একটা অদ্ভুড়ে সময় পার করলাম।
বাবা হবো বলে মনে মনে মচ্ছব করছিলাম। আগে কখনো বাবা হইনি তো, তাই!!!
কি বিচিত্র। হঠাৎ একদিন চিকিৎসকরা বললেন, আমার বৌ-এর গর্ভের সন্তানটি ঝুকির মধ্যে আছে। একদিন, পরশু মাঝরাতে পৃথিবীতে আসার আগেই পৃথিবী ছেড়ে গেল প্রানটি।
এতে আমার আর এমন কী হয়েছে? আমি তো মচ্ছব করে সময় কাটাচ্ছিলাম। আর আমার বৌ তিনটে মাস ধরে তিল তিল করে প্রানটা বড় করে তুলছিল। অনেক স্বপ্নও দেখছিল। এখন এই অভিশাপের জালাটা টের পাচ্ছে সে।
যখন অপারেশন থিয়েটার থেকে ওকে বের করে আনা হল; অর্ধ চেতন অবস্থায় আমার দিকে চেয়ে বড় বড় চোখ করে জিজ্ঞেস করলো, ‘ও কই?’ কেউ ভাবলো আমার বৌ তার মাকে খুজছে, কেউ বললো আমাকে খুজছে; আমি তো বুঝলাম, ও কাকে খোজে!!
নিজেকে অত্যন্ত অযোগ্য, অপদার্থ একজন মানুষ মনে হচ্ছে; যে কিনা একটা মেয়ের সন্তানের নিশ্চয়তা দিতে পারল না।
যাক, এসব ব্যক্তিগত ছিচকাদুনির জায়গা ব্লগ নয়। তারপরও প্রসঙ্গটা তুলতে হল ঊপাধিরজন্য। সে খুব আন্তরিকতার সঙ্গে গতকাল জানতে চেয়েছিল, আমি কেন ইদানিং ব্লগে পোস্ট দিচ্ছি না। কারণটা এই।
তবে এই কারণ জানাতে গিয়ে একটু মধুর অভিজ্ঞতাও জানাই। মানুষ চরম বিপদগ্রস্থ না হলেও অনেক কিছু জানতে পারে না। এরকম সময়গুলোতে অনেক নতুন দুনিয়া উন্মোচিত হয়। আমার সামনে উন্মোচিত হল বন্ধুত্বের, সহানুভূতির বিচিত্র এক দুনিয়া।
পরশু ঘটনা শুরু হয়ে যাওয়ার পর থেকে আমি দেখলাম, আমার চেনা আড্ডাবাজ, হালকা চালের মানুষগুলো কেমন সৈনিকের মতো হয়ে উঠল। মুখে একটা শব্দ না করেতারা কেমনভাবে এগিয়ে এলো। আমার প্রতিবেশী রাজু ভাই তখন ঘুমাচ্ছিলেন; দরজায় টোকা দিতেই শর্টপ্যান্ট আর টি-শার্ট পরে আমাদের সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সে চড়ে বসলেন।
সিমু নাসের আর আসিফ এন্তাজ রবি যেন ফোনের জন্য অপেক্ষা করছিল। সঙ্গে আরও দুই বন্ধু নিয়ে হাজির। আমি শুধু মুখ কালো করে হাসপাতালে বসে রইলাম। সারা রাত কোথায় টাকা, কোথায় রেজিস্ট্রেশন, কোথায় ডাক্তার; ছুটে চললো এই মানুষগুলো। ভোর বেলা থেকে আরিফ রনি হাজির, রাজীব হাসান চোখ লাল করে এসে বললো, ‘সঙ্গে সঙ্গে একটা ফোন দিলেন না! আমি একটা কিছু অনুমান করে মোটর সাইকেল গ্যারেজে তুলিনি রাতে!’
আমার বন্ধুরা জানেন আমার অর্থ-বিত্ত কতো সমৃদ্ধ। সকাল থেকে ফোনের পর ফোন, ‘টাকা নিয়ে আসবো?’ তাদের নাম আলাদা করে বলে আসলেই ছোট করার ঠিক হবে না। এদিকে দীপ্ররা কয়েক জন ফেসবুকে আমার বৌ-এর জন্য রক্ত সংগ্রহের চেষ্টা শুরু করল। তাদের কাছে থেকে সাড়া আসতে শুরু হল।
একজন আপু, ফারজানা আপু; যাকে আমি কোনোদিন দেখিইনি, বারবার খবর নিচ্ছেন, ‘বৌ সুস্থ আছে তো?’ ফোনে আমার প্রিয় মানুষগুলো নোমান, শুভ্রদা, মামুন ভাই, বাবু ভাই, কায়সার ভাই; এমন উদ্বিগ্ন যেন বাংলাদেশের টেস্ট স্টাটাস কেড়ে নেওয়া হচ্ছে!
দিনশেষে সর্বশান্ত হয়ে আমি যখন বাসায় ফিরছি, তখন হঠাৎ করে মনে হল, ঢাকায় আটটি বছর যে পার করে ফেললাম, টাকা-পয়সা-বাড়ি-গাড়ি কিছুই তো জমাতে পারলাম না।
তবে এই আট বছরে যতো ভালোবাসা জমিয়েছি, তা দেখে শিল্পপতিরা ঈর্ষা করতে পারেন।
কি বিচিত্র। হঠাৎ একদিন চিকিৎসকরা বললেন, আমার বৌ-এর গর্ভের সন্তানটি ঝুকির মধ্যে আছে। একদিন, পরশু মাঝরাতে পৃথিবীতে আসার আগেই পৃথিবী ছেড়ে গেল প্রানটি।
এতে আমার আর এমন কী হয়েছে? আমি তো মচ্ছব করে সময় কাটাচ্ছিলাম। আর আমার বৌ তিনটে মাস ধরে তিল তিল করে প্রানটা বড় করে তুলছিল। অনেক স্বপ্নও দেখছিল। এখন এই অভিশাপের জালাটা টের পাচ্ছে সে।
যখন অপারেশন থিয়েটার থেকে ওকে বের করে আনা হল; অর্ধ চেতন অবস্থায় আমার দিকে চেয়ে বড় বড় চোখ করে জিজ্ঞেস করলো, ‘ও কই?’ কেউ ভাবলো আমার বৌ তার মাকে খুজছে, কেউ বললো আমাকে খুজছে; আমি তো বুঝলাম, ও কাকে খোজে!!
নিজেকে অত্যন্ত অযোগ্য, অপদার্থ একজন মানুষ মনে হচ্ছে; যে কিনা একটা মেয়ের সন্তানের নিশ্চয়তা দিতে পারল না।
যাক, এসব ব্যক্তিগত ছিচকাদুনির জায়গা ব্লগ নয়। তারপরও প্রসঙ্গটা তুলতে হল ঊপাধিরজন্য। সে খুব আন্তরিকতার সঙ্গে গতকাল জানতে চেয়েছিল, আমি কেন ইদানিং ব্লগে পোস্ট দিচ্ছি না। কারণটা এই।
তবে এই কারণ জানাতে গিয়ে একটু মধুর অভিজ্ঞতাও জানাই। মানুষ চরম বিপদগ্রস্থ না হলেও অনেক কিছু জানতে পারে না। এরকম সময়গুলোতে অনেক নতুন দুনিয়া উন্মোচিত হয়। আমার সামনে উন্মোচিত হল বন্ধুত্বের, সহানুভূতির বিচিত্র এক দুনিয়া।
পরশু ঘটনা শুরু হয়ে যাওয়ার পর থেকে আমি দেখলাম, আমার চেনা আড্ডাবাজ, হালকা চালের মানুষগুলো কেমন সৈনিকের মতো হয়ে উঠল। মুখে একটা শব্দ না করেতারা কেমনভাবে এগিয়ে এলো। আমার প্রতিবেশী রাজু ভাই তখন ঘুমাচ্ছিলেন; দরজায় টোকা দিতেই শর্টপ্যান্ট আর টি-শার্ট পরে আমাদের সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সে চড়ে বসলেন।
সিমু নাসের আর আসিফ এন্তাজ রবি যেন ফোনের জন্য অপেক্ষা করছিল। সঙ্গে আরও দুই বন্ধু নিয়ে হাজির। আমি শুধু মুখ কালো করে হাসপাতালে বসে রইলাম। সারা রাত কোথায় টাকা, কোথায় রেজিস্ট্রেশন, কোথায় ডাক্তার; ছুটে চললো এই মানুষগুলো। ভোর বেলা থেকে আরিফ রনি হাজির, রাজীব হাসান চোখ লাল করে এসে বললো, ‘সঙ্গে সঙ্গে একটা ফোন দিলেন না! আমি একটা কিছু অনুমান করে মোটর সাইকেল গ্যারেজে তুলিনি রাতে!’
আমার বন্ধুরা জানেন আমার অর্থ-বিত্ত কতো সমৃদ্ধ। সকাল থেকে ফোনের পর ফোন, ‘টাকা নিয়ে আসবো?’ তাদের নাম আলাদা করে বলে আসলেই ছোট করার ঠিক হবে না। এদিকে দীপ্ররা কয়েক জন ফেসবুকে আমার বৌ-এর জন্য রক্ত সংগ্রহের চেষ্টা শুরু করল। তাদের কাছে থেকে সাড়া আসতে শুরু হল।
একজন আপু, ফারজানা আপু; যাকে আমি কোনোদিন দেখিইনি, বারবার খবর নিচ্ছেন, ‘বৌ সুস্থ আছে তো?’ ফোনে আমার প্রিয় মানুষগুলো নোমান, শুভ্রদা, মামুন ভাই, বাবু ভাই, কায়সার ভাই; এমন উদ্বিগ্ন যেন বাংলাদেশের টেস্ট স্টাটাস কেড়ে নেওয়া হচ্ছে!
দিনশেষে সর্বশান্ত হয়ে আমি যখন বাসায় ফিরছি, তখন হঠাৎ করে মনে হল, ঢাকায় আটটি বছর যে পার করে ফেললাম, টাকা-পয়সা-বাড়ি-গাড়ি কিছুই তো জমাতে পারলাম না।
তবে এই আট বছরে যতো ভালোবাসা জমিয়েছি, তা দেখে শিল্পপতিরা ঈর্ষা করতে পারেন।