নি সাদেক। ধবধবে সাদা একটা পাঞ্জাবী পরে বাসায় বসে আছে।<br />
কলিংবেল বেজে উঠতেই বুঝল, ঘটক, মানে তার এক চাচার শালা এসে গেছেন। দরজা খুলে অবশ্য একটু অবাক হল সাদেক। ঘটকের তো পুলিশের পোশাক পরে আসার কথা না। <br />
এই ভদ্রলোকের পরনে পুলিশের পোশাক। বুকে কি সব তারা-টারা লাগানো। পকেটের ওপর ব্যাচে লেখা, সাবেত আলী। <br />
পুলিশ হলেও সাবেত আলী লোকটা খারাপ না। হতভম্ব সাদেককে পাশ কাটিয়ে ভেতরে ঢুকেই বললেন, <br />
‘মামার টাকায় দিন তাহলে ভালোই কাটছে সাদেক সাহেব?’<br />
‘হ্যা, মানে, তা তো বটে।’<br />
‘কিন্তু খুনটা তো না করলেও পারতেন। ক দিন পর তো এমনিতেই টাকাটা পেতেন।’<br />
‘খুন! হাঃ হাঃ! কি বলেন আপনি! মাথা ঠিক আছে?’<br />
‘মাথায় কোনো সমস্যা না। বুদ্ধিটা ভালোই করেছিলেন। কিন্তু পোস্টমর্টেম রিপোর্টে ধরা পড়ে গেছেন।’<br />
‘পোস্টমর্টেম রিপোর্ট! সে তো কবেই আসছে। তাতে তো ডাক্তাররা কিচ্ছু পায়নি। সেই রিপোর্ট দেখেই তো ইন্সুরেন্স কোম্পানি টাকা দিল।’<br />
‘সব সত্যি। কিন্তু ওই কিছু না পাওয়াটাই তো সমস্যা। কিছু একটা যে পেতে হত সাদেক সাহেব।’<br />
‘কি পেতে হত?’<br />
‘আপনি যে ইনজেকশন করেছিলেন, সেটার নমুনা তো মোতালিব সাহেবের রক্তে থাকার কথা।’<br />
‘ইনজেকশন!’<br />
‘‘হ্যা। এখানেই ভুলটা করেছিলেন। মোতালিব সাহেবের প্রতিবেশি মতিন সাহেবকে আপনি বলেছিলেন, ‘ইনজেকশন দিয়ে দিয়েছি।’ আমরাও পরে সেই সিরিঞ্জটা খাটের নিচে পেয়েছি। স্রেফ বাতাস শিরায় পাঠিয়ে দিলে যে কি হয়, ডাক্তাররা তো তা জানে। ফলে, আপনি ধরা পড়ে গেলেন সাদেক সাহেব’’। <br />
<br />
সরকার পরে উকিল সাদেক আলমের ফাঁসি চেয়েছিল। কিন্তু আদালত সে কথা রাখেননি। একটু মুচকি হেসে বিচারক তার রায় শুনিয়েছিলেনÑ<br />
সকল স্বাী স্বা ও উপস্থিত প্রমানাদি বিচার করে এই আদালত সিদ্ধান্তে পৌছেছে যে, আসামী সাদেক আলম সত্যিকারের অপরাধী।... আদালত তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করছে। এর আগ পর্যন্ত প্রচলিত যাবজ্জীবন নয়। অমর সাদেক আলম যতদিন বেচে থাকবেন, ততদিনই তাকে কারদণ্ড ভোগ করতে হবে।<br />
<br />
প্রথম আলো বন্ধুসভার সাহিত্য ম্যাগাজিনে প্রকাশিতদেবব্রত মুখোপাধ্যায়http://www.blogger.com/profile/10351018961072501066noreply@blogger.comtag:blogger.com,1999:blog-374060266804648478.post-30088556465642314392011-06-24T04:57:00.000-07:002011-06-24T11:51:01.307-07:00বিতর্কহীন ২৪ বছর<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEic3w_H5M6PBxAMQ04inq3lPN1xa15n4CLFMQn8BXkSv2a5wJxT9rLP5dUGcCsWEOhsfohoM4BgRWMfiYvR6gFPVt6yC05RKkHPSt7gmji6ExfyqcgUnVhI2IJdZxRw4cW4fU239bF_JLo/s1600/When_you_smash_Lionel_Messi.jpg" imageanchor="1" style="clear:left; float:left;margin-right:1em; margin-bottom:1em"><img border="0" height="128" width="200" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEic3w_H5M6PBxAMQ04inq3lPN1xa15n4CLFMQn8BXkSv2a5wJxT9rLP5dUGcCsWEOhsfohoM4BgRWMfiYvR6gFPVt6yC05RKkHPSt7gmji6ExfyqcgUnVhI2IJdZxRw4cW4fU239bF_JLo/s200/When_you_smash_Lionel_Messi.jpg" /></a></div><br />
<br />
<br />
দাঁড়িয়ে, বসে বা চলন্ত অবস্থায়; যে যেখানে এ লেখাটা পড়ছেন একবার ‘ধন্যবাদ’ শব্দটি উচ্চারণ করুন। ধন্যবাদ দিন আর্জেন্টাইন একজন মা, সেলিয়া মারিয়া কুচিত্তিনিকে। একটা ধন্যবাদ এ মায়ের প্রাপ্য।<br />
আজ ঠিক ঠিক চব্বিশ বছর আগে তখনকার এ পরিচ্ছন্নতাকর্মী ভদ্রমহিলা জš§ দিয়েছিলেন ফুটফুটে এক সন্তানকে। কালক্রমে সেই সন্তান আজ দুনিয়া কাঁপানো ফুটবলার লিওনেল আন্দ্রেস মেসি। এমন সন্তানকে জš§ দেওয়ার জন্য একটা ধন্যবাদ সেলিয়া মারিয়া কুচিত্তিনি পেতেই পারেন।<br />
সর্বশেষ দুবারের ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার, সর্বশেষ টানা তিনবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা, সর্বশেষ তিন বছরের মধ্যে দুবছরের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেরা দলের সেরা খেলোয়াড়, সর্বশেষ তিনটি স্প্যানিশ লিগজয়ী দলের প্রাণভোমরা-এ সামান্য কয়েকটা তথ্যই যথেষ্ট। এতেই বোঝা সম্ভব, এ মুহূর্তে এই পৃথিবীর সেরা ফুটবলারটি কে!<br />
আজ থেকে ঠিক ২৪ বছর আগে রোজারিওর সেন্তা ফেতে অত্যন্ত দরিদ্র এক পরিবারে জš§ নিয়েছিলেন লিওনেল মেসি। ইতালিয়ান বংশোদ্ভূত বাবা হোর্হে হোরাসিও মেসি ছিলেন একটা স্টিল কারখানার কর্মী। আর মা সংসার চালাতে কাজ করতেন পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে। এমন নুন আনতে পান্তা ফুরোয় পরিবারের চতুর্থ সন্তান হিসেবে ঘিঞ্জি এক আবাসস্থলে দুনিয়ার আলোয় চোখ মেলেছিলেন আজকের বিলিওনেয়ার মেসি!<br />
মাত্র পাঁচ বছর বয়সে বন্দরনগরীর আর সব শিশুর সঙ্গে মিলে ফুটবল খেলতে শুরু করেছিলেন। বাবা হোর্হে কাজের ফাঁকে ফাঁকে গ্রান্দোলি নামে একটা পাড়ার ক্লাব দলে কোচিং করাতেন। বাবার হাত ধরে ওই বছর পাঁচেক বয়সেই গ্রান্দোলির হয়ে খেলা শুরু করলেন। তখনই ছেলেটার বল নিয়ন্ত্রণ আর ড্রিবলিং ক্ষমতা দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন স্থানীয় ফুটবলাররা।<br />
আট বছর বয়সেই ক্ষুদে এ ফুটবল যাদুকরের কাণ্ডকীর্তি দেখে তাকে দলে ভিড়িয়ে ফেলল রোসারিওরই ক্লাব নিউয়েল ওল্ড বয়েস। এখানেই রাতারাতি আর্জেন্টাইন ফুটবলের আলোচনায় চলে আসতে শুরু করলেন। ওই বয়সী মেসির খেলা দেখেই আর্জেন্টাইন পত্রপত্রিকায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছিল। ততদিনে মেসির ওপর বিভিন্ন ইউরোপিয়ান ক্লাবের চোখও পড়ে গেছে। এমন অবস্থায় দারুণ সুখের একটা ভবিষ্যৎ নিয়ে স্বপ্ন দেখতে হোর্হে মেসির কোনো বাধা ছিল না।<br />
কিন্তু বজ্রপাতের মতোই খবরটা এল মেসি পরিবারে-দুরারোগ্য এক হরমোন রোগে আক্রান্ত মেসি। যে রোগের চিকিৎসায় দীর্ঘকাল ধরে বহুমূল্য ওষুধ, ইনজেকশন চালিয়ে যেতে হবে। এ সামর্থ্য তো মেসি পরিবারের নেই। হোর্হে মেসির কাছে তখন ইউরোপিয়ান ক্লাবগুলো থেকে একটার পর একটা প্রস্তাব আসছে। আর যে স্কাউটই আসছে, তাকে হোর্হে মেসি বলছেন, ‘ছেলের চিকিৎসার কী হবে?’<br />
বার্সেলোনার স্কাউটরা বললেন, ক্লাব ডিরেক্টরের ছেলেটাকে দেখে পছন্দ হলে চিকিৎসার একটা ব্যবস্থা হতে পারে। ট্রায়াল দিতে মেসিকে নিয়ে আসা হল স্পেনে। এবার আরেকটা ধন্যবাদ দিন কার্লেস রেক্সাসকে। রেক্সাস তখন বার্সেলোনার ক্রীড়া পরিচালক। অত্যন্ত বিরক্তিভরে আর্জেন্টিনা থেকে উড়িয়ে আনা বাচ্চাটির অনুশীলন দেখতে গিয়েছিলেন। দেখেই চমকে উঠলেন। এ কী!<br />
মেসির সামান্য কয়েক মিনিটের কারিকুরি দেখে রেক্সাস এতটাই মোহিত হয়ে গিয়েছিলেন যে, উঠে গিয়ে কাগজ আনার বিলম্ব সহ্য হয়নি। পকেটে ছিল টিস্যু পেপার। তাতেই মেসিকে দিয়ে তার জীবনের প্রথম চুক্তিপত্রটা সই করিয়ে ফেললেন রেক্সাস। ভাগ্যিস করিয়েছিলেন; তাই আমরা বার্সেলোনার হয়ে অতিমানবীয় ফুটবল খেলতে থাকা ভিনগ্রহের এক ফুটবলারকে উপহার পেলাম।<br />
মেসি বার্সেলোনায় এসে কী কী করেছেন, তার খতিয়ান দিতে গেলে মহাভারত হয়ে যাবে। সে কাজে দরকারও নেই। মেসি কত গোল করেছেন, কত গোল করিয়েছেন; এসব কাগুজে হিসাব তাকে পরিসংখ্যানের বিবেচনায় হয়তো সেরা করে তুলবে। কিন্তু এ কাঠখোট্টা পরিসংখ্যানের সাধ্য কি মেসির পায়ের যাদু বর্ণনা করে!<br />
একসঙ্গে ছয় ডিফেন্ডার ঘিরে ধরে তাকে, ভেতর থেকে কী এক অবিশ্বাস্য যাদুবলে বল পায়ে বেরিয়ে আসেন মেসি, আঁকা-বাঁকা ছুটে মোহনীয় ভঙ্গিতে পেছনে ফেলে দেন হতভম্ব ডিফেন্ডারদের, চুলচেরা পাসে পেয়ে যান সতীর্থকে কিংবা বুলেটের মতো আচমকা শটে বল জড়িয়ে যায় জালে। সংখ্যা, গোল, পরিসংখ্যান দিয়ে এ মেসির শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করা সম্ভব নয়। সে শুধু যে দেখে, সেই জানে!<br />
তারপরও বলি, এসব কথা দিয়েও আসল মেসিকে বোঝা যায় না। আসল মেসিকে বুঝতে গেলে একটা শব্দ মাথায় রাখুন-নিষ্কলঙ্ক! এই যে কাতারে কাতারে সাফল্য, গণ্ডায় গণ্ডায় ট্রফি, বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার; এর কোনো কিছুই মেসির জীবনে একটা কালির দাগ লাগতে দেয়নি।<br />
মেসির সমবয়সী বা তার আগের প্রজšে§র ফুটবলারদের কথা স্মরণ করে দেখুন। পকেটে দুটি ডলার আর হাতে একটি ট্রফি উঠতে না উঠতেই নারী, মদ, জুয়া, নাইটক্লাব, কোচের সঙ্গে হাতাহাতি; একেকজন মহারথী কী না করেছেন! অথচ এ যেন ফুটবলের শচীন টেন্ডুলকার। সব পাবেন, কিন্তু কাদা লাগতে দেবেন না গায়ে।<br />
লোকে বলে ‘নতুন ম্যারাডোনা’। সাফল্যে হয়তো এখনও ম্যারাডোনাকে স্পর্শ করতে পারেননি। কিন্তু এই যে নিষ্কলঙ্ক এক জীবনযাপন করছেন, তাতে কি ম্যারাডোনাকেও একটু টপকে যাচ্ছেন না!দেবব্রত মুখোপাধ্যায়http://www.blogger.com/profile/10351018961072501066noreply@blogger.comtag:blogger.com,1999:blog-374060266804648478.post-25153821104927322762011-06-23T11:30:00.000-07:002011-06-23T11:30:25.221-07:00উড়ালী মাওলাহাফহাতা শার্ট আর হাফ প্যান্ট পরে ঘরের চালে বসে আছেন করিম মাওলা। খালি খালি বসে নেই, অপো করছেন। একটু বাতাসের জন্য অপো করছেন। বাতাস এলেই উড়াল দেবেন। বেশিন অপো করতে হবে না। বাতাসের মতিগতি করিম মাওলার এখন মুখস্থ হয়ে গেছে। মিনিট খানেকের মধ্যেই একবার না একবার হালকা একটু বাতাস আসবে। তাতেই বেশ উড়ে যেতে পারবেন।<br />
বাতাস এসে গেছে। করিম মাওলা লাফ দেওয়ার প্রস্তুতি নিলেন। এর মধ্যেই উঠোন থেকে সালেহা বানুর গলা শোনা গেল, ‘এহন আবার কোহানে যাও?’<br />
করিম মাওলার একত্রিশ বছর আগে বিয়ে করা বউ সালেহা বানু। একত্রিশ বছর ধরে এই ভদ্রমহিলার মুখে শুধু প্রশ্নই শুনে যাচ্ছেন তিনি। উত্তর খুব একটা দেন না। চুপচাপ থাকেন। এবার উত্তর না দিলে চলে না। তাই বললেন, ‘বাজারে।’<br />
‘বাজারে যাবা সেডা এট্টু কইয়ে গেলি ভালো হইত না? যাইয়ে তো খালি চা-বিড়ির সব্বনাশ করবা। কিছু কেনা কাটা করা দরকার সেয়া খেয়াল আছে?’<br />
‘কি?’Ñএই বাতাসটা গেল, করিম মাওলার ওড়া হল না। <br />
‘আসার সময় দয়া হলি কয়ডা জিরে আর তরকারী-মরকারী নিয়ে আইসো।’<br />
আবার বাতাস আসছে। আর উত্তর দেওয়ার জন্য দেরী করলেন না মাওলা সাহেব। দু হাত শূন্যে মেলে দিয়ে চাল থেকে ঝাপ দিলেন। একটুও নিচে নামলেন না। বাতাসে ভেসে রইলেন। সাতার কাটার মতো করে দু হাত সামনের দিকে চালাতেই শূন্যে চলা শুরু করলেন। উড়ছেন করিম মাওলা। <br />
করিম মাওলা উড়তে পারেন। অনেক দিন ধরেই উড়তে পারেন। প্রাইমারী স্কুলের চাকরি থেকে যেবার রিটায়ার করলেন, তার পরের বছর শীতকাল থেকেই উড়তে পারেন মাওলা সাহেব। পাখির মতো উড়ে খুব বেশিদূর যেতে পারেন না। হাত-পা ব্যাথা হয়ে আসে। একবার উড়ে মাইল দশেক দূরের মল্লিকের ব্রিজে গিয়েছিলেন। ফেরার সময় খুব কষ্ট হয়েছিল। <br />
মাওলা সাহেব যে উড়তে পারেন, এ নিয়ে শুরুতে গ্রামে বেশ হইচই হয়েছিল। ছোট চরের মধ্যে গ্রাম। হইচই তো হবেই। কিন্তু এখন আর হইচই হয় না। এখন দেখতে দেখতে সবার অভ্যেস হয়ে গেছে। গ্রামের সবাই মেনে নিয়েছে ব্যাপারটাÑকরিম মাওলা উড়তে পারে। <br />
মানিক সাইকেল চালাতে পারে, কালাম খুব ভালো সাতরাতে পারে, করিম মাওলা উড়তে পারে। করিম মাওলা অবশ্য কোনো ট্রেনিং-ফেনিং নিয়ে উড়তে শেখেননি। হঠাৎ হয়ে গেছে। <br />
একদিন নতুন বানানো প্রাইমারী স্কুলের ছাদে বসে ছিলেন। কেন যেন দু হাত ছড়িয়ে দিয়েই বসেছিলেন। হঠাৎ একটু দমকা বাতাস এসে উড়িয়ে নিয়ে গেল তাকে। সেই থেকে শুরু। প্রথম প্রথম কিছু সমস্যা হতো। যেমন, পাজামায় পা জড়িয়ে যাওয়াটা ছিল সবচেয়ে বড় সমস্যা। <br />
স্কুল মাস্টারি শুরুর পর থেকে পাঞ্জাবী-পাজামা পরতেন করিম মাওলা। ওড়ার সময় মাঝে মাঝে পাজামায় পা জড়িয়ে গিয়ে কেলেঙ্কারি হতো। একদিন তো পড়েই গিয়েছিলেন। পড়তে পড়তে সাবুদের মেগনিশ গাছের মাথায় এসে আটকে গিয়েছিলেন। পরে হাচড়ে-পাচড়ে কোনোক্রমে নেমেছেন। <br />
আরেকটা সমস্যা হতো নামার সময়। প্রথমদিকে বুঝতেন না বলে ওড়া শেষ করে নামার সময় পায়ে ব্যাথা পেতেন। পরে বুঝেছেন বিমানের মতো করতে হবে। একবারে ধপ করে না নেমে, একটু দৌড়ে থামতে হবে। নানা অভিজ্ঞতা দিয়ে করিম মাওলা এখন পাকা উড়ালী হয়ে গেছেন। <br />
হ্যা, গ্রামের লোকজন মাওলা সাহেবকে এখন ‘উড়ালী মাওলা’ বলে ডাকে। তবু ভালো, কিছু একটা বলে ডাকে। আগে তো মাওলা সাহেবকে কেউ ডাকতোই না। উড়তে শেখার আগে মাওলা সাহেব এই চরে থেকেও যেন ছিলেন না। <br />
স্কুলে মাস্টারি করতেন, ছাত্ররা তার কথা শুনত না। কথা শুনবে কি? কাশে ছাত্ররা থাকলে তো! মাওলা সাহেব একদিক দিয়ে কাশে ঢুকতেন, আরেক দিক থেকে হুড়মুড় করে কাশ থেকে বেরিয়ে যেত ছেলেপেলেরা। কোনোরকম লুকিয়ে-চুরিয়ে নয়, তার সামনে থেকেই বেরিয়ে যেতে। মাওলা সাহেবও কিছু বলতে পারতেন না। <br />
হেডস্যারকে গিয়ে বললে তিনি উল্টো মাওলা সাহেবের উপর প্তি হয়ে বলতেন, ‘আপনিই তো একটা অপদার্থ। আর কারো কাশ থেকে ছাত্ররা এভাবে চলে যায়? আপনি হচ্ছে ম্যানতা মারা স্যার, আপনার সামনে দিয়ে পারে। এরকম ম্যানতা মারা মাস্টেরের চাকরিই তো থাকার কথা না।’<br />
তা সরকারী চাকরি না হলে হয়তো রিটায়ার করার অনেক আগেই চাকরী চলে যেতো করিম মাওলার। চাকরি থেকেই বা লাভটা কি হয়েছে? শুধু তো হেডস্যার না। কারো কাছেই কোনো মানুষের মধ্যে পড়তেন না মাওলা সাহেব। <br />
কমনরুমে গিয়ে বসলে তিনি যেন উপস্থিতই নেই, এমনভাবে আলোচনা হতো। অন্যান্য স্যাররা কতো গল্প করতেনÑকারো ছেলের অসুখ, কারো ছেলে ভালো রেজাল্ট করেছে, কারো বাতের ব্যাথা। একদিন মাওলা সাহেব বলেছিলেন, তার কোমরে ব্যাথা। <br />
শুনে ঠ্যা ঠ্যা করে হেসে উঠেছিলেন হুজুর স্যার, ‘করিম মাওলার আবার কোমর, তাতে আবার ব্যাথা! ষাড়ের ইয়ে লাগাও মাওলা, ঠিক হয়ে যাবে।’<br />
ষাড়ের ইয়ে খুজতে মাওলা সাহেব আর কোথায় যাবেন? নিজেকেই তো ষাড়ের ইয়ে মনে হতো তার। বাজারে গিয়ে তার বয়সীরা যেখানে আড্ডা দেয়, সেখানে বসলে কেউ কথা বলে না। ছোটরা যেখানে বসে, সেই চায়ের দোকানে গেলেও ঝামেলা। <br />
তারই ছাত্র ছিল রশীদ। সেই রশীদ একদিন বিড়ি ফুকতে ফুকতে মাওলা সাহেবকে শুনিয়ে বলে, ‘এই মাওলা মাস্টের কিন্তু একটা সং। পোলাপাইনের পাশে বইসে সেগো লজ্জা দেয়ার চেষ্টা করে।’<br />
আরে বেটা, লজ্জা দেওয়ার কি আছে! তোর বিড়ি খেতে ইচ্ছে হয়, খা না। কিন্তু এমন কথা মাওলা সাহেব বলতে পারেন না। একটা নেভি সিগারেট ধরিয়ে ধীরে ধীরে বাজার থেকে চলে আসতেন। বিকেল বেলায় কোথায় যাবেন? শেষ দিকে নতুন বানানো স্কুল বিল্ডিংয়ের ছাদে উঠে তাই একা একা বসে থাকতেন। <br />
বাড়ি ফেরার তো উপায় নেই। ছেলেগুলো কেন যেন দুই চোখে দেখতে পারে না। ছোটটা দেখা হলেই বলে, ‘বাবা বিশটা টাকা দেও’। <br />
আচ্ছা, টাকা কি কাছে থাকে? বেতন তুলে বাড়ি ফিরতে যেটুকু সময় লাগে, বেতনের টাকা তো এরপরই সালেহা বানুর হাতে চলে যায়। সারা মাস মাওলা সাহেবকে কড়ায়-গন্ডায় হিসেব দিয়ে পয়সা নিতে হয়। এর মধ্যে তিনি কি করে ছেলেদের টাকা দেবেন?<br />
তাই ছেলের হাতে পড়ার চেয়ে স্কুলের ছাদে বসে থাকাটা অনেক ভালো। অবশ্য বাড়ি ফিরলে ছেলেদের হাতে পড়ার চেয়ে বড় ভয় ছিল সালেহা বানুর হাতে পড়া। এই ভদ্রমহিলা কেন যেন করিম মাওলাকে বিয়ের পরদিন থেকে জোক বলে মনে করেন। <br />
না, মুখে কখনো মাওলা সাহেবকে ‘জোক’ বলে ডাকেননি। মুখে বলতে হয় না। দেখলেই এমন ভঙ্গি করেন সালেহা খাতুন যে, মাওলা সাহেবের নিজেরই নিজেকে জোক বলে মনে হয়। <br />
এই অনুভূতিটার সঙ্গে মাওলা সাহেবের প্রথম পরিচয় বিয়ের পরদিনই। সালেহা খাতুন তখনও ঘোমটা খুলে লোকেদের সামনে পরিচিত হয়ে ওঠেননি। এর মধ্যেই মাওলা সাহেবকে ফিস ফিস করে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘তোমার মুখে এমন বিড়ির গন্ধ কেন?’<br />
সেই থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় কোটি খানেক প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছেন মাওলা সাহেব। এর এক শ ভাগের এক ভাগ প্রশ্নেরও উত্তর জানলে মাওলা সাহেব বিসিএস পাস করে যেতেন বলে বিশ্বাস। এখনও চলছে সেই প্রশ্ন আর প্রশ্ন। <br />
বাড়ি ফিরলেইÑপাজামায় দাগ কিসের? এতোন কই ছিলা? এ মাসে বেতন কম পাইলা কেন?; হাজারটা প্রশ্ন। এই যে মাওলা সাহেব উড়তে শিখেছেন, এদে গ্রাম জুড়ে তার একটু হলেও কদর বেড়েছে। লোকে এখন একটু পাত্তা দেয়। কিন্তু সালেহা খাতুন সেই আগের মতোই। <br />
উড়তে শেখার আগে পরে, আরেক জন লোকের কাছে অবশ্য মাওলা সাহেব একইরকম আছেনÑকালীপদ হালদার। হাইস্কুলের অঙ্কের মাস্টার কালীপদ বাবু। এই দুনিয়ায় একমাত্র লোক যিনি উড়তে শেখার আগেও মাওলা সাহেবকে পাত্তা দিতেন। <br />
এখনও দেন, তবে বাড়তি কোনো গুরুত্ব ওড়ার জন্য দেন না। কালীপদ বাবু বরং মাঝে মাঝে বলেন, ‘এই বয়সে এসব ওড়াউড়ি ভালো না, মাওলা। উড়লে উড়বে ছোট ছেলেপিলেরা। তুমি কেন উড়তে যাও। বুড়ো বয়সে উড়তে গিয়ে হাত-পা ভাঙলে বিপদ।’<br />
মাওলা সাহেব এসব কথায় পাত্তা দেন না। উড়তে পারেন বলেই না আজকাল লোকে তার সঙ্গে ডেকে কথা বলে। এমনকি হেডমাস্টার সাহেব পর্যন্ত মাঝে মাঝে বাড়ি এসে দেখা করেন, ‘তুমি তো আমাদের গর্ব মাওলা। তোমাকে নিয়ে এখন পত্রপত্রিকায় লেখা হচ্ছে।’<br />
হ্যা, পত্রিকায়, মানে স্থানীয় দৈনিক সর্বাঞ্চলে মাওলা সাহেবকে নিয়ে একা লেখা ছাপা হয়েছেÑউড়ন্ত মানব। পাশের গ্রামের বশির এই পত্রিকায় কাজ করে। সে একটু রঙ-টঙ চড়িয়ে লিখেছে, ‘মাওলা সাহেব ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত সাহসী মানুষ বলে পরিচিত। স্থানীয় মানুষের মঙ্গলের জন্য সর্বদাই তিনি ব্যতিব্যস্ত। সেই মাওলা সাহেব এখন উড়তে শিখে স্থানীয় লোকেদের প্রভূত উপকার করছেন...’।<br />
এটা খানিকটা সত্যি। মাওলা সাহেব উড়তে শেখায় গ্রামের লোকেদের সত্যিই কিছু উপকার হয়েছে। অন্তত গাছ থেকে নারকেল পাড়া বা চালের ওপর থেকে কুমড়ো পেড়ে দেওয়ায় মাওলা সাহেবের জুড়ি নেই। <br />
মাওলা সাহেব উড়তে পারায় সবচেয়ে উপকার হচ্ছে ছেলেপিলের। ইদানীং তারা মাওলা সাহেবের খুবই ন্যাওটা হয়ে গেছে। কারণ মাওলা সাহেব উড়ে যাওয়ার সময় ওদের গাছে বেধে যাওয়া ঘুড়িটা পেড়ে দেন, বরই-আম পেড়ে দেন। <br />
মাওলা সাহেব এখনবাজারে গেলে লোকজন খাতির করে বসায়। দু একদিন পয়সা না দিয়েই চা-বিড়ি খেয়ে আসতে পারেন, অন্য কেউ দিয়ে দেয়। লোকেরা বাইরের মানুষের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়, ‘এই যে আমাগো উড়ালী মাওলা।’<br />
মাওলা সাহেবের খ্যাতি একটু একটু করে শহরে পৌছে গেল। এক টেলিভিশন সাংবাদিক চলে এলেন ক্যামেরা নিয়ে। মাওলা সাহেব ঠিকই উড়লেন। কিন্তু বেয়াড়া ক্যামেরা সেদিন বিগড়ে গেল। তাই টেলিভিশনে দেখা গেল না উড়ালী মাওলাকে। <br />
সবমিলিয়ে মাওলা সাহেবের এখন রমরমা সময়। পুরো গ্রামেরই আজকাল রমরমা সময় যাচ্ছে। সেটা মাওলা সাহেবের জন্য না। গ্রামে বিদ্যুত আসছে বলে। এবার ইউনিয়ন কাউন্সিল নির্বাচনে চেয়ারম্যান হয়েছে এই গ্রামের রশীদউদ্দি। <br />
রশীদউদ্দি মাওলা সাহেবেরই ছাত্র ছিল। অত্যন্ত বাঁদর ও মূর্খ প্রকৃতির ছাত্র ছিল। কিন্তু চেয়ারম্যান হয়ে গেলে বাঁদররাও ভালো হয়ে যায়, মূর্খরাও জ্ঞানী হয়ে যায়। তাই রশীদউদ্দি এখন বিশিষ্ট মানুষ। সেই বিশিষ্ট মানুষ রশীদউদ্দির চেষ্টায় গ্রামে বিদ্যুত আসছে। <br />
সে জন্য অবশ্য গ্রামের লোকেদের কিছু টাকা খসাতে হয়েছে। মাওলা সাহেবের বাড়িও লাইন নেওয়ার জন্য ৫ হাজার টাকা দেওয়া লেগেছে। তারপরও বিদ্যুত আসছে। গ্রামে খুটি বসানো শুরু হয়ে গেছে। আগামীকাল থেকে নাকি তারও টানা শুরু হবে। <br />
মাওলা সাহেবেরও এই সুবাদে ব্যস্ততা বেড়ে গেছে। বিদ্যুতের লোকজনের খুব সাহায্য করছেন মাওলা সাহেব। এ খুটি থেকে ও খুটি উড়ে গিয়ে তার টানায় সাহায্য করছেন। কখনো আবার খুটির মাথায় সাদা সাদা সকেট উঠিয়ে দিচ্ছে। <br />
মাঝে মাঝেই হুঙ্কার শোনা যাচ্ছে, ‘উড়ালী চাচা, এই খুটিতে ক্যাবেলটা একটু লাগায়ে দেন না।’<br />
উড়ালী মাওলা মহা আনন্দে উড়ে উড়ে এইসব করে চলেছেন। জীবনে এই প্রথম নিজেকে বড় প্রয়োজনীয় মনে হচ্ছে। <br />
দেখতে দেখতে গ্রামের সব বাড়িতে তার লেগে গেল। আগামী শুক্কুরবার বাদ জুম্মা রশীদউদ্দি চেয়ারম্যান সুইচ টিপে গ্রামে বিদুত উদ্বোধন করবে। সে নিয়েও বিরাট তোড়জোড়। <br />
স্কুল মাঠে বিশাল প্যান্ডেল করা হয়েছে। মাওলা সাহেব উড়ে উড়ে নারকেলের পাতা, কুটো এনে দিচ্ছেন; লোকেদের বসার জন্য। বিকেল বেলায় শুরু হয়ে গেল অনুষ্ঠান। সারা গ্রাম ভেঙে পড়েছে বিদুত উদ্বোধন দেখার জন্য। <br />
একটা বড় সুইচ টিপে দেবেন চেয়ারম্যান রশীদউদ্দি। সঙ্গে সঙ্গে আলো জ্বলে উঠবে, বেজে উঠবে মাইক। তাই হল রশীদউদ্দি সুইচ টিপলেন। আলো জ্বললো। কিন্তু ঝামেলা করল মাইক। একটা হিন্দী গানের এক লাইন বেজেই কো কো করে থেমে গেল। <br />
এরপর মাইকে গান বাজাতে গেলেই ওই কো কো শব্দ। বড়ই হতাশ হলো লোকজন। তাই বলে অনুষ্ঠান তো থেমে থাকতে পারে না। বক্তুতা শুরু হল। উথালিপাথালি বক্তৃতা দিতে শুরু করলেন রশীদউদ্দি। হঠাৎ বক্তৃতার মাঝেই তার মনে পড়ে গেল মাওলা সাহেবের কথা, ‘আমাদের গ্রামের গর্ব, এই দুনিয়ার বিস্ময় মাওলা সাহেব সম্প্রতি আকাশে ওড়ার গৌরব অর্জন করেছেন...’<br />
মাওলা সাহেবের বুকটা ফুলে গেল। গ্রামের মহিলাদের সঙ্গে সালেহা খাতুনও বসা আছেন। তিনি কি শুনছেন কথাগুলো? কে জানে! চেয়ারম্যান বলেই যাচ্ছেন, ‘আমি সরকারের কাছে সুপারিশ করব মাওলা সাহেবকে যেন একুশে পদক দেওয়া হয়...’। <br />
কে যেন ‘হাতেক তালি’ বলে চিৎকার দিল। অমনি হাতে তালি শুরু হয়ে গেল। আবার মাইক কো কো শুরু করল। বড়ই বিরক্ত হচ্ছে চেয়ারম্যান রশীদউদ্দি। বিরক্তি থেকে বাচতেই কিনা প্রস্তাব করলেন, ‘এবার আমাদের একটু উড়ে দেখাবেন উড়ালী মাওলা সাহেব।’<br />
মাওলা সাহেবকে কয়েকজন ধরে নিয়ে গেল স্কুলের ছাদে। কিন্তু মাওলা সাহেব আজ উড়তে চাচ্ছিলেন না। একটা ঝামেলা হয়ে গেছে। আজ অনুষ্ঠান উপলে বিকেল বেলায় পাজামা-পাঞ্জাবী পরে বেরিয়েছিলেন মাওলা সাহেব। যদি কেলেঙ্কারী হয়ে যায়?<br />
লোকজন কথা শুনল না। মাওলা সাহেব দু হাত ছড়িয়ে বাতাসের জন্য এক লহমা অপো করলেন। তারপরও উড়াল দিলেন। ওপর থেকে সবাইকে কত্ত ছোট্ট দেখা যায়। তার স্ত্রী সালেহা খাতুন, হেডস্যার, রশীদউদ্দি; সব্বাইকে এখন খুব ছোট লাগছে। <br />
মাওলা সাহেব নামার জন্য প্রস্তুতি নিলেন। তখনই কেলেঙ্কারিটা হয়ে গেল। পা জড়িয়ে গেল পাজামায়। পড়ে যাচ্ছেন মাওলা সাহেব। এখানে গাছও নেই যে আকড়ে ধরবেন। পড়তে পড়তে হঠাৎ হাতের কাছে পেলে সেই তার, আকড়ে ধরলেন মাওলা সাহেব। <br />
গতকাল পর্যন্ত যে তার বরফ ঠান্ডা ছিল, তাই আজ কেমন হিংস্র হয়ে উঠেছে। সালেহা খাতুনের চেয়েও ভয়াবহ চেহারায় জ্বলে উঠল বিদ্যুতের তার। <br />
নিচে ‘গেল গেল’ রব উঠল। রবটা কি শুনতে পেলেন মাওলা সাহেব? নইলে তার থেকে ছিটকে পড়ার সময় তার মুখে অমন হাসি থাকবে কেন?<br />
হাসি হাসি মুখ নিয়ে মাটিতে পড়লেন মাওলা সাহেব। সারা শরীর পুড়ে গেছে, কিন্তু মুখে হাসি। মনে হয়, উড়তে গিয়ে বিদ্যুতে পুড়ে মরার চেয়ে আনন্দের আর কিছু হয় না।দেবব্রত মুখোপাধ্যায়http://www.blogger.com/profile/10351018961072501066noreply@blogger.comtag:blogger.com,1999:blog-374060266804648478.post-28279626372227220972011-06-23T10:29:00.000-07:002011-06-23T10:29:15.556-07:00‘আমার’ নতুন দুনিয়া<div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEi8bOrRsk1V3k5K3rDrEeAWj2tx4vipaLmlq9EKd3ZISU1TsQsEBpn-voAdEFynJ_cIgWogUsK1uImIA-eZ8-xGtmNgqq51x-yZVR7j9u34I1HDoe0cT9-vpjxFXNbEwRrPdclsCE6wQQI/s1600/Evolution.jpg" imageanchor="1" style="clear:left; float:left;margin-right:1em; margin-bottom:1em"><img border="0" height="131" width="200" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEi8bOrRsk1V3k5K3rDrEeAWj2tx4vipaLmlq9EKd3ZISU1TsQsEBpn-voAdEFynJ_cIgWogUsK1uImIA-eZ8-xGtmNgqq51x-yZVR7j9u34I1HDoe0cT9-vpjxFXNbEwRrPdclsCE6wQQI/s200/Evolution.jpg" /></a></div><br />
<br />
একসময় ‘আমাদের’ শব্দটা খুব পছন্দ ছিল। নিকোলাই অস্ত্রভস্কির কাছ থেকে শিখেছিলাম: সবকিছুকে ‘আমাদের’ বলে ভাবতে পারাতেই আনন্দ। <br />
নিশ্চয়ই সেই দিনগুলো, সেই চিন্তা আমাকে ছেড়ে গেছে। এখন ‘আমার’ শব্দটা খুব প্রিয় হয়ে গেছে। সব জায়গায় ‘আমার নিজস্ব’ বলে কিছু একটা চাই চাই-ই। আমার বাসা, আমার বৌ, আমার কম্পিউটার, আমার টাকা, আমার মোটর সাইকেল; সব একার করে চাই। <br />
এই একার করে চাওয়ার চিন্তা থেকে ‘আমার ওয়েবসাইট’ ব্যাপারটা মাথায় এলো। <br />
বেশ ছিলাম। ব্লগে লিখছিলাম। প্রথম আলো ছাড়ার পর হাতে বেশ একটা সময় ছিল। তখন মনে হল, ব্লগিং করি। সালাউদ্দিন শুভ্র বহুকাল আগে একটা আইডি বানিয়ে দিয়েছিল। সেটাকে ওরই সাহায্যে আবার উদ্ধার করা গেল। প্রথম আলো ব্লগে বেশ লিখতে লাগলাম, মন্তব্য করতে থাকলাম। <br />
হঠাৎ, একদিন মনে হল, আমার একার একটা ব্লগ থাকলে বেশ হয়। এই মনে হওয়ার পেছনে আরেকটা কারণ অবশ্য ছিল: নিজের পুরোনো সব লেখার একটা অনলাইন আর্কাইভও করতে চাচ্ছিলাম। একটা ওয়েবসাইটমতো কিছু থাকলে সেখানে সব পুরোনো লেখা পোস্ট করে রাখা যায়; মাঝে মাঝে অন্তত নিজে উল্টে দেখে তৃপ্তির ঢেকুর তোলা যায়। <br />
এই চিন্তা থেকে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলাম-ওয়েবসাইট বানাতে চাই। ও বাবা! যে পারে সে তো বটেই; যারা পারে না, তারাও দু হাত তুলে বললেন, আছি। এর মধ্যে একজন পরামর্শ দিলেন ‘ফিউশন ফাইভ’-এর সাহায্য চান। একটু ভড়কে গেলাম। ব্লগের এই ফিউশন ফাইভ বা লোকাল টক আইডিটাকে নিয়ে এমনিতেই বিভ্রান্তির শেষ নেই। তারওপর আবার দারুণ জনপ্রিয় চরিত্র। তার কাছে কি সাহায্য চাওয়া যায়?<br />
গাজী গাজী বলে একটা মেইল করে দিলাম। পরনেই উত্তর এলো-কিরকম সাইট চান? আমি আনন্দতাড়িত হয়ে বলে দিলাম, ‘ডোমেইন, হোস্টিং কিনে হলেও চাই।’ উনি বললেন, আপনার জন্য কেনার দরকার নেই। ফিও-ই ভালো। তারপর শুরু হল কাজ। আমার একটার পর একটা আবদার, আর ফিউশন ফাইভের আবদার পূরন। <br />
অবশেষে ফলাফলটা আপনাদের সামনে। এখনও এই সাইটে আরও কিছু কাজ করা হবে, অ্যাড্রেসটাও হয়তো বদলে যাবে ভবিষ্যতে। অনেক লিংক এখন অকার্যকর আছে, পরে চালু হবে। আমার যাবতীয় লেখা পোস্ট হবে। সবমিলিয়ে ‘আমার’ আরেকটা জগত উšে§াচন হবে। <br />
বলতে পারে, এর কাজ কবে শেষ হবে? আমার জীবদ্দশায় নয়। কারণ, আমি থাকলে এই সাইটের উন্নয়ন, পরিবর্তন চলতেই থাকবে। আমি জানি না, কতোজনকে পাশে পাবো। তবে যারা ওয়েবসাইটটায় মাঝে মাঝে ঘুরতে আসবেন, তাদের জন্য প্রতিশ্র“তি পড়ার মতো ছাইপাশ হলেও নিয়মিত থাকবে এখানে। <br />
‘আমার’ ওয়েব-দুনিয়ায় স্বাগত।দেবব্রত মুখোপাধ্যায়http://www.blogger.com/profile/10351018961072501066noreply@blogger.comtag:blogger.com,1999:blog-374060266804648478.post-51280224489129637762011-06-23T00:42:00.000-07:002011-06-23T00:42:01.717-07:00প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চার্য নিয়ে দু কথা<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"><span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;">কতোদিন হল? বছর দুয়েক মনে হয়। </span><span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;"></span><br />
<div style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;">শুরু হয়েছে, প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চার্য্য নির্বাচনের এক অফূরন্ত প্রক্রিয়া। শুরুতে শুরুতে আমিও ভোট দিয়েছি নিউ সেভেন ওয়ান্ডার্স সাইটে গিয়ে। এরপর প্রতিটা ব্লগ, পত্রিকা, টেলিভিশনে প্রচারনা; নানা অনুষ্ঠানে বক্তারা প্রাসঙ্গিক, অপ্রাসঙ্গিকভাবে যেমন বিষয়টির অবতারনা করেছেন, তাদের মানুষের দেশপ্রেম দেখে মুগ্ধ হয়েছি। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />একসময় আমরা আবিস্কার করেছি, দেশের মন্ত্রীরা এ নিয়ে কথা বলছেন, খোদ প্রধানমন্ত্রী কথা বলছেন।দেখেছি, দেশে শাহরুখ খান এলে তাকে দিয়ে ভোট দেওয়ানোর প্রতিশ্রুতি, দেখেছি এক মন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি: এখন থেকে এসএমএসেও সুন্দরবনকে ভোট দেওয়া যাবে। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />আমি মুগ্ধ হয়েছি। মনে হয়েছে, আসলেই দেশের মানুষগুলো দেশ নিয়ে পাগলপারা। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />এই মনে হওয়া থেকে পিছিয়ে আসার কোনো কারণ ঘটেনি। মানুষ এখনও সমানে এই ‘ভোট দিন’ প্রচারণা চালু রেখেছে। কিন্তু আমার একটা সন্দেহ গত কিছুদিন ধরে তৈরি হয়েছে: আমার কার পেছনে ছুটছি? এই যে ভোটাভুটি করছি, এতে লাভ-ক্ষতি কার কী হচ্ছে? কে বললো এভাবে সপ্তাশ্চার্য্য নির্বাচন করতে?<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />ব্যক্তিগতভাবে আমি এ ধরণের কোনো সপ্তাশ্চার্য্য চিহ্নিত করারই বিপক্ষে। এটা এক ধরণের বৈষম্য ও ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ করে। সে যাই হোক, আমার এসব ‘আদ্যিকেলে’ কথা তো দুনিয়া চলবে না। এখন জাতিসংঘ এরকম কোনো উদ্যোগ নিলে, সেটার তো একটা সার্বজনীনতা থাকবেই। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />আমরা শুনতে পেলাম, প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চার্য্য যারা নির্বাচন করছেন, তারা নাকি ইউনেস্কোর (জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা) অনুমোদনক্রমে কাজটা করছেন। কিন্তু ইউনেস্কোর ওয়েবসাইট কি বলছে? সেখানে ঢুকে বিস্ময়কর এক তথ্য আবিস্কার করা গেল। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />তাদের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পরিস্কার বলা হয়েছে, ‘এরকম কোনো ব্যক্তি উদ্যোগে ইউনেস্কো জড়িত থাকতে পারে না।’<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />বিজ্ঞপ্তিটি এরকম: <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />There is no comparison between Mr. Weber’s mediatised campaign and the scientific and educational work resulting from the inscription of sites on UNESCO’s World Heritage List. The list of the 7 New Wonders of the World will be the result of a private undertaking, reflecting only the opinions of those with access to the Internet and not the entire world. This initiative cannot, in any significant and sustainable manner, contribute to the preservation of sites elected by this public.<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" /><br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />June 20, 2007<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />The United Nations Educational, Scientific and Cultural Organization (UNESCO)<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />press release<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" /><br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />মানে, সোজা কথা তারা এই নির্বাচনের দায় নিচ্ছে না। তার মানে এই যে প্রক্রিয়াটা, পুরোটাই একটি সুইজারল্যান্ড ভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানের কাজ! তাদের লাভ কী? প্রথম লাভ তো, সোজা কথা, প্রচারনা। দ্বিতীয়ত আরও কিছু অর্থনৈতিক লাভালাভের অভিযোগ বিভিন্ন পক্ষ থেকে পাওয়া যাচ্ছে। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />এ ছাড়া মোবাইল, ফোন, ওয়েবসসাইট কোম্পানিগুলোর মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার প্রাপ্তির ব্যাপারও জড়িত এই পুরো প্রক্রিয়ার সঙ্গে।<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />এখন আমাদের কতোগুলো সোজা প্রশ্ন। এরকম একটি অস্বীকৃত প্রকল্পের জন্য এভাবে একটা রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে উঠেপড়ে লাগাটা কি মানানসই ব্যাপার? এভাবে ভোটাভুটি করে কি আদৌ কোনো সিদ্ধান্তে পৌছানো সম্ভব? কোনটি সপ্তাশ্চার্য, কোনটি নয়; সেটা নির্বাচন করতে পারেন বিশেষজ্ঞরা; আম জনতার, বিশেষ করে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ভোট এখানে কেন মূল ভূমিকা রাখছে?<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />আমার ফেসবুক বন্ধু জোবায়ের তনিম ভালো বলছিলেন, ‘একটা ব্যাপার চিন্তা করেন , যে দেশে জনসংখ্যা সব চেয়ে বেশি , তারা একটু চেষ্টা করলেই তাদের নদী নালা, খাল বিল ইত্যাদি সবকিছুকেই সপ্তম আশ্চর্য নির্বাচিত করতে পারবে ‘<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />ঘটনা সত্যি। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />এরপরও কথা থাকে। একটা কথা হল, প্লাটফর্ম যাই হোক, আমরা শুধু ভোট দিয়ে দেশের দুইটি জায়গাকে এভাবে পরিচিত করতে পারলে লাভ তো আমাদেরই। আমাদের পর্যটন শিল্প তাতে বিকশিত হবে, বিদেশী মূদ্রা আসবে। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />আসলেই তাই? পর্যটকরা কি এসব তালিকা দেখে কোথাও বেড়াতে যান? যেসব পর্যটক বেড়াতে বের হন, তারা কেউ সুন্দরবন বা কক্সবাজারের নাম জানেন না বলে আসেননি; এমন ঘটনা দেখলেও বিশ্বাস করার কথা নয়। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />আমরা পর্যটক আকর্ষন করতে পারি না, আমাদের নোংরা ব্যবস্থাপনা, যোগাযোগ-আবাসন সমস্যার কারণে। আরও অনেক সমস্যার কারণে। ফলে দুনিয়ার প্রত্যেককে সুন্দরবনের নাম মুখস্থ করিয়ে দিলেও এই সেক্টরগুলোতে কাজ না করলে পর্যটকও আসবে না, এক নম্বরও হওয়া হবে না। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" /><br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />(এই লেখা কাউকে নিরুৎসাহিত করার জন্য নয়। যারা সুন্দরবনের পক্ষে প্রচারনা চালাচ্ছেন, তাদের জন্য শুভকামনা। তাদের পরিশ্রমকে স্যালুট করি)</div></div>দেবব্রত মুখোপাধ্যায়http://www.blogger.com/profile/10351018961072501066noreply@blogger.comtag:blogger.com,1999:blog-374060266804648478.post-49591219985990165782011-06-23T00:41:00.001-07:002011-06-23T00:41:13.090-07:00আমার কান্না, আমার প্রাপ্তি<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"><span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;">একটা অদ্ভুড়ে সময় পার করলাম। </span><span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;"></span><br />
<div style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;">বাবা হবো বলে মনে মনে মচ্ছব করছিলাম। আগে কখনো বাবা হইনি তো, তাই!!! <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />কি বিচিত্র। হঠাৎ একদিন চিকিৎসকরা বললেন, আমার বৌ-এর গর্ভের সন্তানটি ঝুকির মধ্যে আছে। একদিন, পরশু মাঝরাতে পৃথিবীতে আসার আগেই পৃথিবী ছেড়ে গেল প্রানটি। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />এতে আমার আর এমন কী হয়েছে? আমি তো মচ্ছব করে সময় কাটাচ্ছিলাম। আর আমার বৌ তিনটে মাস ধরে তিল তিল করে প্রানটা বড় করে তুলছিল। অনেক স্বপ্নও দেখছিল। এখন এই অভিশাপের জালাটা টের পাচ্ছে সে। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />যখন অপারেশন থিয়েটার থেকে ওকে বের করে আনা হল; অর্ধ চেতন অবস্থায় আমার দিকে চেয়ে বড় বড় চোখ করে জিজ্ঞেস করলো, ‘ও কই?’ কেউ ভাবলো আমার বৌ তার মাকে খুজছে, কেউ বললো আমাকে খুজছে; আমি তো বুঝলাম, ও কাকে খোজে!!<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />নিজেকে অত্যন্ত অযোগ্য, অপদার্থ একজন মানুষ মনে হচ্ছে; যে কিনা একটা মেয়ের সন্তানের নিশ্চয়তা দিতে পারল না।<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />যাক, এসব ব্যক্তিগত ছিচকাদুনির জায়গা ব্লগ নয়। তারপরও প্রসঙ্গটা তুলতে হল <strong style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;">ঊপাধির</strong>জন্য। সে খুব আন্তরিকতার সঙ্গে গতকাল জানতে চেয়েছিল, আমি কেন ইদানিং ব্লগে পোস্ট দিচ্ছি না। কারণটা এই। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />তবে এই কারণ জানাতে গিয়ে একটু মধুর অভিজ্ঞতাও জানাই। মানুষ চরম বিপদগ্রস্থ না হলেও অনেক কিছু জানতে পারে না। এরকম সময়গুলোতে অনেক নতুন দুনিয়া উন্মোচিত হয়। আমার সামনে উন্মোচিত হল বন্ধুত্বের, সহানুভূতির বিচিত্র এক দুনিয়া। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />পরশু ঘটনা শুরু হয়ে যাওয়ার পর থেকে আমি দেখলাম, আমার চেনা আড্ডাবাজ, হালকা চালের মানুষগুলো কেমন সৈনিকের মতো হয়ে উঠল। মুখে একটা শব্দ না করেতারা কেমনভাবে এগিয়ে এলো। আমার প্রতিবেশী রাজু ভাই তখন ঘুমাচ্ছিলেন; দরজায় টোকা দিতেই শর্টপ্যান্ট আর টি-শার্ট পরে আমাদের সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সে চড়ে বসলেন। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />সিমু নাসের আর আসিফ এন্তাজ রবি যেন ফোনের জন্য অপেক্ষা করছিল। সঙ্গে আরও দুই বন্ধু নিয়ে হাজির। আমি শুধু মুখ কালো করে হাসপাতালে বসে রইলাম। সারা রাত কোথায় টাকা, কোথায় রেজিস্ট্রেশন, কোথায় ডাক্তার; ছুটে চললো এই মানুষগুলো। ভোর বেলা থেকে আরিফ রনি হাজির, রাজীব হাসান চোখ লাল করে এসে বললো, ‘সঙ্গে সঙ্গে একটা ফোন দিলেন না! আমি একটা কিছু অনুমান করে মোটর সাইকেল গ্যারেজে তুলিনি রাতে!’<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />আমার বন্ধুরা জানেন আমার অর্থ-বিত্ত কতো সমৃদ্ধ। সকাল থেকে ফোনের পর ফোন, ‘টাকা নিয়ে আসবো?’ তাদের নাম আলাদা করে বলে আসলেই ছোট করার ঠিক হবে না। এদিকে দীপ্ররা কয়েক জন ফেসবুকে আমার বৌ-এর জন্য রক্ত সংগ্রহের চেষ্টা শুরু করল। তাদের কাছে থেকে সাড়া আসতে শুরু হল।<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />একজন আপু, ফারজানা আপু; যাকে আমি কোনোদিন দেখিইনি, বারবার খবর নিচ্ছেন, ‘বৌ সুস্থ আছে তো?’ ফোনে আমার প্রিয় মানুষগুলো নোমান, শুভ্রদা, মামুন ভাই, বাবু ভাই, কায়সার ভাই; এমন উদ্বিগ্ন যেন বাংলাদেশের টেস্ট স্টাটাস কেড়ে নেওয়া হচ্ছে! <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />দিনশেষে সর্বশান্ত হয়ে আমি যখন বাসায় ফিরছি, তখন হঠাৎ করে মনে হল, ঢাকায় আটটি বছর যে পার করে ফেললাম, টাকা-পয়সা-বাড়ি-গাড়ি কিছুই তো জমাতে পারলাম না।<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />তবে এই আট বছরে যতো ভালোবাসা জমিয়েছি, তা দেখে শিল্পপতিরা ঈর্ষা করতে পারেন।</div></div>দেবব্রত মুখোপাধ্যায়http://www.blogger.com/profile/10351018961072501066noreply@blogger.comtag:blogger.com,1999:blog-374060266804648478.post-46732699086889595252011-06-23T00:36:00.001-07:002011-06-23T00:45:15.192-07:00লাদেনের মরার উপায় নেই।<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgigFgk5RsdkF-p7K5h6YvuybFAji0-fQDV7jB60T-A-oJRNg54Mc1Og1LR7c3ty2YX_QFM6FaiCaoktQi-wUlmIegjoFeKOCtm-ZpOOM5dNw57Jxt_toWfnpTbqBngzmwBBqTD4OzAXoQ/s1600/Osama-Bin-Laden-addressin-001.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" height="192" src="https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgigFgk5RsdkF-p7K5h6YvuybFAji0-fQDV7jB60T-A-oJRNg54Mc1Og1LR7c3ty2YX_QFM6FaiCaoktQi-wUlmIegjoFeKOCtm-ZpOOM5dNw57Jxt_toWfnpTbqBngzmwBBqTD4OzAXoQ/s320/Osama-Bin-Laden-addressin-001.jpg" width="320" /></a></div><span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;"><br />
</span><br />
<span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;">ওসামা বিন লাদেন নাকি মারা গেছেন!</span><span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;"></span><br />
<div style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;">বারাক ওবামা, যিনি শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন, মহা আনন্দের সঙ্গে এই হত্যাকান্ডের সত্যতা নিশ্চিত করে জাতির এবং বিশ্বের উদ্দেশ্যে ভাষন দিয়েছেন।<br />
আমাদের প্রেসিডেন্ট একটা জাতির উদ্দেশ্যে ভাষন দেন; আর ওবামারা পুরো দুনিয়ার উদ্দেশ্যে!<br />
বিন লাদেন হঠাৎ কেন মরে গেলেন? কি প্রয়োজন হয়েছিল।<br />
বিনা প্রয়োজনে তো লাদেন কিছু করেন না। বিশেষ করে ওবামা সাহেবদের উপকারে লাগে না, এমন কাজ তো বিন লাদেনের করার কথা না! যখনই আম্রিকার প্রয়োজন হয়, তখনই ভদ্রলোক তাদের পাশে এসে দাড়াতেন। এবার কি প্রয়োজনে মরে গেলেন!!!<br />
বিশ্বাস হচ্ছে না?<br />
সেই যে আফগানিস্তানে যখন কমুনিস্টদের দমানো দরকার, তখন দিব্যি সেখানে মার্কিন আর ইসরাইলি অস্ত্র নিয়ে হাজির বিন লাদেন সাহেব। কমুনিস্টরা গেল, বিন লাদেনকে প্রকাশ্যে ‘বন্ধু’ থেকে ‘শত্রু’ তালিকায় নিয়ে গেলেন আম্রিকান সাহেবরা।<br />
তাতে লাদেন সাহেব মোটেও রাগ করেননি। মার্কিন অর্থনীতির ধ্বস সামাল দিতে তিনি হামলা চালান ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে, মার্কিন নির্বাচনের আগের দিন আল জাজিরায় বক্তৃতা দিয়ে আবার ক্ষমতায় এনে দেন বুশ ভাইকে।<br />
যখন পাকিস্তান-আফগানিস্তান-চীন সীমান্তে মার্কিন ঘাটি তৈরি করা দরকার হয়, তখন গুপ্ত স্থান ছেড়ে ওবামা নাকি চলে আসেন তোরাবোরা পর্বতে। ওখানে হামলা চালিয়ে বেশ দখল করে নেওয়া যায় জায়গাটা। পাকিস্তানকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করে ভারত-বন্ধুত্ব বাড়ানো যায় এবং চীনের পাশে দেয়ালটা শক্ত হয়।<br />
ঠিক যেখানে যেখানে চীন সীমান্তে আক্রমন চালানো দরকার ছিল লাদেন যেখানে সেখানে গিয়ে পালাতেন। কী মজা!!!<br />
আম্রিকানদের এমন বন্ধু তাদের প্রয়োজন ছাড়া দেহ রাখবেন, এ বিশ্বাস হয় না।<br />
দুর্মুখেরা বলছে, লাদেনের মৃতদেহর এখন অনেক দাম। ওই দেহ দেখিয়ে অপরাজেয় হয়ে ওঠা গাদ্দাফি বাহিনীকে দমন করে ফেলা যাবে। ওতে গাদ্দাফি অনুচরদের ‘মর্যাল ডিফিট’ হবে। কে জানে, নিন্দুকের কথা সত্যি হতেও পারে। চীন সীমান্তের এ পাশটায় লাদের প্রয়োজন ফুরিয়েছিল।তাই শেষ উপকারটা তার দেহ দিয়েই হল!!!<br />
<br />
লাদেনের মৃতদেহ মারকিনিদের কী কী উপকার করবে সেটা চমস্কিরা হিসেব করবেন। আমরা আপাতত একটা ব্যাপার বেশ বুঝতে পারছি। বেচারার মৃত্যুর ভেতর দিয়ে এবার পাকিস্তান আর আফগানিস্তান যদি একটু শান্তি পায়!<br />
এখন তো লাদেন নেই, কাকে খুজতে হামলা চালাবে যুক্তরাষ্ট্র। এবার তাহলে বোমাবর্ষন বন্ধ হবে?<br />
<br />
(দৈববানী) রে মূর্খ! এক লাদেন নেই তো কী হয়েছে। বোমা ফেলার দরকার হলে কালই আরেকটা কাউকে বানিয়ে নেব। কালই কেউ একজন আর জাজিরায় মুখ খুলবে, ‘আমি লাদেনের উত্তরসুরী।’<br />
তাকে পাকড়াও করতে আবার শুরু হবে ক্লাস্টার বোম্বিং!!!<br />
লাদেনের মরার উপায় নেই।<br />
<br />
<b>নোট: এই পোস্টটি স্টিকি থাকা অবস্থায় লেখা নিয়ে তুমুল আলোচনা হয়। মূলত ‘কোহিন’ নামে একজনের সঙ্গে বিতর্কটা দারুণ জমে ওঠে। সেই বিতর্কটা:</b><br />
<b><br />
</b><br />
<span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;"></span><br />
<br />
<dd class="comment-1521118 user-12323" style="margin-bottom: 20px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px; position: relative;"><div style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;"><b style="float: left; font-size: 15px; font-weight: normal; line-height: 14px; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 13px;"><strong style="color: #537d00; display: block; font-weight: normal; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;"><a href="http://prothom-aloblog.com/profile/kohin" style="color: #537d00; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px; text-decoration: none;">কোহিন</a></strong>০৩ মে ২০১১, ১৪:২৯</b><br />
<div class="commentContent" style="background-attachment: initial; background-clip: initial; background-color: initial; background-image: url(http://prothom-aloblog.com/img/border-bg.gif); background-origin: initial; background-position: 0% 100%; background-repeat: repeat no-repeat; clear: both; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 10px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 13px;">আদাব দেবব্রতবাবু<br />
আপনার রচনার কায়দাটি নতুন কিছুই নহে।<br />
ঘুরাইয়া ফিরাইয়া ইনাইয়া বিনাইয়া যাহা কহিলেন তাহার সারমর্ম হইতেছে ওসামা বিন লাদেন ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দালাল!!!<br />
এইটা অস্বীকার করিবার উপায় নাই যে একসময় রুশ-ভল্লুকদের হাত হইতে আফগানিস্তানকে মুক্ত করিবার জন্য লাদেন মার্কিন সহায়তা গ্রহণ করিয়াছিলেন। কিন্তু সেইকারণে তিনি নিজের মান-সম্মান, নীতি, ঈমান---এইসব বিসর্জন দেন নাই। বরং মার্কিনীদের বিরুদ্ধেই সমমতন রুখিয়া দাড়াইয়াছিলেন। তিনি আমাদের দেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মানুষগুলির মতন নহে। ভারত নানাভাবে হেনস্থা করিলেও ১৯৭১ সালের সহায়তার কথা স্মরণ করিয়া মুখে কুলুপ আটিয়া রাখেন।<br />
যখন প্রতিবাদ করিবার কথা তখন ঠিকই প্রতিবাদ করিয়াছেন। মার্কিন-মুলুকে গিয়া হামলার সাহস দেখাইয়াছেন। যাহা কিনা লাল-মার্কা কমিউনিষ্টগণও কখনো ভাবিতে পারেন নাই।<br />
আজ আফগানিস্তানে প্রতিদিন ন্যাটো বাহিনি নানাভাবে আফগান-যোদ্ধাদের হাতে নাজেহাল হইতেছে। এইটাও ওসামা বিন লাদেনের কৃতিত্ব। ইসলাম শান্তির ধর্ম। কিন্তু এই ধর্মে অন্যায়ভাবে আক্রমণকারীকে রুখিয়া দেবার কথাও বলা হইয়াছে। লাদেন সারা দুনিয়ায় মুসলামনগণের ভিতরে সেই চেতনা জাগ্রত করিবার কাজটিই করিয়াছেন।<br />
ওসামা বিন লাদেনের চেতনার মৃত্যু নাই। এইটা য তাহার মৃত্যুর পরেও প্রমাণিত হইয়াছে। এই বিপ্লবীর জন্য সাড়ে তিন হাত জমিনও জুটিলো না তাহাকে সমুদ্রে নিক্ষেপ করা হইলো। উহা হইতেই বুঝিতে পারা যায় তিনি কতোটা শক্তিশালী। মৃত ব্যক্তিকে নিয়াও মার্কিন-গংদের কতোখানি ভয়।<br />
ব্যক্তি ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যু হইয়াছে। কিন্তু তিনি যে চেতনা ধারণ করিতেন তাহার মৃত্যু নাই। আগ্রাসী শক্তিকে আধিপত্যবাদী শক্তি তাহাদের প্রাপ্য হিসাব চুকাইয়া দিতে হইবেই। উহাই ইতিহাসের শিক্ষা। সেই শিক্ষা একেবারে বিফল হয় না। লিবিয়ায় যে ন্যাটো-বাহিনী ভূমিতে সৈন্য নামাইতেছে না--উহাও ওসামা বিন লাদেনের শিক্ষা। যে-শিক্ষাটা তিনি ন্যাটো বাহিনিকে আফগানিস্তানে দিয়াছেন।<br />
ওসামা বিন লাদেনের প্রতি ভারতের আক্রোশের কথা আমরা জানি। কাশ্মীরের জনগণও জানেন। সমস্যা হইতেছে আমাদের দেশের প্রগতিশীলগণ মেহনিত মানুষের অধিকার-বিষয়ে কথা বলিলেও কাশ্মীরের জনগণের কথা বলিতে নারাজ।<br />
ভালো থাকিবেন।<br />
<div style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 10px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;"><a class="reply" href="http://prothom-aloblog.com/posts/16/125836" style="color: #537d00; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px; text-decoration: none;">উত্তর দিন</a> | <a class="delete" href="http://prothom-aloblog.com/posts/16/125836" style="color: #537d00; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px; text-decoration: none;">মুছে ফেলুন</a> <span class="ban" style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;">| <a class="delete" href="http://prothom-aloblog.com/posts/16/125836" style="color: #537d00; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px; text-decoration: none;">ব্লক করুন</a></span></div></div></div></dd><dd class="colorfull comment-1521118 user-501" style="background-attachment: initial; background-clip: initial; background-color: initial; background-image: url(http://prothom-aloblog.com/img/list-bullet.gif); background-origin: initial; background-position: 0% 0%; background-repeat: no-repeat no-repeat; margin-bottom: 20px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 40px; padding-right: 0px; padding-top: 0px; position: relative;"><div class="author" style="background-attachment: initial; background-clip: initial; background-color: initial; background-image: url(http://prothom-aloblog.com/img/author.png); background-origin: initial; background-position: 100% 0%; background-repeat: no-repeat no-repeat; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;"><a class="loc" href="http://www.blogger.com/post-edit.g?blogID=374060266804648478&postID=4673269908688959525" name="comment-1521183" style="color: #537d00; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px; text-decoration: none;"></a><b style="float: left; font-size: 15px; font-weight: normal; line-height: 14px; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 13px;"><strong style="color: #537d00; display: block; font-weight: normal; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;"><a href="http://prothom-aloblog.com/profile/debbrata" style="color: #537d00; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px; text-decoration: none;">দেবব্রত মুখোপাধ্যায়</a></strong>০৩ মে ২০১১, ১৫:৪২</b><br />
<div class="commentContent" style="background-attachment: initial; background-clip: initial; background-color: initial; background-image: url(http://prothom-aloblog.com/img/border-bg.gif); background-origin: initial; background-position: 0% 100%; background-repeat: repeat no-repeat; clear: both; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 10px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 13px;">কোহিন ভাই,<br />
‘ঘুরাইয়া প্যাচাইয়া’ নয়, একেবারে স্পষ্ট করে বলছি, বিন লাদেন একজন মার্কিন ‘দালাল’ ছিলেন/আছেন বলেই মনে করি।<br />
বিন লাদেন মুসলিম বিশ্বের কোনো উপকার করেছিলেন বা তিনি মার্কিন বিরোধী ছিলেন; এমন আমার কখনোই মনে হয়নি। বরং আগেও যা বলেছি, তার কর্মকান্ডে যদি কেউ ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে থাকে তো সেটা মার্কিন প্রশাসন নয়, মুসলিমরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন।<br />
লাদেনের ইচ্ছায় (যদি আদৌ লাদেনের নিজস্ব ইচ্ছা বলে কিছু থেকে থাকে) যখন যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা মার্কিন প্রশাসনকে উপকৃত করেছে। কয়েকটা উদাহরন আগেই দিয়েছি। সোজা কথায় লাদেনের প্রতিটি হামলার জবাবে মার্কিনিরা মুসলিমদের আরও বেশি ‘জঙ্গী’ বলে চিহ্নিত করে অবমাননা বাড়িয়ে দিয়েছে। এবং হামলার উত্তরে আরও বেশি হামলা করে প্রান কেড়ে নিয়েছে এবং আরও বেশি জায়গা নিজেদের দখলে নিয়েছে।<br />
একটু হিসেব করে বলুন তো বিন লাদেনের, তথা আল কায়েদার আক্রমনে এ পর্যন্ত মোট কতোজন খ্রিস্টান বা ইহুদি মারা গেছে? দেখতে পাবেন আল কায়েদার হামলায় নিহত মুসলিমের সংখ্যা তার চেয়ে ঢের বেশি।<br />
আজকের দিনে সশস্ত্র পদক্ষেপ আদৌ কোনো ‘বিপ্লব’ করতে পারে বলে আমি মনে করি না। বিন লাদেনের পরিবর্তে কোনো ‘লাল-বাহিনী’ও এমন কাজ করে বেড়ালে তাকে আমি সমর্থন করতাম না।<br />
আজকের দিনে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের একমাত্র জবাব হতে পারে নিজেদেরকে টেকনোলজি, জ্ঞানে, কৌশলে তাদের সমকক্ষ করে তোলা। যেটা চীন-ভারত করছে। বিন লাদেনের আদৌ মার্কিন বিরোধিতার উদ্দেশ্য থাকলে তিনি অস্ত্রের চেয়ে কলমের দিকে বেশি জোর দিতেন বলেই আমার বিশ্বাস। তার সেই অর্থের জোগানও ছিল।<br />
সর্বোপরি, আপনি লিবিয়া ও আফগানিস্তানের প্রতিরোধের পেছনে বিন লাদেনের উপস্থিতি দেখতে পেয়েছেন; আমি পাচ্ছি না। লিবিয়ার প্রতিরোধ একেবারেই ভিন্ন চেহারার একটা ব্যাপার। তাদের সঙ্গে মতাদর্শিক ভাবে আল কায়েদার সম্পর্ক থাকতে পারে না।<br />
আর আফগানিস্তানেও প্রতিরোধের মূল অংশ আল কায়েদা করছে না; সেই প্রতিরোধ করছে বিভিন্ন আফগান যোদ্ধা জাতিগোষ্ঠী। এইসব জাতিগোষ্ঠী কখনোই বিন লাদেনের অনুসারী ছিল না। কখনোই তারা আল কায়েদাকে একটি আফগান শক্তি বলে মনে করেনি।<br />
সর্বশেষ, ইসরায়েলি আর মার্কিন অস্ত্র দিয়ে মার্কিন প্রতিরোধ হয় না রে ভাই। ওতে শুধু মার্কিন-ইহুদি অস্ত্র ব্যবসায়ীদের ব্যাংক ব্যালান্স বাড়ানো যায়।<br />
যাই হোক, এগুলো আমার মত। আপনাকে একমত হতে হবে, এমন কথা নেই।<br />
তবে আমার একটা অনুরোধ, আমার নাম দেখে আর কথাবার্তা শুনে আমাকে বাজারচলতি প্রগতিশীল বলে চালিয়ে দেবেন না। আমি ব্যক্তিগতভাবে শুধু কাশ্মীর ইস্যুতে নয়, বহুবিধ ইস্যুতে মারাত্মক ভারতবিরোধী। একইসঙ্গে পাকিস্তানের প্রতিও আমার বিরোধ কম নয়।<br />
তবে মজা হল, আমি রাষ্ট্র হিসেবে ভারত-পাকিস্তান-যুক্তরাষ্ট্র; অনেকের বিরোধী। কিন্তু কোনো ভারতীয়, পাকিস্তানী বা মার্কিনি মানুষের প্রতি আমার ঘৃনা নেই।<br />
পৃথিবীর কোনো মানুষের প্রতি আমার ঘৃনা নেই।<br />
সবশেষে সুন্দর আলোচনার জন্য কোহিন ভাইকে অশেষ ধন্যবাদ।</div></div></dd><span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;"><dd class="colorfull comment-1521144 user-12323" style="background-attachment: initial; background-clip: initial; background-color: initial; background-image: url(http://prothom-aloblog.com/img/list-bullet.gif); background-origin: initial; background-position: 0% 0%; background-repeat: no-repeat no-repeat; margin-bottom: 20px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 40px; padding-right: 0px; padding-top: 0px; position: relative;"><div style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;"><b style="float: left; font-size: 15px; font-weight: normal; line-height: 14px; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 13px;"><strong style="color: #537d00; display: block; font-weight: normal; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;"><a href="http://prothom-aloblog.com/profile/kohin" style="color: #537d00; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px; text-decoration: none;">কোহিন</a></strong>০৩ মে ২০১১, ১৬:৫৯</b><br />
<div class="commentContent" style="background-attachment: initial; background-clip: initial; background-color: initial; background-image: url(http://prothom-aloblog.com/img/border-bg.gif); background-origin: initial; background-position: 0% 100%; background-repeat: repeat no-repeat; clear: both; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 10px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 13px;">বাবু দেবব্রত মুখার্জি<br />
১.''‘ঘুরাইয়া প্যাচাইয়া’ নয়, একেবারে স্পষ্ট করে বলছি, বিন লাদেন একজন মার্কিন ‘দালাল’ ছিলেন/আছেন বলেই মনে করি।''<br />
@ নিজের রচনাটি আবারও পাঠ করিয়া দেখুন। তাহাছাড়া একটি হত্যকাণ্ডকে আপনি সাধারণ ''মৃত্যু'' শব্দ দিয়াই জাহির করিলেন!!<br />
<br />
২. বিন লাদেন মুসলিম বিশ্বের কোনো উপকার করেছিলেন বা তিনি মার্কিন বিরোধী ছিলেন; এমন আমার কখনোই মনে হয়নি। বরং আগেও যা বলেছি, তার কর্মকান্ডে যদি কেউ ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে থাকে তো সেটা মার্কিন প্রশাসন নয়, মুসলিমরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন।<br />
@ আপনার মতন এইরকম মুসলিম-দরদি থাকিলে মুসলমানগণের বিপদের শেষ থাকিবে না।<br />
হাজার বছরের বসতভিটা হইতে ফিলিস্তিনি জনগণকে যখন উচ্ছেদ করা হইয়াছিলো তখন তো তাহারা সেইভাবে অস্ত্র হাতে নেয় নাই। একটা সময় ছিলো যখন কথায়-কথায় ইসরাইলি সৈন্যরা লেবানন সীমান্ত অতিক্রম করিয়া হত্যাযজ্ঞা ঘটাইতো। ২০০৬ সালে হিজবুল্লাহ-র হাতে চরম মার খাইবার পর হইতে ইসরাইল এখন লেবানেন একটি ঢিল ছুড়িতেও ভয় পায়। উহার কারণ হিজবুল্লাহ-র হাতে অস্ত্র নেওয়া। মার্কিন-ইসরাইলিরা হিজবুল্লাহকে সন্ত্রাসী সংগঠন মনে করিয়া থাকে। তাহাতে কী হইয়াছে? মারইকন-প্রভু কি বলিবে না বলিবে এইটা চিন্তা করিয়া সশস্ত্র সংগ্রাম বন্ধ রাখিতে হইবে?<br />
৩. লাদেনের ইচ্ছায় (যদি আদৌ লাদেনের নিজস্ব ইচ্ছা বলে কিছু থেকে থাকে) যখন যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা মার্কিন প্রশাসনকে উপকৃত করেছে। ... দেখতে পাবেন আল কায়েদার হামলায় নিহত মুসলিমের সংখ্যা তার চেয়ে ঢের বেশি।<br />
@ সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে মারইকন প্রশাসনের বিলিয়ন-বিলিয়ন খরচ হইতেছে। তাহার পরেও বলিবেন ওসামা বিন লাদেন মার্কিনীদের উপকার করিয়াছেন? ইরাকে, আফগানিস্তানে--ন্যাটো বাহিনীর নিহত সৈন্যগণের সংখ্যা আপনিই হিসাব করিয়া দেখুন। আর বসিয়া বসিয়া মার খাইলেই যদি ভালো হইতো তাহা হইলে তো আমাদের মুক্তিযুদ্ধ করিবার প্রয়োজন থাকিতো না। ১৯৭১ সালের ৩০ লক্ষ মানুষের নিহত হইবার জন্য তাহা হইলে শেখ মুজিবুর রহমানকেই দায়ী করিতে হয়!!!! প্রতিরোধ যুদ্ধ না করিলে পাকিস্তানীরা অল্পেই শান্ত হইয়া যাইতো?<br />
<br />
৪.আজকের দিনে সশস্ত্র পদক্ষেপ আদৌ কোনো ‘বিপ্লব’ করতে পারে বলে আমি মনে করি না। বিন লাদেনের পরিবর্তে কোনো ‘লাল-বাহিনী’ও এমন কাজ করে বেড়ালে তাকে আমি সমর্থন করতাম না।<br />
@ প্রতিরোধের কোনো আজ-কাল নাই। স্পার্টাকাস সেই কবে প্রতিরোধ করিয়াছিলেন। সফল হইতে পারেন নাই ঠিকই কিন্তু মানুষের ভেতর প্রতিরোধের শক্তিটা যোগাইতে পারিয়াছেন। এইটা কম নহে।<br />
<br />
৫. লিবিয়ার প্রতিরোধ একেবারেই ভিন্ন চেহারার একটা ব্যাপার। তাদের সঙ্গে মতাদর্শিক ভাবে আল কায়েদার সম্পর্ক থাকতে পারে না।<br />
@ লিবিয়ার যুদ্ধটা ভিন্ন সেইটা মানি। কিন্তু সাদ্দামকে উৎখাত করিবার জন্য মার্কিন-ব্রিটিশ সৈন্য যেইভাবে ভূমিতে নামিয়াছিলো--এখন সেই ঝুকি নিতে পারিতেছে না--উহাই আমার বলিবার কথা। কারণ ইরাকে, আফগানিস্তানে তাহার যাহা হারাইয়াছে তাহার ধকলই এখন সামলাইতে পারিতেছে না।<br />
<br />
৬.আর আফগানিস্তানেও প্রতিরোধের মূল অংশ আল কায়েদা করছে না; সেই প্রতিরোধ করছে বিভিন্ন আফগান যোদ্ধা জাতিগোষ্ঠী। এইসব জাতিগোষ্ঠী কখনোই বিন লাদেনের অনুসারী ছিল না। কখনোই তারা আল কায়েদাকে একটি আফগান শক্তি বলে মনে করেনি।<br />
@ আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাস বিষয়ে আপনার জ্ঞানের বহর দেখিয়া আমি সত্যসত্যই আফশোশ করিতেছি কেন এইরকম একটা মূর্খ মানুষের সহিত তর্ক করিতে যাইতেছি। কতো সালে আফগানিস্তানে মারইকন-ব্রিটিশ জোট হামলা শুরু করিয়াছে? কেন করিয়াছে? সেইখানে তখন কাহারা ক্ষমতায় ছিলো?<br />
<br />
৭. ইসরায়েলি আর মার্কিন অস্ত্র দিয়ে মার্কিন প্রতিরোধ হয় না রে ভাই। ওতে শুধু মার্কিন-ইহুদি অস্ত্র ব্যবসায়ীদের ব্যাংক ব্যালান্স বাড়ানো যায়।<br />
@ অস্ত্রের কোনো দেশ নাই ধর্ম নাই। কিন্তু দেখিতে হইবে সেই অস্ত্র কাহারা ব্যবহার করিতেছে? কি কাজে ব্যবহার করিতেছে? ওসামা বিন লাদেন মারইকন বিমান দিয়া যেইভাবে মারইকন-ভূখন্ডে হামলা চালাইয়াছিলেন--তাহা মার্কিনদের অহংকারের মুখে একটি বিশাল চপেটাঘাত। উহার একটি ঐতিহাসিক মূল্য রহিয়াছে।<br />
<div style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 10px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;"><a class="delete" href="http://prothom-aloblog.com/posts/16/125836" style="color: #537d00; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px; text-decoration: none;">মুছে ফেলুন</a> <span class="ban" style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;">| <a class="delete" href="http://prothom-aloblog.com/posts/16/125836" style="color: #537d00; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px; text-decoration: none;">ব্লক করুন</a></span></div></div></div></dd><dd class="colorfull comment-1521144 user-501" style="background-attachment: initial; background-clip: initial; background-color: initial; background-image: url(http://prothom-aloblog.com/img/list-bullet.gif); background-origin: initial; background-position: 0% 0%; background-repeat: no-repeat no-repeat; margin-bottom: 20px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 40px; padding-right: 0px; padding-top: 0px; position: relative;"><div class="author" style="background-attachment: initial; background-clip: initial; background-color: initial; background-image: url(http://prothom-aloblog.com/img/author.png); background-origin: initial; background-position: 100% 0%; background-repeat: no-repeat no-repeat; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;"><a class="loc" href="http://www.blogger.com/post-edit.g?blogID=374060266804648478&postID=4673269908688959525" name="comment-1521831" style="color: #537d00; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px; text-decoration: none;"></a><b style="float: left; font-size: 15px; font-weight: normal; line-height: 14px; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 13px;"><strong style="color: #537d00; display: block; font-weight: normal; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;"><a href="http://prothom-aloblog.com/profile/debbrata" style="color: #537d00; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px; text-decoration: none;">দেবব্রত মুখোপাধ্যায়</a></strong>০৩ মে ২০১১, ২২:২৬</b><br />
<div class="commentContent" style="background-attachment: initial; background-clip: initial; background-color: initial; background-image: url(http://prothom-aloblog.com/img/border-bg.gif); background-origin: initial; background-position: 0% 100%; background-repeat: repeat no-repeat; clear: both; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 10px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 13px;">কোহিন ভাই,<br />
মূর্খ বলে আমাকে ঘোষনাই করে দিয়েছেন। ভেবেছিলাম, আলাপ বাড়িয়ে আপনার আফসোস আর বাড়াবো না। পরে মনে হল, আপনি তো সত্যিটা টের পেয়েই গেছেন; এখন আলাপ বন্ধ করলে বাকীরাও টের পেয়ে যাবে-আমি একটা মূর্খ বই কিছু নই। তাই আরেকটু জবাব দেওয়ার চেষ্টা করছি।<br />
আপনার মতোই পয়েন্ট ধরে ধরে বলি?<br />
<br />
১। আমি হত্যাকান্ড বলি আর নাই বলি, এটি হত্যাকান্ড; তাতে সন্দেহ নেই। তবে এখন সন্দেহ বিন লাদেন কি আদৌ মারা গেছেন? বা মারা গেলে কি এ দিনই মারা গেলেন!!!<br />
<br />
২। ‘‘আপনার মতন এইরকম মুসলিম-দরদি থাকিলে মুসলমানগণের বিপদের শেষ থাকিবে না।’’<br />
এই কথাটা খানিকটা ব্যক্তিগত আক্রমন হয়ে গেল। এবং এই পয়েন্টে আপনি যে আলোচনা করেছেন, সেটা আমার ঠিক মনে হয়নি। প্রভুদের অসন্তোষের ভয়ে নয়, আমি মনে করি নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমানের জন্যই সহিংস পথ বন্ধ করা উচিত। আমার ব্যক্তিগত বিশ্বাস সহিংস সংগ্রাম অর্থ, মেধা ও জীবন নাশ করে। এ ছাড়াও শত্রুকে দমনের অনেক উপায় আছে। অন্তত মেধা-মননে তার চেয়ে নিজেকে অগ্রগামী প্রমান করা।<br />
<br />
৩। ‘‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে মারইকন প্রশাসনের বিলিয়ন-বিলিয়ন খরচ হইতেছে। তাহার পরেও বলিবেন ওসামা বিন লাদেন মার্কিনীদের উপকার করিয়াছেন?’’<br />
হ্যা, বলিব। কারণ এই বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় মারকিনিদের জন্য ‘লাভজনক’ একটি ব্যাপার। এখানে আজকের দিনের কথা চলে আসে। আজকের দিনটা ঠিক ষাটের দশক নয়। এটা করপোরেট দুনিয়া। এখানে ব্যবসার চেয়ে বড় রাজনীতি আর কিছু নেই। এই যে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয়, এটা বুশ-ওবামাদের পকেট থেকে হয় না। হয় সারা দুনিয়া থেকে কেড়ে নেওয়া ডলার থেকে। আর এই ব্যয়টা হয় সামরিক খাতে। সামরিক খাতের এই ব্যয়টার সিংহভাগ যায় অস্ত্রব্যবসায়ীদের পকেটে। মার্কিন সরকারের কূটনীতি থেকে শুরু করে নির্বাচন; সবকিছুতে এখন প্রধান ভূমিকা রাখে এই অস্ত্র ব্যবসায়ীরা। তাদের সন্তুষ্ট রাখতে উভয় পক্ষে (লাদেনের এবং মারকিনিদের) এই বিপুল সামরিক ব্যয়ের চেয়ে ভালো পদক্ষেপ আর হয় না।<br />
<br />
৪। ‘‘প্রতিরোধের কোনো আজ-কাল নাই।’’<br />
মোটা দাগে না থাকলেও দিন বদলেছে, এটা মানতেই হবে। এখন লড়াইটা যতো না অস্ত্রের তার চেয়ে বেশি বাজার ও মেধার। আসল লড়াইটা ওখানে দিতে হবে। সোভিয়েত ইউনিয়ন যে ভুল করেছিল, সেই দিন আর নেই। অস্ত্র খাতে মারাত্মক বিনিয়োগ না করেও যে লড়াইয়ে মাঠ দখল করা যায় তার প্রমান চীন। আমি চীনের প্রতি কোনো ভক্তি থেকে কথা বলছি না। কিন্তু তারা একটি ক্ষেপনাস্ত্রও না ছুড়ে এশিয়া, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য; ক্ষেত্রবিশেষে ইউরোপ-আমেরিকার বাজারেও যে দখল নিয়েছে, তাতে নিশ্চয়ই কোনো সন্দেহ নেই। ফলে প্রবল ঘৃনা থাকা স্বত্ত্বেও চীনের বিপক্ষে টু শব্দটি করার সাহস কিন্তু ওবামা সাহেবরা পাচ্ছেন না।<br />
<br />
৫। প্রায় সহমত পোষন করায় আলোচনা বাড়ালাম না।<br />
<br />
৬। আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাস না জানায় আপনি আমাকে মূর্খ বলে রায় দিলেন। মাথা পেতে নিলাম। কিন্তু ভাই, আপনি কি খেয়াল করেছেন, তালিবান আর আল কায়েদার মধ্যে সুক্ষ একটা পার্থক্য আছে। অন্যরা গুলিয়ে ফেলতে পারে, কিন্তু আপনার এ যাবৎ কালের ‘জিহাদী’ লেখা পড়ে আমি নিশ্চিত, আপনি এটা বোঝেন। আল কায়েদা আফগান প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন যে নয়, এটা ইতিহাসের দস্তাবেজ দিব্যি স্বাক্ষী দেয়। আর ক্ষমতায় কে ছিল, সেটা দিয়ে কি প্রমান করতে চাইছেন? তালিবান আর আল কায়েদাকে এক ধরে নিলেও এ কথা কি বলা যায় যে, তালিবানরা আফগান জনগনের সরকার ছিল!!!!<br />
আমার এবং কিছু মূর্খ ঐতিহাসিকের কখনোই তা মনে হয়নি।<br />
<br />
৭। ‘‘অস্ত্রের কোনো দেশ নাই ধর্ম নাই।’’<br />
আছে। অবশ্যই আছে। অস্ত্রের বিনিময়ে টাকাটা কার পকেটে যাচ্ছে, সেটা অবশ্যই দেখতে হবে। আমি অস্ত্র কিনছি ‘বিপ্লব’ বা ‘জিহাদ’ করার জন্য। আর সেই অস্ত্র বেচে ফেপে উঠছে, আমারই শত্রু; এ কেমন বিবেচনা প্রসূত কাজ হল?<br />
<br />
<strong style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;">নোট:</strong><br />
আপনি আমার নাম লিখেছেন ‘বাবু দেবব্রত মুখার্জী’।<br />
এমনিতে হয়তো এই নামে আমার রাগ করার কিছু ছিল না। কিন্তু ‘বাবু’ শব্দটি না থাকলে খুশি হই। আর মুখার্জী শব্দটি মুখোপাধ্যায়ের ইংরেজ রূপ; তাই যতোদূর সম্ভব ত্যাগ করে চলি। এগুলো উল্লেখ করে কি আমাকে ব্রাকেটবন্দী করতে চাইছেন। লাভ নেই।<br />
আলোচনা করলে পুরোটা বিষয়ে থাকুন। ব্যক্তিগত খোচাখুচি কাম্য নয়।<br />
<div style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 10px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;"><a class="delete" href="http://prothom-aloblog.com/posts/16/125836" style="color: #537d00; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px; text-decoration: none;">মুছে ফেলুন</a><span class="ban" style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;"></span></div></div></div></dd><dd class="colorfull comment-1521144 user-501" style="background-attachment: initial; background-clip: initial; background-color: initial; background-image: url(http://prothom-aloblog.com/img/list-bullet.gif); background-origin: initial; background-position: 0% 0%; background-repeat: no-repeat no-repeat; margin-bottom: 20px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 40px; padding-right: 0px; padding-top: 0px; position: relative;"><div class="author" style="background-attachment: initial; background-clip: initial; background-color: initial; background-image: url(http://prothom-aloblog.com/img/author.png); background-origin: initial; background-position: 100% 0%; background-repeat: no-repeat no-repeat; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;"><a class="loc" href="http://www.blogger.com/post-edit.g?blogID=374060266804648478&postID=4673269908688959525" name="comment-1522032" style="color: #537d00; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px; text-decoration: none;"></a><b style="float: left; font-size: 15px; font-weight: normal; line-height: 14px; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 13px;"><strong style="color: #537d00; display: block; font-weight: normal; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;"><a href="http://prothom-aloblog.com/profile/debbrata" style="color: #537d00; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px; text-decoration: none;">দেবব্রত মুখোপাধ্যায়</a></strong>০৪ মে ২০১১, ০০:১৮</b><br />
<div class="commentContent" style="background-attachment: initial; background-clip: initial; background-color: initial; background-image: url(http://prothom-aloblog.com/img/border-bg.gif); background-origin: initial; background-position: 0% 100%; background-repeat: repeat no-repeat; clear: both; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 10px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 13px;">কোহিন ভাইয়ের উদ্দেশ্যে:<br />
ওসামা বিন লাদেন যাকে ‘মিত্র’ বলে প্রকাশ্যেই ঘোষনা দিয়েছিলেন, সেই যুদ্ধবিরোধী সাংবাদিক রবার্ট ফিস্কের লেখা থেকে কয়েকটি পয়েন্ট তুলে দিলাম। অনুবাদ -কাজী শাহরিন হক, বিডিনিউজ।<br />
<br />
• আমি এ মানুষটার (বিন লাদেন) সঙ্গে তিন বার সাক্ষাৎ করেছিলাম, তবে একটা প্রশ্নই তাকে জিজ্ঞেস করা বাকি রয়ে গেলো আমার- ইসলামের পতাকাতলে না গিয়ে যার যার জাতির পতাকা নিয়ে, মুসলিম ও খ্রিস্টানরা যে অভ্যূত্থানগুলোতে (মধ্যপ্রাচ্যে) একসঙ্গে লড়েছে, তার দল আল-কায়দার সদস্যরা যাদেরকে খুশি মনেই খুন করতে ভালোবাসতো, এ বছরের ওই গণঅভ্যূত্থানগুলো দেখার পর তিনি কী ভাবছেন?<br />
• (যদি বিন লাদেনকে প্রকাশ্য বিচারের মুখোমুখি করা হতো) নিশ্চয়ই তিনি বলতেন আফগানিস্তানে সোভিয়েত আগ্রাসনের সময় সিআইএ'র সঙ্গে তার যোগাযোগের কথা, অথবা ইসলামাবাদে সৌদি আরবের গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান প্রিন্স তুর্কির সঙ্গে তার সৌহার্দ্যপূর্ণ বৈঠকের কথা।<br />
• অন্যান্য মুসলিম গোষ্ঠীর সঙ্গে তার (বিন লাদেন) সম্পর্ক ছিলো খুবই ধোঁয়াশাচ্ছন্ন। আমি যখন আফগানিস্তানে তার সঙ্গে দেখা করি, তখন তালেবান বাহিনীকেও ভয় পেতেন তিনি। তার অনুসারীরা শিয়া মুসলমানদের বিপথগামী ও স্বৈরশাসকদের নাস্তিক বলে মনে করতো এবং ঘৃণা করতো। তিনি কখনোই হামাসের প্রশংসা করেননি ।</div></div></dd></span><span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;"><b style="float: left; font-size: 15px; font-weight: normal; line-height: 14px; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 13px;"><strong style="color: #537d00; display: block; font-weight: normal; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;"><a href="http://prothom-aloblog.com/profile/kohin" style="color: #537d00; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px; text-decoration: none;">কোহিন</a></strong>০৫ মে ২০১১, ১৬:২৩</b><div class="commentContent" style="background-attachment: initial; background-clip: initial; background-color: initial; background-image: url(http://prothom-aloblog.com/img/border-bg.gif); background-origin: initial; background-position: 0% 100%; background-repeat: repeat no-repeat; clear: both; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 10px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 13px;">ভ্রাতা দেবব্রত মুখোপাধ্যায়<br />
ওসামা বিন লাদেনকে যে হত্যা করা হইয়াছে---তাহা নিয়া মার্কিন প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিগণই একেক সময় একেকরকম কথা বলিতেছেন। কখনো বলা হইতেছে তিনি নিরস্ত্র ছিলেন। আবার বলা হইতেছে সশস্ত্র ছিলেন। একবার বলা হইতেছে তাহার মৃতদেহের ছবি প্রকাশ করা হইবে। আবার বলা হইতেছে শেষ পর্যন্ত ওবামা ছাহাব ঘোষণা দিয়াছেন সেইটি করা হইবে না। এইসব হইতেই বুঝিয়া লইতে পারি জীবিক ওসামা বিন লাদেন যেমন মার্কিনীদের ভয়ের কারণ ছিলেন তিনি তাহার মৃত্যুর পরেও সমান শক্তিশালী। ওসামা বিন লাদেন কবে মারা যাইবেন সেইটাও কি আপনার-আমার মর্জি অনুযায়ী হইবে?<br />
আপনি ভিন্নধর্মের বলিয়া আপনাকে মুসলিম-দরদী বলি নাই। এইরকম বিষয় অনেক মুসলামনদের মধ্যেও দেখা যায়। যেমন হামাসকেও কেহ-কেহ একবার সন্ত্রাসী আরেকবার মার্কিন-ইসরাইলের দালাল বলিয়া প্রচারণা চালানো হইয়া থাকে।<br />
উহার কারণ হইতেছে ভীত মানুষের মনস্ততত্ব। একটু ব্যাখ্যা করিতে দিন।<br />
মুখে আমার সকলেই সাহসী। কিন্তু তাহা প্রমাণ হয় কাজের বেলায়। কোনো প্রতিবাদে প্রতিরোধের বেলায় ভীত মানুষ বেশি বিপদে পড়িয়া যায়। কেননা তখন বিষয়টা প্রমাণসাপেক্ষ হইয়া দাড়ায়। দেখিবেন একজন ভীতু মানুষও নিজেকে ভীতু বলিয়া স্বীকার করিতে নারাজ। কিন্তু প্রতিবাদ করিলেই তো ঝামেলা। কাজেই ১০ জনের ভিতর ১ জন প্রতিবাদ করিলে যখন ''ঝামেলা'' হয় তখন সবাই সেই প্রতিবাদকারীকেই উল্টা বকাবাকি করিয়া থাকে। কি দরকার ছিলো..খামোকা ঝামেলা বাধাইবার!!! এইসব বলা হয়। উহা ছোটো জায়গায়।<br />
এইখানেও ঠিক তেমনি একটি ব্যাপার ঘটিয়াছে। আপনি ইতিহাসের কিতাব লইলেই দেখিবেন এইটা নতুন বিষয় নহে। শেখ মুজিব যখন ৬ দফা দিয়াছিলেন তখন এই দেশের রাজনৈিতক দলগুলি উহার জন্য ঠিক প্রস্তুত ছিলো না। নিজেদের এই ব্যর্থতা ঢাকিবার জন্য সেই সময় ৬ দফাকে সিআইয়ের দেওয়া নকশা বলিয়া প্রচার করা হইয়াছিলো। শুধু তাহাই নহে মেখ মুজিবকেও মার্কিন দালাল হিসেব প্রচার করা হইয়াছিলো।১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় অনেকেই '''ঝামেলা ''' বাধাইবার জন্য শেখ মুজিবকে দায়ী করিতে ছাড়েন নাই।<br />
ওসামা বিন লাদেনের বেলাতেও ঠিক তাহাই ঘটিয়াছে।<br />
বিলিয়ন-বলিয়ন অর্থ খরচ হইতেছে। আপনি তাহা স্বীকার করিয়াও পরে এড়াইয়া গিয়াছেন। ইরাক হইতে না হয় তৈল পাওয়া যাইতেছে কিন্তু আফগান্তান হইতে ন্যাটো কি পাইতেছে? নিহত সৈন্যদের সংখ্যা দিন-দিন বৃদ্ধি পাইতেছে। আপনার কি ধারণা সবই সাজানো নাটক?<br />
তাহা হইলে বলিতে হয় : ভিয়েতনামের যুদ্ধও একটি সাজানো নাটক। বলিভিয়ায় নিহত চে-গুয়েভরাও মার্কিন দালাল।আফগানিস্তানে রুশ আক্রমণও সাজানো নাটক। ফিলিস্তিন সংগ্রামও তাহাই।<br />
আর এই নাটকের বিরুদ্ধে মারইকন-ব্রিটিশ-জার্মানী-ফ্রান্স সকল দেশের নাগরিকগণ মুখ বুজিয়া তাহা মানিয়া লাইতেছে। এতোটা সহজ সমীকরণ নাই-বা করিলেন!!!<br />
ভালো থাকিবেন।</div><div class="commentContent" style="background-attachment: initial; background-clip: initial; background-color: initial; background-image: url(http://prothom-aloblog.com/img/border-bg.gif); background-origin: initial; background-position: 0% 100%; background-repeat: repeat no-repeat; clear: both; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 10px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 13px;"><br />
</div></span><span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;">ভ্রাতা দেবব্রত মুখোপাধ্যায়<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />এই দেশের উচ্চবর্ণের হিন্দুগণকে একসময় ''বাবু'' বলিয়াই সম্বোধন করিতে হইতো। পশ্চিমবঙ্গেও উহার নমুনা দেখিয়াছি। আপনি যখন বারণ করিলেন তখন আর করিবো না।<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />চিনাদের অস্ত্রসম্ভার নিয়া আপনি যাহা লিখিয়াছেন তাহার একটু জবাব দিতে হইতেছে।<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />আপনার জানা নাই (অথবা জানা থাকিলেও তাহা চাপিয়া গিয়াছেন) যে প্রতিরক্ষা ব্যয়ে চিনাদের স্থান ২ নম্বরে। প্রথমে রহিয়াছে মুরুব্বি মার্কিন!<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />আর অস্ত্র বেচাবিক্রয়তেই চিনাদের জায়গা ৭ নম্বরে। উহা দিন-দিন বৃদ্ধি পাইতেছে। এশিয়া ছাড়াইয়া চিনাদের অস্ত্র এখন আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকাতেও পহুছিয়াছে!!<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />@ রবার্ট ফিস্কের সাক্ষাৎকার পাঠ করিয়াছি। বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে তাহার সাক্ষাৎকার দেখিবার সৌভাগ্য অন্য আরো মানুষের মতন আমারও হইয়াছে। এখন শুধু এইটুকুই বলিবো ওসামা বিন লাদেনের হত্যাকন্ডের পর হামাসের বিবৃতিটাও নিশ্চয়ই পাঠ করিয়াছেন।</span><br />
<span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;"><br />
</span><br />
<span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;">কোহিন ভাই, <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />আপনার আলোচনা সবমিলিয়ে ভালো লেগেছে। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />তবে এখন আলোচনা যে পর্যায়ে গেছে, তাতে আমি আমার দেয়ালে, আপনি আপনার দেয়ালে। দু জনই পরস্পরের অবস্থান বুঝতে পারছি। এরপরও এই তর্ক টেনে নিয়ে যাওয়া মানে স্রেফ কাটাকাটির জন্য কথা বিনিময় করা হবে। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />আমার মনে হয়, আপাতত আলোচনাটা এখানে আমার দিক থেকে আমি বন্ধ করতে পারি। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />পরে অন্য কোনো ফোরামে বা অন্য কোনো বিষয়ে আরও আলোচনা হবে।</span></div></div>দেবব্রত মুখোপাধ্যায়http://www.blogger.com/profile/10351018961072501066noreply@blogger.comtag:blogger.com,1999:blog-374060266804648478.post-91056220843830990722011-06-23T00:35:00.002-07:002011-06-23T00:35:52.046-07:00ক্রিকেট খেলা কেন দেখব!<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"><span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;"><em style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;">স্যার ডন ব্রাডম্যান যে ক্রিকেট খেলতেন, নেভিল কার্ডাস যে ক্রিকেট নিয়ে লিখেছেন; সেই ক্রিকেট আর আজকের দিনের ক্রিকেট এক খেলা নয়। খেলাটির সঙ্গে যে রোমান্টিসিজম জড়িয়ে ছিল তা সম্ভবত চিরতরে দূরে চলে গেছে। বিশ্বজুড়ে ব্যাট-বলের মধুর সেই সঙ্গীতের জায়গাটা দখল করে নিয়েছে মোবাইল ফোনের কর্কশ আওয়াজ। লোভ আর হুমকি খেলাটিতে সম্পৃক্ত করেছে বিপুল অর্থ এবং নিয়ন্ত্রন চলে গেছে অন্ধকার জগতের হাতে।</em></span><span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;"></span><br />
<div style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;"><br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" /><strong style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;">ম্যাচ পাতানো বিষয়ক সিবিআই তদন্ত কমিটির (২০০০) রিপোর্টের উপসংহার</strong><br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" /><br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" /><img src="http://prothom-aloblog.com/img/uploads/c7549620aa57bf8de4c94cb74bff84e3.jpg" style="border-bottom-style: none; border-color: initial; border-left-style: none; border-right-style: none; border-top-style: none; border-width: initial; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" /><br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" /><br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" /><br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />গত বছর চারেক ধরেই আমার মাথার ভেতর এই প্রশ্নটা ঘুরছিল-ক্রিকেট খেলা আর দেখব কেন? প্রশ্নটা আরেকটু উস্কে দিলেন হাসান তিলকরত্নে। শ্রীলঙ্কান কিছু খেলোয়াড়ের বাজিকরদের সঙ্গে যোসাজস নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই গুঞ্জন চলছিল। তিলকরত্নে জানালেন, ঘটনা সত্যি। আবার মনে হল, কেন নিজেকে এই প্রতারনার শিকার হতে দেব?<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />কেমন প্রতারণা? <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />ধরুন কোনো একজন বোলারের বোলিং দেখে অভিভূত হয়ে গেলাম; দু দিন পর পত্রিকায় দেখলাম, ওই বোলিংটা করার পথে সে তিনটি ‘নো বল’ করেছে অর্থের বিনিময়ে। কোনো একটা টানটান উত্তেজনার ম্যাচ দেখে রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেল। শেষ ওভারে ১২ রান দরকার, শেষ বলে চার; শেষ পর্যন্ত জয়-পরাজয় নির্ধারিত হল ১ রানে। পরে জানা গেল; ম্যাচটা পাতানো ছিল।<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />এই পাতানোর খেলায় ক্রিকেটের কতোটা ক্ষতি করছে, সে বিবেচনায় না হয় নাই গেলাম। কিন্তু নিজেকে হাস্যকর এক পাতানো নাটকের নির্বোধ দর্শক হিসেবে ভাবতে আর ভালো লাগে না। আমি যা নিয়ে উত্তেজিত হই, যা দেখে রোমাঞ্চিত হই; পরে সে সবকিছুকে সাজানো নাটক বলে জানতে আর ভালো লাগে না। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />অথচ আমরা এই চক্রের মধ্যে পড়ে গেছি। আমরা এই সময়ে ক্রিকেট দর্শকরা নিতান্তই হাস্যকর ও নির্বোধ চরিত্রে পরিনত হয়েছি। তারা সবকিছু আগে থেকে ঠিক করে রাখবেন, আর আমরা সেই ঠিক করা খেলা দেখে মজা পাওয়ার চেষ্টা করব। শেষ পর্যন্ত ভূক্তভোগী আমরা এই দর্শকরা হলেও এর দায় নিশ্চয়ই আমাদের নয়। দায়টা অবশ্যই আইসিসি কর্তাদের, আরও ভালো করে বললে বলা যায়, দায়টা ভারত ভিত্তিক অসাধু কিছু রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীর; যারা এখন ক্রিকেটের দ-মুন্ডের কর্তা হয়ে দাড়িয়েছেন। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />ক্রিকেট এখন যে অন্ধকার জগতের অঙ্গুলি হেলনে পরিচালিত হয়, সেই জগতে ক্রিকেটের প্রবেশ শুরু হয়েছিল পরিস্কার ভাবে জগমোহন ডালমিয়ার হাত ধরে। ক্রিকেটের ‘গ্লোবালাইজেশনের’ নাম করে খেলাটায় আরও টাকা ও আরও লোভ টেনে এনেছিলেন এই ভদ্রলোক। আর এই কাচা টাকার ওপর বাজি ধরে, সেই বাজি নিজেদের মতো নিয়ন্ত্রন করার নেশায় ক্রিকেটে পঙ্গপালের মতো ছুটে এসেছিল অন্ধকার জগতের লোকেরা। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />তার ফলাফল আমরা ২০০০ সালের দিকে এসে দেখলাম। ক্রিকেটের ভদ্রজনোচিত ভাবমূর্তি ধ্বসেপড়ল। হ্যানসি ক্রনিয়ে, মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন, সেলিম মালিক, ওয়াসিম আকরামের মতো সর্বজন শ্রদ্ধেয় ক্রিকেটারের অন্য এক জীবন বেরিয়ে এলো এই সময়ে। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />ডালমিয়া যে চক্র শুরু করেছেন, শরদ পাওয়ার সেই চক্রের আশ্রয়দাতা হয়ে উঠলেন। আর এই দুষ্টু চক্র পালনের শিল্পী হয়ে ক্রিকেটকে ‘থ্রি সি’ তে পরিনত করলেন লোলিত কুমার মোদী-ক্রিকেট, ক্রাইম, সিনেমা।<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />খেলোয়াড়রা কেন বাজিকরদের সঙ্গে হাত মেলান? এটা বুঝতে বাজিকরদের স্বার্থটা বুঝতে হবে। ক্রিকেটে বাজি উপমহাদেশে নিষিদ্ধ হলেও ইউরোপে আইনি ব্যাপার। উপমহাদেশে, বিশেষ করে ভারতে নিষেধাজ্ঞার বেড়াজাল টপকে দিব্যি চলে বাজির খেলা। তাতে খেলায় কোনো প্রভাব পড়ার কথা নয়। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />খেলার আগে খেলা সম্পর্কে অনুমান করে জুয়ার মতো টাকা লগ্নী করে কেউ লাভ করবে, কেউ লোকসান দেবে; এই তো? কিন্তু এখানেই বাজিকররা তাদের খেলটা দেখাতে শুরু করলেন। তারা ভাবলেন, খেলাটাকে যদি নিয়ন্ত্রন করা যায় তাহলে লাভ পুরোটাই নিজেদের ঘরে আসে। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />যে দলের পক্ষে বাজি বেশি পড়েছে, সেই দল যদি মাঠে হেরে যায়; তাহলে বাজিকররা ফেপে ফুলে ওঠে। সেটাই করা হল খেলোয়াড়দের হাত করে। ম্যাচে ফেবারিট দলকে হারার জন্য পয়সা দেওয়া শুরু হল। এটা অবশ্য পুরো গপ্প; সেই ক্রনিয়ের জামানার গপ্প। এখন দিন বদলেছে। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />এখন ম্যাচ নিয়ে সরাসরি বাজির চেয়ে বেশি লাভ স্পট ফিক্সিংয়ে। এখানে একটি একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে বাজি ধরা হয়। যেমন প্রশ্ন থাকে-দ্বিতীয় ইনিংসের প্রথম বলে কি হবে। চারটি উত্তর হয়তো থাকল-১. চার রান, ২. কোনো রান নয়, ৩, আউট, ৪. পাচ রান (ওয়াইড চার)। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />মানে একটি দৃশ্যত অসম্ভব অপশন থাকবে। এই অপশনে বাজি ধরার মতো ‘পাগল’ তো খুজে পাওয়া কঠিন হবে। এখন বাজিকররা সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়দের সঙ্গে চুক্তি করে দৃশ্যত অসম্ভব ওই কাজটিই করাবেন। ফলে বাকি তিন অপশনে গন হারে যে বাজি ধরা হয়েছিল, সবার ভরাডুবি; সবার টাকা যাবে বাজিকরদের পকেটে। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />এই ধরণের অভিযোগেই অভিযুক্ত হয়ে নিষিদ্ধ আপাতত পাচ পাকিস্তানী ক্রিকেটার। পাকিস্তানী চার জন্য তো নিষিদ্ধ। তাহলে বলতে পারেন, ক্রিকেটের ওপর ভক্তি কেন উঠে গেছে? বাকিরা তো ঠিক আছে। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />এখানেই তো ভেজালটা। ময়লা সব মাছে খাচ্ছে, দোষ শুধু বেলে মাছের। রাজনৈতিক পরিস্থিতি বা নিজেদের অশিক্ষা; যে কোনো কারণেই হোক, কোনো একটা অভিযোগ উঠলেই পাকিস্তানীদের শাস্তি পেয়ে যেতে আর সময় লাগে না। কিন্তু অভিযোগ তো আরও উঠছে। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />ভারতের পিয়ুস চাওলার বিপক্ষে পরিস্কার গড়াপেটার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠল; আইসিসি তদন্তাটও করল না। সাঙ্গাকারার বিপক্ষে বিশ্বকাপের আগেই অভিযোগ উঠল এক রেস্টুরেন্টে বাজিকরদের সঙ্গে মিটিং করার; ক্রিকেটের এই বিবেককে নিয়ে কোনো তদন্ত হল না। ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটে একের পর এক অভিযোগ; বলার মতো কোনো শাস্তি বা ফাইন্ডিংস নেই আইসিসি বা ইসিবির। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />সর্বশেষ বিশ্বকাপ ফাইনাল নিয়ে গুঞ্জন-শ্রীলঙ্কা কেন বিনা কারণে পরীক্ষিত পারফরামদের রেখে মাঠে নামল? অনেক প্রশ্ন উত্তর দেওয়ার কেউ নেই। কে উত্তর দেবে? যেই রাম, সেই রাবন। যেই ভারতীয় কর্মকর্তা, সেই আইসিসি। কে কাকে নিয়ে তদন্ত করবে!<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />তাহলে কি ধরে নেব, সিবিআইয়ের ওই রিপোর্টই শেষ কথা? ক্রিকেট তাহলে পুরোটাই অন্ধকার জগতের নিয়ন্ত্রনে চলে গেছে?<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />এক বড় ভাই, একটি শীর্ষস্থানীয় দৈনিকের ক্রীড়া সম্পাদক আমার হতাশা শুনে বললেন, ‘কি সব বলো! আইসিসির সদর দপ্তর যেদিন লন্ডন থেকে দুবাই চলে এলো, সেদিনই তো খেলাটা অন্ধকার জগতে আনুষ্ঠানিক ভাবে চলে গেছে। দুবাইতে অফিস করে কারা?’<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />কারা?<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />‘ভারত-পাকিস্তানের মাফিয়ারা। যাদের ওখানে অন্তত পুলিশ ধরতে পারে না। এ যেন নো ম্যানস ল্যান্ড।’<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />তাহলে আর ক্রিকেট দেখব না!<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />‘অবশ্যই দেখব। বলিউডের সিনেমা দেখি, হলিউডের সিনেমা দেখি; সে তো অভিনয় জেনেই দেখি। ক্রিকেটও এখন থেকে অভিনয় জেনেই দেখব।’</div></div>দেবব্রত মুখোপাধ্যায়http://www.blogger.com/profile/10351018961072501066noreply@blogger.comtag:blogger.com,1999:blog-374060266804648478.post-23060697550449494372011-06-23T00:35:00.000-07:002011-06-23T00:45:47.323-07:00ভাষা নিয়ে ভাসা-ভাসা কথা<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"><span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;"><strong style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;">লেখাটি রস আলোতে ছাপা হইয়াছিল। যারা পড়েছেন, মনে মনে (বা প্রকাশ্যে) গালি দিন। যারা পড়েননি, তারাও পড়ে গালি দিতে পারেন। </strong></span><span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;"></span><br />
<div style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;"><br />
<em style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;">‘অনেক কথা যাও যে বলে, কোন কথা না বলি। তোমার ভাষা বোঝার আশা দিয়েছি জলাঞ্জলি।’</em><br />
আমি কিছু বলছি না। তবে আপনি ইচ্ছা করলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই কথার অন্য রকম মানে করতে পারেন। ভাবতে পারেন, রবি ঠাকুরেরও একই সমস্যা ছিল। সমস্যা আর কী? সেই ভাসা-ভাসা ভাষাজ্ঞান নিয়ে চলে আসা সমস্যা (রবীন্দ্রনাথের নাম করতেই কেমন মিল চলে এসেছে, এখন শুধু ছন্দটা এলেই হয়)।<br />
ভাষা নিয়ে যাতনা এমন পর্যায়ে গেছে যে এখন চোখের জলেও কাজ হচ্ছে না। আমাদের মতো নিতান্ত বকলমদের কথা বাদ দিন। টেলিভিশনে খেলোয়াড়দের চোখের জল-নাকের জল দেখেও কী বুঝতে পারেন না বেদনাটা আসলে কোথায়?<br />
ইংরেজি বলতে হবে, এ ভয়েই নাকি আমাদের ক্রিকেটাররা ম্যাচ-ট্যাচ জিতছেন না। এমনকি নিন্দুকেরা বলছেন, অনেকেই নাকি এই ভয়ে ইচ্ছা করে আউট-টাউটও হয়ে যাচ্ছেন (দেখেন ভাই, এর মধ্যে আবার যোগ্যতা-ফোগ্যতার প্রশ্ন টেনে আনবেন না)।<br />
পাছে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়ে আবার ইংরেজিতে সাক্ষাৎকার দিতে হয়!<br />
আমাদের ক্রিকেটারদের কথা আর কী বলি! পাকিস্তান দলের সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিল, তারা আর ইংরেজিতে কথাই বলবে না। এটা পাকিস্তানিদের খুব মাতৃভাষাপ্রীতি ভেবে যাঁরা আবেগে চোখের জল ফেলছিলেন, তাঁরা একটু আসল সত্যটা তলিয়ে দেখুন। আরে ভাই, ইংরেজি বলতে গেলে পারতে তো হবে। তারা এখানে আমাদের লাইনেই দাঁড়ানো।<br />
পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের মধ্যে ইংরেজি বলার জন্য সবচেয়ে ‘খ্যাত’ ইনজামাম-উল হক (অধুনা সাবেক)। এক ‘ইনশাল্লাহ’ ছাড়া ইংরেজিতে আর কোনো শব্দই সহজে আসে না তাঁর। ইনজামামের ইংরেজি নিয়ে গল্পের অভাব নেই। একবার রমিজ রাজা নাকি সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে ইনজিকে জিজ্ঞেস করেছেন, ‘আমাদের দলটাকে তুমি লড়াকু একটা মেশিনে পরিণত করলে কী করে? দেখলে মনে হয় ক্ষুধার্ত (হাংরি) বাঘ।’ ইনজি যথারীতি হেসে উত্তর দিলেন, ‘না, আমরা তো ক্ষুধার্ত না। আমাদের এখন অনেক টাকা আর সব সময় হালাল মাংস খাই’!<br />
ইনজামামকে নিয়ে এ যাবৎকালের সেরা ঘটনাটা বলা একটু ঝুঁকিপূর্ণ। আপনারা অনুমতি দিলে বলেই ফেলি। ম্যাচ শেষে ইনজামামকে সাংবাদিক কী জিজ্ঞেস করতে পারেন, তা অনুমান করে উত্তর নাকি তৈরিই রাখতেন। প্রথম প্রশ্ন যাই হোক ইনজামাম ওই মুখস্থ কটা লাইন বলবেন।<br />
সমস্যাটা হলো সেদিন ম্যাচ শেষে টনি গ্রেগ নাকি প্রথম প্রশ্নটা করেছিলেন, ‘ইনজি, তোমার স্ত্রীর তো বাচ্চা হবে। তুমি নিশ্চয়ই খুব খুশি?’ তৈরি থাকা ওই উত্তরটাই শুনিয়ে দিলেন ইনজামাম, ‘এ কৃতিত্ব আমার একার নয়। দলের সবাইকে এ জন্য আমি ধন্যবাদ জানাই। সবাই যার যার মতো ভূমিকা রেখেছে। বিশেষ ধন্যবাদ আফ্রিদীকে। সে ছাড়া এটা সম্ভব হতো না। ওদিকে বব উলমারও পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছিলেন এবং নির্দেশ দিচ্ছিলেন। আশা করি ভবিষ্যতেও আমরা এ রকম ফল আনতে পারব।’<br />
বুঝতে না পেরে উল্টাপাল্টা করে ফেলার ব্যাপারটার বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের বেলায়ও অভাব নেই। জাতীয় দলের এক ক্রিকেটার ইংল্যান্ডে গেছেন জুতা কিনতে (আসলে ক্রিকেট খেলতে গিয়েছিলেন)।<br />
দোকানে ঢুকেই দোকানিকে বললেন, ‘ক্যান আই হেল্প ইউ?’ দোকানি তো বুঝে পায় না, তার আবার কী সাহায্য লাগতে পারে। বেচারা যখন হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে, তখন পাশ থেকে এক সিনিয়র ক্রিকেটার বললেন, ‘ওই ব্যাটা। বল্, ক্যান ইউ হেল্প মি?’<br />
দোকানির প্রশ্ন যখন উঠল, আরেকটা দোকান সংক্রান্ত ঘটনা শোনা যাক। ‘এ’ দলের সঙ্গে পাকিস্তান সফরে গেছেন জহুরুল ইসলাম অমি। বড় নোট ভাঙাতে হবে। তিনি প্রথমে ইংরেজিতেই বলেছিলেন ‘চেঞ্জ’ দিতে। দোকানি তো বোঝে না। ওই যে, ইনজামামের ভাই তো। শেষ পর্যন্ত অমি ভাবলেন, উর্দুজ্ঞানটাই কাজে লাগানো যাক, ‘ভাই, এ নোট কো চুরমার কর দো!’ চুরমার করা মানে তো ভেঙেই ফেলা, তাই না?<br />
তার পরও ‘সর্বস্তরে বাংলা ব্যবহার’ মানতে পারছেন না? তাহলে ডেভ হোয়াটমোরের একটি গল্প শুনে নিন। প্রথম আলো-গ্রামীণফোন বর্ষসেরা ক্রীড়া পুরস্কার দেওয়া হবে। রিপোর্টিংয়ের সঙ্গে দাওয়াত কার্ডও নিয়ে বের হয়েছি। তৎকালীন কোচ ডেভের সামনেই সবাইকে কার্ড দিলাম। ভাবলাম, এদের দিলাম, কোচকে দেব না! বেচারা রাগ করবেন না? শেষ পর্যন্ত একটি কার্ডের ওপর ইংরেজিতে নাম ঠিকুজি লিখে বাড়িয়ে দিলাম। ভেতরে বাংলায় লেখা দাওয়াত পড়তে পারবেন কি না, ভেবে একটু ভয়ে ছিলাম।<br />
কার্ড দেখেই ডেভ ‘নো, নো’ করা শুরু করলেন। ব্যাপার কী? বলেন, ‘আমি খুব ব্যস্ত, কোনো দাওয়াত রাখতে পারব না।’ কোনোক্রমে ভেঙেচুরে বললাম, ‘বাবা, ভেতরে খুলে দেখো।’ বলছি আর ভাবছি, ভেতরের বাংলা দেখে আরও চটবেন। ও হরি! কার্ড খুলেই হেসে উঠলেন। বলেন কিনা, ‘ও আচ্ছা! উটপল আমাকে বলেছে। পোরোঠোম আলো?’<br />
আমি তো আমি, ক্রিকেটাররাও সবাই অবাক, ‘ব্যাটা বুঝল কী করে?’ জিজ্ঞেস করতেই একগাল হেসে প্রথম আলোর লোগোটা দেখিয়ে দিলেন। বললেন, ‘এটা পড়তে পারি।’ এবার বিশ্বাস হয়েছে, মাতৃভাষাই শ্রেয়?</div></div>দেবব্রত মুখোপাধ্যায়http://www.blogger.com/profile/10351018961072501066noreply@blogger.comtag:blogger.com,1999:blog-374060266804648478.post-50330177188710647222011-06-23T00:33:00.001-07:002011-06-23T00:33:33.947-07:00হারিয়ে যেতে এসেছি<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"><span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;">আমাদের গ্রামের মাধবদা ঘুড়ি বানাতেন। অনেকেই বানাতেন; কিন্তু মাধবদার ঘুড়ি আকারে এবং প্রকারে এতই বিচিত্র ছিল যে লোকেরা তাঁকে কেবল ওই ঘুড়ির জন্যই চিনত। ছেলেমেয়েদের কাছে তিনি ছিলেন রীতিমতো এক স্বপ্নের নায়ক। </span><span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;"></span><br />
<div style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;">মাধবদার ঘুড়ি উড়ত বিকেলবেলায়। শীতের শেষ শেষ, উত্তরের খোলায় গিয়ে বিশাল ঘুড়িটাকে কয়েকজন মিলে আকাশে উড়িয়ে দিত। ছেলেমেয়েগুলো বিপুল বিস্ময়ে চেয়ে থাকত ঘুড়ির দিকে। সেই ঘুড়িকে আমরা বলতাম ‘দুয়োরি’, কেন জানি না। তাতে আবার ‘ডাক’ বাঁধা থাকত। মানে ঘুড়ির ওপরের দিকে পাতলা একটা বেতের বা অন্য কিছুর টুকরো বেধে দিতেন মাধবদা। তাতে বাতাস বেধে প্রচণ্ড শব্দ হতো। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />সন্ধ্যা হলেও ঘুড়ি নামাতেন না মাধবদা। রাতে পড়ার বইয়ের সামনে ঢুলতে ঢুলতে সব পাড়ার ‘বালক-বালিকারা’ শুনতে পেত হু হু করা ঘুড়ির ডাক। বইয়ের পাতা থেকে চোখ দুটো কোথায় যেন হারিয়ে যেত। ঘুড়িটা এখন কত ওপরে? কী দেখছে অত ওপর থেকে, যে এমন করে কাঁদছে?<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />মাধবদা এখন কোমরের ব্যথায় বিছানা থেকে উঠতে পারেন না। আমাদের গ্রামে কেউ আর অমন ঘুড়ি বানায় না। তাই আমাদের গ্রামের ছেলেমেয়েরাও আর রাতের বেলায় হারিয়ে যায় না সুদূর কোন অন্ধকার আকাশে।<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />ধরেই নেওয়া হয়, এখন যুগটা ‘না হারানোর’ যুগ। ছেলেমেয়েগুলো যদি পড়ার টেবিলে বসে হারিয়েই যায়; তো ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হবে কী করে! কী করে লড়বে এই ‘ফার্স্ট হতেই হবে’ লড়াইয়ে। এখন পরিকল্পনা করা হয়, আর যা-ই হোক হারিয়ে যাওয়া চলবে না।<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />ছেলেমেয়েগুলোকে এই হারাতে না দেওয়ার জন্য কত্ত পরিকল্পনা! ছেলেমেয়েগুলো বাসা থেকে বেরিয়ে যেন ঠিক ঠিক ইস্কুলেই পৌছোয়; সে জন্য সঙ্গে সান্ত্রী সেজে ছোটেন মা-বাবা। তা না পারলে ড্রাইভার আঙ্কেল তো রইলেনই। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />চোখে চোখে রাখতে হয়, শুধু যেন স্কুল আর পড়াশোনা এবং মাপা কথা শেখা হয়। স্কুল ফাকি দিয়ে রাস্তায় এসে জীবানুযুক্ত খাবার খাওয়া চলবে না, দুপুর রোদে ত্বক নষ্ট হতে দেওয়া চলবে না, বিকেল বেলায় পাশের এক চিলতে মাঠে গায়ে ধুলো মাখানো চলবে না। মোদ্দা কথা, হারানো চলবে না। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />এই যে ‘চলবে না, চলবে না’ স্লোগান সেটা কী শুধু ছেলেমেয়েগুলোর জন্য? আমাদের বুড়োদের জন্যও তো চারিদিকে ওই স্লোগানÑহারানো চলবে না। হারানোর জায়গাটা কোথায়। সেই বাসা, চেনা রাস্তা, বাসি চায়ের দোকান আর অফিস। আবার অফিস, চায়ের দোকান, চেনা রাস্তা আর বাসা। এই চক্রে পড়ে হারানোর চিন্তা করাও বন্ধ। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />চক্রের বাইরে দু পা ফেলে একটু বেরোলেই সঙ্গে ল্যাপটপ; ইন্টারনেটে হাজির সেই চেনা জগতের বন্ধন। আমাদের ছোট্ট গ্রামটাতে গিয়েও এখন আর হারানোর উপায় নেই। সেখানে মাধবদার ঘুড়ির ডাক শোনার উপায় নেই। বরং চারিদিকে ডিজিটাল সাউন্ড। আর সর্বব্যাপী এক মোবাইলের রিংটোন!<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />‘দেশ বিস্তৃত নেটওয়ার্ক’-এর যন্ত্রনায় একমুহুর্তের জন্য হারানোর উপায় নেই। মিনিটে মিনিটে চেনা-অচেনা কণ্ঠ ভেসে আসে, ‘হ্যালো...’। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />তাহলে হারাতে পারবই না!<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />অনেক পথ ঘুরে হারানোর জন্য ব্লগে এলাম। এখানে কেউ আমাকে চেনে না। আমি কাউকে চিনি না। এখানে আমাকে কোনো কেতা মানার দিব্যি কেউ দিয়ে দেয়নি। এখানে আমি নাকি শুধুই হারাতে পারব। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />হারানোর জন্য এলাম আপনাদের কাছে। </div></div>দেবব্রত মুখোপাধ্যায়http://www.blogger.com/profile/10351018961072501066noreply@blogger.comtag:blogger.com,1999:blog-374060266804648478.post-80817985461721253352011-06-23T00:32:00.001-07:002011-06-23T00:32:39.007-07:00যন্ত্রের সঙ্গে লড়াই<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"><span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;"></span><br />
<h2 style="clear: both; color: #537d00; font-size: 25px; font-weight: normal; line-height: 28px; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 4px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;"><span class="Apple-style-span" style="color: black; font-size: small; line-height: normal;">কোনো এক স্টেডিয়ামের গেটে নিরাপত্তাকর্মীরা এক আম্পায়ারকে আটকে দিয়েছে। অভিযোগ, তিনি এক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে মাঠে ঢুকতে চাইছেন। খুব তর্কাতর্কি চলছে। এক পর্যায়ের নিরাপত্তাকর্মী ইন্টারকমে স্টেডিয়ামের বড় কর্তাকে ফোন দিল:</span></h2><div style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;">‘স্যার, এক আম্পায়ার তার বন্ধুকে নিয়ে স্টেডিয়ামে ঢুকতে চাচ্ছেন। কি করবো?’<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />‘ঢুকতে দিও না। ও মিথ্যা কথা বলছে। ও আম্পায়ার না।’<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />‘স্যার, কিভাবে বুঝলেন!’<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />‘দুনিয়ায় কোনো আম্পায়ারের বন্ধু বলে কিছু থাকে না।’<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />*******<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" /><br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />গল্পটা সত্যি হোক আর নাই হোক, কথাটা সত্যি: আম্পারদের বন্ধু থাকে না। মাঠে দুই পক্ষই মনে করে আম্পায়ার তাদের প্রধানতম শত্রু, দর্শক মাত্রেই মনে করে আম্পায়ার তার দলের বিপক্ষে, এমনকি কর্মকর্তারাও মনে করেন আম্পায়াররা ছাড়া সবাই আইনকানুন ভালো বোঝে! এমন লোকের আবার বন্ধু হয় কী করে!<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />আমিও আম্পায়দের ভিলেনই মনে করতাম। মনে হত, এই লোকগুলো ইচ্ছে করে ভুল করার জন্যই মাঠে নামে! তাদের চেয়ে আমাদের কাউকে দাড় করিয়ে দিলে বোধহয় কাজটা ভালো করতে পারতাম। কিন্তু এবার বিশ্বকাপে আম্পায়ারিং দেখে সব অনুভূতি মিলিয়ে আমার একটা শব্দই তৈরি হয়েছে: শ্রদ্ধা। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />যতোই রসিকতা করি, এ কথা মানতেই হবে, আম্পায়ারদের মতো কষ্টকর আর ‘থ্যাংকলেস জব’ এই দুনিয়ায় সম্ভবত দ্বিতীয়টি নেই। একজন খেলোয়াড় সেঞ্চুরি করলে আমরা বলি, আহা বেচারা কতোক্ষন উইকেটে ছিল। ফিল্ডারদের নিয়ে গুঞ্জন তুলি, এই রোদে কাহাতক ফিল্ডিং করা যায়! কিন্তু আম্পায়ারদের কথা ভেবে দেখেছেন? কেউ বলে না, আহারে এই ১০০টা ওভার ধরে দু জন মানুষ দু প্রান্তে দাড়িয়ে রইল!<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />সেঞ্চুরি করলে হাতে তালি মেলে, উইকেট পেলেও মেলে; কিন্তু আম্পায়ার একটা ভালো সিদ্ধান্ত দিলে কেউ কখনো হাতে তালি দেয়? দেয় না। বলে, এটাই তার কাজ। তাহলে ব্যাটসম্যানদের কাজ কি ব্যাটিং করা নয়? বোলারদের কাজও কি উইকেট পাওয়া নয়! সে জন্য কেন আমরা করতালি দেই?<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />এসব পুরোনো কথা। একটা ওয়ানডে ম্যাচে কমপক্ষে শ ছয়েক বলকে চোখে চোখে রাখা, প্রতিটা ঘটনাকে তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে অনুসরন করা, এক মুহুর্তের জন্য মনোসংযোগ বিচ্ছিন্ন হতে না দেওয়া; এসব আম্পায়ারদের সেই আদ্যিকাল থেকে চলে আসা চ্যালেঞ্জ। তাহলে হঠাৎ এই বিশ্বকাপে কি দেখে মুগ্ধ হলাম? যন্ত্রের বিপক্ষে আম্পায়ারদের লড়াই দেখে। ইউডিআরএস বা আম্পায়ারস ডিসিশন রিভিউ সিস্টেমের সঙ্গে তাদের লড়াই দেখে মুগ্ধ হলাম।<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />একটা সময় ছিল, আম্পায়ারদের বোঝা ও দেখাই মাঠে শেষ কথা ছিল। একটু একটু করে ক্রিকেট মাঠে প্রযুক্তি ঢুকতে শুরু করেছে অনেকদিন হল। প্রথমে টিভিতে সম্প্রচার শুরু হল। আম্পায়ারদের টুকটাক মানবীয় ভুল ‘ক্রাইম’ হিসেবে আলোচিত হতে থাকল। এরপর এলো তৃতীয় আম্পায়ার। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />খানিকটা ক্ষমতা খর্ব হল আম্পায়ারদের। আবার কিছু সহযোগিতাও তারা পেতে থাকলেন মাঠের বাইরে থেকে। কিন্তু এবার যেটা হল, তার কাছে একদম অসহায় হয়ে পড়ার কথা আম্পায়ারদের। আগে আম্পায়াররা সন্দেহ হলে নিজেদের সিদ্ধান্ত তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে পাঠাতেন। এখন সীমিত আকারে সে ক্ষমতা চলে গেছে ব্যাটসম্যান ও ফিল্ডারদের কাছে। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />প্রতি ইনিংসে প্রতিটি দল দু বার করে আম্পায়ারের দেওয়া সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন। মানে সবমিলিয়ে এক ম্যাচে আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত আট বার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। এ ক্ষেত্রে কারো অনুমতির দরকার নেই। বোলার-ফিল্ডার যদি মনে করেন আম্পায়ার ভুল করে আউট দেননি। সঙ্গে সঙ্গে তার ক্যাপ্টেন ডিআরএস চাইতে চারবেন। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />বুঝুন আম্পায়ারদের অসহায়ত্বটা! একটা ম্যাচে কতোগুলো টাইট-ডিসিশন হয়? কোনোভাবেই সংখ্যাটা আটের বেশি হওয়ার কথা না। ম্যাচের বেশিরভাগ আউটই তো স্বচ্ছ ও দৃশ্যবান বোল্ড, ক্যাচ বা রানআউট। বাকি রইল এলবিডব্লু। কিছু এলবিডব্লু থাকে, তা নিয়ে ব্যাটসম্যানের আপত্তি করার উপায় থাকে না। বাকি যে সীমিত সংখ্যক আউট, যেখানে আম্পায়ারের মেধা, পর্যবেক্ষন ও অভিজ্ঞতা প্রয়োগের ক্ষেত্র; তার প্রতিটিতেই এখন চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। হয় এ পক্ষ চ্যালেঞ্জ করছে, নয় ও পক্ষ। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />চ্যালেঞ্জর পর কি হচ্ছে? সম্প্রচার স্বত্ত পাওয়া প্রতিষ্ঠানের গোটা আঠারো ক্যামেরা এবার নানা অ্যাঙ্গেল থেকে ঘটনাটা দেখাতে শুরু করছে। দুনিয়ার লাখো লাখো মানুষ তখন ওই আম্পায়ারের ভুল ধরতে বিচারক হয়ে উঠছে। তৃতীয় আম্পায়ারের চোখের সামনে আরেক মনিটরে আবার গ্রাফিক্স করে দেখিয়ে দেওয়া হচ্ছে, আসলে ঘটনাটা কি ঘটতে পারত। হক আই দিয়ে দেখানো হচ্ছে বলের গতি। একজন লোক খালি চোখে দেখে যে সিদ্ধান্ত দিল, তার বিচার হচ্ছে হাজারটা যন্ত্রের সাহায্যে। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />এমন অবস্থায় আমাদের স্বাভাবিক বোধ-বিবেচনা বলে, আম্পায়ারদের কুড়ি কুড়ি ভুল বের হওয়ার কথা। কারণ, আমরা তো মনে করি, ফিফটি-ফিফটি অবস্থায় আম্পায়াররা অবশ্যই ভুল করেন। কিন্তু বিস্ময়কর তথ্য কি জানেন, পরিসংখ্যান বলছে, এই যে চ্যালেঞ্জে পড়ছেন আম্পায়াররা, এর অধিকাংশতেই তাদের জয় হচ্ছে। কোনো কথার কথা নয়। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />আইসিসির ভাষ্য অনুযায়ী অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে শতকরা ৭ বা ৮ শতাংশ বেশি সঠিক আম্পায়ারিং হয়েছে এই বিশ্বকাপে। কারণ কী? আইসিসি একটা ব্যাখ্যা দিয়েছে। যেটা বিশেষজ্ঞরা আপাতত সঠিক বলেই মনে করছেন। আইসিসি বলছে, উপমহাদেশের উইকেটের কারণে সঠিক সিদ্ধান্তের পরিমান বেড়ে গেছে।<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />উপমহাদেশের উইকেটে বলের বাউন্স সাধারণত একইরকম থাকে, বল আচমকা খুব বেশি সুইং করে না, স্পিনারদের বলে টার্ন অনেক পরিস্কার ও বড়; ফলে আম্পায়ারদের পক্ষে বল অনুসরণ করা অনেক সোজা। এ ছাড়া ব্যাটসম্যানরা এখানে বল সামনের পায়ে কম খেলেন বলেও সিদ্ধান্তটা নেওয়া একটু সহজ। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />আমার কাছে অবশ্য এসব ব্যাখ্যা একেবারেই কেতাবী মনে হয। আসল কারণ অন্য জায়গায়। আম্পায়ারদের কাজের এই মানটা বেড়ে যাওয়ার আসল কারণ, তাদের পেশাকে একটা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছি আমরা। কয়েক শ বছর ধরে আম্পায়াররা বিনাযন্ত্রে, নিজেদের যোগ্যতায় কাজটা করে আসছিলেন। আজ আমরা বলছি, তোমাদের পরীক্ষা নেব। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />এই পরীক্ষা দিতে গিয়ে আম্পায়াররা তাদের সর্বোচ্চ সর্বোচ্চ ক্ষমতাটার প্রয়োগ করছেন। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />আজকের স্টিভ ডেভিস, আলিম দাররা বুঝিয়ে দিতে চাইছেন, মানুষকে চ্যালেঞ্জ করে পার পেয়ে যাওয়া যন্ত্রের কাজ নয়। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />মানুষের কাজ মানুষই ভালো পারে। আম্পায়ারের কাজ আম্পায়ারই ভালো পারে, যন্ত্র নয়।</div></div>দেবব্রত মুখোপাধ্যায়http://www.blogger.com/profile/10351018961072501066noreply@blogger.comtag:blogger.com,1999:blog-374060266804648478.post-609335698614672822011-06-23T00:31:00.000-07:002011-06-23T00:47:25.977-07:00এ কী আজব কারখানা!!!!<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"><span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;">আমি মানুষ হিসেবে খানিটা উটপাখি প্রকৃতির। কোনো সমস্যা দেখলে মুখ গুজে ফেলে বেচে যাওয়ার চেষ্টা করি। </span><span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;"></span><br />
<div style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;">সমস্যার খবর শুনে নিজেকে বলি, যাক আমার তো কোনো সমস্যা হচ্ছে না। রমনা বটমূলে বোমা ফাটে, হুমায়ুন আজাদ মারা যান, বিডিআরে গোলাগুলি হয়; আমি নিজেকে বলি, আমি তো বেঁচে আছি। আহলে আমার এসব নিয়ে মাথা ঘামানোর দরকার কী?<br />
এই বাউলদের ব্যাপারটাতেও তাই করছিলাম। পত্রিকায় দেখলাম, বাউলদের ধরে নিয়ে চুল, গোফ কেটে দেওয়া হয়েছে। আমি ভাবলাম, তা কাটুক, আমার মস্তক তো অক্ষত আছে। অতএব আমি শান্তিতেই ছিলাম।<br />
শান্তিতে থাকতে দিল না একটা ছবি। ছবিটা কোথায় দেখলাম? মনে পড়ছে না। এক জায়গায় কয়েকজন বাউল বসে আছেন।অত্যন্ত অপরিশিলিত হাতে তাদের চুলগুলো প্রায় মুন্ডন করে দেওয়া হয়েছে। চোখে মুখে দারুন একটা অসহায়ত্ব। সবচেয়ে বড় কথা মানুষগুলোর মুখ দেখে মনে হচ্ছে, বিস্ময়ে অনড় হয়ে গেছেন।<br />
হঠাৎ মনে হল, ছবির ভেতর থেকেই যেন কে বলে উঠলেন, এ কী আজব কারখানা!<br />
আমি আর পারলাম না। আর উটপাখি হয়ে থাকা হল না। এবার কাঁদতেই হল। এই অসহায়, সরল মানুষগুলোর জন্য এবার কাঁদতেই হল।<br />
বাউল, বৈষ্ণব, সুফিদের নিয়ে আমার না আছে কোনো পড়াশোনা; না আছে বিন্দু মাত্র জ্ঞান। শুধু আধুনিক শব্দযন্ত্রে গোটাকতক গান শুনেছি মাত্র। সে গানের মর্ম খুব বুঝে, এমন দাবিও করা চলে না।<br />
কিচ্ছু না বুঝেও বাউলদের ব্যাপারে, একটা ধারণা ছিল আমার; এই মানুষগুলোর বুঝি কোনো শত্রু নেই। শত্রু থাকবে কেন? আমি তো চোখের সামনে দেখি মানুষগুলো গান গেয়ে, সহজিয়া জীবন যাপন করে, নিজের মতো করে স্রষ্ঠার সঙ্গে বন্ধুত্ব করে দিন কাটাচ্ছে।<br />
আমি জানি না ইসলাম বা হিন্দু ধর্মের সঙ্গে সুফিবাদ, বাউলতত্ত্ব বা বৈষ্ণবমতের কি লড়াই। আমি জানি না, কোথায় তারা ধর্মবিরোধী। বরং আমার তো মনে হত, আমাদের মতো প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের পেছনে ছোটা লোকেদের চেয়ে স্রষ্ঠার সঙ্গে তাদের সম্পর্ক<br />
টাই বেশি গাড়!<br />
ধর্মগুলো যা বলে, বাউলরা তো তেমই সৎ আর সহজ জীবন যাপন করেন। বাউলরা তো কারো ক্ষতি করেন না। বাউলরা কাউকে আক্রমন করেন না। বাউলরা মসজিদ-মন্দিরে লড়াই বাধিয়ে দেন না। তাহলে এদের কেন শত্রু থাকবে!<br />
হায়রে উট পাখি। তোমার বোঝা এই দুনিয়ার বাইরে অনেক কিছু আছে। এখানে অজাতশত্রুও হিংসার শিকার হয়। যে মানুষগুলো মানুষকে ভজন করতে বলে, যে মানুষগুলো সুপথে চলতে বলে; কারা যেন তাদের ধরে নিয়ে চুল কেটে দেয়।<br />
কেন এই তৎপরতা, তার ধর্মী য় ব্যাখ্যা নিশ্চয়ই আছে। আমি সে ব্যাখ্যায় না গিয়েই বলি, এ বড় অন্যায়। একজন মানুষকে তার মত মতো জীবন যাপনে কেউই বাধা দেওয়ার অধিকার রাখে না। তারওপর বাউলের মতো মানুষকে তো নয়ই।<br />
আমার এই পলায়নপর বোধ থেকেই আমি বুঝতে পারি, এই অন্যায়ের প্রতিবাদ হওয়া দরকার। এই ব্লগেই দেখেছি, অনেকে এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে লিখেছেন। সবাইকে শ্রদ্ধা। এবং সবার কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি, আসুন এই অন্যায়ের প্রিতিবাদ করি।<br />
একটি লিংক পেয়েছি। এখানে অনেকে সই করছেন প্রধানমন্ত্রীর বরাবর আবেদন পাঠাবেন বলে। এটাতে সবাই মিলে অংশ নেওয়া যেতে পারে।<br />
সবশেষে বলি, আমার এক বন্ধু ফেসবুকে ক্ষুব্ধ হয়ে লিখেছেন; সবাই মিলে চুল বড় করি, দেখি ক জনের চুল কাটতে পারে। এও মন্দ নয়; অন্তত প্রতিবাদ তো করা হল।</div><div style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;"><b><br />
</b></div><div style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;"><b>নোট: প্রথম আলো ব্লগে লেখাটি ছাপা হওয়ার পর অনেক আলোচনা হয়েছিল। উল্লেখযোগ্য কিছু</b></div><div style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;"><b><br />
</b></div><span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;"></span><br />
<dd class="colorfull comment-1503818 user-17298" style="background-attachment: initial; background-clip: initial; background-color: initial; background-image: url(http://prothom-aloblog.com/img/list-bullet.gif); background-origin: initial; background-position: 0% 0%; background-repeat: no-repeat no-repeat; margin-bottom: 20px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 40px; padding-right: 0px; padding-top: 0px; position: relative;"><div style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;"><span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;"><b style="float: left; font-size: 15px; font-weight: normal; line-height: 14px; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 13px;"><strong style="color: #537d00; display: block; font-weight: normal; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;"><a href="http://prothom-aloblog.com/profile/12121988" style="color: #537d00; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px; text-decoration: none;">সজীব মোহন্ত</a></strong>১৮ এপ্রিল ২০১১, ১৬:০৫</b></span><br />
<div class="commentContent" style="background-attachment: initial; background-clip: initial; background-color: initial; background-image: url(http://prothom-aloblog.com/img/border-bg.gif); background-origin: initial; background-position: 0% 100%; background-repeat: repeat no-repeat; clear: both; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 10px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 13px;"><span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;">কি হবে সাইন দিয়ে........না হয় প্রধানমন্ত্রির কাছে আবেদন করলেন..........প্রধানমন্ত্রি আশ্বাস দিবেন এ ধরনের অন্যায় আর কখনই ঘটবে না.........কিছুদিন এ নিযে টকশো হবে পত্রিকায় লেখালেখি হবে........তারপর যেই লাউ সেই কদু।</span><br />
<div style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 10px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;"><span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;"><a class="delete" href="http://prothom-aloblog.com/posts/7/124672" style="color: #537d00; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px; text-decoration: none;">মুছে ফেলুন</a> <span class="ban" style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;">| <a class="delete" href="http://prothom-aloblog.com/posts/7/124672" style="color: #537d00; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px; text-decoration: none;">ব্লক করুন</a></span></span></div></div></div></dd><dd class="colorfull comment-1503818 user-501" style="background-attachment: initial; background-clip: initial; background-color: initial; background-image: url(http://prothom-aloblog.com/img/list-bullet.gif); background-origin: initial; background-position: 0% 0%; background-repeat: no-repeat no-repeat; margin-bottom: 20px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 40px; padding-right: 0px; padding-top: 0px; position: relative;"><div class="author" style="background-attachment: initial; background-clip: initial; background-color: initial; background-image: url(http://prothom-aloblog.com/img/author.png); background-origin: initial; background-position: 100% 0%; background-repeat: no-repeat no-repeat; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;"><span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;"><b style="float: left; font-size: 15px; font-weight: normal; line-height: 14px; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 13px;"><strong style="color: #537d00; display: block; font-weight: normal; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;"><a href="http://prothom-aloblog.com/profile/debbrata" style="color: #537d00; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px; text-decoration: none;">দেবব্রত মুখোপাধ্যায়</a></strong>১৮ এপ্রিল ২০১১, ২৩:৩৯</b></span><br />
<div class="commentContent" style="background-attachment: initial; background-clip: initial; background-color: initial; background-image: url(http://prothom-aloblog.com/img/border-bg.gif); background-origin: initial; background-position: 0% 100%; background-repeat: repeat no-repeat; clear: both; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 10px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 13px;"><span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;">সজীব, আপনার সঙ্গে পুরোপুরি একমত। আমিও জানি, কিচ্ছুই হবে না। কিন্তু এটা আমাদের অস্তিত্বের জানান দেওয়ার প্রশ্ন। </span><br />
<span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;">এ প্রসঙ্গে আমি একটু অন্য একটা কথা বলি? </span><br />
<span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;">আমরা কেন যুদ্ধাপরাধীর বিচার দাবী করি? আমরা জানি, সত্যিকার অর্থে যুদ্ধাপরাধীর বিচার আওয়ামী লিগ করবে না। এখনও যা করছে, সেটা বিচার নয়, অন্য কিছু। তারপরও আমরা দাবী জানাতে থাকবো, এবং যা কিছু অল্প হচ্ছে তাকেও সমর্থন দেব। কারণ এই কাজগুলো যে মুহুর্তে আমরা সবাই বন্ধ করে দেব, আমাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে যাবে। মনে হবে এই দেশে একাত্তরের নৃশংসতা মনে রাখা একটি লোকও আর অবশিষ্ট নেই। তাই আমরা দাবী জানাই। </span><br />
<span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;">ঠিক তেমনই আমরা জানি, প্রধানমন্ত্রী সব জেনেও চুপ করে থাকবেন। তার দলীয় নেতাদের সম্পৃক্ততাকে এড়িয়ে যাবেন। মানুষের মাথা কাটা গেলে যে সরকারের কিছু যায় আসে না, সামান্য ‘চুল’ কাটা নিয়ে তারা বিচলিত হবেন না। </span><br />
<span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;">তারপরও আমরা এই কাজটি করে যাবো, আমরা বারবার স্মারকলিপি পাঠাবো। বারবার অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে থাকবো। </span><br />
<span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;">একদিন ইতিহাস অন্তত স্বীকার করবে, আমরা সময়ের দাবি মিটিয়েছিলাম। আমরা টিকিয়ে রেখেছিলাম একটি প্রগতিশীল চিন্তা। </span><br />
<span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;">*এই ‘আমরা’ মানে আমি বা অন্য কেউ নয়, আমি-আপনি সকলে।</span></div><div class="commentContent" style="background-attachment: initial; background-clip: initial; background-color: initial; background-image: url(http://prothom-aloblog.com/img/border-bg.gif); background-origin: initial; background-position: 0% 100%; background-repeat: repeat no-repeat; clear: both; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 10px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 13px;"><span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;"><br />
</span></div></div></dd><span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;"><dd class="comment-1503834 user-24065" style="margin-bottom: 20px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px; position: relative;"><div style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;"><b style="float: left; font-size: 15px; font-weight: normal; line-height: 14px; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 13px;"><strong style="color: #537d00; display: block; font-weight: normal; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;"><a href="http://prothom-aloblog.com/profile/pramanik99" style="color: #537d00; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px; text-decoration: underline;">শহীদুল ইসলাম প্রামানিক</a></strong>১৮ এপ্রিল ২০১১, ১৬:০৩</b><br />
<div class="commentContent" style="background-attachment: initial; background-clip: initial; background-color: initial; background-image: url(http://prothom-aloblog.com/img/border-bg.gif); background-origin: initial; background-position: 0% 100%; background-repeat: repeat no-repeat; clear: both; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 10px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 13px;">বাউলদের দোষ নাই তবে দোষটা হয়তো গাঁজাখোরদের।<br />
<div style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 10px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;"><a class="reply" href="http://prothom-aloblog.com/posts/7/124672" style="color: #537d00; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px; text-decoration: none;">উত্তর দিন</a> | <a class="delete" href="http://prothom-aloblog.com/posts/7/124672" style="color: #537d00; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px; text-decoration: none;">মুছে ফেলুন</a> <span class="ban" style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;">| <a class="delete" href="http://prothom-aloblog.com/posts/7/124672" style="color: #537d00; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px; text-decoration: none;">ব্লক করুন</a></span></div></div></div></dd><dd class="colorfull comment-1503834 user-501" style="background-attachment: initial; background-clip: initial; background-color: initial; background-image: url(http://prothom-aloblog.com/img/list-bullet.gif); background-origin: initial; background-position: 0% 0%; background-repeat: no-repeat no-repeat; margin-bottom: 20px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 40px; padding-right: 0px; padding-top: 0px; position: relative;"><div class="author" style="background-attachment: initial; background-clip: initial; background-color: initial; background-image: url(http://prothom-aloblog.com/img/author.png); background-origin: initial; background-position: 100% 0%; background-repeat: no-repeat no-repeat; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;"><a class="loc" href="http://www.blogger.com/post-edit.g?blogID=374060266804648478&postID=60933569861467282" name="comment-1504555" style="color: #537d00; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px; text-decoration: none;"></a><b style="float: left; font-size: 15px; font-weight: normal; line-height: 14px; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 13px;"><strong style="color: #537d00; display: block; font-weight: normal; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;"><a href="http://prothom-aloblog.com/profile/debbrata" style="color: #537d00; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px; text-decoration: none;">দেবব্রত মুখোপাধ্যায়</a></strong>১৯ এপ্রিল ২০১১, ০০:২২</b><br />
<div class="commentContent" style="background-attachment: initial; background-clip: initial; background-color: initial; background-image: url(http://prothom-aloblog.com/img/border-bg.gif); background-origin: initial; background-position: 0% 100%; background-repeat: repeat no-repeat; clear: both; margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 10px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 13px;">প্রামানিক ভাইয়ের কথা বেশ ইঙ্গিতপূর্ন। এই বাউলরা ‘গাজাখোর’ বা মাদকসেবী ছিলেন, এমন খবর যদি আপনার কাছে থেকে থাকে; তাহলে তাদের প্রতি আমার ব্যক্তিগত সহানুভূতি কমে যাবে। কিন্তু তাদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, এরপরও আমি তার প্রতিবাদ করবো।<br />
কারণ-১: কেউ মাদকসেবী হলেও তার বিচার করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। কয়েকজন আওয়ামী কর্মী আর গোড়া ধর্মনেতার দায়িত্ব নয়। এ ধরণের বিচার কাজ এর আগে যারাই নিজেদের হাতে তুলে নিয়েছেন, তারা পরে দৈত্যে পরিণত হয়েছেন, বলে ইতিহাস স্বাক্ষ দেয়। আমাদের মনে আছে এই পদ্ধতিতে একজন বাংলা ভাইয়ের উত্থানের কথা্। তার কর্মকান্ডও শুরুতে সমাজবিরোধীদের বিচারের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। তখন রাষ্ট্রও তাকে উৎসাহ দিয়েছে। পরে আমরা দেখেছি, স্বনিয়োজিত এই ধরণের বিচারক কি ভয়ঙ্কর চেহারা ধারণ করে।<br />
কারণ-২: একজন বাউল, তিনি মাদকসেবী হলেও তার চুল কাটা মানে পুরো বাউল সমাজকে আহত করা। একজন সন্নাসীর দাড়ি বা একজন আলেমের টুপি যেমন স্পর্শ করা একটি জাতির জন্য অবমাননাকর, বাউলদের ক্ষেত্রেও তাই। ফলে ব্যক্তিগত অপরাধে কারো গোষ্ঠীগত প্রতীকে হামলা চলতে পারে না।<br />
তবে আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এই বাউলরা মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সাধুসঙ্গ যে সব বাউল করেন, তারা নেশা থেকে শতহস্ত দূরে থাকেন। তাদের কাছে স্রষ্ঠার সঙ্গে প্রেমই নেশা।<br />
আর প্রামানিক ভাই যদি বাউল বলেই ‘গাজাখোর’ ধরে নেন; সেটা ভুল হবে। কারণ দাড়ি-টুপি মানেই জঙ্গিবাদ নয়, পূজারী মানেই শিবসেনা নয়, তেমনই বাউল বেশ মানেই নেশাখোর না। বরং বাউলরা বলতে পারেন, ‘তোমরা যে জামা-প্যান্ট পরে ইয়াবা, ফেনসিডিল খাও। তাহলে সবার জামা-প্যান্ট কি আমরা খুলে নেব!’</div></div></dd></span></div>দেবব্রত মুখোপাধ্যায়http://www.blogger.com/profile/10351018961072501066noreply@blogger.comtag:blogger.com,1999:blog-374060266804648478.post-37689022191949858252011-06-23T00:27:00.001-07:002011-06-23T00:27:52.467-07:00আবার স্যালুট মাশরাফি!!!!<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"><span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;">জেমি সিডন্স যথার্থই বলেছেন, ‘মাশরাফি, একমাত্র মাশরাফি বলেই এটা পেরেছে’</span><span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;"></span><br />
<div style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;">কী পেরেছে মাশরাফি? একজন পেসার, যে কিনা ফিটনেসের ধারেকাছেও নেই, সে অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের বিপক্ষে মান বাচিয়ে ফিরেছে। একজন পেসার, যে কিনা গড়ে ১১৫ কিলোমিটারের ওপর বলই করতে পারল না, সে প্রথম ২ ওভারে মাত্র ৩ রান দিয়ে ১ উইকেট তুলে নিল। শেষ ওভারটা বাদ দিলে অস্ট্রেলিয় ব্যাটসম্যানদের ফনা দাবিয়েই রাখল এই ‘হাফ ফিট’ মাশরাফি। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />কিভাবে? সিডন্স এক কথায় ব্যাখ্যা করেছেন, ‘ওর যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা আর মেধা দিয়ে।’<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />দারুণ! আমরা ষোলো আনার চেয়েও বেশি একমত। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />যদিও সাধারণ্যে একটা ধারণা আছে, সদা-উচ্ছল মাশরাফির মস্তিস্কে শ্বেত পদার্থ তুলনামূলক কম। এটা একটা ভ্রান্ত মিথ। এই মিথ প্রথমবারের মতো আমার মিথ্যে মনে হয়েছিল আবাহনীর অধিনায়ক মাশরাফিকে দেখে। বাইরে থেকে হইচই করা, পাগলা মাশরাফি মাঠে অন্য এক চেহারায় আবির্ভূত। কি অসাধারণ ফিল্ড প্লেসমেন্ট, অসাধারণ বোলিং চেঞ্জ। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />একটা ম্যাচের কথা মনে পড়ছে; প্রতিপক্ষ কারা মনে নেই। ও নিজে অসুস্থ। আবাহনীর পেসাররা সব্বাই অসুস্থ বা কোনো সমস্যায় ভুগছে। মাশরাফি মাঠে নামল। পেস বল করার মতো শক্তি ছিল না। অফস্পিন বোলিং করল, তাতেই কেল্লা ফতে। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />মাশরাফির ক্রিকেট মস্তিস্ক কতো ক্ষুরধার, সেটা আরও প্রমান পাওয়া গেল তৃতীয় দফা অস্ত্রপচারের পর। দু হাটুতে টানা তিন অস্ত্রপচারে ১৪০ কিলোমিটারের ওপর বল করতে পারা সেই মাশরাফি তখন স্মৃতি হয়ে গেছে। মাশরাফির গড় গতি তখন ১২৮ থেকে ১৩২। মাশরাফি কৌশল বদলালো। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />লাইন আর লেন্থের ওপর দারুণ নিয়ন্ত্রন নিয়ে এলো। ছোট ছোট ইনসুইং আবির্ভূত হল, ইয়র্কারের চেষ্টা থাকল না, মাঝে মাঝে কাটার; ঘরোয়া ক্রিকেটে বদলে যাওয়া এই মাশরাফিকে দেখে হঠাৎ চমকে উঠেছিলাম। মাশরাফি, নাকি ওয়াসিম আকরাম! <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />দুঃখিত অনেক বড় নাম নিয়ে ফেলেছি। তবে পেস বোলিংয়ে এই যে মেধার পরিচয় সে দিল, তাতে পেস বোলিং কিংবদন্তীর কথা মনে না পড়ে পারেই না। তবে ওয়াসিম কাজটা করেছিলেন পৃথিবী শাসন করার জন্য। আর মাশরাফিকে দফায় দফায় এই বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিতে হচ্ছে বাধ্য হয়ে, শরীরের সঙ্গে লড়াইয়ে নেমে। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />এবার মাশরাফি যেটা করলেন, তা ক্রিকেট ইতিহাসে লিখে রাখার মতো একটা ব্যাপার হল। মাশরাফিকে যারা জানেন, তারা বোঝেন, এই ছেলেটি শরীর দিয়ে আর ক্রিকেট খেলে না; খেলে মনের জোরে। যে কোনো কারণেই হোক, সেই মনের জোরটা আপাতত ওর নেই। নিজেই বারবার কাকুতি করছিল, এখন না খেলার জন্য। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />বোর্ড কর্মকর্তারা, যারা আবার মাশরাফির ক্লাবের ‘মাফিয়াসুলভ কর্মকর্তা’, তারা হুমকি দিয়ে মাঠে নামালেন ছেলেটিকে। এমন অবস্থায় আমি হলে কি করতাম? যা পারি তাই! আমি খারাপ করতাম, দেখে কর্তারা লজ্জা পেতেন; তাতেই আমার সন্তুষ্টি। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />কিন্তু এ কারণেই আমি কখনো মাশরাফি হতে পারব না। মাশরাফি যেই না মাঠে নামল, অতীত মুছে গেল। তার সামনে একটাই তথ্য= সে আর্ন্তজাতিক একটি ম্যাচে বল করছে। এখানে যে কোনো মূল্যে ভালো করতে হবে। মাঠেই নিজেকে খাপ খাইয়ে নিল। স্বাভাবিক গতির বল যেহেতু হচ্ছিল না, তাই নিয়মিত ডেলিভারিটাকেই স্লোয়ার বানিয়ে ফেললো। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />কী অপূর্ব অভিযোজন! ওয়াটসন, পন্টিংরা মাশরাফির নিয়ান্ত্রিত এই স্লোয়ার বুঝতে ঘাবড়াতে লাগলেন। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />ক্রিকেটীয় দৃষ্টিতে এ এক অসামান্য দৃশ্য: একজন খেলোয়াড় তার সীমাবদ্ধতাকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে শক্তি হিসেবে ব্যবহার করছেন।<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />এই দৃশ্য ক্রিকেট প্রেমীদের মুগ্ধ করার মতো। তা করেছেও। কিন্তু এই দৃশ্যগুলো দেখে বিলাশবহুল এসি বক্সের মধ্যে বসে আবাহনী, তথা বোর্ড কর্মকর্তারা একবারও কী নিজেদের গালি দেননি? না দেওয়ারই কথা। তাদের কোন কাজটা গালি হজমের উপযুক্ত তাই তো তারা বুঝে উঠতে পারেন না। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />অবশ্য শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারির তদন্ত রিপোর্ট সত্যি হলে বলতে হয়, এই বোর্ড সভাপতি বুঝে শুনেও অন্যায় করতে ওস্তাদ মানুষ। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />মাশরাফির ব্যাপারে অন্তত ক্রিকেটেও বড় অন্যায় করে ফেললেন আ হ ম মোস্তফা কামাল সাহেব। যে সময়টাতে মাশরাফি নিজেকে ফিট বলে দাবি করছিলেন, তখন তাকে দলে নেওয়া হল না। আর যখন পারিবারিক সংকটে পড়ে ছেলেটি ক্রিকেট থেকে দূরে তখন তাকে হুমকি দিয়ে মাঠে নামালেন!<br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />তর্ক করতে পারেন, ফিট দাবি করলেও মাশরাফি কি আসলে ফিট ছিলেন? আমি এ ব্যাপারে কোনো তত্ত্ব বা তথ্যে বিশ্বাসী না। মাশরাফিকে এতোগুলো বছর ধরে দেখছি। ও যদি বলে, ও ফিট; এটা মেনে নিতে হবে। ওর ফিটনেস ওর চেয়ে ভালো দুনিয়ার কোনো চিকিৎসক বোঝে না। ও নিজেকে ফিট মনে করলে ম্যাচে সে চমকাবেই। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />যা হওয়ার হয়ে গেছে। এখন বলি, ছেলেটাকে মুক্তি দিন। যদি সে খেলতে চায় ভালো। না চাইলে ওকে একটু রেহাই দিন। জোর করে, হুমকি দিয়ে ওকে মাঠে নামানো যাবে সত্যি; তাতে মানও বাচবে, কিন্তু একটা ছেলের জীবন নষ্ট হবে। <br style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;" />বহু মানুষকে সর্বশান্ত করেছেন শেয়ার বাজারে, এবার এই ছেলেটাকে অন্তত রেহাই দিন।</div></div>দেবব্রত মুখোপাধ্যায়http://www.blogger.com/profile/10351018961072501066noreply@blogger.comtag:blogger.com,1999:blog-374060266804648478.post-79435965737539743052011-06-23T00:25:00.000-07:002011-06-23T00:26:34.080-07:00লাল গেঞ্জি, পাঁচ টাকা ও পাউরুটি<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"><span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;">রাজীব আর আমি প্রায়ই মজা করতাম: মতি ভাইয়ের চেয়ে এই পত্রিকায় আমাদের দাম বেশি। মতি ভাইয়ের নাম ছাপা হয় শুধু প্রিন্টার্স লাইনে। আর আমাদের নাম প্রতিদিন অন্তত গোটা দুইু জায়গায় ছাপা হতো!</span><span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;"></span><br />
<div style="margin-bottom: 0px; margin-left: 0px; margin-right: 0px; margin-top: 0px; outline-style: none; outline-width: 0px; padding-bottom: 0px; padding-left: 0px; padding-right: 0px; padding-top: 0px;">আট বছর আগের কথা বলছি। আমি আর রাজীব (হাসান), তখন মাত্র শুরু করেছি প্রথম আলোয়। এক ঝাক প্রদায়কের ‘যায় যায় দিন’ গমনের ফলে শূন্যস্থান পূরনে যত্রতত্র দু হাতে, চার হাতে লিখছি। সে এক রোমান্টিক সময় ছিল, তাই না রাজীব?<br />
সেই যে লাল একটা ছেড়া গেঞ্জি। পাচটা টাকা আর একটা পাউরুটি!<br />
আহা, সেই দিনগুলো পার করে অনেক দূর চলে এসেছি। সেই দিনগুলো পার করে কখন যেন আমরা প্রথম আলোর `কর্মচারী' হয়ে গেলাম। ক্রীড়া বিভাগে কাজ করতেই থাকলাম, করতেই থাকলাম। মাঝে কিছুদিন অত্যন্ত ব্যর্থতার সঙ্গে ‘অন্য আলো’ সম্পাদনা করলাম।<br />
টেরই পেলাম না, কখন যেন রোমান্টিসিজমটা পার করে প্রোফেশানিলজমে ঢুকে পড়েছি। হ্যা, পেশাদার হয়ে গিয়েছিলাম আমরা। অর্ডারি লেখা লিখতাম। হাজার হাজার শব্দ প্রসব, সেগুলো নামে-নামবিহীন ছাপা হওয়া; বোধই হত না যে, একটা বড় পত্রিকায় কাজ করছি।<br />
আজ হঠাৎ এতোদিন পর এইসব নস্টালজিয়া কেন? আজ আমি আর প্রথম আলোতে নেই। কালকের দিনটা বাদে পরশু, আমার নতুন পরিচয় `প্রতিষ্ঠিত' হতে যাচ্ছে সারা দেশে। নতুন পত্রিকা ‘সকালের খবর’ আলোর মুখ দেখবে ১০ এপ্রিল। আমি আনুষ্ঠানিকভাবে সকালের খবরের একজন হয়ে যাবো।<br />
পুরোনো হয়ে যাবে প্রথম আলো অধ্যায়।<br />
পুরোনো হয়ে যাবে? হয়তো। তবে ফুরিয়ে যাওয়ার নয়।<br />
মিটুন দা (আনিসুল হক), সাজ্জাদ (শরীফ) ভাই, সুমি দি (সুমনা শারমীন), পল্লব (মোহাইমেন), সিমু (নাসের), ফিরোজ (জামান) ভাই, মশি ভাই, জ্যাক ভাই (জাকারিয়া ভাই), শাহেদ ভাই, মাসুম ভাই (শওকত হোসেন), তৈমুর, ফারুক ভাই এবং সদ্যাহাস্যময় বড্ড ভালোমানুষ জাহিদ (রেজা নূর) ভাই; সব্বার নাম মনে আসুক আর নাই আসুক; সব্বাইকে খুব মিস করি।<br />
সবচেয়ে বেশি মিস করি শুভ্রদা (উৎপল শুভ্র), পবিত্রদা, মনি ভাই (তারেক মাহমুদ), মাসুদ ভাই, ফিরোজ ভাই, মিলন ভাই, রুবেল ভাই এবং রাজীব-রনিকে! আহারে আমাদের স্পোর্টস পরিবার। আমি আজ ওখানে নেই.....<br />
এই ক্রন্দন কোনোক্রমেই আফসোস নয়। প্রথম আলো ছেড়ে বিন্দুমাত্র আফসোস আমার নেই। এই কান্নার ভেতরও একটা রোমান্টিসিজম আছে।<br />
আজ এই বেলায় কথাগুলো লিখতে গিয়ে মনে হচ্ছে, রোমান্টিসিজমটা শেষ হয়ে যায়নি। কোথায় যেন টিকে ছিল সে। কোথায় যেন টুক টুক করে শব্দ করতো সে।<br />
এই একটা কারণে অন্তত অজস্র ধন্যবাদ, মতি ভাই। এখনও প্রথম আলো রোমান্টিসিজমটা ধরে রাখতে পেরেছে।<br />
<br />
নোট:<br />
<b>এই লেখার প্রতিক্রিয়ায় রাজীব হাসান: </b><br />
<span class="Apple-style-span" style="color: #333333; font-family: solaimanLipi, 'siyam rupali', 'Segoe UI', verdana, arial, sans-serif; font-size: 16px;">দেবব্রতর লেখার প্রশংসা করছি। দশে আট দিলাম। দশে আট যাদের কাছে কম মনে হচ্ছে তাদের বলি, প্রচণ্ড ঈর্ষাজনিত কারণে দেবব্রর খুব ভালো লেখাকেও আমি দশে দুইও দিইনি কোনো দিন!</span></div></div>দেবব্রত মুখোপাধ্যায়http://www.blogger.com/profile/10351018961072501066noreply@blogger.com