আরেকটা বিশ্বকাপ চলছে; টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। বাজিটা কার পক্ষে ধরছেন? ভারত, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শ্রীলংকা নাকি ইদানীং দারুণ ফর্মে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকা? যারই সমর্থন করুন, এই ফাঁকে ভারতের গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতার রহস্যটা জেনে নেবেন নাকি?
সত্য-মিথ্যে জানি না, গত বিশ্বকাপ শেষে ভারতের একটা পত্রিকায় সে দেশের অধিনায়ক মহেন্দ্র ধোনির এই সাক্ষাৎকারটা ছাপা হয়েছিল-বিশ্বকাপ জয়ের জন্য কোন খেলোয়াড়ের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল?
ধোনিঃ অজিত আগারকার।
আগারকার! তিনি তো ফাইনাল খেলেননি!
ধোনিঃ ওই জন্যই তো ও গুরুত্বপূর্ণ। ও খেললে তো পাকিস্তান ১০ ওভারেই ম্যাচ জিতে যেত।
ও আচ্ছা। বিশ্বকাপ জয়ের জন্য কার অবদান বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল?
ধোনিঃ দলের চিকিৎসক।
কোচ, ফিজিও, এমনকি ট্রেনারও ভূমিকা রাখতে পারেন। কিন্তু চিকিৎসক কেন?
ধোনিঃ ফাইনালের আগে তিনি শেবাগকে অসুস্থ ঘোষণা করেছিলেন। শেবাগ সুস্থ থাকলে একাই আমাদের হারিয়ে দিত।
বিশ্বকাপ ট্রফি কাকে উৎসর্গ করছেন?
ধোনিঃ রাহুল দ্রাবিড়।
ভালো, ভালো। পূর্বসূরি অধিনায়কের প্রতি আপনার খুব শ্রদ্ধা···
ধোনিঃ কথা শেষ করিনি। রাহুল দ্রাবিড় নিজে থেকে টি-টোয়েন্টি দল থেকে সরে দাঁড়িয়েছিল বলে আমরা জিততে পেরেছি। নতুবা ২০ ওভারে ১০০ রানও করা কঠিন হতো!
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমই এই সাক্ষাৎকার রটিয়েছে। আসলে সংবাদমাধ্যমের লোকজনই এমন। যাঁর যাঁর দলকে নিয়ে এমন মশকরা করতে তাঁদের জুড়ি নেই। এ ব্যাপারে সবচেয়ে এগিয়ে বোধ হয় ইংলিশ সাংবাদিকেরা। অ্যাশেজে নিয়মিত ইংল্যান্ডের হার দেখতে দেখতে বিরক্ত একটি ব্রিটিশ দৈনিক নিচের প্রশ্নোত্তরটি ছেপেছিলঃ
আশাবাদের চরম নিদর্শন কী?
উত্তরঃ ইংলিশ ব্যাটসম্যানের সানস্ক্রিন ব্যবহার করা। জানা কথা যে সানস্ক্রিন পর্যন্ত সূর্যের আলো যাওয়ার আগেই সে আউট হয়ে ফিরবে!
গ্লেন ম্যাকগ্রা ইংল্যান্ডে জন্মালে তিনি কী হতেন?
উত্তরঃ ব্যাটসম্যান। (মনে রাখবেন, অস্ট্রেলীয় এই বোলারের টেস্টে ব্যাটিং গড় ৭·৩৬ ও ওয়ানডেতে ৩·৮৩)!
হ্যাটট্রিকের ইংলিশ রূপটা কী?
উত্তরঃ পরপর তিন বলে তিন রান।
কোনো ইংলিশ খেলোয়াড়ের নামের পাশে ১০০ লেখা থাকলে কী বুঝবেন?
উত্তরঃ সে অবশ্যই একজন বোলার।
অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ কখন বলতে পারেন, এই বলে উইকেট যাবেই?
উত্তরঃ যখন তিনি ব্যাট হাতে উইকেটে থাকেন।
শুধু এই প্রশ্নোত্তরে সন্তুষ্ট থাকলেও কথা ছিল না। বেচারা ড্যারেন গফের একেবারে মানসম্মানের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে ইংলিশ মিডিয়া। ‘গতি তারকা’ গফ নাকি একবার খুব ভালো একটা আবেদন করেও এলবিডব্লু না পেয়ে চটে গিয়েছিলেন। আম্পায়ারকে গিয়ে বললেন,
‘এলবিডব্লু দিলেন না কেন? বল স্টাম্পের লাইনে ছিল না?’
‘ছিল।’
‘তাহলে? বল কি পায়ে না লাগলে স্টাম্পে লাগত না?’
‘ওখানেই আমার সন্দেহ। বল পায়ে না লাগলে স্টাম্প পর্যন্ত যেত বলে মনে হয় না। তোমার বলের যে গতি, তাতে স্টাম্পের আগেই থেমে যেত!’
দেবব্রত মুখোপাধ্যায়
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুন ১৫, ২০০৯
Facebook comments for blogger brought to you by AllBlogTools.com