কোনো এক স্টেডিয়ামের গেটে নিরাপত্তাকর্মীরা এক আম্পায়ারকে আটকে দিয়েছে। অভিযোগ, তিনি এক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে মাঠে ঢুকতে চাইছেন। খুব তর্কাতর্কি চলছে। এক পর্যায়ের নিরাপত্তাকর্মী ইন্টারকমে স্টেডিয়ামের বড় কর্তাকে ফোন দিল:
‘স্যার, এক আম্পায়ার তার বন্ধুকে নিয়ে স্টেডিয়ামে ঢুকতে চাচ্ছেন। কি করবো?’
‘ঢুকতে দিও না। ও মিথ্যা কথা বলছে। ও আম্পায়ার না।’
‘স্যার, কিভাবে বুঝলেন!’
‘দুনিয়ায় কোনো আম্পায়ারের বন্ধু বলে কিছু থাকে না।’
*******
গল্পটা সত্যি হোক আর নাই হোক, কথাটা সত্যি: আম্পারদের বন্ধু থাকে না। মাঠে দুই পক্ষই মনে করে আম্পায়ার তাদের প্রধানতম শত্রু, দর্শক মাত্রেই মনে করে আম্পায়ার তার দলের বিপক্ষে, এমনকি কর্মকর্তারাও মনে করেন আম্পায়াররা ছাড়া সবাই আইনকানুন ভালো বোঝে! এমন লোকের আবার বন্ধু হয় কী করে!
আমিও আম্পায়দের ভিলেনই মনে করতাম। মনে হত, এই লোকগুলো ইচ্ছে করে ভুল করার জন্যই মাঠে নামে! তাদের চেয়ে আমাদের কাউকে দাড় করিয়ে দিলে বোধহয় কাজটা ভালো করতে পারতাম। কিন্তু এবার বিশ্বকাপে আম্পায়ারিং দেখে সব অনুভূতি মিলিয়ে আমার একটা শব্দই তৈরি হয়েছে: শ্রদ্ধা।
যতোই রসিকতা করি, এ কথা মানতেই হবে, আম্পায়ারদের মতো কষ্টকর আর ‘থ্যাংকলেস জব’ এই দুনিয়ায় সম্ভবত দ্বিতীয়টি নেই। একজন খেলোয়াড় সেঞ্চুরি করলে আমরা বলি, আহা বেচারা কতোক্ষন উইকেটে ছিল। ফিল্ডারদের নিয়ে গুঞ্জন তুলি, এই রোদে কাহাতক ফিল্ডিং করা যায়! কিন্তু আম্পায়ারদের কথা ভেবে দেখেছেন? কেউ বলে না, আহারে এই ১০০টা ওভার ধরে দু জন মানুষ দু প্রান্তে দাড়িয়ে রইল!
সেঞ্চুরি করলে হাতে তালি মেলে, উইকেট পেলেও মেলে; কিন্তু আম্পায়ার একটা ভালো সিদ্ধান্ত দিলে কেউ কখনো হাতে তালি দেয়? দেয় না। বলে, এটাই তার কাজ। তাহলে ব্যাটসম্যানদের কাজ কি ব্যাটিং করা নয়? বোলারদের কাজও কি উইকেট পাওয়া নয়! সে জন্য কেন আমরা করতালি দেই?
এসব পুরোনো কথা। একটা ওয়ানডে ম্যাচে কমপক্ষে শ ছয়েক বলকে চোখে চোখে রাখা, প্রতিটা ঘটনাকে তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে অনুসরন করা, এক মুহুর্তের জন্য মনোসংযোগ বিচ্ছিন্ন হতে না দেওয়া; এসব আম্পায়ারদের সেই আদ্যিকাল থেকে চলে আসা চ্যালেঞ্জ। তাহলে হঠাৎ এই বিশ্বকাপে কি দেখে মুগ্ধ হলাম? যন্ত্রের বিপক্ষে আম্পায়ারদের লড়াই দেখে। ইউডিআরএস বা আম্পায়ারস ডিসিশন রিভিউ সিস্টেমের সঙ্গে তাদের লড়াই দেখে মুগ্ধ হলাম।
একটা সময় ছিল, আম্পায়ারদের বোঝা ও দেখাই মাঠে শেষ কথা ছিল। একটু একটু করে ক্রিকেট মাঠে প্রযুক্তি ঢুকতে শুরু করেছে অনেকদিন হল। প্রথমে টিভিতে সম্প্রচার শুরু হল। আম্পায়ারদের টুকটাক মানবীয় ভুল ‘ক্রাইম’ হিসেবে আলোচিত হতে থাকল। এরপর এলো তৃতীয় আম্পায়ার।
খানিকটা ক্ষমতা খর্ব হল আম্পায়ারদের। আবার কিছু সহযোগিতাও তারা পেতে থাকলেন মাঠের বাইরে থেকে। কিন্তু এবার যেটা হল, তার কাছে একদম অসহায় হয়ে পড়ার কথা আম্পায়ারদের। আগে আম্পায়াররা সন্দেহ হলে নিজেদের সিদ্ধান্ত তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে পাঠাতেন। এখন সীমিত আকারে সে ক্ষমতা চলে গেছে ব্যাটসম্যান ও ফিল্ডারদের কাছে।
প্রতি ইনিংসে প্রতিটি দল দু বার করে আম্পায়ারের দেওয়া সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন। মানে সবমিলিয়ে এক ম্যাচে আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত আট বার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। এ ক্ষেত্রে কারো অনুমতির দরকার নেই। বোলার-ফিল্ডার যদি মনে করেন আম্পায়ার ভুল করে আউট দেননি। সঙ্গে সঙ্গে তার ক্যাপ্টেন ডিআরএস চাইতে চারবেন।
বুঝুন আম্পায়ারদের অসহায়ত্বটা! একটা ম্যাচে কতোগুলো টাইট-ডিসিশন হয়? কোনোভাবেই সংখ্যাটা আটের বেশি হওয়ার কথা না। ম্যাচের বেশিরভাগ আউটই তো স্বচ্ছ ও দৃশ্যবান বোল্ড, ক্যাচ বা রানআউট। বাকি রইল এলবিডব্লু। কিছু এলবিডব্লু থাকে, তা নিয়ে ব্যাটসম্যানের আপত্তি করার উপায় থাকে না। বাকি যে সীমিত সংখ্যক আউট, যেখানে আম্পায়ারের মেধা, পর্যবেক্ষন ও অভিজ্ঞতা প্রয়োগের ক্ষেত্র; তার প্রতিটিতেই এখন চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। হয় এ পক্ষ চ্যালেঞ্জ করছে, নয় ও পক্ষ।
চ্যালেঞ্জর পর কি হচ্ছে? সম্প্রচার স্বত্ত পাওয়া প্রতিষ্ঠানের গোটা আঠারো ক্যামেরা এবার নানা অ্যাঙ্গেল থেকে ঘটনাটা দেখাতে শুরু করছে। দুনিয়ার লাখো লাখো মানুষ তখন ওই আম্পায়ারের ভুল ধরতে বিচারক হয়ে উঠছে। তৃতীয় আম্পায়ারের চোখের সামনে আরেক মনিটরে আবার গ্রাফিক্স করে দেখিয়ে দেওয়া হচ্ছে, আসলে ঘটনাটা কি ঘটতে পারত। হক আই দিয়ে দেখানো হচ্ছে বলের গতি। একজন লোক খালি চোখে দেখে যে সিদ্ধান্ত দিল, তার বিচার হচ্ছে হাজারটা যন্ত্রের সাহায্যে।
এমন অবস্থায় আমাদের স্বাভাবিক বোধ-বিবেচনা বলে, আম্পায়ারদের কুড়ি কুড়ি ভুল বের হওয়ার কথা। কারণ, আমরা তো মনে করি, ফিফটি-ফিফটি অবস্থায় আম্পায়াররা অবশ্যই ভুল করেন। কিন্তু বিস্ময়কর তথ্য কি জানেন, পরিসংখ্যান বলছে, এই যে চ্যালেঞ্জে পড়ছেন আম্পায়াররা, এর অধিকাংশতেই তাদের জয় হচ্ছে। কোনো কথার কথা নয়।
আইসিসির ভাষ্য অনুযায়ী অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে শতকরা ৭ বা ৮ শতাংশ বেশি সঠিক আম্পায়ারিং হয়েছে এই বিশ্বকাপে। কারণ কী? আইসিসি একটা ব্যাখ্যা দিয়েছে। যেটা বিশেষজ্ঞরা আপাতত সঠিক বলেই মনে করছেন। আইসিসি বলছে, উপমহাদেশের উইকেটের কারণে সঠিক সিদ্ধান্তের পরিমান বেড়ে গেছে।
উপমহাদেশের উইকেটে বলের বাউন্স সাধারণত একইরকম থাকে, বল আচমকা খুব বেশি সুইং করে না, স্পিনারদের বলে টার্ন অনেক পরিস্কার ও বড়; ফলে আম্পায়ারদের পক্ষে বল অনুসরণ করা অনেক সোজা। এ ছাড়া ব্যাটসম্যানরা এখানে বল সামনের পায়ে কম খেলেন বলেও সিদ্ধান্তটা নেওয়া একটু সহজ।
আমার কাছে অবশ্য এসব ব্যাখ্যা একেবারেই কেতাবী মনে হয। আসল কারণ অন্য জায়গায়। আম্পায়ারদের কাজের এই মানটা বেড়ে যাওয়ার আসল কারণ, তাদের পেশাকে একটা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছি আমরা। কয়েক শ বছর ধরে আম্পায়াররা বিনাযন্ত্রে, নিজেদের যোগ্যতায় কাজটা করে আসছিলেন। আজ আমরা বলছি, তোমাদের পরীক্ষা নেব।
এই পরীক্ষা দিতে গিয়ে আম্পায়াররা তাদের সর্বোচ্চ সর্বোচ্চ ক্ষমতাটার প্রয়োগ করছেন।
আজকের স্টিভ ডেভিস, আলিম দাররা বুঝিয়ে দিতে চাইছেন, মানুষকে চ্যালেঞ্জ করে পার পেয়ে যাওয়া যন্ত্রের কাজ নয়।
মানুষের কাজ মানুষই ভালো পারে। আম্পায়ারের কাজ আম্পায়ারই ভালো পারে, যন্ত্র নয়।
‘ঢুকতে দিও না। ও মিথ্যা কথা বলছে। ও আম্পায়ার না।’
‘স্যার, কিভাবে বুঝলেন!’
‘দুনিয়ায় কোনো আম্পায়ারের বন্ধু বলে কিছু থাকে না।’
*******
গল্পটা সত্যি হোক আর নাই হোক, কথাটা সত্যি: আম্পারদের বন্ধু থাকে না। মাঠে দুই পক্ষই মনে করে আম্পায়ার তাদের প্রধানতম শত্রু, দর্শক মাত্রেই মনে করে আম্পায়ার তার দলের বিপক্ষে, এমনকি কর্মকর্তারাও মনে করেন আম্পায়াররা ছাড়া সবাই আইনকানুন ভালো বোঝে! এমন লোকের আবার বন্ধু হয় কী করে!
আমিও আম্পায়দের ভিলেনই মনে করতাম। মনে হত, এই লোকগুলো ইচ্ছে করে ভুল করার জন্যই মাঠে নামে! তাদের চেয়ে আমাদের কাউকে দাড় করিয়ে দিলে বোধহয় কাজটা ভালো করতে পারতাম। কিন্তু এবার বিশ্বকাপে আম্পায়ারিং দেখে সব অনুভূতি মিলিয়ে আমার একটা শব্দই তৈরি হয়েছে: শ্রদ্ধা।
যতোই রসিকতা করি, এ কথা মানতেই হবে, আম্পায়ারদের মতো কষ্টকর আর ‘থ্যাংকলেস জব’ এই দুনিয়ায় সম্ভবত দ্বিতীয়টি নেই। একজন খেলোয়াড় সেঞ্চুরি করলে আমরা বলি, আহা বেচারা কতোক্ষন উইকেটে ছিল। ফিল্ডারদের নিয়ে গুঞ্জন তুলি, এই রোদে কাহাতক ফিল্ডিং করা যায়! কিন্তু আম্পায়ারদের কথা ভেবে দেখেছেন? কেউ বলে না, আহারে এই ১০০টা ওভার ধরে দু জন মানুষ দু প্রান্তে দাড়িয়ে রইল!
সেঞ্চুরি করলে হাতে তালি মেলে, উইকেট পেলেও মেলে; কিন্তু আম্পায়ার একটা ভালো সিদ্ধান্ত দিলে কেউ কখনো হাতে তালি দেয়? দেয় না। বলে, এটাই তার কাজ। তাহলে ব্যাটসম্যানদের কাজ কি ব্যাটিং করা নয়? বোলারদের কাজও কি উইকেট পাওয়া নয়! সে জন্য কেন আমরা করতালি দেই?
এসব পুরোনো কথা। একটা ওয়ানডে ম্যাচে কমপক্ষে শ ছয়েক বলকে চোখে চোখে রাখা, প্রতিটা ঘটনাকে তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে অনুসরন করা, এক মুহুর্তের জন্য মনোসংযোগ বিচ্ছিন্ন হতে না দেওয়া; এসব আম্পায়ারদের সেই আদ্যিকাল থেকে চলে আসা চ্যালেঞ্জ। তাহলে হঠাৎ এই বিশ্বকাপে কি দেখে মুগ্ধ হলাম? যন্ত্রের বিপক্ষে আম্পায়ারদের লড়াই দেখে। ইউডিআরএস বা আম্পায়ারস ডিসিশন রিভিউ সিস্টেমের সঙ্গে তাদের লড়াই দেখে মুগ্ধ হলাম।
একটা সময় ছিল, আম্পায়ারদের বোঝা ও দেখাই মাঠে শেষ কথা ছিল। একটু একটু করে ক্রিকেট মাঠে প্রযুক্তি ঢুকতে শুরু করেছে অনেকদিন হল। প্রথমে টিভিতে সম্প্রচার শুরু হল। আম্পায়ারদের টুকটাক মানবীয় ভুল ‘ক্রাইম’ হিসেবে আলোচিত হতে থাকল। এরপর এলো তৃতীয় আম্পায়ার।
খানিকটা ক্ষমতা খর্ব হল আম্পায়ারদের। আবার কিছু সহযোগিতাও তারা পেতে থাকলেন মাঠের বাইরে থেকে। কিন্তু এবার যেটা হল, তার কাছে একদম অসহায় হয়ে পড়ার কথা আম্পায়ারদের। আগে আম্পায়াররা সন্দেহ হলে নিজেদের সিদ্ধান্ত তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে পাঠাতেন। এখন সীমিত আকারে সে ক্ষমতা চলে গেছে ব্যাটসম্যান ও ফিল্ডারদের কাছে।
প্রতি ইনিংসে প্রতিটি দল দু বার করে আম্পায়ারের দেওয়া সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন। মানে সবমিলিয়ে এক ম্যাচে আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত আট বার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। এ ক্ষেত্রে কারো অনুমতির দরকার নেই। বোলার-ফিল্ডার যদি মনে করেন আম্পায়ার ভুল করে আউট দেননি। সঙ্গে সঙ্গে তার ক্যাপ্টেন ডিআরএস চাইতে চারবেন।
বুঝুন আম্পায়ারদের অসহায়ত্বটা! একটা ম্যাচে কতোগুলো টাইট-ডিসিশন হয়? কোনোভাবেই সংখ্যাটা আটের বেশি হওয়ার কথা না। ম্যাচের বেশিরভাগ আউটই তো স্বচ্ছ ও দৃশ্যবান বোল্ড, ক্যাচ বা রানআউট। বাকি রইল এলবিডব্লু। কিছু এলবিডব্লু থাকে, তা নিয়ে ব্যাটসম্যানের আপত্তি করার উপায় থাকে না। বাকি যে সীমিত সংখ্যক আউট, যেখানে আম্পায়ারের মেধা, পর্যবেক্ষন ও অভিজ্ঞতা প্রয়োগের ক্ষেত্র; তার প্রতিটিতেই এখন চ্যালেঞ্জ হচ্ছে। হয় এ পক্ষ চ্যালেঞ্জ করছে, নয় ও পক্ষ।
চ্যালেঞ্জর পর কি হচ্ছে? সম্প্রচার স্বত্ত পাওয়া প্রতিষ্ঠানের গোটা আঠারো ক্যামেরা এবার নানা অ্যাঙ্গেল থেকে ঘটনাটা দেখাতে শুরু করছে। দুনিয়ার লাখো লাখো মানুষ তখন ওই আম্পায়ারের ভুল ধরতে বিচারক হয়ে উঠছে। তৃতীয় আম্পায়ারের চোখের সামনে আরেক মনিটরে আবার গ্রাফিক্স করে দেখিয়ে দেওয়া হচ্ছে, আসলে ঘটনাটা কি ঘটতে পারত। হক আই দিয়ে দেখানো হচ্ছে বলের গতি। একজন লোক খালি চোখে দেখে যে সিদ্ধান্ত দিল, তার বিচার হচ্ছে হাজারটা যন্ত্রের সাহায্যে।
এমন অবস্থায় আমাদের স্বাভাবিক বোধ-বিবেচনা বলে, আম্পায়ারদের কুড়ি কুড়ি ভুল বের হওয়ার কথা। কারণ, আমরা তো মনে করি, ফিফটি-ফিফটি অবস্থায় আম্পায়াররা অবশ্যই ভুল করেন। কিন্তু বিস্ময়কর তথ্য কি জানেন, পরিসংখ্যান বলছে, এই যে চ্যালেঞ্জে পড়ছেন আম্পায়াররা, এর অধিকাংশতেই তাদের জয় হচ্ছে। কোনো কথার কথা নয়।
আইসিসির ভাষ্য অনুযায়ী অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে শতকরা ৭ বা ৮ শতাংশ বেশি সঠিক আম্পায়ারিং হয়েছে এই বিশ্বকাপে। কারণ কী? আইসিসি একটা ব্যাখ্যা দিয়েছে। যেটা বিশেষজ্ঞরা আপাতত সঠিক বলেই মনে করছেন। আইসিসি বলছে, উপমহাদেশের উইকেটের কারণে সঠিক সিদ্ধান্তের পরিমান বেড়ে গেছে।
উপমহাদেশের উইকেটে বলের বাউন্স সাধারণত একইরকম থাকে, বল আচমকা খুব বেশি সুইং করে না, স্পিনারদের বলে টার্ন অনেক পরিস্কার ও বড়; ফলে আম্পায়ারদের পক্ষে বল অনুসরণ করা অনেক সোজা। এ ছাড়া ব্যাটসম্যানরা এখানে বল সামনের পায়ে কম খেলেন বলেও সিদ্ধান্তটা নেওয়া একটু সহজ।
আমার কাছে অবশ্য এসব ব্যাখ্যা একেবারেই কেতাবী মনে হয। আসল কারণ অন্য জায়গায়। আম্পায়ারদের কাজের এই মানটা বেড়ে যাওয়ার আসল কারণ, তাদের পেশাকে একটা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছি আমরা। কয়েক শ বছর ধরে আম্পায়াররা বিনাযন্ত্রে, নিজেদের যোগ্যতায় কাজটা করে আসছিলেন। আজ আমরা বলছি, তোমাদের পরীক্ষা নেব।
এই পরীক্ষা দিতে গিয়ে আম্পায়াররা তাদের সর্বোচ্চ সর্বোচ্চ ক্ষমতাটার প্রয়োগ করছেন।
আজকের স্টিভ ডেভিস, আলিম দাররা বুঝিয়ে দিতে চাইছেন, মানুষকে চ্যালেঞ্জ করে পার পেয়ে যাওয়া যন্ত্রের কাজ নয়।
মানুষের কাজ মানুষই ভালো পারে। আম্পায়ারের কাজ আম্পায়ারই ভালো পারে, যন্ত্র নয়।